কোন বিজ্ঞান মানুষের দৈহিক বিষয় নিয়ে অধ্যয়ন করে?
A
নৃবিজ্ঞান
B
মনোবিজ্ঞান
C
সমাজবিজ্ঞান
D
রাষ্ট্রবিজ্ঞান
উত্তরের বিবরণ
নৃবিজ্ঞান (Anthropology) হলো এমন এক বিস্তৃত বিজ্ঞান, যা মানবজাতির উৎপত্তি, শারীরিক গঠন, সংস্কৃতি, আচরণ ও সামাজিক জীবন বিশ্লেষণ করে। এটি মানুষকে শুধু একটি জৈবিক প্রাণী হিসেবে নয়, বরং একটি সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সত্তা হিসেবেও বোঝার চেষ্টা করে।
শব্দমূল: ‘Anthropology’ শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ “Anthropos” (মানুষ) এবং “Logos” (অধ্যয়ন বা বিজ্ঞান) থেকে, অর্থাৎ নৃবিজ্ঞান মানে মানুষ সম্পর্কে বৈজ্ঞানিক অধ্যয়ন।
মূল উদ্দেশ্য: নৃবিজ্ঞান মানুষ ও মানব সমাজের বৈচিত্র্য, তাদের সংস্কৃতি, জীবনযাপন ও সাধারণ বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করে মানবসভ্যতার সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরে।
নৃবিজ্ঞানের প্রধান শাখাসমূহ হলো—
১. শারীরিক বা জৈবিক নৃবিজ্ঞান (Physical / Biological Anthropology): মানুষের শারীরিক গঠন, বংশবিন্যাস, বিবর্তন ও জেনেটিক বৈচিত্র্য নিয়ে গবেষণা করে। এটি মানুষ কীভাবে প্রাণিজগতের অন্যান্য প্রজাতি থেকে বিবর্তিত হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করে।
২. সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান (Cultural Anthropology): মানুষের সংস্কৃতি, বিশ্বাস, রীতিনীতি, মূল্যবোধ, সামাজিক সংগঠন ও জীবনধারা অধ্যয়ন করে। এর লক্ষ্য হলো বিভিন্ন সমাজের সংস্কৃতিগত পার্থক্য ও মিল খুঁজে বের করা।
৩. আঞ্চলিক নৃবিজ্ঞান / জাতিতত্ত্ব (Ethnology / Ethnography): নির্দিষ্ট নৃগোষ্ঠীর জীবনযাপন, আবাসস্থল, পেশা, সামাজিক কাঠামো ও আচার-অনুষ্ঠান বিশ্লেষণ করে। এটি মাঠভিত্তিক গবেষণার (Fieldwork) মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে।
৪. ভাষাগত নৃবিজ্ঞান (Linguistic Anthropology): ভাষা ও সমাজের সম্পর্ক বিশ্লেষণ করে। এটি খোঁজে কিভাবে ভাষা সংস্কৃতি, পরিচয় ও সামাজিক যোগাযোগ গঠনে ভূমিকা রাখে।
সারসংক্ষেপে, নৃবিজ্ঞান এমন একটি বিজ্ঞান, যা মানব অস্তিত্বের পূর্ণাঙ্গ রূপ—জৈবিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক—সব দিককে একত্রে বিশ্লেষণ করে মানবসভ্যতার বিকাশ ও বৈচিত্র্যকে বুঝতে সাহায্য করে।

0
Updated: 1 day ago
স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামগুলো ছিল-
Created: 2 days ago
A
নিশ্চল
B
উন্নত
C
গতিশীল
D
অনুন্নত
প্রাচীন ভারতের স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামব্যবস্থা ছিল মূলত এক ধরনের বন্ধ সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো, যেখানে প্রতিটি গ্রাম নিজস্ব প্রয়োজন মেটাতো বাইরের সহায়তা ছাড়াই। এই কারণে গ্রামগুলোকে নিশ্চল বা স্থবির সমাজ হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাদের জীবনযাপন, উৎপাদনব্যবস্থা ও সামাজিক সম্পর্ক প্রজন্মের পর প্রজন্ম অপরিবর্তিত থাকত।
প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—
-
পরিবর্তনের অভাব: গ্রামের অর্থনীতি, সামাজিক কাঠামো ও জীবনধারা দীর্ঘদিন ধরে একই রকম থাকত। নতুন কোনো উদ্ভাবন, প্রযুক্তি বা সামাজিক রূপান্তর খুব ধীরে ঘটত।
-
জাতিভেদ ও পেশার উত্তরাধিকার: মানুষ সাধারণত তার পূর্বপুরুষের পেশাই গ্রহণ করত, যেমন— কামার, কুমোর, তাঁতি, চাষি ইত্যাদি। এতে সমাজে পেশা পরিবর্তনের সুযোগ প্রায় ছিল না, ফলে সামাজিক গতিশীলতা হ্রাস পায়।
-
বহির্জগত থেকে বিচ্ছিন্নতা: শহর বা বাইরের বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সীমিত। এর ফলে নতুন ধারণা, শিক্ষা, সংস্কৃতি বা প্রযুক্তি গ্রামের জীবনে প্রবেশ করতে পারত না।
-
অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা: প্রতিটি গ্রাম নিজের খাদ্য, পোশাক, সরঞ্জাম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদন করত। বাইরের বাজারের উপর নির্ভরতা ছিল খুব কম।
-
সামাজিক স্থিতিশীলতা: গ্রামীণ জীবনে শৃঙ্খলা বজায় থাকলেও পরিবর্তনের অভাব সমাজকে স্থবির করে তুলেছিল।
তবে কিছু সমাজবিজ্ঞানী মনে করেন, এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা গ্রামীণ উন্নতির এক রূপ, কারণ এটি স্থানীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে স্থিতিশীল জীবনযাপন নিশ্চিত করেছিল।

