বাংলাদেশে আত্মীয়তা সম্পর্কের (Kinship) ভূমিকা কী?
A
বাণিজ্য ও ব্যাংকিং
B
সম্পত্তির উত্তরাধিকার ও জোট গঠন
C
রাজনৈতিক দল ও গোষ্ঠী গঠন
D
গ্রাম ও শহরের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন
উত্তরের বিবরণ
সমাজে উত্তরাধিকার নির্ধারণের মূল ভিত্তি হলো আত্মীয়তা। কে কার সম্পদ বা সম্পত্তি পাবে, তা সাধারণত রক্তসম্পর্ক বা পারিবারিক সম্পর্কের ওপর নির্ভর করে। এর মাধ্যমে সমাজে সম্পদ ও মর্যাদা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয়, যা সামাজিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখে।
প্রধান বিষয়গুলো হলো—
-
আত্মীয়তার ভূমিকা: উত্তরাধিকার নির্ধারণে আত্মীয়তার সম্পর্কই মুখ্য ভূমিকা পালন করে।
-
রক্তসম্পর্কের ভিত্তি: সাধারণত পিতা-মাতা, পুত্র-কন্যা, ভাই-বোন, স্ত্রী-স্বামী— এরা আত্মীয়তার জালের প্রধান অংশ, যারা সম্পদের ভাগিদার হতে পারে।
-
সামাজিক ও আইনগত প্রক্রিয়া: উত্তরাধিকার শুধু সামাজিক নয়, এটি একটি আইনসম্মত ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে পারিবারিক সম্পত্তি ও সম্পদ বৈধভাবে স্থানান্তরিত হয়।
-
সম্পদ ও মর্যাদার স্থানান্তর: আত্মীয়তার মাধ্যমে কেবল সম্পত্তিই নয়, বরং সামাজিক মর্যাদা, দায়িত্ব ও কর্তৃত্বও প্রজন্মান্তরে সঞ্চারিত হয়।
-
সামাজিক স্থিতিশীলতা: এই উত্তরাধিকারের ধারা সমাজে স্থিতিশীলতা ও ঐক্য বজায় রাখতে সাহায্য করে, কারণ এটি পারিবারিক বন্ধন ও দায়িত্ববোধকে দৃঢ় করে তোলে।

0
Updated: 2 days ago
ফ্রয়েড ব্যক্তিত্ব গঠনে বুদ্ধিবৃত্তির কয়টি উপাদানের কথা বলেছেন?
Created: 1 day ago
A
৩টি
B
৪টি
C
৫টি
D
২টি
সিগমুন্ড ফ্রয়েড ব্যক্তিত্ব গঠনের ক্ষেত্রে মানুষের মনের ভেতরের গঠন বা কাঠামোকে তিনটি প্রধান উপাদানে বিভক্ত করেছেন। এই তত্ত্বটি Structure of Personality নামে পরিচিত, যা মানুষের আচরণ, চিন্তা ও আবেগের পিছনের মানসিক প্রক্রিয়াগুলো ব্যাখ্যা করে।
মূল উপাদানগুলো হলো—
১। ইড (Id): এটি ব্যক্তিত্বের প্রাথমিক ও অবচেতন অংশ, যেখানে মানুষের মৌলিক চাহিদা, ইচ্ছা ও প্রবৃত্তি বাস করে। জন্মের সময় থেকেই এটি উপস্থিত থাকে এবং এটি আনন্দ নীতি (Pleasure Principle) অনুসারে কাজ করে—অর্থাৎ, তাৎক্ষণিক সন্তুষ্টি চায়, বাস্তবতা বা নৈতিকতা বিবেচনা করে না।
২। ইগো (Ego): এটি ব্যক্তিত্বের যুক্তিবাদী ও বাস্তবতা-নির্ভর অংশ, যা ইড-এর প্রবৃত্তি ও বাইরের বাস্তবতার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে। এটি বাস্তব নীতি (Reality Principle) অনুসারে কাজ করে এবং ব্যক্তি যেন সমাজে গ্রহণযোগ্যভাবে নিজের চাহিদা পূরণ করতে পারে, সেই সমন্বয় ঘটায়।
৩। সুপারইগ (Superego): এটি ব্যক্তিত্বের নৈতিক ও আদর্শিক দিক, যা সমাজ, সংস্কৃতি ও পারিবারিক শিক্ষার মাধ্যমে গঠিত হয়। এটি ঠিক-ভুল, নৈতিকতা ও আদর্শের মানদণ্ড নির্ধারণ করে এবং ব্যক্তির বিবেক হিসেবে কাজ করে।
সারসংক্ষেপে, ইড চায় তাত্ক্ষণিক আনন্দ, ইগো কাজ করে বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে, আর সুপারইগ নিয়ন্ত্রণ করে নৈতিকতার ভিত্তিতে। এই তিনটি উপাদানের ভারসাম্যই একজন ব্যক্তির আচরণ ও ব্যক্তিত্বের প্রকৃতি নির্ধারণ করে।

