শহরে ক্ষমতা কাঠামোর ভিত্তি কয়টি?
A
৩টি
B
৫টি
C
৪টি
D
৬টি
উত্তরের বিবরণ
শহর সমাজে ক্ষমতা কাঠামোর ভিত্তি (Basis of Power Structure in Urban Society) সাধারণত পাঁচটি মূল উপাদানের ওপর প্রতিষ্ঠিত। এসব উপাদান শহরের সামাজিক মর্যাদা, প্রভাব ও নেতৃত্ব নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
প্রধান ভিত্তিগুলো হলো—
-
১. সম্পত্তি: শিল্পকারখানার মালিক, ব্যবসায়ী বা ভূমি-মালিকরা শহরের অর্থনৈতিক ক্ষমতার অধিকারী। অর্থসম্পদই তাদের সামাজিক মর্যাদা ও রাজনৈতিক প্রভাবের ভিত্তি তৈরি করে।
-
২. রাজনৈতিক দলের সদস্যপদ: শহরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে সক্রিয় সদস্যরা নীতিনির্ধারণ, প্রশাসন ও নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তার করে। রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা ক্ষমতার গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
-
৩. সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার নিয়ন্ত্রণ: স্থানীয় সরকার ব্যবস্থার নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি বা গোষ্ঠী শহরের অবকাঠামো, সেবা ও উন্নয়ন কার্যক্রমে কর্তৃত্ব প্রয়োগ করে।
-
৪. পেশা: চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা প্রভৃতি পেশাজীবীরা শহরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নেতৃত্বে প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করেন।
-
৫. শিক্ষা: উচ্চশিক্ষা অর্জন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে জ্ঞান, দক্ষতা ও সামাজিক মর্যাদায় উন্নীত করে, যা শহুরে ক্ষমতা কাঠামোর অন্যতম ভিত্তি।
সূত্র: একাদশ–দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান, কাজল ব্রাদার্স প্রকাশনা।
এই পাঁচটি উপাদান সম্মিলিতভাবে শহরে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতার ভারসাম্য নির্ধারণ করে।

0
Updated: 2 days ago
২০২২ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কত?
Created: 1 day ago
A
১.৪০%
B
১.৩৯%
C
১.২২%
D
১.৩৩%
২০২২ সালের বাংলাদেশ আদমশুমারির ফলাফল অনুযায়ী দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি, লিঙ্গ অনুপাত এবং শহর-গ্রামের জনসংখ্যাগত কাঠামোয় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়। এতে বোঝা যায়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমলেও নগরায়ণ ও নারীর সংখ্যা বৃদ্ধি একটি নতুন জনসংখ্যাগত প্রবণতা তৈরি করছে।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার:
-
২০২২ সালে দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার দাঁড়ায় ১.২২%, যা ২০১১ সালের ১.৩৭% হারের তুলনায় কিছুটা কম।
-
এটি ইঙ্গিত করে যে বাংলাদেশে জন্মহার হ্রাস এবং পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়ন ঘটছে।
২। মোট জনসংখ্যা (২০২২):
-
দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬৯,৮২৮,৯১১ জন বা প্রায় ১৭ কোটি।
-
বাংলাদেশ এখন বিশ্বের অন্যতম জনবহুল দেশ হিসেবে অবস্থান করছে।
৩। শহর ও গ্রামভিত্তিক জনসংখ্যা:
-
শহরাঞ্চলে ৪০% এবং গ্রামাঞ্চলে ৬০% মানুষ বসবাস করে।
-
এটি দেখায় যে নগরায়ণ দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যদিও গ্রামীণ জনসংখ্যা এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ।
৪। লিঙ্গভিত্তিক বিভাজন:
-
২০২২ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী মহিলা জনসংখ্যা পুরুষের তুলনায় সামান্য বেশি।
-
এটি নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সামাজিক অবস্থানের উন্নতির একটি ইতিবাচক ইঙ্গিত বহন করে।
অতএব, ২০২২ সালের আদমশুমারির তথ্য প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, তবে নগরায়ণ ও নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি দেশের সামাজিক কাঠামোয় নতুন পরিবর্তনের সূচনা করছে।