0
Updated: 2 days ago
"আদিম সমাজ ছিল হয় ভুরিভোজ না হয় উপবাস” উক্তিটি কার?
Created: 2 days ago
A
ডুর্খীম
B
স্পেন্সার
C
মর্গান
D
টেইলর
“আদিম সমাজ ছিল হয় ভুরিভোজ না হয় উপবাস” — এই উক্তিটি মূলত ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ মিনু বাসায়নির (Minu Basayni) সঙ্গে সম্পর্কিত, যিনি আদিম সমাজের জীবনযাত্রা ও খাদ্যসংস্কৃতির অনিশ্চয়তাকে বোঝাতে এ মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে আদিম সমাজে খাদ্যসংগ্রহ ছিল সম্পূর্ণভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও শিকারনির্ভর, ফলে একদিন প্রচুর খাবার মিললেও অন্যদিন তা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকত।
তবে যদি অপশন তালিকায় মিনু বাসায়নির নাম না থাকে, তাহলে এডওয়ার্ড বি. টেইলর (Edward B. Tylor)-কে গ্রহণযোগ্য ধরা যায়।
-
কারণ: টেইলর তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Primitive Culture (১৮৭১)-এ আদিম সমাজের জীবন, বিশ্বাস, খাদ্যসংগ্রহ ও সংস্কৃতির প্রাথমিক রূপ বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
-
তাঁর মতে, আদিম সমাজে মানুষ শিকার ও সংগ্রহের ওপর নির্ভরশীল ছিল, তাই তাদের জীবনে অভাব ও প্রাচুর্য—এই দুই চরম অবস্থা বারবার দেখা দিত।
-
এই প্রেক্ষিতে “ভুরিভোজ ও উপবাসের সমাজ” কথাটি আদিম জীবনের বাস্তব চিত্র হিসেবেই প্রতিফলিত হয়।
অতএব, উক্তিটির মূল রচয়িতা মিনু বাসায়নি হলেও, যদি তাঁর নাম বিকল্পে না থাকে, তবে টেইলরই সবচেয়ে উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য উত্তর হিসেবে বিবেচিত হবে।

0
Updated: 2 days ago
বাংলাদেশের শহরে প্রধান সমস্যা কী?
Created: 1 day ago
A
বেকারত্ব
B
জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধি ও বস্তি
C
নদীর অভাব
D
পরিবহন ব্যবস্থা
বাংলাদেশের শহরগুলো দ্রুত নগরায়ণ ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে নানা ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। নগর জীবনের মৌলিক সুবিধা সীমিত হওয়ায় এই সংকট দিন দিন আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
প্রধান সমস্যাগুলো হলো—
১। জনসংখ্যার চাপ ও বসতি ঘনত্ব: শহরে জনসংখ্যা অত্যধিক হওয়ায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে মানুষের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। ফলে বসবাসের স্থান সংকুচিত হচ্ছে এবং জীবনযাত্রার মান কমে যাচ্ছে।
২। বাসস্থানের অভাব ও বস্তি বৃদ্ধি: দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত বাসস্থান না থাকায় তারা ঝুঁকিপূর্ণ বস্তিতে বসবাস করছে, যেখানে পানি, পয়োনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা অপ্রতুল।
৩। অপরিকল্পিত নগরায়ণ (Unplanned Urbanization): শহরের সম্প্রসারণ পরিকল্পনাহীনভাবে হচ্ছে। ফলে রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ, ড্রেনেজ ও পরিবহন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
৪। যানজট সমস্যা: রাস্তা ও যানবাহনের সংখ্যা অনুপাতে না বাড়ায় দৈনন্দিন চলাচলে সময় ও জ্বালানির অপচয় হচ্ছে।
৫। স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকট: অনেক এলাকায় পর্যাপ্ত পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্য নিষ্পত্তি ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
এসব সমস্যা সমাধানের জন্য পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, আবাসন উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো উন্নয়ন অপরিহার্য।

0
Updated: 1 day ago