ভৌগলিকভাবে সকল নরগোষ্ঠীকে কয়টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে?
A
৮
B
৭
C
৯
D
৬
উত্তরের বিবরণ
আধুনিক ক্লাসিকাল অ্যানথ্রোপোলজি বা Modern Ethnology / Human Geography অনুযায়ী বিশ্বের মানুষকে ভৌগোলিক ও নৃতাত্ত্বিক ভিত্তিতে প্রধানত কয়েকটি বৃহৎ নৃগোষ্ঠীতে ভাগ করা হয়। গবেষক ও গ্রন্থভেদে এ শ্রেণিবিভাগে পার্থক্য থাকলেও সাধারণভাবে ৬টি প্রধান নৃগোষ্ঠী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত।
এই ছয়টি ভৌগোলিক ভিত্তিক নৃগোষ্ঠী হলো—
১। ককেশীয় (Caucasoid / European): ইউরোপ, পশ্চিম এশিয়া এবং উত্তর আফ্রিকার জনগোষ্ঠী এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। এদের ত্বক সাধারণত উজ্জ্বল, নাক সরু এবং চুল তরঙ্গাকৃতির।
২। মঙ্গলোয়েড (Mongoloid / East Asian): পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও উত্তর-পূর্ব ভারতের জনগণ এই শ্রেণিতে পড়ে। এদের চোখ সরু, মুখ সমতল এবং ত্বক হলদে আভাযুক্ত।
৩। নিগ্রোয়েড (Negroid / African): সাব-সাহারান আফ্রিকার জনগণ এই গোষ্ঠীর অন্তর্গত। এদের ত্বক কালো, চুল কোঁকড়ানো এবং ঠোঁট পুরু হয়।
৪। অস্ট্রেলয়েড (Australoid): অস্ট্রেলিয়া, নিউগিনি ও মেলানেশিয়ার অধিবাসীরা এই গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। তাদের ত্বক গাঢ় বাদামী, নাক চওড়া এবং চুল কোঁকড়ানো।
৫। আমেরিকান আদিবাসী (American Indian / Native American): উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার প্রাচীন অধিবাসীরা এই শ্রেণির। এদের গাত্রবর্ণ তামাটে, মুখ লম্বাটে এবং চুল সোজা।
৬। প্যাসিফিক দ্বীপবাসী (Pacific Islander / Polynesian & Micronesian): ওশেনিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপাঞ্চলের অধিবাসীরা এই গোষ্ঠীতে পড়ে। এদের শারীরিক গঠন শক্তিশালী এবং গাত্রবর্ণ মাঝারি গাঢ়।
তবে উল্লেখযোগ্য যে, কিছু নৃতত্ত্ববিদ এই শ্রেণিবিভাগকে ৫ ভাগে বা ৮ ভাগে ভাগ করেছেন। এটি মূলত গবেষকের বিশ্লেষণ ও তথ্যভিত্তিক পার্থক্যের কারণে হয়ে থাকে। তাই পরীক্ষাভেদে সঠিক উত্তর নির্ভর করে পিএসসি বা প্রাসঙ্গিক কর্তৃপক্ষের স্বীকৃত বিভাজনের ওপর।

0
Updated: 1 day ago
ব্যক্তির মর্যাদা বর্তমানের তুলনায় উর্ধ্ব হলে তাকে কোন গতিশীলতা বলে?
Created: 1 day ago
A
ঊর্ধ্বগামী
B
উল্লম্বী
C
আনুভূমিক
D
সমান্তরাল
যখন কোনো ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান বা মর্যাদা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পায়, তখন সমাজবিজ্ঞানে একে বলা হয় ঊর্ধ্ব সামাজিক গতিশীলতা (Upward Social Mobility)। এটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি ইতিবাচক রূপ, যেখানে ব্যক্তি শিক্ষা, পেশা বা অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে সমাজে উচ্চতর অবস্থানে পৌঁছায়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। সামাজিক গতিশীলতা (Social Mobility):
-
সমাজে ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর সামাজিক অবস্থান পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকে সামাজিক গতিশীলতা বলা হয়।
-
এটি সমাজের উন্মুক্ততা, পরিবর্তন ও অগ্রগতির সূচক।
২। প্রধান দুই প্রকার:
-
আনুভূমিক সামাজিক গতিশীলতা (Horizontal Mobility): কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা অপরিবর্তিত থাকে, কিন্তু অবস্থান বা পেশা পরিবর্তিত হয়। যেমন—একজন শিক্ষক অন্য স্কুলে বদলি হওয়া।
-
উল্লম্বী সামাজিক গতিশীলতা (Vertical Mobility): সামাজিক মর্যাদায় পরিবর্তন ঘটে। এটি দুইভাবে হতে পারে—
-
ঊর্ধ্বমুখী গতিশীলতা (Upward Mobility): সামাজিক অবস্থান উন্নত হয়, যেমন—একজন শ্রমিক কর্মকর্তা হওয়া।
-
নিম্নমুখী গতিশীলতা (Downward Mobility): সামাজিক মর্যাদা কমে যায়, যেমন—একজন ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে সাধারণ শ্রমিক হওয়া।
-
৩। সঠিক উত্তর:
-
প্রশ্নে বলা হয়েছে, ব্যক্তির মর্যাদা “বর্তমানের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে”, তাই এটি উল্লম্বী সামাজিক গতিশীলতার ঊর্ধ্বমুখী রূপ (Upward Vertical Mobility)।
অতএব, সমাজবিজ্ঞানে যখন কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, সেটিকে ঊর্ধ্ব সামাজিক গতিশীলতা বলা হয়, যা সমাজে অগ্রগতি ও সাফল্যের প্রতীক।

