বাংলাদেশের শহরে প্রধান সমস্যা কী?
A
বেকারত্ব
B
জনসংখ্যার অতিবৃদ্ধি ও বস্তি
C
নদীর অভাব
D
পরিবহন ব্যবস্থা
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের শহরগুলো দ্রুত নগরায়ণ ও ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাপে নানা ধরনের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। নগর জীবনের মৌলিক সুবিধা সীমিত হওয়ায় এই সংকট দিন দিন আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
প্রধান সমস্যাগুলো হলো—
১। জনসংখ্যার চাপ ও বসতি ঘনত্ব: শহরে জনসংখ্যা অত্যধিক হওয়ায় প্রতি বর্গকিলোমিটারে মানুষের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেশি। ফলে বসবাসের স্থান সংকুচিত হচ্ছে এবং জীবনযাত্রার মান কমে যাচ্ছে।
২। বাসস্থানের অভাব ও বস্তি বৃদ্ধি: দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য পর্যাপ্ত বাসস্থান না থাকায় তারা ঝুঁকিপূর্ণ বস্তিতে বসবাস করছে, যেখানে পানি, পয়োনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা অপ্রতুল।
৩। অপরিকল্পিত নগরায়ণ (Unplanned Urbanization): শহরের সম্প্রসারণ পরিকল্পনাহীনভাবে হচ্ছে। ফলে রাস্তা, বিদ্যুৎ, পানি সরবরাহ, ড্রেনেজ ও পরিবহন ব্যবস্থায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
৪। যানজট সমস্যা: রাস্তা ও যানবাহনের সংখ্যা অনুপাতে না বাড়ায় দৈনন্দিন চলাচলে সময় ও জ্বালানির অপচয় হচ্ছে।
৫। স্যানিটেশন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংকট: অনেক এলাকায় পর্যাপ্ত পয়োনিষ্কাশন ও বর্জ্য নিষ্পত্তি ব্যবস্থা না থাকায় পরিবেশ দূষণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।
এসব সমস্যা সমাধানের জন্য পরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনা, জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ, আবাসন উন্নয়ন এবং পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো উন্নয়ন অপরিহার্য।

0
Updated: 2 days ago
কয়টি মৌল প্রক্রিয়া দ্বারা জনসংখ্যার আকার নির্ধারিত হয়?
Created: 1 day ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
৭
জনসংখ্যার আকার বা পরিমাণ নির্ধারণে তিনটি মৌলিক জনতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া (Basic Demographic Processes) কাজ করে। এই প্রক্রিয়াগুলোই একটি দেশের বা অঞ্চলের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, হ্রাস ও পরিবর্তনের প্রধান নির্ধারক।
মূল তিনটি প্রক্রিয়া হলো—
১। জন্ম (Births / Fertility): এটি জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রধান উৎস। কোনো অঞ্চলে জন্মহার বেশি হলে জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। জন্মহার নির্ভর করে সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত ও স্বাস্থ্যসেবার মতো বিভিন্ন উপাদানের ওপর।
২। মৃত্যু (Deaths / Mortality): মৃত্যুহার জনসংখ্যা কমাতে প্রভাব ফেলে। কোনো সমাজে যদি স্বাস্থ্যব্যবস্থা উন্নত হয়, তবে মৃত্যুহার হ্রাস পায় এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়। আবার রোগব্যাধি, অপুষ্টি বা যুদ্ধের কারণে মৃত্যুহার বেড়ে গেলে জনসংখ্যা কমে যায়।
৩। স্থানান্তর বা অভিবাসন (Migration): এটি হলো মানুষদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমন বা আগমন। অভিবাসনের ফলে কোনো এলাকার জনসংখ্যা বাড়তে বা কমতে পারে। যেমন—গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসনে শহরের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায়, আর গ্রামে হ্রাস ঘটে।
সারসংক্ষেপে, জন্ম, মৃত্যু ও অভিবাসন—এই তিনটি প্রক্রিয়ার পারস্পরিক প্রভাবেই কোনো অঞ্চলের মোট জনসংখ্যার আকার ও পরিবর্তন নির্ধারিত হয়।

