"আদিম সমাজ ছিল হয় ভুরিভোজ না হয় উপবাস” উক্তিটি কার?
A
ডুর্খীম
B
স্পেন্সার
C
মর্গান
D
টেইলর
উত্তরের বিবরণ
“আদিম সমাজ ছিল হয় ভুরিভোজ না হয় উপবাস” — এই উক্তিটি মূলত ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ মিনু বাসায়নির (Minu Basayni) সঙ্গে সম্পর্কিত, যিনি আদিম সমাজের জীবনযাত্রা ও খাদ্যসংস্কৃতির অনিশ্চয়তাকে বোঝাতে এ মন্তব্য করেছিলেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে আদিম সমাজে খাদ্যসংগ্রহ ছিল সম্পূর্ণভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশ ও শিকারনির্ভর, ফলে একদিন প্রচুর খাবার মিললেও অন্যদিন তা সম্পূর্ণ অনুপস্থিত থাকত।
তবে যদি অপশন তালিকায় মিনু বাসায়নির নাম না থাকে, তাহলে এডওয়ার্ড বি. টেইলর (Edward B. Tylor)-কে গ্রহণযোগ্য ধরা যায়।
-
কারণ: টেইলর তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ Primitive Culture (১৮৭১)-এ আদিম সমাজের জীবন, বিশ্বাস, খাদ্যসংগ্রহ ও সংস্কৃতির প্রাথমিক রূপ বিশদভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
-
তাঁর মতে, আদিম সমাজে মানুষ শিকার ও সংগ্রহের ওপর নির্ভরশীল ছিল, তাই তাদের জীবনে অভাব ও প্রাচুর্য—এই দুই চরম অবস্থা বারবার দেখা দিত।
-
এই প্রেক্ষিতে “ভুরিভোজ ও উপবাসের সমাজ” কথাটি আদিম জীবনের বাস্তব চিত্র হিসেবেই প্রতিফলিত হয়।
অতএব, উক্তিটির মূল রচয়িতা মিনু বাসায়নি হলেও, যদি তাঁর নাম বিকল্পে না থাকে, তবে টেইলরই সবচেয়ে উপযুক্ত ও গ্রহণযোগ্য উত্তর হিসেবে বিবেচিত হবে।

0
Updated: 2 days ago
'সমাজে মৌল কাঠামোর পরিবর্তন হলে উপরি কাঠামোর পরিবর্তন ঘটে'-কে বলেছেন?
Created: 1 day ago
A
ওয়েভার
B
সরোকিন
C
মার্ক্র
D
স্পেন্সার
কার্ল মার্কস সমাজব্যবস্থাকে বিশ্লেষণ করে দেখিয়েছিলেন যে সমাজের মূল ভিত্তি অর্থনৈতিক কাঠামোর ওপর নির্ভরশীল। তাঁর মতে, সমাজের সব প্রতিষ্ঠান, ধারণা ও মূল্যবোধ মূলত অর্থনৈতিক শক্তি ও সম্পর্কের দ্বারা প্রভাবিত হয়। এজন্যই তিনি সমাজকাঠামোকে দুটি প্রধান অংশে ভাগ করেছেন।
এই দুটি কাঠামো হলো—
১। মৌল কাঠামো (Base): এটি সমাজের অর্থনৈতিক ভিত্তি, যেখানে উৎপাদন ব্যবস্থা, উৎপাদন সম্পর্ক, সম্পদের বণ্টন ও শ্রমের ভূমিকা অন্তর্ভুক্ত। এই কাঠামো নির্ধারণ করে কে উৎপাদন করবে, কারা উৎপাদনের উপকরণের মালিক, এবং শ্রম কীভাবে ব্যবহৃত হবে। মার্কসের মতে, সমাজের বাস্তব রূপ ও শক্তির সম্পর্ক এই অর্থনৈতিক কাঠামো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত।
২। উপরি কাঠামো (Superstructure): এটি সমাজের অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর নির্মিত সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সমষ্টি। যেমন—রাষ্ট্র, আইন, শিক্ষা, ধর্ম, সাহিত্য ও সংস্কৃতি। এগুলো সমাজের অর্থনৈতিক স্বার্থকে প্রতিফলিত ও রক্ষা করে।
মার্কস বলেন, অর্থনীতিই সমাজের ভিত্তি, তাই যখন মৌল কাঠামোতে পরিবর্তন ঘটে, তখন স্বাভাবিকভাবেই উপরি কাঠামোতেও পরিবর্তন আসে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো সমাজের উৎপাদনব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটলে তার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থাতেও রূপান্তর ঘটে।
অতএব, মার্কসের এই তত্ত্ব সমাজবিজ্ঞানে এক মৌলিক ধারণা—যে অর্থনৈতিক কাঠামোই সমাজের সব পরিবর্তনের চালিকা শক্তি।

