'সম্পত্তি হচ্ছে চুরি'- উক্তিটি কার?
A
ম্যাক্র
B
ওয়েভার
C
মর্গান
D
রুশো
উত্তরের বিবরণ
“Property is theft” উক্তিটি মূলত ফরাসি দার্শনিক ও সমাজতাত্ত্বিক পিয়ের-জোসেফ প্রুধোঁ (Pierre-Joseph Proudhon, 1809–1865)-এর। তিনি এই উক্তির মাধ্যমে ব্যক্তিগত সম্পত্তি ব্যবস্থার সমালোচনা করেন এবং বলেন, সম্পত্তি মূলত শ্রমজীবী মানুষের শোষণের ফল।
তবে যদি প্রদত্ত বিকল্পগুলোর মধ্যে কার্ল মার্কস (Karl Marx) থাকেন, তাহলে তাঁকেই বেছে নেওয়া যৌক্তিক। কারণ যদিও মার্কস সরাসরি এই উক্তিটি করেননি, তবুও তাঁর উদ্বৃত্ত মূল্যতত্ত্ব (Theory of Surplus Value) অনুযায়ী, পুঁজিপতি বা মালিকরা শ্রমিকদের শ্রমের প্রকৃত মূল্য না দিয়ে উদ্বৃত্ত মূল্য আত্মসাৎ করেন, অর্থাৎ শ্রমিকদের শ্রমের একটি অংশ “চুরি” করেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে প্রুধোঁর “Property is theft” ধারণাটি মার্কসের অর্থনৈতিক বিশ্লেষণের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত।
অতএব, সঠিক ঐতিহাসিক উক্তিটি প্রুধোঁর হলেও, মার্কসের তত্ত্বগত ব্যাখ্যা একই ধারণাকে অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে আরও গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত করে।

0
Updated: 1 day ago
ভারতে মুসলিম জাগরনের অগ্রদূত কে ছিলেন?
Created: 1 day ago
A
স্যার সৈয়দ আহমদ
B
স্যার সলিমুল্লাহ
C
মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ
D
নওয়াব আবদুল গনি
ভারতে মুসলিম সমাজের আধুনিক জাগরণের পথিকৃৎ ছিলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান (Sir Syed Ahmad Khan, 1817–1898)। তিনি মুসলমানদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা, বিজ্ঞানমনস্কতা ও যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনার বিস্তার ঘটিয়ে একটি নতুন সমাজচেতনার সূচনা করেন। তাঁর প্রচেষ্টার ফলেই উনিশ শতকে মুসলিম সমাজে শিক্ষাগত ও সামাজিক পুনর্জাগরণের সূচনা ঘটে।
মূল তথ্যগুলো হলো—
১। আলীগড় আন্দোলনের সূচনা: স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮৭৫ সালে আলীগড় আন্দোলন (Aligarh Movement) শুরু করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করা এবং তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।
২। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা: তাঁর উদ্যোগে ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মোহাম্মদান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ (Mohammedan Anglo-Oriental College), যা পরবর্তীতে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (Aligarh Muslim University) নামে বিকশিত হয়।
৩। আধুনিক শিক্ষা ও যুক্তিবাদ: তিনি মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়াও বিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন ও ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরেন, যাতে মুসলিম সমাজ আধুনিক বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।
৪। সামাজিক প্রভাব: আলীগড় আন্দোলন মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা, সংস্কার ও আত্মচেতনার বিকাশ ঘটায় এবং পরবর্তীকালে ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সংগঠন গঠনে (যেমন মুসলিম লীগ) প্রভাব ফেলে।
৫। ঐতিহাসিক গুরুত্ব: এই আন্দোলনের ফলে মুসলমান সমাজে আধুনিকীকরণ, জাতীয় চেতনা ও আত্মনির্ভরতা-এর ধারণা শক্তিশালী হয়, যা পরবর্তী রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের ভিত্তি স্থাপন করে।
সুতরাং, স্যার সৈয়দ আহমদ খান ও তাঁর আলীগড় আন্দোলনই ছিল ভারতে মুসলিম জাগরণের মূল চালিকা শক্তি, যা মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষা ও চিন্তার ধারায় যুক্ত করে নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

