সমাজ পরিবর্তনে দৈহিক শক্তির চেয়ে বৃদ্ধিবৃত্তির উপর কে গুরুত্ব দিয়েছেন?
A
অগাষ্ট কোৎ
B
স্পেন্সার
C
বেহার্ডজ
D
ডারউইন
উত্তরের বিবরণ
অগাস্ট কোঁৎ সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিত, যিনি সামাজিক পরিবর্তনকে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের ধারাবাহিক ফল হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তার মতে, সমাজের অগ্রগতি কোনো দৈহিক শক্তির কারণে নয়, বরং মানুষের চিন্তা, যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক বোধের বিকাশের মাধ্যমে ঘটে। তিনি এই পরিবর্তনের ধারা ব্যাখ্যা করতে “ত্রয়স্তর সূত্র” (Law of Three Stages) প্রবর্তন করেন।
-
প্রথম স্তর: ধর্মগত (Theological Stage) — এখানে মানুষ প্রাকৃতিক ও সামাজিক ঘটনাকে অতিপ্রাকৃত শক্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করত। দেবতা ও আত্মার প্রভাবই ছিল মূল ব্যাখ্যা।
-
দ্বিতীয় স্তর: অধিবিদ্যা (Metaphysical Stage) — এই স্তরে মানুষ ঘটনাবলিকে বিমূর্ত ধারণা ও দর্শনের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে শুরু করে। এটি ধর্ম থেকে যুক্তির দিকে উত্তরণের ধাপ।
-
তৃতীয় স্তর: দৃষ্টবাদ বা বৈজ্ঞানিক স্তর (Positive Stage) — এটি সর্বোচ্চ স্তর, যেখানে মানুষ বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা ও যুক্তির মাধ্যমে বাস্তব জগতের ব্যাখ্যা দেয়। এখানে বুদ্ধিবৃত্তি, বাস্তবতা ও প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান প্রধান হয়ে ওঠে।
অগাস্ট কোঁৎ মনে করতেন, দৃষ্টবাদ যুগই প্রকৃত বুদ্ধিবৃত্তিক যুগ, যেখানে মানবজাতি ধর্ম ও দর্শনের সীমা অতিক্রম করে বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে সমাজ ও প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়। এইভাবে, তার ত্রয়স্তর সূত্র মানব সভ্যতার মানসিক ও সামাজিক বিকাশের একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করে।

0
Updated: 9 hours ago
জমির পরিমান ও মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামো কয় ধরনের?
Created: 9 hours ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
৬
গ্রামীণ সমাজে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থান সাধারণত ভূমির মালিকানার পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এই ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতার কাঠামোকে চারটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, যা সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পার্থক্য নির্দেশ করে।
-
ধনী কৃষক: এরা গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী শ্রেণি। তাদের প্রচুর জমি, কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। গ্রামীণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বে তাদের ভূমিকা মুখ্য।
-
প্রান্তিক কৃষক: এদের জমির পরিমাণ সীমিত এবং জীবিকা টিকিয়ে রাখতে তারা অনেক সময় অন্যের জমিতেও কাজ করে। তাদের সামাজিক প্রভাব সীমিত হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
বর্গাচাষী: এরা অন্যের জমি চাষ করে এবং উৎপন্ন ফসলের একটি অংশ জমির মালিককে প্রদান করে। তাদের জমির মালিকানা না থাকলেও শ্রম ও উৎপাদনে তারা অপরিহার্য।
-
ভূমিহীন কৃষক বা কৃষিশ্রমিক: এরা জমির মালিক নয়, অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ সমাজে এ শ্রেণি সবচেয়ে নিম্ন অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকে এবং তাদের সামাজিক প্রভাবও সীমিত।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বই (অক্ষরপত্র প্রকাশনা, পৃষ্ঠা ১৭৮) অনুযায়ী, ভূমির মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামোকে এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।

