মানব সামজে কয় ধরনের জাতি সম্পর্ক আছে?
A
৫
B
৪
C
৩
D
২
উত্তরের বিবরণ
মানব সমাজে জ্ঞাতি বা জাতি সম্পর্ক (Kinship) হলো পারিবারিক ও আত্মীয়তার সূত্রে গঠিত সামাজিক সম্পর্কের একটি মৌলিক কাঠামো। এটি সমাজে পারিবারিক গঠন, উত্তরাধিকার, সামাজিক অবস্থান এবং আচরণগত নিয়ম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজবিজ্ঞানে এই সম্পর্কের ধরন নির্ধারণে কিছু মতভেদ থাকলেও মূলত এটি রক্ত, বিবাহ এবং সামাজিক প্রতীকী বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
-
লুইস হেনরি মর্গান (Lewis Henry Morgan) জ্ঞাতি সম্পর্ককে দুই প্রকারে ভাগ করেছেন:
-
রক্তসম্পর্কীয় (Consanguineous kinship) — যেমন বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-নাতি ইত্যাদি, যা জৈবিক রক্তের সম্পর্কের মাধ্যমে গঠিত।
-
বৈবাহিক সূত্রে (Affinal kinship) — যেমন স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি ইত্যাদি, যা বিবাহের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়।
-
-
অপরদিকে, বাংলা সমাজবিজ্ঞানের অনেক গবেষক যেমন শওকত আলী, নূরুল ইসলাম প্রমুখ, জ্ঞাতি সম্পর্ককে তিন প্রকারে ভাগ করেছেন:
-
রক্তসম্পর্কীয় (Consanguineous)
-
বৈবাহিক সূত্রে (Affinal)
-
কাল্পনিক বা প্রতীকী জ্ঞাতিসম্পর্ক (Fictive kinship) — যেমন বন্ধুকে ভাই বলা বা শিক্ষকের স্ত্রীকে মা বলা, যা সামাজিক প্রতীক বা সংস্কৃতিগত প্রথার মাধ্যমে গঠিত।
-
সুতরাং, বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী জ্ঞাতি সম্পর্কের শ্রেণিবিন্যাসে পার্থক্য রয়েছে। সেই কারণে প্রশ্নে প্রদত্ত নির্দিষ্ট কোনো উত্তরে পৌঁছানো যায় না; তাই প্রশ্নটির উত্তর বাতিলযোগ্য বলে গণ্য করা হয়।

0
Updated: 9 hours ago
শাস্তি বা পুরষ্কারের মাধ্যমে সামাজিক নিয়ন্ত্রনের কথা কে বলেছেন?
Created: 9 hours ago
A
হেইজ
B
লুমাল
C
বার্নাড
D
ক্রসবি
সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো শাস্তি ও পুরস্কারের মাধ্যমে আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা। এই ধারণাটি সমাজবিজ্ঞানের ও মনোবিজ্ঞানের উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। সমাজবিজ্ঞানে এটি বিশেষভাবে এমিল ডুর্খেইম এবং কার্যকরীবাদী (Functionalist) দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সম্পর্কিত, আর মনোবিজ্ঞানে এটি আচরণবাদী (Behaviorist) পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
-
ডুর্খেইম বিশ্বাস করতেন যে সমাজের স্থিতি বজায় রাখতে সামাজিক নিয়ম ও আইন অপরিহার্য। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে শাস্তি সামাজিক শৃঙ্খলা ও যৌথ বিবেককে (collective conscience) শক্তিশালী করে, কারণ এটি সমাজের সদস্যদের গ্রহণযোগ্য আচরণের সীমা বুঝতে সাহায্য করে।
-
কার্যকরীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, শাস্তি ও পুরস্কার সমাজের প্রতিটি সদস্যকে সামাজিক প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে উৎসাহিত করে, ফলে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা পায়।
-
আচরণবাদী মনোবিজ্ঞান, বিশেষত বি.এফ. স্কিনার-এর মতে, মানব আচরণ অপারেন্ট কন্ডিশনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়—অর্থাৎ, সঠিক আচরণে পুরস্কার দেওয়া হয় এবং ভুল আচরণে শাস্তি, যা ধীরে ধীরে আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে।
-
তবে যদি বিকল্পে ডুর্খেইমের নাম না থাকে, তাহলে ক্রসবিকে যুক্ত করা যায়, কারণ কিছু সূত্রে তিনি punishment-reward বা অনুশাসন ও প্রণোদনার মাধ্যমে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
-
তবুও সমাজবিজ্ঞানে সবচেয়ে প্রচলিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই ধারণাটি Durkheim বা Functionalist চিন্তাবিদদের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত বলে বিবেচিত।
এইভাবে দেখা যায়, শাস্তি ও পুরস্কার কেবল ব্যক্তিগত আচরণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম নয়, বরং সমাজের সামগ্রিক শৃঙ্খলা ও ঐক্য রক্ষারও একটি কার্যকর উপায়।

