নিচের কোনটি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উদাহরণ?
A
পরিবার
B
শিক্ষা ব্যবস্থা
C
সরকার
D
শ্রমবাজার
উত্তরের বিবরণ
শ্রমবাজার (Labor Market) হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান (Economic Institution), যেখানে শ্রমকে একটি উৎপাদন উপাদান হিসেবে ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। এখানে শ্রমিক ও নিয়োগকর্তার পারস্পরিক সম্পর্কের মাধ্যমে শ্রমের মূল্য, চাহিদা ও সরবরাহ নির্ধারিত হয়।
প্রধান দিকগুলো হলো—
-
সংজ্ঞা: শ্রমবাজার হলো এমন একটি ব্যবস্থা বা ক্ষেত্র, যেখানে শ্রমিকরা তাদের শ্রম বিক্রি করেন এবং নিয়োগকর্তারা শ্রম ক্রয় করেন।
-
কার্যাবলি: এই বাজারে শ্রমের চাহিদা (Demand) আসে নিয়োগকর্তার পক্ষ থেকে, আর সরবরাহ (Supply) আসে শ্রমিকদের পক্ষ থেকে। এ দুইয়ের ভারসাম্যের ওপর শ্রমের মজুরি বা বেতন নির্ভর করে।
-
অর্থনৈতিক গুরুত্ব: এটি অর্থনীতির অন্যতম কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠান, কারণ এখানে উৎপাদন প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয় মানবসম্পদ সরবরাহ হয়।
-
প্রভাব: শ্রমবাজারের অবস্থা নির্ধারণ করে দেশের কর্মসংস্থান, আয়-বণ্টন, ও জীবনমান।
-
অন্য প্রতিষ্ঠান থেকে পার্থক্য:
-
সামাজিক প্রতিষ্ঠান: পরিবার, ধর্ম, শিক্ষা ইত্যাদি।
-
রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান: সরকার, প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ইত্যাদি।
-
কিন্তু শ্রমবাজার অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, কারণ এটি সরাসরি অর্থনৈতিক লেনদেন ও উৎপাদন কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত।
-
অতএব, শ্রমবাজার সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামোর একটি মৌলিক অংশ, যা কর্মসংস্থান ও উৎপাদনের ভারসাম্য রক্ষা করে।

0
Updated: 2 days ago
সাম্প্রতিক বাংলাদেশের কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির প্রধান কারণ কী?
Created: 1 day ago
A
শিক্ষার অভাব
B
বেকারত্ব
C
তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা
D
পিতামাতার বিবাহ বিচ্ছেদ
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন কারণ এর পেছনে ভূমিকা রাখলেও, সবচেয়ে কার্যকর ও দ্রুত প্রভাবশালী কারণ হলো তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা, যা কিশোরদের মানসিক, সামাজিক ও নৈতিক আচরণে বড় প্রভাব ফেলছে।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। তথ্য প্রযুক্তির সহজলভ্যতা:
-
স্মার্টফোন, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এখন কিশোরদের জন্য সহজলভ্য ও সুলভ।
-
অনিয়ন্ত্রিতভাবে সহিংস গেম, অশালীন ভিডিও, অপরাধমূলক কনটেন্ট ও নৈতিকহীন তথ্য কিশোরদের মানসিক বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
-
সামাজিক মাধ্যমে গ্রুপ কালচার, অনলাইন চ্যালেঞ্জ ও ভার্চুয়াল প্রভাব তাদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াতে উৎসাহিত করছে।
২। পারিবারিক ভাঙন:
-
সাম্প্রতিক সময়ে পিতা-মাতার বিবাহবিচ্ছেদ ও পারিবারিক অস্থিরতা বেড়েছে, যা কিশোরদের মানসিক নিরাপত্তা নষ্ট করছে।
-
পর্যাপ্ত নজরদারি না থাকায় অনেক কিশোর মানসিক চাপ ও একাকিত্বের ফলে বিপথে যাচ্ছে।
৩। শিক্ষা ও বেকারত্ব:
-
শিক্ষার অভাব বা বেকারত্ব বাংলাদেশের দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হলেও, সাম্প্রতিক কালের কিশোর অপরাধ বৃদ্ধিতে এটি সরাসরি প্রধান কারণ নয়।
-
তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈতিক শিক্ষা ও সাইবার সচেতনতার অভাব কিশোরদের অপরাধ প্রবণতায় সহায়ক ভূমিকা রাখছে।
৪। সামাজিক প্রভাব:
-
জনপ্রিয় সংস্কৃতি, অপরাধভিত্তিক নাটক বা ভিডিও কনটেন্ট এবং অনলাইন খ্যাতির লোভ অনেক কিশোরকে বিপথে ঠেলে দিচ্ছে।
অতএব, সাম্প্রতিক কালে বাংলাদেশের কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির প্রধান কারণ হলো তথ্য প্রযুক্তির নিয়ন্ত্রণহীন ও অবারিত ব্যবহার, যা পারিবারিক তদারকি ও সামাজিক সচেতনতার অভাবে কিশোর সমাজে এক উদ্বেগজনক প্রবণতা সৃষ্টি করছে।

