সমকালীন বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের পরিবর্তনের কারণ কী?
A
কৃষি শ্রমিকের অভাব
B
নারী শ্রমের বিস্তার
C
প্রবাসী কর্মসংস্থান
D
উপরের সবগুলো
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের বর্তমান গ্রামীণ সমাজে প্রবাসী কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স অর্থনীতির গতিপথ ও সামাজিক কাঠামোকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো অর্থ শুধু পরিবার নয়, পুরো গ্রামীণ অর্থনীতিতে পরিবর্তনের ধারা সৃষ্টি করেছে।
তথ্যগুলো হলো:
-
আর্থিক উন্নয়ন: প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রামের পরিবারগুলোর আয় বৃদ্ধি করে, যার ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। এ অর্থ দিয়ে অনেকে নতুন ব্যবসা শুরু, জমি কেনা, ঘর নির্মাণ, এমনকি কৃষিতে আধুনিক সরঞ্জাম ক্রয় করে।
-
বিনিয়োগ ও ভোগ বৃদ্ধি: রেমিট্যান্সের কারণে গ্রামীণ অর্থনীতিতে পণ্যের চাহিদা বাড়ে, বাজার সক্রিয় হয় এবং স্থানীয় উদ্যোক্তারা উৎসাহিত হয়।
-
সামাজিক পরিবর্তন: প্রবাসীদের জীবনধারা, চিন্তাভাবনা ও অভিজ্ঞতা গ্রামের মানুষদের ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে নতুন সামাজিক মানসিকতা, উন্নত জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা, ও পরিবার পরিকল্পনার সচেতনতা বাড়ে।
-
শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব: প্রবাসী পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের শিক্ষায় বিনিয়োগ করে। এতে গ্রামীণ এলাকায় স্কুলে ভর্তি হার বৃদ্ধি, শিক্ষিত যুবসমাজের সংখ্যা বাড়া, এবং নারী শিক্ষার অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়।
-
নারীর ভূমিকার পরিবর্তন: পুরুষরা প্রবাসে থাকার ফলে নারীরা পরিবারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত ও দৈনন্দিন পরিচালনায় বেশি সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে, যা লিঙ্গভিত্তিক ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তন করছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রবাসী কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক রূপান্তর ও সাংস্কৃতিক আধুনিকায়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে।

0
Updated: 1 day ago
বাংলাদেশের শহরে দ্রুত বর্ধনশীল খাত কোনটি?
Created: 2 days ago
A
সেবা খাত
B
শিল্পায়ন
C
কৃষি
D
ক্ষুদ্র ব্যবস্থা
বাংলাদেশের শহরাঞ্চলে সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনৈতিক ক্ষেত্র হলো সেবা খাত (Service Sector / Tertiary Sector)। শিল্প ও কৃষির পাশাপাশি এই খাত এখন দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান ও নগরজীবনের মানোন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে।
প্রধান উপাদানগুলো হলো—
-
ব্যাংক ও আর্থিক সেবা: বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিমা, মাইক্রোক্রেডিট ও ডিজিটাল আর্থিক সেবার সম্প্রসারণ শহরে অর্থনৈতিক গতিশীলতা বৃদ্ধি করেছে।
-
শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা: সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল ও ক্লিনিক সেবা খাতের বড় অংশ। এ খাতে ক্রমবর্ধমান বিনিয়োগ হচ্ছে।
-
পরিবহন ও যোগাযোগ: সড়ক, রেল, বিমান ও ডিজিটাল যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন শহরের কর্মসংস্থান ও ব্যবসা বাড়াচ্ছে।
-
হোটেল, রেস্তোরাঁ ও বিনোদন: নগর জীবনে জীবনধারার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এ খাতে দ্রুত প্রবৃদ্ধি হচ্ছে।
-
তথ্য প্রযুক্তি (IT): আইটি সার্ভিস, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট ও আউটসোর্সিং এখন শহুরে অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
এই খাত দেশের জিডিপি-তে সর্বাধিক অবদান রাখছে এবং আধুনিক শহরজীবনের জন্য অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

