বৃটিশরা এদেশে আসারপূর্বে গ্রামগুলো ছিল-
A
প্রজাতান্ত্রিক
B
স্বৈরতান্ত্রিক
C
স্বয়ংসম্পূর্ণ
D
রাজতান্ত্রিক
উত্তরের বিবরণ
স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম (Self-sufficient Village) হলো এমন এক সমাজব্যবস্থা যেখানে গ্রামবাসীরা তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে সক্ষম হয় এবং বাইরের বাজার বা শহরের ওপর নির্ভরতা খুবই সীমিত থাকে। এই ধরনের গ্রাম অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে স্বনির্ভর, যা প্রাচীন কৃষিনির্ভর সমাজব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা (Economic Self-sufficiency):
-
গ্রামে উৎপাদিত খাদ্যশস্য, ফলমূল, সবজি, দুধ, হস্তশিল্প ও কৃষিজ পণ্য স্থানীয় চাহিদা পূরণে যথেষ্ট হয়।
-
বাইরের বাজার বা আমদানি করা পণ্যের প্রয়োজন খুবই কম।
-
কৃষি, পশুপালন, তাঁত ও মৃৎশিল্প গ্রামের অর্থনীতির মূল ভিত্তি।
২। সামাজিক স্বায়ত্তশাসন (Social Autonomy):
-
গ্রামের নিজস্ব প্রথা, রীতিনীতি ও সামাজিক নিয়ম দ্বারা সমাজ পরিচালিত হয়।
-
গ্রামীণ সমাজে বিরোধ বা সিদ্ধান্ত সাধারণত স্থানীয় পঞ্চায়েত বা প্রবীণদের সভায় নিষ্পত্তি করা হয়।
-
গ্রামের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জীবিকা, সম্পদের ব্যবহার ও সামাজিক সম্পর্ক নির্ধারিত হয়।
৩। সম্পদের যৌথ ব্যবহার:
-
পানি, বন, চারণভূমি ও পুকুরের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ সমষ্টিগতভাবে ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
৪। সাংস্কৃতিক ঐক্য:
-
গ্রামবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, ঐক্য ও সামাজিক সংহতি দৃঢ় থাকে।
অতএব, স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম হলো এমন এক স্বনির্ভর সামাজিক ও অর্থনৈতিক একক, যা নিজের উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকে এবং স্থানীয় ঐক্য, সহযোগিতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সমাজে স্থিতি বজায় রাখে।

0
Updated: 2 days ago
সাঁওতাল উপজাতি ঐতিহাসিকভাবে কোন পেশার সাথে জড়িত?
Created: 2 days ago
A
মৎস্য শিকার
B
কৃষি ও শ্রম
C
কুটির শিল্প ও বাণিজ্য
D
শিক্ষা
সাঁওতাল উপজাতি (Santals) দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও গুরুত্বপূর্ণ আদিবাসী গোষ্ঠী, যারা ঐতিহাসিকভাবে কৃষিনির্ভর ও বনজীবিকাভিত্তিক সমাজব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত। তাদের জীবনযাপন মূলত ভূমি, প্রকৃতি ও পারিবারিক শ্রমের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—
-
প্রধান পেশা: সাঁওতালদের মূল পেশা ছিল কৃষিকাজ। তারা নিজেরা জমি চাষ করত এবং পরিবারের সদস্যরাই কৃষিশ্রমে অংশগ্রহণ করত।
-
ফসল উৎপাদন: তারা প্রধানত ধান, মাষকলাই, আখ, তিল, ভুট্টা ও বিভিন্ন সবজি চাষ করত। কৃষির পাশাপাশি ফলমূল সংগ্রহ, শিকার ও বনজ পণ্যের ওপরও তাদের নির্ভরতা ছিল।
-
পারিবারিক শ্রমব্যবস্থা: সাঁওতাল সমাজে কৃষিকাজ হতো পরিবারভিত্তিক সমবায়ী শ্রমে, অর্থাৎ পরিবারের সব সদস্য একত্রে মাঠে কাজ করত।
-
জমির প্রতি সম্পর্ক: তাদের জমির সঙ্গে ছিল আবেগপূর্ণ ও সামাজিক সম্পর্ক, কারণ ভূমি শুধু জীবিকার উৎস নয়, বরং তাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রতীক।
-
অবস্থান: বাংলাদেশে তারা মূলত রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী ও নওগাঁ অঞ্চলে বসবাস করে, যেখানে কৃষিই তাদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু।
অতএব, সাঁওতাল উপজাতির সমাজ ছিল কৃষিনির্ভর, পারিবারিক শ্রমনির্ভর ও প্রকৃতিনির্ভর জীবনব্যবস্থা, যা তাদের সংস্কৃতি ও সামাজিক ঐক্যের মূলে নিহিত।

