ভারতীয় সমাজে কয় ধরনের বর্ণ প্রথা ছিল?
A
২
B
৩
C
৪
D
৬
উত্তরের বিবরণ
প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ভারতীয় সমাজে বর্ণ প্রথা (Varna System) ছিল সামাজিক সংগঠন ও শ্রেণিবিন্যাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবস্থা, যা মানুষের পেশা, জন্ম ও সামাজিক মর্যাদা অনুযায়ী বিভক্ত ছিল। এই প্রথা মূলত ধর্মীয় বিশ্বাস ও সামাজিক কাঠামোর ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে এবং সমাজে দায়িত্ব ও কর্তব্য নির্ধারণ করত।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। ব্রাহ্মণ (Brahmin):
-
সমাজের সর্বোচ্চ শ্রেণি হিসেবে ধর্মীয় ও শিক্ষামূলক দায়িত্ব পালন করত।
-
এরা পুরোহিত, শিক্ষক, আচার্য ও জ্ঞানচর্চাকারী ছিলেন।
-
সমাজে নৈতিকতা, আচার-বিচার ও ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রচারে ভূমিকা রাখত।
২। ক্ষত্রিয় (Kshatriya):
-
সমাজের শাসন, প্রশাসন ও যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব এদের ওপর ন্যস্ত ছিল।
-
রাজা, সেনাপতি, সৈনিক ও যোদ্ধা এই শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত।
-
এরা সমাজে নিরাপত্তা, ন্যায়বিচার ও শৃঙ্খলা রক্ষা করত।
৩। বৈশ্য (Vaishya):
-
এরা সমাজের অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করত।
-
কৃষি, বাণিজ্য, পশুপালন ও কারুশিল্প এদের প্রধান পেশা ছিল।
-
বৈশ্য শ্রেণি সমাজে অর্থনৈতিক স্থিতি ও উৎপাদন ব্যবস্থার ভারসাম্য রক্ষা করত।
৪। শূদ্র (Shudra):
-
সমাজের শ্রমনির্ভর শ্রেণি হিসেবে শ্রম ও সেবামূলক কাজ করত।
-
কৃষি, নির্মাণ, কারিগরি কাজ ও গৃহপরিচর্যা ছিল তাদের মূল পেশা।
-
সামাজিক মর্যাদায় এদের অবস্থান ছিল নিচু, এবং প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হতো।
অতএব, প্রাচীন ভারতের বর্ণ প্রথা সমাজে দায়িত্বের বিভাজন ও শৃঙ্খলা রক্ষা করলেও পরবর্তীকালে এটি সামাজিক বৈষম্য ও অসাম্যের প্রতীকে পরিণত হয়, যা সমাজে স্থবিরতা ও বিভাজন সৃষ্টি করে।

0
Updated: 2 days ago
'প্রতিকী মিথস্ক্রিয়ার' তত্ত্ব কে দিয়েছেন?
Created: 1 day ago
A
মিড
B
ব্লুমার
C
ডুর্খীম
D
স্পেনসার
প্রতিকী মিথস্ক্রিয়া (Symbolic Interactionism) সমাজবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব, যা মূলত জর্জ হারবার্ট মিড (George Herbert Mead, 1863–1931) প্রবর্তন করেন এবং পরবর্তীতে তাঁর ছাত্র হারবার্ট ব্লুমার (Herbert Blumer, 1900–1987) এই তত্ত্বকে সংজ্ঞায়িত ও প্রসারিত করেন। এই তত্ত্ব মানব সমাজকে ব্যাখ্যা করে একটি অর্থনির্ভর মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল হিসেবে, যেখানে মানুষ প্রতীক ও ভাষার মাধ্যমে অর্থ সৃষ্টি ও বিনিময় করে।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। সমাজ মানবিক মিথস্ক্রিয়ার ফল: সমাজ কোনো যান্ত্রিক গঠন নয়; বরং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, যোগাযোগ ও প্রতীক ব্যবহারের মাধ্যমেই সমাজ গঠিত হয়।
২। প্রতীকের ভূমিকা: মানুষ প্রতীক (Symbols) ব্যবহার করে অর্থ তৈরি করে ও অন্যদের সঙ্গে তা ভাগাভাগি করে। প্রতীক হতে পারে ভাষা, অঙ্গভঙ্গি, বস্তু বা এমন কিছু যা সামাজিকভাবে অর্থবহ।
৩। অর্থ সৃষ্টির প্রক্রিয়া: ব্যক্তি তার অভিজ্ঞতা, সামাজিক প্রেক্ষাপট ও যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতীকের অর্থ বোঝে এবং নতুন অর্থ সৃষ্টি করে।
৪। ইন্টারপ্রিটেশন বা ব্যাখ্যার গুরুত্ব: মানুষ শুধুমাত্র প্রতিক্রিয়া করে না, বরং সামাজিক আচরণের আগে সে অর্থ ব্যাখ্যা করে, তারপর তার ওপর ভিত্তি করে কাজ করে।
৫। ব্যক্তিত্ব ও আচরণের বিকাশ: ব্যক্তির সামাজিক পরিবেশ ও মিথস্ক্রিয়ার অভিজ্ঞতা তার ব্যক্তিত্ব গঠন ও আচরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সংক্ষেপে, প্রতিকী মিথস্ক্রিয়ার তত্ত্ব দেখায় যে সমাজ হলো এক অবিরাম প্রতীকভিত্তিক যোগাযোগ ও অর্থ সৃষ্টির প্রক্রিয়া, যেখানে মানুষের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই সামাজিক বাস্তবতা গঠিত হয়।