0
Updated: 1 day ago
মাক্স ওয়েভার কর্তৃত্বকে কয়ভাগে ভাগ করেছেন?
Created: 2 days ago
A
৪
B
৩
C
৫
D
২
ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) সমাজে কর্তৃত্বের উৎস ও ধরন বিশ্লেষণ করে এটিকে তিনটি প্রধান ভাগে বিভক্ত করেছেন। তাঁর মতে, কর্তৃত্বের বৈধতা নির্ভর করে মানুষ কেন ও কীভাবে শাসকের আদেশ মেনে নেয় তার ওপর। প্রতিটি কর্তৃত্বের ধরন সমাজে ভিন্ন সামাজিক কাঠামো ও নেতৃত্বব্যবস্থা তৈরি করে।
তিনটি প্রধান কর্তৃত্ব হলো—
-
চিহ্নিত বা ঐতিহ্যগত কর্তৃত্ব (Traditional Authority):
-
উৎস: প্রাচীন প্রথা, ঐতিহ্য ও বংশগত উত্তরাধিকার।
-
বৈশিষ্ট্য: মানুষ এই কর্তৃত্ব মেনে নেয় কারণ এটি দীর্ঘদিন ধরে স্বীকৃত ও প্রচলিত।
-
উদাহরণ: রাজা, উপজাতি প্রধান, বা গ্রামীণ নেতা।
-
-
চারিত্রিক বা বৈধ-আইনগত কর্তৃত্ব (Legal-Rational Authority):
-
উৎস: আইন, বিধি ও আনুষ্ঠানিক নিয়মকানুন।
-
বৈশিষ্ট্য: এই কর্তৃত্ব যুক্তি ও আইননির্ভর; ব্যক্তি নয়, বরং পদ ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি আনুগত্য থাকে।
-
উদাহরণ: আধুনিক রাষ্ট্র, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, বিচারব্যবস্থা বা সরকারি প্রতিষ্ঠান।
-
-
ক্যারিশমাটিক বা ব্যক্তিত্বভিত্তিক কর্তৃত্ব (Charismatic Authority):
-
উৎস: নেতার অসাধারণ ব্যক্তিত্ব, আদর্শ, সাহস বা আধ্যাত্মিক শক্তি।
-
বৈশিষ্ট্য: মানুষ নেতার প্রতি গভীর বিশ্বাস ও অনুপ্রেরণার কারণে তার নির্দেশ অনুসরণ করে।
-
উদাহরণ: ধর্মীয় নেতা, বিপ্লবী নেতা বা সামাজিক আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী ব্যতিক্রমী ব্যক্তি।
-
ওয়েবারের এই বিশ্লেষণ সমাজবিজ্ঞানে নেতৃত্ব, ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের প্রকৃতি বোঝার ক্ষেত্রে মৌলিক ভিত্তি হিসেবে গণ্য হয়।

0
Updated: 2 days ago
জমির পরিমান ও মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামো কয় ধরনের?
Created: 3 days ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
৬
গ্রামীণ সমাজে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থান সাধারণত ভূমির মালিকানার পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এই ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতার কাঠামোকে চারটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, যা সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পার্থক্য নির্দেশ করে।
-
ধনী কৃষক: এরা গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী শ্রেণি। তাদের প্রচুর জমি, কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। গ্রামীণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বে তাদের ভূমিকা মুখ্য।
-
প্রান্তিক কৃষক: এদের জমির পরিমাণ সীমিত এবং জীবিকা টিকিয়ে রাখতে তারা অনেক সময় অন্যের জমিতেও কাজ করে। তাদের সামাজিক প্রভাব সীমিত হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
বর্গাচাষী: এরা অন্যের জমি চাষ করে এবং উৎপন্ন ফসলের একটি অংশ জমির মালিককে প্রদান করে। তাদের জমির মালিকানা না থাকলেও শ্রম ও উৎপাদনে তারা অপরিহার্য।
-
ভূমিহীন কৃষক বা কৃষিশ্রমিক: এরা জমির মালিক নয়, অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ সমাজে এ শ্রেণি সবচেয়ে নিম্ন অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকে এবং তাদের সামাজিক প্রভাবও সীমিত।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বই (অক্ষরপত্র প্রকাশনা, পৃষ্ঠা ১৭৮) অনুযায়ী, ভূমির মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামোকে এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।

0
Updated: 3 days ago