0
Updated: 2 days ago
মার্গানের মতে পৃথিবীর আদিম পরিবার কোনটি?
Created: 2 days ago
A
কনস্যাংগুইন পরিবার
B
পুনালুয়ান পরিবার
C
সিনডিয়াসমিন পরিবার
D
গোষ্ঠী পরিবার
মানব সমাজের পারিবারিক কাঠামো সময়ের সঙ্গে ক্রমাগত পরিবর্তিত হয়েছে। সমাজবিজ্ঞানী লুইস এইচ. মার্গান (Lewis H. Morgan) পরিবার গঠনের একটি ঐতিহাসিক বিবর্তন ব্যাখ্যা করেছেন, যেখানে তিনি দেখিয়েছেন কীভাবে প্রাথমিক যৌথ পরিবার থেকে আধুনিক একক পরিবারে উন্নয়ন ঘটেছে।
এই বিবর্তনের ধাপগুলো হলো—
১। কনস্যাংগুইন পরিবার (Consanguine Family): এটি মানবজাতির প্রাচীনতম পারিবারিক রূপ। এখানে রক্তসম্পর্কের ভিত্তিতে যৌথ জীবনযাপন হতো এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক নির্দিষ্ট ছিল না।
২। পুনালুয়ান পরিবার (Punaluan Family): এখানে ভাই-বোনের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ হয়, তবে দলগত বিবাহ ব্যবস্থা বজায় ছিল।
৩। সিনডাসমিয়ান পরিবার (Syndyasmian Family): এই পর্যায়ে এক পুরুষ ও এক নারীর মধ্যে তুলনামূলক স্থায়ী সম্পর্ক গড়ে ওঠে, যদিও সম্পূর্ণ একবিবাহ তখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
৪। পিতৃপ্রধান পরিবার (Patriarchal Family): এখানে পরিবারের নিয়ন্ত্রণ পিতার হাতে আসে। সম্পত্তি ও উত্তরাধিকার পুরুষের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
৫। আধুনিক একক পরিবার (Modern Monogamous Family): এটি বর্তমান সমাজে প্রচলিত পারিবারিক রূপ, যেখানে একজন পুরুষ ও একজন নারীর মধ্যে স্থায়ী একবিবাহ প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং পারিবারিক জীবনে পারস্পরিক ভালোবাসা, দায়িত্ব ও অধিকার গুরুত্ব পায়।
এই ধারাবাহিক বিকাশ মানব সভ্যতার সামাজিক ও নৈতিক অগ্রগতির প্রতিফলন।

0
Updated: 2 days ago
ক্ষমতার মাপকাঠিতে পরিবার কয় ধরনের?
Created: 1 day ago
A
৩
B
২
C
৪
D
৬
পরিবার সমাজের সবচেয়ে প্রাচীন ও মৌলিক প্রতিষ্ঠান, যেখানে সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক ও কর্তৃত্বের ভিত্তিতে ক্ষমতার বণ্টন ঘটে। এই ক্ষমতার মাপকাঠি অনুযায়ী পরিবারকে মূলত দুই ধরনের ভাগে বিভক্ত করা যায়।
তথ্যগুলো হলো:
-
পিতৃপ্রধান পরিবার: এখানে পরিবারের প্রধান কর্তৃত্ব থাকে পুরুষ বা পিতার হাতে। পরিবারের সিদ্ধান্ত, সম্পত্তি বণ্টন ও সামাজিক দিকনির্দেশনা তিনি নির্ধারণ করেন। সমাজে এই ধরনের পরিবারকে পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলা হয়, যা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক সমাজে প্রচলিত।
-
মাতৃপ্রধান পরিবার: এ ক্ষেত্রে পরিবারের নেতৃত্ব ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা থাকে মাতা বা নারী সদস্যের হাতে। উত্তরাধিকার, সম্পত্তি ও পারিবারিক সিদ্ধান্তে নারীর ভূমিকা প্রধান। এই ধরনের পরিবার বিশেষত কিছু আদিবাসী সমাজে যেমন—গারো বা খাসিয়া সমাজে দেখা যায়।
এই দুই ধরণের পরিবারের মাধ্যমে সমাজে ক্ষমতা, দায়িত্ব ও ভূমিকার ভারসাম্য কেমনভাবে গঠিত হয় তা নির্ধারণ করা যায়।

0
Updated: 1 day ago