২০২২ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত?
A
১.৪০%
B
১.৩৯%
C
১.২২%
D
১.৩৩%
উত্তরের বিবরণ
২০২২ সালের বাংলাদেশ আদমশুমারির ফলাফল অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, লিঙ্গ অনুপাত এবং শহর-গ্রামের জনসংখ্যাগত কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়। এতে বোঝা যায়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমলেও নগরায়ণ ও নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি একটি নতুন জনসংখ্যাগত প্রবণতা তৈরি করছে।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার:
-
২০২২ সালে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১.২২%, যা ২০১১ সালের ১.৩৭% হারের তুলনায় কিছুটা কম।
-
এটি ইঙ্গিত করে যে বাংলাদেশে জন্মহার হ্রাস এবং পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন ঘটছে।
২। মোট জনসংখ্যা (২০২২):
-
দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬৯,৮২৮,৯১১ জন বা প্রায় ১৭ কোটি।
-
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ হিসেবে অবস্থান করছে।
৩। শহর ও গ্রামভিত্তিক জনসংখ্যা:
-
শহরাঞ্চলে ৪০% এবং গ্রামাঞ্চলে ৬০% মানুষ বসবাস করে।
-
এটি দেখায় যে নগরায়ণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যদিও গ্রামীণ জনসংখ্যা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ।
৪। লিঙ্গভিত্তিক বিভাজন:
-
২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মহিলা জনসংখ্যা পুরুষের তুলনায় সামান্য বেশি।
-
এটি নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক অবস্থানের উন্নতির একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।
অতএব, ২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, তবে নগরায়ণ ও নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি দেশের সামাজিক কাঠামোয় নতুন পরিবর্তনের সূচনা করছে।

0
Updated: 2 days ago
স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামগুলো ছিল-
Created: 2 days ago
A
নিশ্চল
B
উন্নত
C
গতিশীল
D
অনুন্নত
প্রাচীন ভারতের স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রামব্যবস্থা ছিল মূলত এক ধরনের বন্ধ সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো, যেখানে প্রতিটি গ্রাম নিজস্ব প্রয়োজন মেটাতো বাইরের সহায়তা ছাড়াই। এই কারণে গ্রামগুলোকে নিশ্চল বা স্থবির সমাজ হিসেবে অভিহিত করা হয়। তাদের জীবনযাপন, উৎপাদনব্যবস্থা ও সামাজিক সম্পর্ক প্রজন্মের পর প্রজন্ম অপরিবর্তিত থাকত।
প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো—
-
পরিবর্তনের অভাব: গ্রামের অর্থনীতি, সামাজিক কাঠামো ও জীবনধারা দীর্ঘদিন ধরে একই রকম থাকত। নতুন কোনো উদ্ভাবন, প্রযুক্তি বা সামাজিক রূপান্তর খুব ধীরে ঘটত।
-
জাতিভেদ ও পেশার উত্তরাধিকার: মানুষ সাধারণত তার পূর্বপুরুষের পেশাই গ্রহণ করত, যেমন— কামার, কুমোর, তাঁতি, চাষি ইত্যাদি। এতে সমাজে পেশা পরিবর্তনের সুযোগ প্রায় ছিল না, ফলে সামাজিক গতিশীলতা হ্রাস পায়।
-
বহির্জগত থেকে বিচ্ছিন্নতা: শহর বা বাইরের বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল সীমিত। এর ফলে নতুন ধারণা, শিক্ষা, সংস্কৃতি বা প্রযুক্তি গ্রামের জীবনে প্রবেশ করতে পারত না।
-
অর্থনৈতিক স্বয়ংসম্পূর্ণতা: প্রতিটি গ্রাম নিজের খাদ্য, পোশাক, সরঞ্জাম ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদন করত। বাইরের বাজারের উপর নির্ভরতা ছিল খুব কম।
-
সামাজিক স্থিতিশীলতা: গ্রামীণ জীবনে শৃঙ্খলা বজায় থাকলেও পরিবর্তনের অভাব সমাজকে স্থবির করে তুলেছিল।
তবে কিছু সমাজবিজ্ঞানী মনে করেন, এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা গ্রামীণ উন্নতির এক রূপ, কারণ এটি স্থানীয় সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং পারস্পরিক সহায়তার মাধ্যমে স্থিতিশীল জীবনযাপন নিশ্চিত করেছিল।