0
Updated: 1 day ago
গারোদের উর্বরতা দেবতার নাম কি?
Created: 1 day ago
A
সুসাইন
B
পোয়ারা
C
কালসেম
D
সালজং
গারো জাতির ধর্মীয় বিশ্বাস ও ঐতিহ্য তাদের সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তারা প্রকৃতি ও বিভিন্ন দেবদেবীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল। তাদের ঐতিহ্যবাহী ধর্মকে সাংসারেক বলা হয়, যা মূলত প্রকৃতিনির্ভর এক ধর্মব্যবস্থা।
তথ্যগুলো হলো:
-
সাংসারেক ধর্ম গারোদের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী ধর্ম, যা প্রকৃতির উপাসনা ও আত্মিক শক্তিতে বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে।
-
এ ধর্মে বহু দেবতার পূজা করা হয়, যারা জীবনের বিভিন্ন দিক যেমন—সূর্য, বৃষ্টি, ফসল, পাহাড় ইত্যাদির সঙ্গে সম্পর্কিত।
-
তাদের প্রধান দেবতা হলেন টাটারা রাবুগা, যিনি সর্বশক্তিমান ও সৃষ্টির অধিপতি বলে বিশ্বাস করা হয়।
-
এছাড়া হর সালজং নামের এক দেবতা আছেন, যিনি সূর্যদেবতা হিসেবে পূজিত হন এবং আলো, শক্তি ও জীবনের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
-
সাংসারেক ধর্মে দেবতাদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, নাচ-গান ও উৎসবের মাধ্যমে তাদের সন্তুষ্ট করাই ধর্মীয় আচারবিধির মূল অংশ।

0
Updated: 1 day ago
জমির পরিমান ও মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামো কয় ধরনের?
Created: 3 days ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
৬
গ্রামীণ সমাজে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থান সাধারণত ভূমির মালিকানার পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এই ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতার কাঠামোকে চারটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, যা সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পার্থক্য নির্দেশ করে।
-
ধনী কৃষক: এরা গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী শ্রেণি। তাদের প্রচুর জমি, কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। গ্রামীণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বে তাদের ভূমিকা মুখ্য।
-
প্রান্তিক কৃষক: এদের জমির পরিমাণ সীমিত এবং জীবিকা টিকিয়ে রাখতে তারা অনেক সময় অন্যের জমিতেও কাজ করে। তাদের সামাজিক প্রভাব সীমিত হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
বর্গাচাষী: এরা অন্যের জমি চাষ করে এবং উৎপন্ন ফসলের একটি অংশ জমির মালিককে প্রদান করে। তাদের জমির মালিকানা না থাকলেও শ্রম ও উৎপাদনে তারা অপরিহার্য।
-
ভূমিহীন কৃষক বা কৃষিশ্রমিক: এরা জমির মালিক নয়, অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ সমাজে এ শ্রেণি সবচেয়ে নিম্ন অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকে এবং তাদের সামাজিক প্রভাবও সীমিত।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বই (অক্ষরপত্র প্রকাশনা, পৃষ্ঠা ১৭৮) অনুযায়ী, ভূমির মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামোকে এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।

0
Updated: 3 days ago