প্রজাসত্ব আইন আমাদের সামজ থেকে কি বিলুপ্ত করে?
A
কৃষকদের অধিকার
B
জমিদারী প্রথা
C
জায়গীর প্রথা
D
নীলচাষ
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ ছিল কৃষক ও জমিদার সম্পর্কের কাঠামো বদলে দেওয়ার এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। এটি মূলত পূর্ব পাকিস্তান সরকারের দ্বারা প্রণীত হয় জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত করে ভূমির মালিকানায় সমতা আনার উদ্দেশ্যে।
তথ্যগুলো হলো:
-
প্রণয়ন ও কার্যকর তারিখ: এই আইন প্রণীত হয় ১৯৫০ সালে এবং কার্যকর হয় ১৯৫১ সালের ১৬ই মে থেকে।
-
মূল উদ্দেশ্য: জমিদারি প্রথা রাষ্ট্রীয়ভাবে বিলুপ্ত করা এবং ভূমির মালিকানা প্রজাদের (চাষিদের) হাতে ফিরিয়ে দেওয়া ছিল এর প্রধান লক্ষ্য।
-
পূর্ববর্তী আইনের প্রেক্ষাপট: এর আগে ১৭৯৩ সালের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইন এবং ১৮৮৫ সালের প্রজাস্বত্ব আইন অনুসারে জমিদাররা ভূমির মালিক ছিলেন, আর কৃষকেরা শুধুমাত্র চাষের অধিকার পেতেন।
-
আইনের ফলাফল: এই আইন কার্যকর হওয়ার ফলে প্রজারা রাষ্ট্রের মাধ্যমে সরাসরি ভূমির অধিকার লাভ করেন, জমিদারদের মধ্যস্থতা বিলুপ্ত হয় এবং ভূমি প্রশাসনের দায়িত্ব রাষ্ট্রের হাতে আসে।
-
ঐতিহাসিক গুরুত্ব: প্রজাস্বত্ব আইন ১৯৫০ ছিল কৃষক শ্রেণির জন্য এক অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির দলিল, যা গ্রামীণ সমাজে ন্যায়ভিত্তিক ভূমি বণ্টন ও উৎপাদন কাঠামোর পরিবর্তনের পথ তৈরি করে।
এই আইনের ফলে ভূমি ব্যবস্থায় একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আসে, যা পরবর্তীকালে বাংলাদেশের ভূমি সংস্কারের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।

0
Updated: 1 day ago
‘আদর্শ নমুনা’ তত্ত্বটি কে দিয়েছেন?
Created: 1 day ago
A
ভুর্খীম
B
মার্টন
C
স্পেন্সার
D
মাক্স ওয়েভার
‘আদর্শ নমুনা’ (Ideal Type) ধারণাটি প্রবর্তন করেন সমাজবিজ্ঞানের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber, 1864–1920)। এটি এমন একটি তাত্ত্বিক কাঠামো, যা বাস্তব সমাজের জটিল ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ ও তুলনা করার জন্য একটি ধারণাগত মডেল বা মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। সংজ্ঞা: আদর্শ নমুনা হলো বাস্তব সমাজের নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা, প্রতিষ্ঠান বা আচরণের মৌলিক ও বিশুদ্ধ বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি তাত্ত্বিক রূপায়ণ। এটি বাস্তবতার সম্পূর্ণ প্রতিরূপ নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোকেই কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়।
২। উদ্দেশ্য: ওয়েবারের মতে, আদর্শ নমুনা ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো—
-
সামাজিক ঘটনা বিশ্লেষণকে সহজ ও সংগঠিত করা।
-
বিভিন্ন সমাজ, সংস্কৃতি বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণের মানদণ্ড তৈরি করা।
৩। বাস্তবতা ও আদর্শ নমুনার পার্থক্য: আদর্শ নমুনা বাস্তব জীবনের সব দিককে ধারণ করে না; বরং এটি একটি তাত্ত্বিক বা বিশ্লেষণাত্মক উপায়, যা গবেষককে বাস্তবতার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বোঝাতে সাহায্য করে।
৪। উদাহরণ: ওয়েবারের বিখ্যাত “Bureaucracy as an Ideal Type” বিশ্লেষণে তিনি আধুনিক আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলো (যেমন নিয়মভিত্তিক কাঠামো, কর্তৃত্বের শ্রেণিবিন্যাস, দক্ষতা ও নথিবদ্ধ কার্যপ্রণালী) তুলে ধরেন।
সারসংক্ষেপে, আদর্শ নমুনা বাস্তবতার সরলীকৃত কিন্তু বিশ্লেষণমূলক প্রতিরূপ, যা সমাজবিজ্ঞানে গবেষণা, তুলনা ও ব্যাখ্যার একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

