কোন প্রত্যয়টি জনগণের দ্বারা বৈধ ক্ষতাকে প্রকাশ করে?
A
বলপ্রয়োগ
B
কর্তৃত্ব
C
জাতিয়তাবাদ
D
স্বৈরতন্ত্র
উত্তরের বিবরণ
কর্তৃত্ব (Authority) হলো এমন একটি বৈধ ক্ষমতা, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অন্যদের আচরণ নিয়ন্ত্রণ, নির্দেশ বা প্রভাবিত করতে পারে। এটি সমাজে আইনগত, নৈতিক বা সামাজিকভাবে স্বীকৃত ক্ষমতা হিসেবে বিবেচিত হয় এবং সামাজিক শৃঙ্খলা ও সংগঠন বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) কর্তৃত্বকে তিনটি প্রধান ধরনে ভাগ করেছেন—
১। ধার্মিক বা প্রথাগত কর্তৃত্ব (Traditional Authority): এই ধরনের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় প্রথা, ঐতিহ্য ও সামাজিক রীতিনীতির ভিত্তিতে। মানুষ এই কর্তৃত্ব মেনে চলে কারণ এটি দীর্ঘদিন ধরে সমাজে গৃহীত ও সম্মানিত।
-
উদাহরণ: রাজা, উপজাতীয় প্রধান, কিংবা পরিবারের পিতা-মাতার কর্তৃত্ব।
২। বৈধ বা যুক্তিবিদ্যাগত কর্তৃত্ব (Legal-Rational Authority): এই কর্তৃত্ব আইন, সংবিধান ও আনুষ্ঠানিক নিয়মের ভিত্তিতে গঠিত। ব্যক্তি নয়, বরং পদ বা দায়িত্বের ভিত্তিতেই এই ক্ষমতা কার্যকর হয়। -
উদাহরণ: রাষ্ট্রপতি, সরকারি কর্মকর্তা বা বিচারক।
৩। চরিত্রগত বা ব্যক্তিগত কর্তৃত্ব (Charismatic Authority): এই কর্তৃত্ব আসে ব্যক্তির অসাধারণ গুণাবলি, নেতৃত্বগুণ, ব্যক্তিত্ব বা প্রভাব থেকে। মানুষ স্বেচ্ছায় তাঁকে অনুসরণ করে কারণ তাঁর মধ্যে অনুপ্রেরণাদায়ক বৈশিষ্ট্য থাকে। -
উদাহরণ: ধর্মীয় নেতা, বিপ্লবী নেতা বা জনপ্রিয় জননেতা।
বৈশিষ্ট্য: কর্তৃত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো বৈধতা (Legitimacy)—অর্থাৎ সেই ক্ষমতা সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত ও ন্যায়সঙ্গত হতে হবে। বৈধতা ছাড়া কোনো ক্ষমতা জোরপূর্বক বা দমনমূলক শাসন হিসেবে গণ্য হয়, প্রকৃত কর্তৃত্ব নয়।

0
Updated: 1 day ago
ডুর্খীম সমাজে কয় ধরনের সংহতির কথা বলেছেন?
Created: 1 day ago
A
৪
B
৩
C
২
D
৫
ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী এমিল ডুর্খেইম (Émile Durkheim, 1858–1917) সমাজে সামাজিক সংহতির প্রকৃতি ব্যাখ্যা করতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা উপস্থাপন করেন—যান্ত্রিক সংহতি (Mechanical Solidarity) ও জৈবিক সংহতি (Organic Solidarity)। তাঁর মতে, সমাজে সংহতির ধরন নির্ভর করে সমাজের গঠন, শ্রমের বিভাজন ও মানুষের পারস্পরিক সম্পর্কের ওপর।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। যান্ত্রিক সংহতি (Mechanical Solidarity):
-
এটি প্রাথমিক বা প্রাচীন সমাজে দেখা যায়, যেখানে মানুষদের মধ্যে সমতা, অভিন্ন বিশ্বাস ও মূল্যবোধ বিদ্যমান থাকে।
-
সমাজের সদস্যরা একই ধরনের কাজ, জীবনযাপন ও ধর্মীয়-নৈতিক ধারণা অনুসরণ করে।
-
ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের চেয়ে সমষ্টিগত চেতনা (Collective Conscience) বেশি শক্তিশালী থাকে।
-
উদাহরণ: প্রাচীন গ্রামীণ সমাজ, উপজাতীয় সমাজ বা শিকারি সমাজ—যেখানে সবাই প্রায় একই কাজ করে ও একইভাবে চিন্তা করে।
২. জৈবিক সংহতি (Organic Solidarity):
-
এটি আধুনিক বা শিল্পসমাজে বিদ্যমান, যেখানে মানুষের মধ্যে শ্রমবিভাজন (Division of Labour) স্পষ্টভাবে গঠিত।
-
সমাজের সদস্যরা ভিন্ন ভিন্ন পেশা, দক্ষতা ও দায়িত্বে যুক্ত থাকলেও তারা একে অপরের ওপর পারস্পরিক নির্ভরশীল।
-
এখানে সংহতি তৈরি হয় বৈচিত্র্যের মধ্যকার সহযোগিতা ও নির্ভরতার মাধ্যমে।
-
উদাহরণ: শহুরে বা শিল্প সমাজ, যেখানে শিক্ষক, চিকিৎসক, শ্রমিক, প্রকৌশলী—সবাই একে অপরের কাজের ওপর নির্ভরশীল।
সারসংক্ষেপে, ডুর্খেইম দেখিয়েছেন যে যান্ত্রিক সংহতি অভিন্নতা থেকে জন্ম নেয়, আর জৈবিক সংহতি বৈচিত্র্যের মধ্যকার নির্ভরতা থেকে গঠিত হয়—এই দুই রূপই সমাজের ঐক্য ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভিন্ন ভিন্ন যুগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

