সমাজে পরিবারের প্রধান কাজ কী?
A
অর্থনৈতিক উৎপাদন
B
গৃহস্থালী ব্যবস্থাপনা
C
শিশুর লালন-পালন ও সাংস্কৃতিক ধারাবাহিকতা
D
শিক্ষাদান
উত্তরের বিবরণ
পরিবার সমাজের মৌলিক ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, যার মাধ্যমে সমাজ টিকে থাকে, নতুন প্রজন্ম গড়ে ওঠে এবং সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়। পরিবারের কাজ শুধু সদস্যদের একত্রে রাখাই নয়, বরং সামাজিক ও মানসিক বিকাশেও এটি অপরিহার্য ভূমিকা পালন করে।
পরিবারের প্রধান কাজসমূহ হলো—
১। সন্তান জন্মদান ও লালনপালন: পরিবার নতুন প্রজন্মের জন্ম দেয় এবং শিশুদের লালনপালনের মাধ্যমে সমাজে নতুন সদস্য যুক্ত করে। এর মাধ্যমে মানবজাতির ধারাবাহিকতা ও সমাজের স্থায়িত্ব বজায় থাকে।
২। সংস্কার ও সামাজিকীকরণ (Socialization): পরিবারই প্রথম সামাজিক বিদ্যালয়, যেখানে শিশু ভাষা, আচরণ, মূল্যবোধ ও সামাজিক নিয়মনীতি শেখে। এর মাধ্যমেই তার মধ্যে সামাজিক দক্ষতা, নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ গড়ে ওঠে।
৩। সুরক্ষা ও নিরাপত্তা (Protection & Security): পরিবার সদস্যদের শারীরিক, মানসিক ও অর্থনৈতিক সুরক্ষা প্রদান করে। বিশেষ করে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ সদস্যদের যত্ন ও সহায়তা নিশ্চিত করে।
৪। মানসিক সমর্থন ও ভালোবাসা: পরিবার সদস্যদের মধ্যে আবেগীয় বন্ধন, ভালোবাসা ও সহানুভূতি তৈরি করে, যা মানসিক স্থিতি বজায় রাখতে সহায়তা করে।
৫। অর্থনৈতিক সহায়তা: পরিবারের মাধ্যমে সদস্যরা একে অপরকে আর্থিকভাবে সহায়তা করে, শ্রম ও সম্পদ ভাগাভাগি করে জীবনযাত্রা পরিচালনা করে।
সারসংক্ষেপে, পরিবার সমাজের ভিত্তি, যা জন্ম, শিক্ষা, নিরাপত্তা ও ভালোবাসার কেন্দ্র হিসেবে মানব জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

0
Updated: 1 day ago
ইংরেজ শাসনামলে মধ্যবিত্ত শ্রেণি সৃষ্টিতে কোন বিষয়টি ভূমিকা রেখেছিল?
Created: 1 day ago
A
ফারসি ভাষা
B
উর্দু ভাষা
C
হিন্দি ভাষা
D
ইংরেজী ভাষা
ইংরেজ শাসনামলে বাংলাদেশের সামাজিক কাঠামোয় একটি বড় পরিবর্তন আসে, যার মধ্যে অন্যতম ছিল মধ্যবিত্ত শ্রেণির উদ্ভব। এই শ্রেণির সৃষ্টি মূলত ইংরেজি ভাষার প্রবর্তন ও আধুনিক শিক্ষার বিস্তার-এর ফল। ব্রিটিশদের প্রবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থা সমাজে এক নতুন বুদ্ধিজীবী ও পেশাজীবী শ্রেণির জন্ম দেয়, যারা দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক পরিবর্তনে গভীর প্রভাব ফেলে।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। আধুনিক শিক্ষার প্রবর্তন: ব্রিটিশরা প্রশাসনিক দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে। এর ফলে স্থানীয় জনগণ ইউরোপীয় জ্ঞান, বিজ্ঞান ও সাহিত্য সম্পর্কে ধারণা পায় এবং সমাজে শিক্ষিত শ্রেণির উদ্ভব ঘটে।
২। ইংরেজি ভাষার ভূমিকা: ইংরেজি ভাষা কেবল শিক্ষার মাধ্যমই নয়, বরং এটি ছিল সরকারি চাকরি ও আধুনিক পেশায় প্রবেশের চাবিকাঠি। ফলে যারা ইংরেজি শিক্ষা অর্জন করতে পেরেছিল, তারা সমাজে বিশেষ মর্যাদা ও সুবিধা লাভ করে।
৩। নতুন পেশার বিকাশ: এই শিক্ষিত শ্রেণি ধীরে ধীরে প্রশাসন, আইন, শিক্ষকতা, সাংবাদিকতা ও চিকিৎসাবিদ্যার মতো পেশায় যুক্ত হয়। এর মাধ্যমে তারা একটি নতুন পেশাভিত্তিক মধ্যবিত্ত শ্রেণি গঠন করে।
৪। সামাজিক পরিবর্তন: এই শ্রেণি ছিল আধুনিক চিন্তাধারার বাহক। তারা জাতীয়তাবাদ, সংস্কার আন্দোলন ও সামাজিক পুনর্জাগরণে নেতৃত্ব দেয়, যা পরবর্তীতে রাজনৈতিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।
সারসংক্ষেপে, ইংরেজি ভাষা ও আধুনিক শিক্ষার বিস্তার ব্রিটিশ আমলে শুধু প্রশাসনিক প্রয়োজনে নয়, বরং একটি নতুন মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সমাজগোষ্ঠী গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে, যা আধুনিক বাংলার সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় তৈরি করে।