0
Updated: 1 day ago
ভারতে মুসলিম জাগরনের অগ্রদূত কে ছিলেন?
Created: 1 day ago
A
স্যার সৈয়দ আহমদ
B
স্যার সলিমুল্লাহ
C
মাওলানা আবদুল কালাম আজাদ
D
নওয়াব আবদুল গনি
ভারতে মুসলিম সমাজের আধুনিক জাগরণের পথিকৃৎ ছিলেন স্যার সৈয়দ আহমদ খান (Sir Syed Ahmad Khan, 1817–1898)। তিনি মুসলমানদের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা, বিজ্ঞানমনস্কতা ও যুক্তিবাদী চিন্তাভাবনার বিস্তার ঘটিয়ে একটি নতুন সমাজচেতনার সূচনা করেন। তাঁর প্রচেষ্টার ফলেই উনিশ শতকে মুসলিম সমাজে শিক্ষাগত ও সামাজিক পুনর্জাগরণের সূচনা ঘটে।
মূল তথ্যগুলো হলো—
১। আলীগড় আন্দোলনের সূচনা: স্যার সৈয়দ আহমদ খান ১৮৭৫ সালে আলীগড় আন্দোলন (Aligarh Movement) শুরু করেন। এর উদ্দেশ্য ছিল মুসলমানদের আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষা অর্জনে উৎসাহিত করা এবং তাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।
২। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা: তাঁর উদ্যোগে ১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মোহাম্মদান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ (Mohammedan Anglo-Oriental College), যা পরবর্তীতে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় (Aligarh Muslim University) নামে বিকশিত হয়।
৩। আধুনিক শিক্ষা ও যুক্তিবাদ: তিনি মুসলমানদের মধ্যে ধর্মীয় শিক্ষা ছাড়াও বিজ্ঞান, ইতিহাস, দর্শন ও ইংরেজি ভাষার গুরুত্ব তুলে ধরেন, যাতে মুসলিম সমাজ আধুনিক বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে।
৪। সামাজিক প্রভাব: আলীগড় আন্দোলন মুসলমানদের মধ্যে শিক্ষা, সংস্কার ও আত্মচেতনার বিকাশ ঘটায় এবং পরবর্তীকালে ভারতীয় মুসলমানদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও সংগঠন গঠনে (যেমন মুসলিম লীগ) প্রভাব ফেলে।
৫। ঐতিহাসিক গুরুত্ব: এই আন্দোলনের ফলে মুসলমান সমাজে আধুনিকীকরণ, জাতীয় চেতনা ও আত্মনির্ভরতা-এর ধারণা শক্তিশালী হয়, যা পরবর্তী রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের ভিত্তি স্থাপন করে।
সুতরাং, স্যার সৈয়দ আহমদ খান ও তাঁর আলীগড় আন্দোলনই ছিল ভারতে মুসলিম জাগরণের মূল চালিকা শক্তি, যা মুসলমানদের আধুনিক শিক্ষা ও চিন্তার ধারায় যুক্ত করে নতুন যুগের সূচনা করেছিল।

0
Updated: 1 day ago
সমাজবিজ্ঞানী Cooley গোষ্ঠীকে কয়ভাগে ভাগ করেছেন?
Created: 1 day ago
A
২
B
৩
C
৪
D
৫
সমাজবিজ্ঞানী চার্লস হর্টন কুলি (Charles Horton Cooley) গোষ্ঠীকে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা ও যোগাযোগের ধরন অনুসারে দুই ভাগে বিভক্ত করেছেন— মূখ্য গোষ্ঠী (Primary Group) ও গৌণ গোষ্ঠী (Secondary Group)। তিনি মানুষের সামাজিক সম্পর্কের প্রকৃতি বোঝাতে এই শ্রেণিবিন্যাস প্রদান করেন।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। মূখ্য গোষ্ঠী (Primary Group):
-
সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ, আন্তরিক ও মুখোমুখি (Face-to-Face)।
-
এই গোষ্ঠীতে আবেগ, ভালোবাসা, সহযোগিতা ও পারস্পরিক বোঝাপড়া প্রধান।
-
উদাহরণ: পরিবার, বন্ধুদের দল, প্রতিবেশী গোষ্ঠী ইত্যাদি।
-
মূখ্য গোষ্ঠী সমাজে ব্যক্তির চরিত্র গঠন, সামাজিকীকরণ ও মানসিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
২। গৌণ গোষ্ঠী (Secondary Group):
-
এখানে সম্পর্ক অব্যক্তিগত, আনুষ্ঠানিক ও উদ্দেশ্যনির্ভর।
-
সদস্যদের মধ্যে আবেগের বন্ধন কম, সম্পর্ক মূলত কাজ বা স্বার্থের ওপর নির্ভরশীল।
-
উদাহরণ: অফিস, বিদ্যালয়, ব্যবসায়িক সংগঠন, রাজনৈতিক দল ইত্যাদি।
-
গৌণ গোষ্ঠী আধুনিক সমাজে কার্যসম্পাদন ও সংগঠিত জীবনের প্রতীক।
অতএব, কুলির মতে মূখ্য গোষ্ঠী মানবিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত, আর গৌণ গোষ্ঠী লক্ষ্যনির্ভর ও আনুষ্ঠানিক সম্পর্কের প্রতিফলন, যা একত্রে সমাজের কাঠামোকে ভারসাম্যপূর্ণ করে তোলে।

0
Updated: 1 day ago