0
Updated: 9 hours ago
কোন সমাজ বিজ্ঞানী সামাজিক প্রপঞ্চ ও ঘটনাবলী বিশ্লেষণ আরোহ পদ্ধতির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন?
Created: 9 hours ago
A
স্পেন্সার
B
ডুর্খীম
C
ফ্রয়েড
D
জিন্সবার্গ
হার্বার্ট স্পেন্সার (Herbert Spencer) সমাজবিজ্ঞানের একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, যিনি সমাজকে একটি জীবন্ত সংগঠনের (Social Organism) সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তার মতে, সমাজও জীবের মতোই বিভিন্ন অঙ্গ বা অংশ নিয়ে গঠিত, যা পারস্পরিক নির্ভরশীলভাবে কাজ করে এবং সম্মিলিতভাবে সমাজের স্থিতি বজায় রাখে।
-
তিনি বিশ্বাস করতেন, সমাজও জীবের মতো জন্ম, বিকাশ ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়।
-
স্পেন্সার সমাজ বিশ্লেষণে জৈব উপমা (Organic Analogy) ব্যবহার করে দেখিয়েছিলেন যে, যেমন জীবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ একে অপরের ওপর নির্ভরশীল, তেমনি সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান—যেমন পরিবার, অর্থনীতি, রাজনীতি ও ধর্ম—পারস্পরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সমাজকে টিকিয়ে রাখে।
-
তিনি অভিজ্ঞতাভিত্তিক তথ্য (empirical data) থেকে সমাজের বিকাশ ও গঠন বোঝার চেষ্টা করেন, অর্থাৎ তত্ত্বের পরিবর্তে পর্যবেক্ষণ ও বাস্তব তথ্যকে গুরুত্ব দেন।
-
তার গবেষণায় তিনি আরোহ পদ্ধতি (Inductive Method) ব্যবহার করেছেন, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সামাজিক ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে সমাজের সাধারণ নিয়ম ও নীতিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন।
-
স্পেন্সারের সমাজদৃষ্টিতে উন্নয়ন বা বিবর্তন (Evolution) ছিল একটি কেন্দ্রীয় ধারণা—তিনি বিশ্বাস করতেন যে সমাজ সরল অবস্থা থেকে জটিলতার দিকে বিকশিত হয়, ঠিক জীবের বিবর্তনের মতো।
এইভাবে হার্বার্ট স্পেন্সার সমাজকে একটি জৈবিক ও ক্রমবিকাশমান ব্যবস্থা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন এবং সমাজবিজ্ঞানে বিবর্তনবাদী ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তি স্থাপন করেন।

0
Updated: 9 hours ago
নিগ্রোদের প্রধান আবাস ভূমি কোথায়?
Created: 9 hours ago
A
পলিনেশিয়া
B
আফ্রিকা
C
এশিয়া
D
আমেরিকা
নিগ্রো জনগোষ্ঠী আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও বিস্তৃত মানবগোষ্ঠী, যাদের বসবাস প্রধানত উপ-সাহারান অঞ্চলে। এদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ভাষা ও সংস্কৃতি আফ্রিকার ভূগোল ও আবহাওয়ার প্রভাব বহন করে।
-
প্রধান আবাস অঞ্চল:
-
পশ্চিম আফ্রিকা: নাইজেরিয়া, ঘানা, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, গাম্বিয়া প্রভৃতি দেশ এই অঞ্চলের প্রধান নিগ্রো আবাসভূমি।
-
মধ্য আফ্রিকা: কঙ্গো, গ্যাবন, ক্যামেরুন ও অ্যাঙ্গোলা অঞ্চলে এই জনগোষ্ঠীর ঘনবসতি রয়েছে।
-
দক্ষিণ আফ্রিকা: জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মোজাম্বিকেও তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
-
উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকা: এই অঞ্চলে নিগ্রো জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি তুলনামূলক কম; এখানে হামাইট ও সেমিট জাতিগোষ্ঠীর আধিক্য পরিলক্ষিত হয়।
-
-
বৈশিষ্ট্যগতভাবে:
-
গায়ের রং সাধারণত গাঢ় কৃষ্ণ বর্ণের।
-
কোঁকড়া বা ঘন চুল, যা গরম আবহাওয়ার সঙ্গে অভিযোজিত।
-
প্রশস্ত নাক ও ঠোঁট, যা শারীরিক গঠনে স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
-
সাধারণত শক্তপোক্ত দেহ ও গঠনগতভাবে সহনশীল প্রকৃতির।
-
এইভাবে নিগ্রো জনগোষ্ঠী আফ্রিকার একটি বৃহৎ নৃগোষ্ঠী, যারা তাদের স্বতন্ত্র শারীরিক বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতি ও ভাষাগত বৈচিত্র্যের মাধ্যমে মহাদেশটির সামাজিক ও মানবিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

0
Updated: 9 hours ago