শাস্তি বা পুরষ্কারের মাধ্যমে সামাজিক নিয়ন্ত্রনের কথা কে বলেছেন?
A
হেইজ
B
লুমাল
C
বার্নাড
D
ক্রসবি
উত্তরের বিবরণ
সামাজিক নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হলো শাস্তি ও পুরস্কারের মাধ্যমে আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা। এই ধারণাটি সমাজবিজ্ঞানের ও মনোবিজ্ঞানের উভয় ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। সমাজবিজ্ঞানে এটি বিশেষভাবে এমিল ডুর্খেইম এবং কার্যকরীবাদী (Functionalist) দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সম্পর্কিত, আর মনোবিজ্ঞানে এটি আচরণবাদী (Behaviorist) পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
-
ডুর্খেইম বিশ্বাস করতেন যে সমাজের স্থিতি বজায় রাখতে সামাজিক নিয়ম ও আইন অপরিহার্য। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে শাস্তি সামাজিক শৃঙ্খলা ও যৌথ বিবেককে (collective conscience) শক্তিশালী করে, কারণ এটি সমাজের সদস্যদের গ্রহণযোগ্য আচরণের সীমা বুঝতে সাহায্য করে।
-
কার্যকরীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে, শাস্তি ও পুরস্কার সমাজের প্রতিটি সদস্যকে সামাজিক প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে উৎসাহিত করে, ফলে সামাজিক ভারসাম্য রক্ষা পায়।
-
আচরণবাদী মনোবিজ্ঞান, বিশেষত বি.এফ. স্কিনার-এর মতে, মানব আচরণ অপারেন্ট কন্ডিশনিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গঠিত হয়—অর্থাৎ, সঠিক আচরণে পুরস্কার দেওয়া হয় এবং ভুল আচরণে শাস্তি, যা ধীরে ধীরে আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে।
-
তবে যদি বিকল্পে ডুর্খেইমের নাম না থাকে, তাহলে ক্রসবিকে যুক্ত করা যায়, কারণ কিছু সূত্রে তিনি punishment-reward বা অনুশাসন ও প্রণোদনার মাধ্যমে সামাজিক নিয়ন্ত্রণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
-
তবুও সমাজবিজ্ঞানে সবচেয়ে প্রচলিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এই ধারণাটি Durkheim বা Functionalist চিন্তাবিদদের সঙ্গেই ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত বলে বিবেচিত।
এইভাবে দেখা যায়, শাস্তি ও পুরস্কার কেবল ব্যক্তিগত আচরণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যম নয়, বরং সমাজের সামগ্রিক শৃঙ্খলা ও ঐক্য রক্ষারও একটি কার্যকর উপায়।

0
Updated: 9 hours ago
সমাজ পরিবর্তনে দৈহিক শক্তির চেয়ে বৃদ্ধিবৃত্তির উপর কে গুরুত্ব দিয়েছেন?
Created: 9 hours ago
A
অগাষ্ট কোৎ
B
স্পেন্সার
C
বেহার্ডজ
D
ডারউইন
অগাস্ট কোঁৎ সমাজবিজ্ঞানের জনক হিসেবে পরিচিত, যিনি সামাজিক পরিবর্তনকে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের ধারাবাহিক ফল হিসেবে ব্যাখ্যা করেছিলেন। তার মতে, সমাজের অগ্রগতি কোনো দৈহিক শক্তির কারণে নয়, বরং মানুষের চিন্তা, যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক বোধের বিকাশের মাধ্যমে ঘটে। তিনি এই পরিবর্তনের ধারা ব্যাখ্যা করতে “ত্রয়স্তর সূত্র” (Law of Three Stages) প্রবর্তন করেন।
-
প্রথম স্তর: ধর্মগত (Theological Stage) — এখানে মানুষ প্রাকৃতিক ও সামাজিক ঘটনাকে অতিপ্রাকৃত শক্তির মাধ্যমে ব্যাখ্যা করত। দেবতা ও আত্মার প্রভাবই ছিল মূল ব্যাখ্যা।
-
দ্বিতীয় স্তর: অধিবিদ্যা (Metaphysical Stage) — এই স্তরে মানুষ ঘটনাবলিকে বিমূর্ত ধারণা ও দর্শনের মাধ্যমে ব্যাখ্যা করতে শুরু করে। এটি ধর্ম থেকে যুক্তির দিকে উত্তরণের ধাপ।
-
তৃতীয় স্তর: দৃষ্টবাদ বা বৈজ্ঞানিক স্তর (Positive Stage) — এটি সর্বোচ্চ স্তর, যেখানে মানুষ বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা ও যুক্তির মাধ্যমে বাস্তব জগতের ব্যাখ্যা দেয়। এখানে বুদ্ধিবৃত্তি, বাস্তবতা ও প্রমাণভিত্তিক জ্ঞান প্রধান হয়ে ওঠে।
অগাস্ট কোঁৎ মনে করতেন, দৃষ্টবাদ যুগই প্রকৃত বুদ্ধিবৃত্তিক যুগ, যেখানে মানবজাতি ধর্ম ও দর্শনের সীমা অতিক্রম করে বিজ্ঞান ও যুক্তির আলোকে সমাজ ও প্রকৃতিকে ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়। এইভাবে, তার ত্রয়স্তর সূত্র মানব সভ্যতার মানসিক ও সামাজিক বিকাশের একটি যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান করে।

