কার্ল মার্ক্স (Karl Marx) সমাজকে অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর বিশ্লেষণ করে বলেছেন যে মানবসমাজের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো একটি শ্রেণীহীন ও শোষণহীন কমিউনিস্ট সমাজ (Communist Society / Classless Society) প্রতিষ্ঠা। তাঁর মতে, ইতিহাস হলো শ্রেণীসংগ্রামের ইতিহাস, যেখানে এক শ্রেণি অপর শ্রেণিকে শোষণ করে এসেছে।
প্রধান ধারণাগুলো হলো—
-
শ্রেণীভিত্তিক সমাজ: মার্ক্স সমাজকে দুই প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করেছেন—
-
বুর্জোয়া (Bourgeoisie): উৎপাদনের উপকরণের মালিক, অর্থাৎ ধনশালী শ্রেণি।
-
প্রলেতারিয়েত (Proletariat): শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করা শ্রমজীবী শ্রেণি।
-
-
শ্রেণীসংঘাত: এই দুই শ্রেণির মধ্যে স্বার্থসংঘাতই সমাজে শোষণ ও বৈষম্যের মূল উৎস। ধনীরা শ্রমিকের শ্রম শোষণ করে মুনাফা অর্জন করে।
-
বিপ্লব ও পরিবর্তন: মার্ক্স বিশ্বাস করতেন, শ্রমজীবী শ্রেণি একসময় বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করবে এবং শোষণমূলক পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অবসান ঘটাবে।
-
শ্রেণীহীন সমাজের বৈশিষ্ট্য:
-
উৎপাদনের উপকরণ (যেমন জমি, কারখানা, যন্ত্রপাতি) সবার যৌথ মালিকানায় থাকবে।
-
সম্পদের ন্যায়সঙ্গত বণ্টন হবে।
-
সমাজে কোনো শ্রেণিভেদ, শোষণ বা বৈষম্য থাকবে না।
-
-
চূড়ান্ত পর্যায়: মার্ক্সের মতে, সমাজতন্ত্রের পরবর্তী ধাপেই কমিউনিজম বা সাম্যবাদী সমাজ গড়ে উঠবে, যেখানে “প্রত্যেকে তার সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী গ্রহণ করবে।”
এইভাবেই মার্ক্সের দৃষ্টিতে কমিউনিস্ট সমাজ মানবসমাজের চূড়ান্ত ন্যায়ভিত্তিক ও সমতার আদর্শ অবস্থা।