রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক কে?
A
ম্যাকিয়াভেলী
B
এরিস্টটল
C
সক্রেটিস
D
হেগেল
উত্তরের বিবরণ
অ্যারিস্টটলকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক বলা হয় কারণ তিনি প্রথম রাষ্ট্র, সরকার ও নাগরিক জীবনের বিশদ বিশ্লেষণ করেন এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে একটি স্বতন্ত্র বিদ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর রচনা ‘পলিটিক্স (Politics)’ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী গ্রন্থ। এতে তিনি রাষ্ট্রের উৎপত্তি, গঠন, উদ্দেশ্য এবং নাগরিকের ভূমিকা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করেছেন।
রাষ্ট্রের স্বাভাবিক উৎপত্তি: তিনি মনে করতেন, মানুষ স্বভাবতই রাজনৈতিক প্রাণী (Political Animal)। তাই সমাজ ও রাষ্ট্র মানুষের প্রাকৃতিক প্রয়োজন থেকে উদ্ভূত।
-
রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য: তাঁর মতে, রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হলো নাগরিকদের নৈতিক ও পূর্ণাঙ্গ জীবনযাপনের সুযোগ সৃষ্টি করা।
-
সরকারের শ্রেণিবিভাগ: অ্যারিস্টটল রাজতন্ত্র, অভিজাততন্ত্র ও গণতন্ত্রকে সুশাসনের রূপ এবং স্বৈরতন্ত্র, অলিগার্কি ও ভ্রান্ত গণতন্ত্রকে কুশাসনের রূপ হিসেবে চিহ্নিত করেন।
-
নাগরিকের ভূমিকা: তিনি নাগরিককে শুধু বাসিন্দা নয়, বরং রাষ্ট্র পরিচালনায় সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে দেখেছেন।
-
আইন ও ন্যায়বিচারের গুরুত্ব: অ্যারিস্টটল জোর দিয়েছেন যে ন্যায়ভিত্তিক আইনই রাষ্ট্রের স্থায়িত্ব ও কল্যাণ নিশ্চিত করে।
-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে স্বতন্ত্র বিদ্যা হিসেবে প্রতিষ্ঠা: তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের লক্ষ্য, পদ্ধতি ও ক্ষেত্র নির্ধারণ করেন, যা পরবর্তীতে রাজনৈতিক চিন্তার ভিত্তি হয়ে ওঠে।
সব মিলিয়ে, রাষ্ট্র ও রাজনীতি সম্পর্কে তাঁর বিশ্লেষণ আধুনিক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভিত্তি স্থাপন করেছে। এই কারণেই তাঁকে “রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক” বলা হয়।

0
Updated: 2 days ago
ইতিহাসের জনক কে?
Created: 2 days ago
A
প্লেটো
B
হেরোডোটাস
C
এরিস্টটল
D
সক্রেটিস
হেরোডোটাস ছিলেন প্রাচীন গ্রিসের একজন বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ, যাকে “আধুনিক ইতিহাসের জনক” বলা হয়। তিনি ইতিহাসকে গল্প বা কিংবদন্তি হিসেবে নয়, বরং বাস্তব ঘটনা ও গবেষণার মাধ্যমে ব্যাখ্যা করার প্রথা শুরু করেন। এজন্যই তিনি ইতিহাসচর্চায় এক নতুন ধারার সূচনা করেন।
-
হেরোডোটাসের জন্ম ৪৮৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এশিয়া মাইনরের হ্যালিকারনাসাসে (বর্তমান তুরস্কে) হয়েছিল। তিনি এমন এক সময়ে জন্মগ্রহণ করেন যখন গ্রিক সভ্যতা জ্ঞান, সংস্কৃতি ও রাজনীতিতে উন্নতির শীর্ষে ছিল। ছোটবেলা থেকেই তিনি ভ্রমণপ্রিয় ছিলেন এবং বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের জীবন, সংস্কৃতি ও যুদ্ধ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতেন।
-
তাঁর বিখ্যাত রচনা “Histories” (ইতিহাসসমূহ), যেখানে তিনি মূলত গ্রিক ও পারসিক যুদ্ধের (Persian Wars) বিবরণ দেন। বইটিতে যুদ্ধের কারণ, ঘটনার ধারা এবং বিভিন্ন জাতির সংস্কৃতি, ধর্ম ও ভূগোল সম্পর্কেও বিস্তারিত তথ্য রয়েছে।
-
হেরোডোটাস শুধুমাত্র যুদ্ধের ইতিহাস লেখেননি; তিনি ঘটনাগুলোর পিছনের কারণ বিশ্লেষণ করেছেন এবং মানুষ ও সমাজের আচরণ বোঝার চেষ্টা করেছেন। এ কারণেই ইতিহাসকে তিনি শুধুমাত্র ঘটনার ধারাবিবরণী হিসেবে নয়, বরং গবেষণাভিত্তিক জ্ঞানের শাখা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।
-
তাঁকে প্রায়ই থুসিডাইডিসের সঙ্গে তুলনা করা হয়, যিনি বাস্তববাদী ইতিহাসলেখার জন্য বিখ্যাত। থুসিডাইডিস রাজনৈতিক ও সামরিক ইতিহাসের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন, যেখানে হেরোডোটাস মানবজীবনের বিস্তৃত দিকগুলো তুলে ধরেন।
সব মিলিয়ে, হেরোডোটাস ইতিহাসকে যুক্তি, অনুসন্ধান ও তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে উপস্থাপন করে ইতিহাসচর্চার নতুন যুগের সূচনা করেন। তাঁর কাজ আজও ইতিহাস গবেষণার ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।

0
Updated: 2 days ago