0
Updated: 9 hours ago
জমির পরিমান ও মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামো কয় ধরনের?
Created: 9 hours ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
৬
গ্রামীণ সমাজে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থান সাধারণত ভূমির মালিকানার পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এই ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতার কাঠামোকে চারটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, যা সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পার্থক্য নির্দেশ করে।
-
ধনী কৃষক: এরা গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী শ্রেণি। তাদের প্রচুর জমি, কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। গ্রামীণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বে তাদের ভূমিকা মুখ্য।
-
প্রান্তিক কৃষক: এদের জমির পরিমাণ সীমিত এবং জীবিকা টিকিয়ে রাখতে তারা অনেক সময় অন্যের জমিতেও কাজ করে। তাদের সামাজিক প্রভাব সীমিত হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
বর্গাচাষী: এরা অন্যের জমি চাষ করে এবং উৎপন্ন ফসলের একটি অংশ জমির মালিককে প্রদান করে। তাদের জমির মালিকানা না থাকলেও শ্রম ও উৎপাদনে তারা অপরিহার্য।
-
ভূমিহীন কৃষক বা কৃষিশ্রমিক: এরা জমির মালিক নয়, অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ সমাজে এ শ্রেণি সবচেয়ে নিম্ন অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকে এবং তাদের সামাজিক প্রভাবও সীমিত।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বই (অক্ষরপত্র প্রকাশনা, পৃষ্ঠা ১৭৮) অনুযায়ী, ভূমির মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামোকে এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।

0
Updated: 9 hours ago
নিগ্রোদের প্রধান আবাস ভূমি কোথায়?
Created: 9 hours ago
A
পলিনেশিয়া
B
আফ্রিকা
C
এশিয়া
D
আমেরিকা
নিগ্রো জনগোষ্ঠী আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম প্রাচীন ও বিস্তৃত মানবগোষ্ঠী, যাদের বসবাস প্রধানত উপ-সাহারান অঞ্চলে। এদের শারীরিক বৈশিষ্ট্য, ভাষা ও সংস্কৃতি আফ্রিকার ভূগোল ও আবহাওয়ার প্রভাব বহন করে।
-
প্রধান আবাস অঞ্চল:
-
পশ্চিম আফ্রিকা: নাইজেরিয়া, ঘানা, সেনেগাল, সিয়েরা লিওন, গাম্বিয়া প্রভৃতি দেশ এই অঞ্চলের প্রধান নিগ্রো আবাসভূমি।
-
মধ্য আফ্রিকা: কঙ্গো, গ্যাবন, ক্যামেরুন ও অ্যাঙ্গোলা অঞ্চলে এই জনগোষ্ঠীর ঘনবসতি রয়েছে।
-
দক্ষিণ আফ্রিকা: জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা ও মোজাম্বিকেও তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।
-
উত্তর ও পূর্ব আফ্রিকা: এই অঞ্চলে নিগ্রো জনগোষ্ঠীর উপস্থিতি তুলনামূলক কম; এখানে হামাইট ও সেমিট জাতিগোষ্ঠীর আধিক্য পরিলক্ষিত হয়।
-
-
বৈশিষ্ট্যগতভাবে:
-
গায়ের রং সাধারণত গাঢ় কৃষ্ণ বর্ণের।
-
কোঁকড়া বা ঘন চুল, যা গরম আবহাওয়ার সঙ্গে অভিযোজিত।
-
প্রশস্ত নাক ও ঠোঁট, যা শারীরিক গঠনে স্পষ্টভাবে দেখা যায়।
-
সাধারণত শক্তপোক্ত দেহ ও গঠনগতভাবে সহনশীল প্রকৃতির।
-
এইভাবে নিগ্রো জনগোষ্ঠী আফ্রিকার একটি বৃহৎ নৃগোষ্ঠী, যারা তাদের স্বতন্ত্র শারীরিক বৈশিষ্ট্য, সংস্কৃতি ও ভাষাগত বৈচিত্র্যের মাধ্যমে মহাদেশটির সামাজিক ও মানবিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

0
Updated: 9 hours ago