0
Updated: 1 day ago
'নোকমা' কে নির্বাচিত হয়?
Created: 1 day ago
A
বড় মেয়ে
B
মেঝ মেয়ে
C
ছোট মেয়ে
D
সেঝ মেয়ে
গারো সমাজ বাংলাদেশের একটি স্বতন্ত্র উপজাতীয় সমাজব্যবস্থা, যা তার মাতৃতান্ত্রিক (Matriarchal) প্রথার জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। এই সমাজে নারীর অবস্থান সম্মানজনক ও কেন্দ্রীয়, এবং পরিবারের সম্পত্তি ও দায়িত্ব মূলত নারীর মাধ্যমে উত্তরাধিকারে স্থানান্তরিত হয়।
মূল বিষয়গুলো হলো:
১। মাতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা:
-
গারো সমাজে পরিবার ও সম্পত্তির উত্তরাধিকার মায়ের বংশানুক্রমে নির্ধারিত হয়।
-
এখানে নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা অত্যন্ত শক্তিশালী এবং সম্মানজনক।
২। উত্তরাধিকার প্রথা:
-
মাতা মৃত্যুবরণ করলে তার ছোট মেয়ে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হয়।
-
এই ছোট মেয়েকেই “নকনা” (Nokna) বলা হয়।
৩। নকনার ভূমিকা:
-
নকনা পরিবারের সমস্ত সম্পদ ও সম্পত্তির মালিকানা লাভ করে।
-
পরিবারের ভরণপোষণ, সম্পদের ব্যবহার ও পরিবারের সদস্যদের যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব তার ওপর বর্তায়।
-
নকনার মাধ্যমে পরিবারে ঐক্য ও সামাজিক স্থিতি বজায় থাকে।
৪। সামাজিক তাৎপর্য:
-
গারো সমাজের এই মাতৃতান্ত্রিক প্রথা নারীর স্বাধীনতা, নেতৃত্ব ও মর্যাদার প্রতীক।
-
এটি প্রমাণ করে যে গারো সমাজে নারীরা শুধু গৃহকর্ত্রী নয়, বরং পরিবারের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্তম্ভ।
অতএব, গারো সমাজের মাতৃতান্ত্রিক কাঠামো নারীর ক্ষমতায়নের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত, যেখানে নকনা পরিবারের উত্তরাধিকার, দায়িত্ব ও ঐক্যের প্রতীক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

0
Updated: 1 day ago
সমকালীন বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজের পরিবর্তনের কারণ কী?
Created: 1 day ago
A
কৃষি শ্রমিকের অভাব
B
নারী শ্রমের বিস্তার
C
প্রবাসী কর্মসংস্থান
D
উপরের সবগুলো
বাংলাদেশের বর্তমান গ্রামীণ সমাজে প্রবাসী কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স অর্থনীতির গতিপথ ও সামাজিক কাঠামোকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের পাঠানো অর্থ শুধু পরিবার নয়, পুরো গ্রামীণ অর্থনীতিতে পরিবর্তনের ধারা সৃষ্টি করেছে।
তথ্যগুলো হলো:
-
আর্থিক উন্নয়ন: প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স গ্রামের পরিবারগুলোর আয় বৃদ্ধি করে, যার ফলে জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়। এ অর্থ দিয়ে অনেকে নতুন ব্যবসা শুরু, জমি কেনা, ঘর নির্মাণ, এমনকি কৃষিতে আধুনিক সরঞ্জাম ক্রয় করে।
-
বিনিয়োগ ও ভোগ বৃদ্ধি: রেমিট্যান্সের কারণে গ্রামীণ অর্থনীতিতে পণ্যের চাহিদা বাড়ে, বাজার সক্রিয় হয় এবং স্থানীয় উদ্যোক্তারা উৎসাহিত হয়।
-
সামাজিক পরিবর্তন: প্রবাসীদের জীবনধারা, চিন্তাভাবনা ও অভিজ্ঞতা গ্রামের মানুষদের ওপর প্রভাব ফেলে। ফলে নতুন সামাজিক মানসিকতা, উন্নত জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা, ও পরিবার পরিকল্পনার সচেতনতা বাড়ে।
-
শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব: প্রবাসী পরিবারগুলো তাদের সন্তানদের শিক্ষায় বিনিয়োগ করে। এতে গ্রামীণ এলাকায় স্কুলে ভর্তি হার বৃদ্ধি, শিক্ষিত যুবসমাজের সংখ্যা বাড়া, এবং নারী শিক্ষার অগ্রগতি লক্ষ্য করা যায়।
-
নারীর ভূমিকার পরিবর্তন: পুরুষরা প্রবাসে থাকার ফলে নারীরা পরিবারের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত ও দৈনন্দিন পরিচালনায় বেশি সক্রিয় ভূমিকা নিচ্ছে, যা লিঙ্গভিত্তিক ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তন করছে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, প্রবাসী কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, সামাজিক রূপান্তর ও সাংস্কৃতিক আধুনিকায়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে।

0
Updated: 1 day ago