0
Updated: 1 day ago
বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির প্রধান খাত কোনটি?
Created: 1 day ago
A
মৎস্য চাষ
B
কৃষি
C
শিল্প
D
বাণিজ্য
বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতি মূলত কৃষিনির্ভর, যেখানে অধিকাংশ মানুষের জীবন ও জীবিকা সরাসরি কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত। কৃষিই গ্রামীণ সমাজের প্রধান আয়, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উৎস।
মূল দিকগুলো হলো—
১। কৃষি প্রধান খাত: বাংলাদেশের গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষ কৃষিকাজে নিয়োজিত, যা জাতীয় অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কৃষিই গ্রামীণ আয়ের প্রধান ভিত্তি এবং গ্রামীণ জীবনধারার কেন্দ্রবিন্দু।
২। প্রধান কৃষিপণ্য: গ্রামের কৃষকরা মূলত ধান, গম, পাট, পান, তামাক, ডাল, সবজি, আখ ও ফলমূল উৎপাদন করে। এসব ফসল দেশের খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রপ্তানি আয়েও ভূমিকা রাখে।
৩। মৎস্য ও পশুপালন: কৃষির পাশাপাশি মৎস্যচাষ, গবাদি পশুপালন ও হাঁস-মুরগি পালন গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। বিশেষ করে পুকুরভিত্তিক মাছচাষ অনেক পরিবারের জন্য বাড়তি আয়ের উৎস হয়ে উঠেছে।
৪। শ্রম ও কর্মসংস্থান: কৃষিকাজে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষ যুক্ত, যেমন—চাষি, কৃষি শ্রমিক, বাজার বিক্রেতা, পরিবহনকারী প্রভৃতি।
৫। অর্থনৈতিক তাৎপর্য: কৃষি খাত শুধু খাদ্য সরবরাহই করে না, বরং এটি দেশের রপ্তানি পণ্য, কাঁচামাল ও গ্রামীণ শিল্পের ভিত্তি হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সারসংক্ষেপে, বাংলাদেশের গ্রামীণ অর্থনীতির প্রাণ হলো কৃষি, যা শুধু জীবিকার উৎস নয়, বরং জাতীয় উন্নয়ন ও সামাজিক স্থিতিশীলতার অন্যতম ভিত্তি।

0
Updated: 1 day ago
সাতদিন্যা কোন উপজাতির মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে করা হয়?
Created: 1 day ago
A
মারমা
B
গারো
C
মনিপুরি
D
চাকমা
চাকমা সমাজে মৃত্যুর পরবর্তী আচার-অনুষ্ঠান তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কিত। এই সমাজে মৃত্যুকে জীবনের সমাপ্তি নয়, বরং আত্মার অন্য জগতে যাত্রা হিসেবে দেখা হয়। তাই মৃত ব্যক্তির আত্মার শান্তি ও সম্মানের জন্য বিভিন্ন আচার পালিত হয়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। দাহ প্রথা (Cremation):
-
চাকমা সমাজে মৃতদেহ পোড়ানো বা দাহ করা হয়, যা আত্মাকে দেহ থেকে মুক্ত করার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
-
এই প্রথা বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রভাব ও উপজাতীয় বিশ্বাসের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে।
২। সাত দিন্যা অনুষ্ঠান (Sat Dinya):
-
সাত বছরের কম বয়সী শিশু মারা গেলে আত্মার শান্তির জন্য “সাত দিন্যা” নামের বিশেষ অনুষ্ঠান পালিত হয়।
-
এটি আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং তার শান্তি কামনার এক সামাজিক ও ধর্মীয় আয়োজন।
৩। উৎসর্গ বা নিবেদন:
-
অনুষ্ঠানে আত্মার উদ্দেশ্যে খাদ্য, মদ, আতর (সুগন্ধি), কাপড় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী উৎসর্গ করা হয়।
-
বিশ্বাস করা হয়, এই সামগ্রী আত্মাকে পরবর্তী জগতে শান্তি ও পরিতৃপ্তি প্রদান করে।
৪. ধর্মীয় তাৎপর্য:
-
এই প্রথাগুলো চাকমা সমাজে বৌদ্ধ ধর্ম, আধ্যাত্মিকতা ও পূর্বপুরুষ পূজার মিশ্র প্রভাব বহন করে।
-
সমাজে মৃত্যুকে ভয় নয়, বরং একটি স্বাভাবিক ও সম্মানজনক ঘটনারূপে দেখা হয়।
অতএব, চাকমা সমাজের দাহ প্রথা ও সাত দিন্যা অনুষ্ঠান তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস, আত্মার অমরত্ব ও সমাজের সাংস্কৃতিক ঐক্যের এক অনন্য প্রতিফলন।

0
Updated: 1 day ago