'The Elementary Forms of Religious Life' গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
A
মার্টন
B
ফ্রয়েড
C
স্পেন্সার
D
ডুর্খীম
উত্তরের বিবরণ
এমিল ডুর্খেইম (Émile Durkheim) ছিলেন একজন প্রখ্যাত ফরাসি সমাজবিজ্ঞানী, যিনি ধর্মকে সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “The Elementary Forms of Religious Life” ১৯১২ সালে প্রকাশিত হয় (মূলত ফরাসি ভাষায়, ইংরেজি অনুবাদ ১৯১৫ সালের পর)। এই গ্রন্থে তিনি ধর্মের সামাজিক ভিত্তি ও সমাজে তার ভূমিকা ব্যাখ্যা করেছেন।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। ধর্মের সামাজিক ব্যাখ্যা:
-
ডুর্খেইমের মতে, ধর্ম কোনো ব্যক্তিগত বিশ্বাস নয়, বরং সমাজের সম্মিলিত চেতনার (Collective Consciousness) প্রতিফলন।
-
ধর্ম সমাজে সংহতি, শৃঙ্খলা ও ঐক্য বজায় রাখে এবং মানুষের আচরণকে নৈতিকভাবে পরিচালনা করে।
২। ধর্মের মূল উপাদান:
-
ধর্ম সমাজের মৌলিক কাঠামো, মূল্যবোধ ও নিয়মের প্রতিফলন।
-
মানুষ সমাজে যেসব নীতি অনুসরণ করে, সেগুলো ধর্মীয় প্রতীকের মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
-
ডুর্খেইম বলেন, ধর্ম হলো সমাজের “নৈতিক ও প্রতীকী রূপ”, যা সামাজিক সংহতিকে মজবুত করে।
৩। টোটেমিজম (Totemism):
-
ডুর্খেইম আদিম অস্ট্রেলীয় সমাজে প্রচলিত টোটেমিক ধর্মকে ধর্মের প্রাথমিক রূপ হিসেবে উল্লেখ করেন।
-
প্রতিটি গোষ্ঠী বা বংশ একটি নির্দিষ্ট প্রতীক (যেমন প্রাণী, উদ্ভিদ বা বস্তু)-কে পবিত্র হিসেবে মান্য করে।
-
এই টোটেম আসলে সমাজেরই প্রতীক — অর্থাৎ মানুষ যখন টোটেমের পূজা করে, তখন সে নিজের সমাজেরই সম্মান করছে।
৪। ধর্ম = সামাজিক বাস্তবতার প্রতিফলন:
-
ডুর্খেইমের মতে, ধর্ম আসলে সমাজের প্রতিফলন (Reflection of Social Reality)।
-
সমাজই ধর্ম সৃষ্টি করে এবং ধর্ম সমাজকে নিয়ন্ত্রণ ও একত্রে রাখে।
অতএব, ডুর্খেইম ধর্মকে দেখেছেন একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে, যার উদ্দেশ্য সমাজে সংহতি, নৈতিকতা ও ঐক্য বজায় রাখা। তাঁর এই তত্ত্ব আধুনিক সমাজবিজ্ঞানে ধর্মের সমাজভিত্তিক বিশ্লেষণের ভিত্তি স্থাপন করেছে।

0
Updated: 1 day ago