0
Updated: 1 day ago
বৃটিশরা এদেশে আসারপূর্বে গ্রামগুলো ছিল-
Created: 2 days ago
A
প্রজাতান্ত্রিক
B
স্বৈরতান্ত্রিক
C
স্বয়ংসম্পূর্ণ
D
রাজতান্ত্রিক
স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম (Self-sufficient Village) হলো এমন এক সমাজব্যবস্থা যেখানে গ্রামবাসীরা তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজন নিজেরাই মেটাতে সক্ষম হয় এবং বাইরের বাজার বা শহরের ওপর নির্ভরতা খুবই সীমিত থাকে। এই ধরনের গ্রাম অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে স্বনির্ভর, যা প্রাচীন কৃষিনির্ভর সমাজব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা (Economic Self-sufficiency):
-
গ্রামে উৎপাদিত খাদ্যশস্য, ফলমূল, সবজি, দুধ, হস্তশিল্প ও কৃষিজ পণ্য স্থানীয় চাহিদা পূরণে যথেষ্ট হয়।
-
বাইরের বাজার বা আমদানি করা পণ্যের প্রয়োজন খুবই কম।
-
কৃষি, পশুপালন, তাঁত ও মৃৎশিল্প গ্রামের অর্থনীতির মূল ভিত্তি।
২। সামাজিক স্বায়ত্তশাসন (Social Autonomy):
-
গ্রামের নিজস্ব প্রথা, রীতিনীতি ও সামাজিক নিয়ম দ্বারা সমাজ পরিচালিত হয়।
-
গ্রামীণ সমাজে বিরোধ বা সিদ্ধান্ত সাধারণত স্থানীয় পঞ্চায়েত বা প্রবীণদের সভায় নিষ্পত্তি করা হয়।
-
গ্রামের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জীবিকা, সম্পদের ব্যবহার ও সামাজিক সম্পর্ক নির্ধারিত হয়।
৩। সম্পদের যৌথ ব্যবহার:
-
পানি, বন, চারণভূমি ও পুকুরের মতো প্রাকৃতিক সম্পদ সমষ্টিগতভাবে ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।
৪। সাংস্কৃতিক ঐক্য:
-
গ্রামবাসীদের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা, ঐক্য ও সামাজিক সংহতি দৃঢ় থাকে।
অতএব, স্বয়ংসম্পূর্ণ গ্রাম হলো এমন এক স্বনির্ভর সামাজিক ও অর্থনৈতিক একক, যা নিজের উৎপাদনের ওপর নির্ভর করে টিকে থাকে এবং স্থানীয় ঐক্য, সহযোগিতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সমাজে স্থিতি বজায় রাখে।

0
Updated: 2 days ago
'প্রতিকী মিথস্ক্রিয়ার' তত্ত্ব কে দিয়েছেন?
Created: 1 day ago
A
মিড
B
ব্লুমার
C
ডুর্খীম
D
স্পেনসার
প্রতিকী মিথস্ক্রিয়া (Symbolic Interactionism) সমাজবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্ত্ব, যা মূলত জর্জ হারবার্ট মিড (George Herbert Mead, 1863–1931) প্রবর্তন করেন এবং পরবর্তীতে তাঁর ছাত্র হারবার্ট ব্লুমার (Herbert Blumer, 1900–1987) এই তত্ত্বকে সংজ্ঞায়িত ও প্রসারিত করেন। এই তত্ত্ব মানব সমাজকে ব্যাখ্যা করে একটি অর্থনির্ভর মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল হিসেবে, যেখানে মানুষ প্রতীক ও ভাষার মাধ্যমে অর্থ সৃষ্টি ও বিনিময় করে।
মূল বিষয়গুলো হলো—
১। সমাজ মানবিক মিথস্ক্রিয়ার ফল: সমাজ কোনো যান্ত্রিক গঠন নয়; বরং মানুষের পারস্পরিক সম্পর্ক, যোগাযোগ ও প্রতীক ব্যবহারের মাধ্যমেই সমাজ গঠিত হয়।
২। প্রতীকের ভূমিকা: মানুষ প্রতীক (Symbols) ব্যবহার করে অর্থ তৈরি করে ও অন্যদের সঙ্গে তা ভাগাভাগি করে। প্রতীক হতে পারে ভাষা, অঙ্গভঙ্গি, বস্তু বা এমন কিছু যা সামাজিকভাবে অর্থবহ।
৩। অর্থ সৃষ্টির প্রক্রিয়া: ব্যক্তি তার অভিজ্ঞতা, সামাজিক প্রেক্ষাপট ও যোগাযোগের মাধ্যমে প্রতীকের অর্থ বোঝে এবং নতুন অর্থ সৃষ্টি করে।
৪। ইন্টারপ্রিটেশন বা ব্যাখ্যার গুরুত্ব: মানুষ শুধুমাত্র প্রতিক্রিয়া করে না, বরং সামাজিক আচরণের আগে সে অর্থ ব্যাখ্যা করে, তারপর তার ওপর ভিত্তি করে কাজ করে।
৫। ব্যক্তিত্ব ও আচরণের বিকাশ: ব্যক্তির সামাজিক পরিবেশ ও মিথস্ক্রিয়ার অভিজ্ঞতা তার ব্যক্তিত্ব গঠন ও আচরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
সংক্ষেপে, প্রতিকী মিথস্ক্রিয়ার তত্ত্ব দেখায় যে সমাজ হলো এক অবিরাম প্রতীকভিত্তিক যোগাযোগ ও অর্থ সৃষ্টির প্রক্রিয়া, যেখানে মানুষের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই সামাজিক বাস্তবতা গঠিত হয়।

0
Updated: 1 day ago