দলগত বিবাহ কোন ধরনের সমাজে ছিল বলে মর্গান বলেছেন?
A
আদিম সমাজ
B
পশুপালন সমাজ
C
প্রস্তর সমাজ
D
দাস সমাজ
উত্তরের বিবরণ
লুইস হেনরি মর্গান তাঁর সমাজবিকাশ তত্ত্বে মানব সমাজের বিবর্তনকে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করেছেন, যেখানে প্রতিটি ধাপ নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত। তাঁর মতে, দলগত বিবাহ (Group Marriage) বিদ্যমান ছিল বর্বর সমাজে (Barbarian Society), যা মূলত পশুপালনের যুগের সঙ্গে সম্পর্কিত।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। মর্গানের সমাজবিন্যাস: তিনি মানব সমাজকে তিনটি প্রধান পর্যায়ে ভাগ করেন—
-
অসভ্য সমাজ (Savage Society) – শিকার ও আহার সংগ্রহ নির্ভর জীবন।
-
বর্বর সমাজ (Barbarian Society) – পশুপালন ও প্রাথমিক কৃষিনির্ভর সমাজ।
-
সভ্য সমাজ (Civilized Society) – উন্নত কৃষি, শিল্প ও লিখিত ভাষার বিকাশ।
২। দলগত বিবাহের ধারণা: বর্বর সমাজে মর্গান লক্ষ্য করেন যে, বিবাহ একক ছিল না, বরং একটি গোষ্ঠীর নারী ও পুরুষদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপিত হতো। এটি ছিল পরিবারব্যবস্থার প্রাথমিক রূপ, যা পরবর্তীতে একক বিবাহে (Monogamy) পরিণত হয়।
৩। পশুপালন যুগে অবস্থান: এই বর্বর সমাজ যুগটি মূলত পশুপালন ও প্রাথমিক কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক পর্যায়, যেখানে মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে, কিন্তু সামাজিক কাঠামো তখনো সুসংগঠিত হয়নি।
৪। উপসংহার: সুতরাং, মর্গানের মতে, দলগত বিবাহের প্রচলন ছিল বর্বর সমাজে, আর এই সমাজ যুগটি ইতিহাসে পশুপালন সমাজের সঙ্গে সম্পর্কিত।

0
Updated: 1 day ago
'সমাজ পরিবর্তিত হয় সরল থেকে জটিল অবস্থার দিকে' উক্তিটি কার?
Created: 1 day ago
A
ডারডিইন
B
স্পেন্সার
C
মার্টন
D
মর্গান
হার্বার্ট স্পেন্সার (Herbert Spencer) সমাজকে একটি জীবন্ত জৈবিক সত্তা (Social Organism) হিসেবে বিবেচনা করেন এবং তাঁর সামাজিক বিবর্তন তত্ত্ব (Social Evolution Theory)-এর মাধ্যমে সমাজের বিকাশকে ব্যাখ্যা করেন। তাঁর মতে, সমাজ জীবের মতোই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধি, বিকাশ ও জটিলীকরণের মধ্য দিয়ে পরিবর্তিত হয়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। সমাজ জীবের মতো বিকশিত হয়: সমাজকে স্পেন্সার একটি জীবন্ত অর্গানিজম হিসেবে দেখেছেন, যেখানে প্রতিটি অংশ একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং নির্ভরশীল। যেমন জীবের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সমন্বয়ে জীবনধারণ সম্ভব, তেমনি সমাজেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একত্রে সমাজের স্থিতি বজায় রাখে।
২। সরল থেকে জটিল বিকাশ:
-
প্রাথমিক সমাজ: ক্ষুদ্র পরিসরের, সীমিত সম্পর্ক ও সহজ কাঠামো নিয়ে গঠিত। সামাজিক ভূমিকা ও প্রতিষ্ঠান ছিল সীমিত ও অপরিকল্পিত।
-
উন্নত সমাজ: বৃহৎ পরিসরের, বৈচিত্র্যময় ও জটিল কাঠামোসম্পন্ন, যেখানে শিক্ষা, প্রশাসন, অর্থনীতি, ধর্ম, ও রাজনীতি—সব প্রতিষ্ঠান উন্নতভাবে সংগঠিত।
৩। বিবর্তনের কারণ: সমাজে পরিবর্তন ঘটে মানুষের শিক্ষার বিস্তার, প্রযুক্তির উন্নতি এবং সংগঠন ও প্রশাসনিক কাঠামোর বিকাশের ফলে।
-
এই উপাদানগুলো সমাজকে ধীরে ধীরে সরল অবস্থা থেকে জটিল রূপে উন্নীত করে।
৪। ক্রমবিকাশের ধারণা: স্পেন্সার সমাজ পরিবর্তনকে স্বাভাবিক, ধীরগতির ও ধারাবাহিক প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, সামাজিক অগ্রগতি জোরপূর্বক নয়, বরং প্রাকৃতিক বিবর্তনের মাধ্যমে ঘটে।
অতএব, স্পেন্সারের মতে সমাজ একটি জীবন্ত ও গতিশীল সত্তা, যা শিক্ষা, প্রযুক্তি ও সংগঠনের বিকাশের প্রভাবে ক্রমে সরল থেকে জটিল কাঠামোতে রূপান্তরিত হয়।