0
Updated: 2 days ago
‘আদর্শ নমুনা’ তত্ত্বটি কে দিয়েছেন?
Created: 1 day ago
A
ভুর্খীম
B
মার্টন
C
স্পেন্সার
D
মাক্স ওয়েভার
‘আদর্শ নমুনা’ (Ideal Type) ধারণাটি প্রবর্তন করেন সমাজবিজ্ঞানের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber, 1864–1920)। এটি এমন একটি তাত্ত্বিক কাঠামো, যা বাস্তব সমাজের জটিল ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ ও তুলনা করার জন্য একটি ধারণাগত মডেল বা মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। সংজ্ঞা: আদর্শ নমুনা হলো বাস্তব সমাজের নির্দিষ্ট কোনো ঘটনা, প্রতিষ্ঠান বা আচরণের মৌলিক ও বিশুদ্ধ বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি তাত্ত্বিক রূপায়ণ। এটি বাস্তবতার সম্পূর্ণ প্রতিরূপ নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলোকেই কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়।
২। উদ্দেশ্য: ওয়েবারের মতে, আদর্শ নমুনা ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হলো—
-
সামাজিক ঘটনা বিশ্লেষণকে সহজ ও সংগঠিত করা।
-
বিভিন্ন সমাজ, সংস্কৃতি বা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণের মানদণ্ড তৈরি করা।
৩। বাস্তবতা ও আদর্শ নমুনার পার্থক্য: আদর্শ নমুনা বাস্তব জীবনের সব দিককে ধারণ করে না; বরং এটি একটি তাত্ত্বিক বা বিশ্লেষণাত্মক উপায়, যা গবেষককে বাস্তবতার গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো বোঝাতে সাহায্য করে।
৪। উদাহরণ: ওয়েবারের বিখ্যাত “Bureaucracy as an Ideal Type” বিশ্লেষণে তিনি আধুনিক আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্যগুলো (যেমন নিয়মভিত্তিক কাঠামো, কর্তৃত্বের শ্রেণিবিন্যাস, দক্ষতা ও নথিবদ্ধ কার্যপ্রণালী) তুলে ধরেন।
সারসংক্ষেপে, আদর্শ নমুনা বাস্তবতার সরলীকৃত কিন্তু বিশ্লেষণমূলক প্রতিরূপ, যা সমাজবিজ্ঞানে গবেষণা, তুলনা ও ব্যাখ্যার একটি কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

0
Updated: 1 day ago
বৃটিশরা এদেশে আসারপূর্বে গ্রামগুলো ছিল-
Created: 2 days ago
A
প্রজাতান্ত্রিক
B
স্বৈরতান্ত্রিক
C
স্বয়ংসম্পূর্ণ
D
রাজতান্ত্রিক
স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম (Self-sufficient Village) হলো এমন এক সমাজব্যবস্থা যেখানে গ্রামবাসীরা তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে সক্ষম হয় এবং বাইরের বাজার বা শহরের ওপর নির্ভরতা খুবই সীমিত থাকে। এই ধরনের গ্রাম অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে স্বনির্ভর, যা প্রাচীন কৃষিনির্ভর সমাজব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা (Economic Self-sufficiency):
-
গ্রামে উৎপাদিত খাদ্যশস্য, ফলমূল, সবজি, দুধ, হস্তশিল্প ও কৃষিজ পণ্য স্থানীয় চাহিদা পূরণে যথেষ্ট হয়।
-
বাইরের বাজার বা আমদানি করা পণ্যের প্রয়োজন খুবই কম।
-
কৃষি, পশুপালন, তাঁত ও মৃৎশিল্প গ্রামের অর্থনীতির মূল ভিত্তি।
২। সামাজিক স্বায়ত্তশাসন (Social Autonomy):
-
গ্রামের নিজস্ব প্রথা, রীতিনীতি ও সামাজিক নিয়ম দ্বারা সমাজ পরিচালিত হয়।
-
গ্রামীণ সমাজে বিরোধ বা সিদ্ধান্ত সাধারণত স্থানীয় পঞ্চায়েত বা প্রবীণদের সভায় নিষ্পত্তি করা হয়।
-
গ্রামের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জীবিকা, সম্পদের ব্যবহার ও সামাজিক সম্পর্ক নির্ধারিত হয়।
৩। সম্পদের যৌথ ব্যবহার:
-
পানি, বন, চারণভূমি ও পুকুরের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ সমষ্টিগতভাবে ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
৪। সাংস্কৃতিক ঐক্য:
-
গ্রামবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, ঐক্য ও সামাজিক সংহতি দৃঢ় থাকে।
অতএব, স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম হলো এমন এক স্বনির্ভর সামাজিক ও অর্থনৈতিক একক, যা নিজের উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকে এবং স্থানীয় ঐক্য, সহযোগিতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সমাজে স্থিতি বজায় রাখে।

0
Updated: 2 days ago