0
Updated: 1 day ago
ব্যক্তির মর্যাদা বর্তমানের তুলনায় উর্ধ্ব হলে তাকে কোন গতিশীলতা বলে?
Created: 2 days ago
A
ঊর্ধ্বগামী
B
উল্লম্বী
C
আনুভূমিক
D
সমান্তরাল
যখন কোনো ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান বা মর্যাদা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পায়, তখন সমাজবিজ্ঞানে একে বলা হয় ঊর্ধ্ব সামাজিক গতিশীলতা (Upward Social Mobility)। এটি সামাজিক পরিবর্তনের একটি ইতিবাচক রূপ, যেখানে ব্যক্তি শিক্ষা, পেশা বা অর্থনৈতিক উন্নতির মাধ্যমে সমাজে উচ্চতর অবস্থানে পৌঁছায়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। সামাজিক গতিশীলতা (Social Mobility):
-
সমাজে ব্যক্তির বা গোষ্ঠীর সামাজিক অবস্থান পরিবর্তনের প্রক্রিয়াকে সামাজিক গতিশীলতা বলা হয়।
-
এটি সমাজের উন্মুক্ততা, পরিবর্তন ও অগ্রগতির সূচক।
২। প্রধান দুই প্রকার:
-
আনুভূমিক সামাজিক গতিশীলতা (Horizontal Mobility): কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা অপরিবর্তিত থাকে, কিন্তু অবস্থান বা পেশা পরিবর্তিত হয়। যেমন—একজন শিক্ষক অন্য স্কুলে বদলি হওয়া।
-
উল্লম্বী সামাজিক গতিশীলতা (Vertical Mobility): সামাজিক মর্যাদায় পরিবর্তন ঘটে। এটি দুইভাবে হতে পারে—
-
ঊর্ধ্বমুখী গতিশীলতা (Upward Mobility): সামাজিক অবস্থান উন্নত হয়, যেমন—একজন শ্রমিক কর্মকর্তা হওয়া।
-
নিম্নমুখী গতিশীলতা (Downward Mobility): সামাজিক মর্যাদা কমে যায়, যেমন—একজন ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে সাধারণ শ্রমিক হওয়া।
-
৩। সঠিক উত্তর:
-
প্রশ্নে বলা হয়েছে, ব্যক্তির মর্যাদা “বর্তমানের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে”, তাই এটি উল্লম্বী সামাজিক গতিশীলতার ঊর্ধ্বমুখী রূপ (Upward Vertical Mobility)।
অতএব, সমাজবিজ্ঞানে যখন কোনো ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পায়, সেটিকে ঊর্ধ্ব সামাজিক গতিশীলতা বলা হয়, যা সমাজে অগ্রগতি ও সাফল্যের প্রতীক।

0
Updated: 2 days ago
ভারতে মুসলিম জাগরনের অগ্রদূত কে ছিলেন?
Created: 1 day ago
A
স্যার সৈয়দ আহমদ
B
স্যার সলিমুল্লাহ
C
মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ
D
নওয়াব আবদুল গনি
ভারতে মুসলিম সমাজের আধুনিক জাগরণের পথিকৃৎ ছিলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান (Sir Syed Ahmad Khan, 1817–1898)। তিনি মুসলমানদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা, বিজ্ঞানমনস্কতা ও যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনার বিস্তার ঘটিয়ে একটি নতুন সমাজচেতনার সূচনা করেন। তাঁর প্রচেষ্টার ফলেই উনিশ শতকে মুসলিম সমাজে শিক্ষাগত ও সামাজিক পুনর্জাগরণের সূচনা ঘটে।
মূল তথ্যগুলো হলো—
১। আলীগড় আন্দোলনের সূচনা: স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮৭৫ সালে আলীগড় আন্দোলন (Aligarh Movement) শুরু করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করা এবং তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।
২। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা: তাঁর উদ্যোগে ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মোহাম্মদান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ (Mohammedan Anglo-Oriental College), যা পরবর্তীতে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (Aligarh Muslim University) নামে বিকশিত হয়।
৩। আধুনিক শিক্ষা ও যুক্তিবাদ: তিনি মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়াও বিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন ও ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরেন, যাতে মুসলিম সমাজ আধুনিক বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।
৪। সামাজিক প্রভাব: আলীগড় আন্দোলন মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা, সংস্কার ও আত্মচেতনার বিকাশ ঘটায় এবং পরবর্তীকালে ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সংগঠন গঠনে (যেমন মুসলিম লীগ) প্রভাব ফেলে।
৫। ঐতিহাসিক গুরুত্ব: এই আন্দোলনের ফলে মুসলমান সমাজে আধুনিকীকরণ, জাতীয় চেতনা ও আত্মনির্ভরতা-এর ধারণা শক্তিশালী হয়, যা পরবর্তী রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের ভিত্তি স্থাপন করে।
সুতরাং, স্যার সৈয়দ আহমদ খান ও তাঁর আলীগড় আন্দোলনই ছিল ভারতে মুসলিম জাগরণের মূল চালিকা শক্তি, যা মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষা ও চিন্তার ধারায় যুক্ত করে নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

0
Updated: 1 day ago