0
Updated: 2 days ago
উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশে জনসংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধিপায়-কে বলেছেন?
Created: 1 day ago
A
এডাম স্মিথ
B
ম্যালথাস
C
মর্গান
D
ম্যাক্র
জনসংখ্যা বৃদ্ধির ওপর টমাস রবার্ট মালথাস (Thomas Robert Malthus, 1766–1834) একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব উপস্থাপন করেন, যা ইতিহাসে “Malthusian Theory of Population” নামে পরিচিত। তাঁর মতে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার সবসময় খাদ্য উৎপাদনের হারের তুলনায় অনেক দ্রুত, ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খাদ্য ঘাটতি ও সামাজিক সংকট সৃষ্টি হয়।
তত্ত্বের মূল বিষয়গুলো হলো—
১। জনসংখ্যা বৃদ্ধি (Population Growth): মালথাসের মতে, মানব জনসংখ্যা জ্যামিতিক বা গুণোত্তর (Geometric / Exponential) হারে বৃদ্ধি পায়, অর্থাৎ—১, ২, ৪, ৮, ১৬ … এইভাবে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় পর পর জনসংখ্যা দ্বিগুণ হতে থাকে।
২। খাদ্য উৎপাদন (Food Supply): অপরদিকে, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায় অঙ্কগণিত (Arithmetic / Linear) হারে, অর্থাৎ—১, ২, ৩, ৪ … এইভাবে ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
৩। ফলাফল: জনসংখ্যা যখন খাদ্য উৎপাদনের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে, তখন সমাজে দেখা দেয় দারিদ্র্য, অনাহার, রোগব্যাধি ও মৃত্যুহার বৃদ্ধি। মালথাস একে “Positive Checks” বলে উল্লেখ করেছেন, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে স্বাভাবিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে।
৪। সমাধান বা নিয়ন্ত্রণ: তিনি আরও বলেন, মানুষ যদি স্বেচ্ছায় বিলম্বিত বিবাহ, জন্মনিয়ন্ত্রণ ও আত্মসংযম (Preventive Checks) পালন করে, তবে এই সংকট প্রতিরোধ করা সম্ভব।
৫। আধুনিক প্রাসঙ্গিকতা: যদিও পরবর্তীতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও কৃষি বিপ্লব মালথাসের আশঙ্কা অনেকাংশে অতিক্রম করেছে, তবুও তাঁর তত্ত্ব উন্নয়নশীল ও অনুন্নত দেশের জনসংখ্যা-সম্পদ ভারসাম্য বিশ্লেষণে আজও গুরুত্বপূর্ণ।
সারসংক্ষেপে, মালথাস দেখিয়েছিলেন যে জনসংখ্যা জ্যামিতিক হারে এবং খাদ্য উৎপাদন অঙ্কগণিত হারে বৃদ্ধি পায়, ফলে এই অসম বৃদ্ধিই জনসংখ্যা-সংকটের মূল কারণ।

0
Updated: 1 day ago
ভারতীয় সমাজে মানুষের মর্যাদার ভিত্তি কি ছিল?
Created: 3 days ago
A
জাতিবর্ণ প্রথা
B
সম্পত্তি
C
ধর্ম
D
প্রতিপত্তি
ভারতীয় সমাজে মানুষের সামাজিক মর্যাদা ও অবস্থান নির্ধারিত হতো জাতিবর্ণ প্রথার (Caste System) মাধ্যমে, যা ছিল একটি কঠোরভাবে স্তরভিত্তিক সামাজিক কাঠামো। এই প্রথা জন্মের ভিত্তিতে নির্ধারিত হতো এবং সামাজিক চলাচল বা অবস্থান পরিবর্তন প্রায় অসম্ভব ছিল।
-
ব্রাহ্মণ: সমাজে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী শ্রেণি। তারা ধর্মীয় আচার, শিক্ষা ও পুরোহিতবৃত্তিতে নিয়োজিত থাকতেন। জ্ঞান ও ধর্মচর্চার কারণে সমাজে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ছিল।
-
ক্ষত্রিয়: এই শ্রেণি ছিল রাজা, সৈনিক ও শাসকবর্গের প্রতিনিধি। তাদের মূল দায়িত্ব ছিল সমাজ রক্ষা, শাসন ও যুদ্ধ পরিচালনা। মর্যাদায় তারা ব্রাহ্মণদের নিচে অবস্থান করতেন।
-
বৈশ্য: তারা ছিল ব্যবসায়ী, কৃষক ও কারিগর শ্রেণি। সমাজে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সামাজিক মর্যাদায় ক্ষত্রিয়দের চেয়ে নিচে ছিলেন।
-
শূদ্র: এই শ্রেণির মানুষ অন্য বর্ণের সেবায় নিয়োজিত থাকতেন। সমাজে তাদের মর্যাদা ছিল নিম্ন এবং বহু সামাজিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত ছিলেন।
-
অস্পৃশ্য বা অন্ত্যজ শ্রেণি: সমাজের সবচেয়ে নিচু স্তরে অবস্থান করত। তাদের “অস্পৃশ্য” বলে গণ্য করা হতো, এবং তারা সামাজিক মেলামেশা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও জনজীবনের বহু ক্ষেত্র থেকে বঞ্চিত থাকত।
এইভাবে দেখা যায়, ভারতীয় সমাজে জাতিবর্ণ প্রথাই মানুষের মর্যাদা, অধিকার ও সামাজিক অবস্থানের মূল ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল।

0
Updated: 3 days ago