মানবগোষ্ঠী বিভাজনের প্রাচীন এক দৃষ্টিভঙ্গি হলো বর্ণবাদী শ্রেণিবিন্যাস (Racial Classification), যেখানে মানুষের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য ও ভৌগোলিক অবস্থানের ভিত্তিতে চারটি প্রধান গোষ্ঠীতে ভাগ করা হয়েছিল। যদিও আধুনিক বিজ্ঞান এই বিভাজনকে অগ্রহণযোগ্য ও অবৈজ্ঞানিক হিসেবে প্রত্যাখ্যান করেছে, তবুও ইতিহাসে এটি নৃতত্ত্ব ও সমাজবিজ্ঞানের প্রাথমিক অধ্যয়ন কাঠামো হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। ককেশয়েড (Caucasoid):
-
আবাসস্থল: ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর আফ্রিকা ও ভারতীয় উপমহাদেশ।
-
বৈশিষ্ট্য: ত্বক সাধারণত হালকা বা ফর্সা, চুল সোজা বা তরঙ্গাকৃতি, নাক সরু ও মুখাবয়ব লম্বাটে।
২। নিগ্রয়েড (Negroid):
-
আবাসস্থল: মূলত আফ্রিকার দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল।
-
বৈশিষ্ট্য: গাঢ় কৃষ্ণ ত্বক, বোঁচকা বা কোঁকড়া চুল, প্রশস্ত নাক, মোটা ঠোঁট ও দৃঢ় শারীরিক গঠন।
৩। মঙ্গোলয়েড (Mongoloid):
-
আবাসস্থল: পূর্ব এশিয়া, মধ্য এশিয়া, সাইবেরিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং আমেরিকার আদিবাসীদের মধ্যে।
-
বৈশিষ্ট্য: হলুদাভ বা হালকা বাদামি ত্বক, কালো ও সোজা চুল, চওড়া মুখ, চোখে epicanthic fold নামক বিশেষ ভাঁজ।
৪। অস্ট্রালয়েড (Australoid):
-
আবাসস্থল: অস্ট্রেলিয়া, নিউগিনি এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু অঞ্চলে।
-
বৈশিষ্ট্য: গাঢ় ত্বক, ভোঁতা নাক, ঢিলা বা কোঁকড়া চুল এবং অপেক্ষাকৃত খাটো গঠন।
অতএব, এই চার ভাগ বিভাজন ঐতিহাসিকভাবে মানুষের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্যভিত্তিক এক সাধারণ শ্রেণিবিন্যাস, যদিও আধুনিক জিনতত্ত্ব প্রমাণ করেছে যে মানবজাতি মূলত একক প্রজাতি, এবং বর্ণভেদ কেবল পরিবেশ ও অভিযোজনজনিত পার্থক্যের ফল।