0
Updated: 1 day ago
ভারতীয় সমাজে কয় ধরনের বর্ণ প্রথা ছিল?
Created: 1 day ago
A
২
B
৩
C
৪
D
৬
প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ভারতীয় সমাজে বর্ণ প্রথা (Varna System) ছিল সামাজিক সংগঠন ও শ্রেণিবিন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা, যা মানুষের পেশা, জন্ম ও সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী বিভক্ত ছিল। এই প্রথা মূলত ধর্মীয় বিশ্বাস ও সামাজিক কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে এবং সমাজে দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করত।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। ব্রাহ্মণ (Brahmin):
-
সমাজের সর্বোচ্চ শ্রেণি হিসেবে ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক দায়িত্ব পালন করত।
-
এরা পুরোহিত, শিক্ষক, আচার্য ও জ্ঞানচর্চাকারী ছিলেন।
-
সমাজে নৈতিকতা, আচার-বিচার ও ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রচারে ভূমিকা রাখত।
২। ক্ষত্রিয় (Kshatriya):
-
সমাজের শাসন, প্রশাসন ও যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব এদের ওপর ন্যস্ত ছিল।
-
রাজা, সেনাপতি, সৈনিক ও যোদ্ধা এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
-
এরা সমাজে নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও শৃঙ্খলা রক্ষা করত।
৩। বৈশ্য (Vaishya):
-
এরা সমাজের অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করত।
-
কৃষি, বাণিজ্য, পশুপালন ও কারুশিল্প এদের প্রধান পেশা ছিল।
-
বৈশ্য শ্রেণি সমাজে অর্থনৈতিক স্থিতি ও উৎপাদন ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা করত।
৪। শূদ্র (Shudra):
-
সমাজের শ্রমনির্ভর শ্রেণি হিসেবে শ্রম ও সেবামূলক কাজ করত।
-
কৃষি, নির্মাণ, কারিগরি কাজ ও গৃহপরিচর্যা ছিল তাদের মূল পেশা।
-
সামাজিক মর্যাদায় এদের অবস্থান ছিল নিচু, এবং প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হতো।
অতএব, প্রাচীন ভারতের বর্ণ প্রথা সমাজে দায়িত্বের বিভাজন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করলেও পরবর্তীকালে এটি সামাজিক বৈষম্য ও অসাম্যের প্রতীকে পরিণত হয়, যা সমাজে স্থবিরতা ও বিভাজন সৃষ্টি করে।

0
Updated: 1 day ago
ভৌগলিকভাবে সকল নরগোষ্ঠীকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
৮
B
৭
C
৯
D
৬
আধুনিক ক্লাসিকাল অ্যানথ্রোপোলজি বা Modern Ethnology / Human Geography অনুযায়ী বিশ্বের মানুষকে ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক ভিত্তিতে প্রধানত কয়েকটি বৃহৎ নৃগোষ্ঠীতে ভাগ করা হয়। গবেষক ও গ্রন্থভেদে এ শ্রেণিবিভাগে পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে ৬টি প্রধান নৃগোষ্ঠী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত।
এই ছয়টি ভৌগোলিক ভিত্তিক নৃগোষ্ঠী হলো—
১। ককেশীয় (Caucasoid / European): ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার জনগোষ্ঠী এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এদের ত্বক সাধারণত উজ্জ্বল, নাক সরু এবং চুল তরঙ্গাকৃতির।
২। মঙ্গলোয়েড (Mongoloid / East Asian): পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও উত্তর-পূর্ব ভারতের জনগণ এই শ্রেণিতে পড়ে। এদের চোখ সরু, মুখ সমতল এবং ত্বক হলদে আভাযুক্ত।
৩। নিগ্রোয়েড (Negroid / African): সাব-সাহারান আফ্রিকার জনগণ এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত। এদের ত্বক কালো, চুল কোঁকড়ানো এবং ঠোঁট পুরু হয়।
৪। অস্ট্রেলয়েড (Australoid): অস্ট্রেলিয়া, নিউগিনি ও মেলানেশিয়ার অধিবাসীরা এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। তাদের ত্বক গাঢ় বাদামী, নাক চওড়া এবং চুল কোঁকড়ানো।
৫। আমেরিকান আদিবাসী (American Indian / Native American): উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন অধিবাসীরা এই শ্রেণির। এদের গাত্রবর্ণ তামাটে, মুখ লম্বাটে এবং চুল সোজা।
৬। প্যাসিফিক দ্বীপবাসী (Pacific Islander / Polynesian & Micronesian): ওশেনিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপাঞ্চলের অধিবাসীরা এই গোষ্ঠীতে পড়ে। এদের শারীরিক গঠন শক্তিশালী এবং গাত্রবর্ণ মাঝারি গাঢ়।
তবে উল্লেখযোগ্য যে, কিছু নৃতত্ত্ববিদ এই শ্রেণিবিভাগকে ৫ ভাগে বা ৮ ভাগে ভাগ করেছেন। এটি মূলত গবেষকের বিশ্লেষণ ও তথ্যভিত্তিক পার্থক্যের কারণে হয়ে থাকে। তাই পরীক্ষাভেদে সঠিক উত্তর নির্ভর করে পিএসসি বা প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত বিভাজনের ওপর।

0
Updated: 1 day ago