0
Updated: 1 day ago
রাষ্ট্র কয়টি উপাদান দ্বারা গঠিত?
Created: 1 day ago
A
৩টি
B
৪টি
C
৫টি
D
৭টি
রাষ্ট্র গঠনের জন্য কিছু মৌলিক উপাদান অপরিহার্য, যেগুলোর উপস্থিতি ছাড়া কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। রাজনৈতিক বিজ্ঞানীরা সাধারণত রাষ্ট্র গঠনের চারটি মৌলিক উপাদান উল্লেখ করেছেন, যা রাষ্ট্রের কাঠামো ও কার্যকারিতা নির্ধারণ করে।
এই চারটি উপাদান হলো—
১। ভূখণ্ড: রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট ও স্থায়ী একটি ভৌগোলিক এলাকা থাকতে হবে, যার সীমানা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এই ভূখণ্ডেই রাষ্ট্রের আইন ও প্রশাসন কার্যকর হয়।
২। জনগণ: রাষ্ট্রের ভৌগোলিক সীমানার মধ্যে বসবাসকারী মানুষ বা নাগরিকই রাষ্ট্রের প্রাণশক্তি। জনগণই রাষ্ট্রের অস্তিত্বের মূল কারণ এবং তাদের অংশগ্রহণেই রাষ্ট্রের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
৩। সরকার: সরকার হলো রাষ্ট্র পরিচালনার সংগঠিত প্রতিষ্ঠান। এটি প্রশাসন, আইন প্রণয়ন, বিচার ও নীতিনির্ধারণের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনা করে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করে।
৪। সার্বভৌমত্ব: এটি রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ও স্বাধীনতার প্রতীক। সার্বভৌমত্ব দুটি ভাগে বিভক্ত—অভ্যন্তরীণ সার্বভৌমত্ব, যা রাষ্ট্রের নিজস্ব শাসনব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বোঝায়, এবং বাহ্যিক সার্বভৌমত্ব, যা অন্য রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীন অস্তিত্ব নির্দেশ করে।
সুতরাং, ভূখণ্ড, জনগণ, সরকার ও সার্বভৌমত্ব—এই চার উপাদান মিলেই একটি পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রের গঠন ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করে।

0
Updated: 1 day ago
ভৌগলিকভাবে সকল নরগোষ্ঠীকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
Created: 1 day ago
A
৮
B
৭
C
৯
D
৬
আধুনিক ক্লাসিকাল অ্যানথ্রোপোলজি বা Modern Ethnology / Human Geography অনুযায়ী বিশ্বের মানুষকে ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক ভিত্তিতে প্রধানত কয়েকটি বৃহৎ নৃগোষ্ঠীতে ভাগ করা হয়। গবেষক ও গ্রন্থভেদে এ শ্রেণিবিভাগে পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে ৬টি প্রধান নৃগোষ্ঠী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত।
এই ছয়টি ভৌগোলিক ভিত্তিক নৃগোষ্ঠী হলো—
১। ককেশীয় (Caucasoid / European): ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার জনগোষ্ঠী এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এদের ত্বক সাধারণত উজ্জ্বল, নাক সরু এবং চুল তরঙ্গাকৃতির।
২। মঙ্গলোয়েড (Mongoloid / East Asian): পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও উত্তর-পূর্ব ভারতের জনগণ এই শ্রেণিতে পড়ে। এদের চোখ সরু, মুখ সমতল এবং ত্বক হলদে আভাযুক্ত।
৩। নিগ্রোয়েড (Negroid / African): সাব-সাহারান আফ্রিকার জনগণ এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত। এদের ত্বক কালো, চুল কোঁকড়ানো এবং ঠোঁট পুরু হয়।
৪। অস্ট্রেলয়েড (Australoid): অস্ট্রেলিয়া, নিউগিনি ও মেলানেশিয়ার অধিবাসীরা এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। তাদের ত্বক গাঢ় বাদামী, নাক চওড়া এবং চুল কোঁকড়ানো।
৫। আমেরিকান আদিবাসী (American Indian / Native American): উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন অধিবাসীরা এই শ্রেণির। এদের গাত্রবর্ণ তামাটে, মুখ লম্বাটে এবং চুল সোজা।
৬। প্যাসিফিক দ্বীপবাসী (Pacific Islander / Polynesian & Micronesian): ওশেনিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপাঞ্চলের অধিবাসীরা এই গোষ্ঠীতে পড়ে। এদের শারীরিক গঠন শক্তিশালী এবং গাত্রবর্ণ মাঝারি গাঢ়।
তবে উল্লেখযোগ্য যে, কিছু নৃতত্ত্ববিদ এই শ্রেণিবিভাগকে ৫ ভাগে বা ৮ ভাগে ভাগ করেছেন। এটি মূলত গবেষকের বিশ্লেষণ ও তথ্যভিত্তিক পার্থক্যের কারণে হয়ে থাকে। তাই পরীক্ষাভেদে সঠিক উত্তর নির্ভর করে পিএসসি বা প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত বিভাজনের ওপর।

0
Updated: 1 day ago