0
Updated: 1 day ago
দলগত বিবাহ কোন ধরনের সমাজে ছিল বলে মর্গান বলেছেন?
Created: 1 day ago
A
আদিম সমাজ
B
পশুপালন সমাজ
C
প্রস্তর সমাজ
D
দাস সমাজ
লুইস হেনরি মর্গান তাঁর সমাজবিকাশ তত্ত্বে মানব সমাজের বিবর্তনকে বিভিন্ন ধাপে ভাগ করেছেন, যেখানে প্রতিটি ধাপ নির্দিষ্ট অর্থনৈতিক ও সামাজিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা চিহ্নিত। তাঁর মতে, দলগত বিবাহ (Group Marriage) বিদ্যমান ছিল বর্বর সমাজে (Barbarian Society), যা মূলত পশুপালনের যুগের সঙ্গে সম্পর্কিত।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। মর্গানের সমাজবিন্যাস: তিনি মানব সমাজকে তিনটি প্রধান পর্যায়ে ভাগ করেন—
-
অসভ্য সমাজ (Savage Society) – শিকার ও আহার সংগ্রহ নির্ভর জীবন।
-
বর্বর সমাজ (Barbarian Society) – পশুপালন ও প্রাথমিক কৃষিনির্ভর সমাজ।
-
সভ্য সমাজ (Civilized Society) – উন্নত কৃষি, শিল্প ও লিখিত ভাষার বিকাশ।
২। দলগত বিবাহের ধারণা: বর্বর সমাজে মর্গান লক্ষ্য করেন যে, বিবাহ একক ছিল না, বরং একটি গোষ্ঠীর নারী ও পুরুষদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক স্থাপিত হতো। এটি ছিল পরিবারব্যবস্থার প্রাথমিক রূপ, যা পরবর্তীতে একক বিবাহে (Monogamy) পরিণত হয়।
৩। পশুপালন যুগে অবস্থান: এই বর্বর সমাজ যুগটি মূলত পশুপালন ও প্রাথমিক কৃষি নির্ভর অর্থনৈতিক পর্যায়, যেখানে মানুষ স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে, কিন্তু সামাজিক কাঠামো তখনো সুসংগঠিত হয়নি।
৪। উপসংহার: সুতরাং, মর্গানের মতে, দলগত বিবাহের প্রচলন ছিল বর্বর সমাজে, আর এই সমাজ যুগটি ইতিহাসে পশুপালন সমাজের সঙ্গে সম্পর্কিত।

0
Updated: 1 day ago
জমির পরিমান ও মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামো কয় ধরনের?
Created: 3 days ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
৬
গ্রামীণ সমাজে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থান সাধারণত ভূমির মালিকানার পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এই ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতার কাঠামোকে চারটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, যা সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পার্থক্য নির্দেশ করে।
-
ধনী কৃষক: এরা গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী শ্রেণি। তাদের প্রচুর জমি, কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। গ্রামীণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বে তাদের ভূমিকা মুখ্য।
-
প্রান্তিক কৃষক: এদের জমির পরিমাণ সীমিত এবং জীবিকা টিকিয়ে রাখতে তারা অনেক সময় অন্যের জমিতেও কাজ করে। তাদের সামাজিক প্রভাব সীমিত হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
বর্গাচাষী: এরা অন্যের জমি চাষ করে এবং উৎপন্ন ফসলের একটি অংশ জমির মালিককে প্রদান করে। তাদের জমির মালিকানা না থাকলেও শ্রম ও উৎপাদনে তারা অপরিহার্য।
-
ভূমিহীন কৃষক বা কৃষিশ্রমিক: এরা জমির মালিক নয়, অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ সমাজে এ শ্রেণি সবচেয়ে নিম্ন অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকে এবং তাদের সামাজিক প্রভাবও সীমিত।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বই (অক্ষরপত্র প্রকাশনা, পৃষ্ঠা ১৭৮) অনুযায়ী, ভূমির মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামোকে এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।

0
Updated: 3 days ago