বাংলা ভাষার যুক্তবর্ণ বা সংযুক্ত অক্ষর হলো এমন অক্ষর, যা দুই বা ততোধিক ব্যঞ্জনবর্ণের মিলনে তৈরি হয়। এই যুক্তবর্ণগুলো উচ্চারণ ও লেখার ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ এগুলোর মাধ্যমে শব্দের ধ্বনি ও অর্থ পরিবর্তিত হতে পারে।
‘হৃ’ একটি যুক্তধ্বনিযুক্ত রূপ, যা গঠিত হয়েছে ব্যঞ্জনবর্ণ ‘হ্’ এবং স্বরবর্ণ ‘ঋ’ এর সংযোগে। এটির সঠিক রূপ হলো হ্ + ঋ = হৃ।
এই যুক্তরূপটি সংস্কৃত ও প্রাচীন বাংলার বহু শব্দে ব্যবহৃত হয়, যেমন— হৃদয়, হ্রস্ব, হৃষিকেশ, হ্রদ, হ্রিয়া ইত্যাদি। এখানে ‘হৃ’ মূলত কোনো শব্দের শুরুতে বা মাঝে ব্যবহৃত হয়ে একটি বিশেষ ধ্বনি প্রকাশ করে, যা উচ্চারণে “হ্রি” বা “হ্র” এর কাছাকাছি শোনায়।
মূল ব্যাখ্যা পয়েন্ট আকারে
-
গঠনপ্রণালী: ‘হৃ’ গঠিত হয়েছে ব্যঞ্জনবর্ণ ‘হ্’ এবং স্বরবর্ণ ‘ঋ’-এর সংযোগে। এখানে হ্ একটি অর্ধ-ব্যঞ্জন, যা সম্পূর্ণ উচ্চারিত হয় না, বরং পরবর্তী স্বরবর্ণের সঙ্গে যুক্ত হয়ে নতুন ধ্বনি সৃষ্টি করে।
-
ধ্বনিগত বৈশিষ্ট্য: এর উচ্চারণে হ-এর হালকা ঘর্ষণধ্বনি এবং ঋ-এর মিশ্র স্বরধ্বনি মিলিত হয়। তাই এটি উচ্চারণে “হ্রি” বা “হ্রু”-এর মতো শোনায়, তবে প্রকৃত রূপ হলো ‘হৃ’।
-
ব্যবহার: এই যুক্তবর্ণ সাধারণত সংস্কৃতমূল শব্দে ব্যবহৃত হয়। যেমন— হৃদয় (হৃ + দয়), হ্রদ (হৃ + দ), হ্রস্ব (হৃ + স্ব)।
-
শিক্ষাগত গুরুত্ব: বাংলা বানান শেখার ক্ষেত্রে ‘হৃ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ যুক্তরূপ, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের যুক্তবর্ণ ও স্বরধ্বনির সম্পর্ক বুঝতে সাহায্য করে।
-
অর্থগত দিক: অনেক সময় এই যুক্তরূপ শব্দের অর্থেও প্রভাব ফেলে। যেমন ‘হৃদয়’ শব্দে ‘হৃ’ ধাতু থেকে উৎপত্তি, যার অর্থ ‘গ্রহণ করা’ বা ‘ধারণ করা’।