0
Updated: 9 hours ago
ভারতীয় সমাজে মানুষের মর্যাদার ভিত্তি কি ছিল?
Created: 9 hours ago
A
জাতিবর্ণ প্রথা
B
সম্পত্তি
C
ধর্ম
D
প্রতিপত্তি
ভারতীয় সমাজে মানুষের সামাজিক মর্যাদা ও অবস্থান নির্ধারিত হতো জাতিবর্ণ প্রথার (Caste System) মাধ্যমে, যা ছিল একটি কঠোরভাবে স্তরভিত্তিক সামাজিক কাঠামো। এই প্রথা জন্মের ভিত্তিতে নির্ধারিত হতো এবং সামাজিক চলাচল বা অবস্থান পরিবর্তন প্রায় অসম্ভব ছিল।
-
ব্রাহ্মণ: সমাজে সর্বোচ্চ মর্যাদার অধিকারী শ্রেণি। তারা ধর্মীয় আচার, শিক্ষা ও পুরোহিতবৃত্তিতে নিয়োজিত থাকতেন। জ্ঞান ও ধর্মচর্চার কারণে সমাজে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ছিল।
-
ক্ষত্রিয়: এই শ্রেণি ছিল রাজা, সৈনিক ও শাসকবর্গের প্রতিনিধি। তাদের মূল দায়িত্ব ছিল সমাজ রক্ষা, শাসন ও যুদ্ধ পরিচালনা। মর্যাদায় তারা ব্রাহ্মণদের নিচে অবস্থান করতেন।
-
বৈশ্য: তারা ছিল ব্যবসায়ী, কৃষক ও কারিগর শ্রেণি। সমাজে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনায় তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও সামাজিক মর্যাদায় ক্ষত্রিয়দের চেয়ে নিচে ছিলেন।
-
শূদ্র: এই শ্রেণির মানুষ অন্য বর্ণের সেবায় নিয়োজিত থাকতেন। সমাজে তাদের মর্যাদা ছিল নিম্ন এবং বহু সামাজিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত ছিলেন।
-
অস্পৃশ্য বা অন্ত্যজ শ্রেণি: সমাজের সবচেয়ে নিচু স্তরে অবস্থান করত। তাদের “অস্পৃশ্য” বলে গণ্য করা হতো, এবং তারা সামাজিক মেলামেশা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও জনজীবনের বহু ক্ষেত্র থেকে বঞ্চিত থাকত।
এইভাবে দেখা যায়, ভারতীয় সমাজে জাতিবর্ণ প্রথাই মানুষের মর্যাদা, অধিকার ও সামাজিক অবস্থানের মূল ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ছিল।

0
Updated: 9 hours ago
মানব সামজে কয় ধরনের জাতি সম্পর্ক আছে?
Created: 9 hours ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
২
মানব সমাজে জ্ঞাতি বা জাতি সম্পর্ক (Kinship) হলো পারিবারিক ও আত্মীয়তার সূত্রে গঠিত সামাজিক সম্পর্কের একটি মৌলিক কাঠামো। এটি সমাজে পারিবারিক গঠন, উত্তরাধিকার, সামাজিক অবস্থান এবং আচরণগত নিয়ম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজবিজ্ঞানে এই সম্পর্কের ধরন নির্ধারণে কিছু মতভেদ থাকলেও মূলত এটি রক্ত, বিবাহ এবং সামাজিক প্রতীকী বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
-
লুইস হেনরি মর্গান (Lewis Henry Morgan) জ্ঞাতি সম্পর্ককে দুই প্রকারে ভাগ করেছেন:
-
রক্তসম্পর্কীয় (Consanguineous kinship) — যেমন বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-নাতি ইত্যাদি, যা জৈবিক রক্তের সম্পর্কের মাধ্যমে গঠিত।
-
বৈবাহিক সূত্রে (Affinal kinship) — যেমন স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি ইত্যাদি, যা বিবাহের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়।
-
-
অপরদিকে, বাংলা সমাজবিজ্ঞানের অনেক গবেষক যেমন শওকত আলী, নূরুল ইসলাম প্রমুখ, জ্ঞাতি সম্পর্ককে তিন প্রকারে ভাগ করেছেন:
-
রক্তসম্পর্কীয় (Consanguineous)
-
বৈবাহিক সূত্রে (Affinal)
-
কাল্পনিক বা প্রতীকী জ্ঞাতিসম্পর্ক (Fictive kinship) — যেমন বন্ধুকে ভাই বলা বা শিক্ষকের স্ত্রীকে মা বলা, যা সামাজিক প্রতীক বা সংস্কৃতিগত প্রথার মাধ্যমে গঠিত।
-
সুতরাং, বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী জ্ঞাতি সম্পর্কের শ্রেণিবিন্যাসে পার্থক্য রয়েছে। সেই কারণে প্রশ্নে প্রদত্ত নির্দিষ্ট কোনো উত্তরে পৌঁছানো যায় না; তাই প্রশ্নটির উত্তর বাতিলযোগ্য বলে গণ্য করা হয়।

0
Updated: 9 hours ago