0
Updated: 1 day ago
গারোদের উর্বরতা দেবতার নাম কি?
Created: 1 day ago
A
সুসাইন
B
পোয়ারা
C
কালসেম
D
সালজং
গারো জাতির ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্য তাদের সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা প্রকৃতি ও বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। তাদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মকে সাংসারেক বলা হয়, যা মূলত প্রকৃতিনির্ভর এক ধর্মব্যবস্থা।
তথ্যগুলো হলো:
-
সাংসারেক ধর্ম গারোদের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ধর্ম, যা প্রকৃতির উপাসনা ও আত্মিক শক্তিতে বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে।
-
এ ধর্মে বহু দেবতার পূজা করা হয়, যারা জীবনের বিভিন্ন দিক যেমন—সূর্য, বৃষ্টি, ফসল, পাহাড় ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত।
-
তাদের প্রধান দেবতা হলেন টাটারা রাবুগা, যিনি সর্বশক্তিমান ও সৃষ্টির অধিপতি বলে বিশ্বাস করা হয়।
-
এছাড়া হর সালজং নামের এক দেবতা আছেন, যিনি সূর্যদেবতা হিসেবে পূজিত হন এবং আলো, শক্তি ও জীবনের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
-
সাংসারেক ধর্মে দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, নাচ-গান ও উৎসবের মাধ্যমে তাদের সন্তুষ্ট করাই ধর্মীয় আচারবিধির মূল অংশ।

0
Updated: 1 day ago
ব্যক্তির মর্যাদা বর্তমানের তুলনায় উর্ধ্ব হলে তাকে কোন গতিশীলতা বলে?
Created: 2 days ago
A
ঊর্ধ্বগামী
B
উল্লম্বী
C
আনুভূমিক
D
সমান্তরাল
যখন কোনো ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান বা মর্যাদা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পায়, তখন সমাজবিজ্ঞানে একে বলা হয় ঊর্ধ্ব সামাজিক গতিশীলতা (Upward Social Mobility)। এটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি ইতিবাচক রূপ, যেখানে ব্যক্তি শিক্ষা, পেশা বা অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে সমাজে উচ্চতর অবস্থানে পৌঁছায়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। সামাজিক গতিশীলতা (Social Mobility):
-
সমাজে ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর সামাজিক অবস্থান পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকে সামাজিক গতিশীলতা বলা হয়।
-
এটি সমাজের উন্মুক্ততা, পরিবর্তন ও অগ্রগতির সূচক।
২। প্রধান দুই প্রকার:
-
আনুভূমিক সামাজিক গতিশীলতা (Horizontal Mobility): কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা অপরিবর্তিত থাকে, কিন্তু অবস্থান বা পেশা পরিবর্তিত হয়। যেমন—একজন শিক্ষক অন্য স্কুলে বদলি হওয়া।
-
উল্লম্বী সামাজিক গতিশীলতা (Vertical Mobility): সামাজিক মর্যাদায় পরিবর্তন ঘটে। এটি দুইভাবে হতে পারে—
-
ঊর্ধ্বমুখী গতিশীলতা (Upward Mobility): সামাজিক অবস্থান উন্নত হয়, যেমন—একজন শ্রমিক কর্মকর্তা হওয়া।
-
নিম্নমুখী গতিশীলতা (Downward Mobility): সামাজিক মর্যাদা কমে যায়, যেমন—একজন ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে সাধারণ শ্রমিক হওয়া।
-
৩। সঠিক উত্তর:
-
প্রশ্নে বলা হয়েছে, ব্যক্তির মর্যাদা “বর্তমানের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে”, তাই এটি উল্লম্বী সামাজিক গতিশীলতার ঊর্ধ্বমুখী রূপ (Upward Vertical Mobility)।
অতএব, সমাজবিজ্ঞানে যখন কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, সেটিকে ঊর্ধ্ব সামাজিক গতিশীলতা বলা হয়, যা সমাজে অগ্রগতি ও সাফল্যের প্রতীক।

0
Updated: 2 days ago