0
Updated: 1 day ago
এমিল ডুর্খীম সমাজে কয় ধরনের আত্মহত্যার কথা বলেছেন?
Created: 2 days ago
A
৩
B
৪
C
৫
D
২
ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী এমিল ডুর্খেইম আত্মহত্যাকে একটি সামাজিক ঘটনা হিসেবে বিশ্লেষণ করেন। তিনি বলেন, আত্মহত্যা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত মানসিক কারণের ফল নয়, বরং এটি সমাজের গঠন, সংহতি ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। তাঁর মতে, সামাজিক সম্পর্কের ধরন ও সমাজে ব্যক্তির অবস্থান অনুসারে আত্মহত্যা চার প্রকার হতে পারে।
এই চার ধরনের আত্মহত্যা হলো—
১। আত্মকেন্দ্রিক আত্মহত্যা (Egoistic Suicide): যখন ব্যক্তি সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন বা সামাজিক বন্ধন দুর্বল হয়ে যায়, তখন একাকিত্ব ও উদ্দেশ্যহীনতা থেকে আত্মহত্যা ঘটে।
২। পরার্থমূলক আত্মহত্যা (Altruistic Suicide): এটি ঘটে যখন ব্যক্তি সমাজ বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করে, যেমন দেশপ্রেম বা ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে আত্মবলি দেওয়া।
৩। নৈরাজ্যমূলক আত্মহত্যা (Anomic Suicide): সমাজে যখন আকস্মিক পরিবর্তন ঘটে— যেমন অর্থনৈতিক মন্দা বা সামাজিক বিশৃঙ্খলা— তখন ব্যক্তির মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়ে আত্মহত্যা ঘটতে পারে।
৪। নিয়তিবাদী আত্মহত্যা (Fatalistic Suicide): অতিরিক্ত সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বা দমনমূলক পরিবেশে যখন ব্যক্তির স্বাধীনতা সম্পূর্ণভাবে সীমিত হয়ে যায়, তখন হতাশা থেকে আত্মহত্যা সংঘটিত হয়।
ডুর্খেইমের এই বিশ্লেষণ সমাজবিজ্ঞানে আত্মহত্যার সামাজিক কারণ বুঝতে একটি মৌলিক তাত্ত্বিক ভিত্তি প্রদান করেছে।

0
Updated: 2 days ago
ক্ষমতার মাপকাঠিতে পরিবার কয় ধরনের?
Created: 1 day ago
A
৩
B
২
C
৪
D
৬
পরিবার সমাজের সবচেয়ে প্রাচীন ও মৌলিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক ও কর্তৃত্বের ভিত্তিতে ক্ষমতার বণ্টন ঘটে। এই ক্ষমতার মাপকাঠি অনুযায়ী পরিবারকে মূলত দুই ধরনের ভাগে বিভক্ত করা যায়।
তথ্যগুলো হলো:
-
পিতৃপ্রধান পরিবার: এখানে পরিবারের প্রধান কর্তৃত্ব থাকে পুরুষ বা পিতার হাতে। পরিবারের সিদ্ধান্ত, সম্পত্তি বণ্টন ও সামাজিক দিকনির্দেশনা তিনি নির্ধারণ করেন। সমাজে এই ধরনের পরিবারকে পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলা হয়, যা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক সমাজে প্রচলিত।
-
মাতৃপ্রধান পরিবার: এ ক্ষেত্রে পরিবারের নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকে মাতা বা নারী সদস্যের হাতে। উত্তরাধিকার, সম্পত্তি ও পারিবারিক সিদ্ধান্তে নারীর ভূমিকা প্রধান। এই ধরনের পরিবার বিশেষত কিছু আদিবাসী সমাজে যেমন—গারো বা খাসিয়া সমাজে দেখা যায়।
এই দুই ধরণের পরিবারের মাধ্যমে সমাজে ক্ষমতা, দায়িত্ব ও ভূমিকার ভারসাম্য কেমনভাবে গঠিত হয় তা নির্ধারণ করা যায়।

0
Updated: 1 day ago