পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার কে নির্মান করেন?
A
গোপাল
B
ধর্মপাল
C
লক্ষণ সেন
D
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য
উত্তরের বিবরণ
অষ্টম শতকে পাল রাজবংশের শাসনামলে বঙ্গদেশে রাজনৈতিক স্থিতি ও সাংস্কৃতিক বিকাশ এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছায়। এই সময়ের দুই মহান শাসক ধর্মপাল ও তার পুত্র দেবপাল উপমহাদেশে এক বিশাল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন, যা উত্তর ভারত, বিহার ও বঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল।
-
ধর্মপাল (৭৭০–৮১০ খ্রিস্টাব্দ) পাল সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় শাসক ছিলেন। তিনি রাজধানী স্থাপন করেন পাটলিপুত্রে (বর্তমান পাটনা) এবং নালন্দা মহাবিহার পুনর্নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করেন।
-
তার শাসনামলে পাল রাজ্য উত্তর ভারতে গৌরবময় অবস্থান অর্জন করে; তিনি কান্নৌজ দখল করে নিজেকে “উত্তর ভারতের সম্রাট” হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন।
-
দেবপাল (৮১০–৮৫০ খ্রিস্টাব্দ) ধর্মপালের পুত্র ও উত্তরসূরি হিসেবে পাল সাম্রাজ্যের সীমানা আরও সম্প্রসারিত করেন। তার শাসনকালে সাম্রাজ্য বঙ্গ, বিহার, উড়িষ্যা, আসাম এবং উত্তর ভারতের কিছু অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়।
-
পাল রাজারা বৌদ্ধ ধর্মের বিশেষ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন; বিশেষত তারা মহাযান বৌদ্ধ ধর্ম প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
-
তাদের প্রতিষ্ঠিত সোমপুর মহাবিহার (বর্তমান পাহাড়পুর, বাংলাদেশ) উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বিহার হিসেবে খ্যাতি লাভ করে এবং বর্তমানে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান।
এইভাবে ধর্মপাল ও দেবপালের যুগে পাল সাম্রাজ্য শুধু রাজনৈতিক শক্তিতেই নয়, বরং শিক্ষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও স্বর্ণযুগে উপনীত হয়।

0
Updated: 9 hours ago
কোন সমাজ বিজ্ঞানী সামাজিক প্রপঞ্চ ও ঘটনাবলী বিশ্লেষণ আরোহ পদ্ধতির উপর গুরুত্ব দিয়েছেন?
Created: 9 hours ago
A
স্পেন্সার
B
ডুর্খীম
C
ফ্রয়েড
D
জিন্সবার্গ
হার্বার্ট স্পেন্সার (Herbert Spencer) সমাজবিজ্ঞানের একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, যিনি সমাজকে একটি জীবন্ত সংগঠনের (Social Organism) সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। তার মতে, সমাজও জীবের মতোই বিভিন্ন অঙ্গ বা অংশ নিয়ে গঠিত, যা পারস্পরিক নির্ভরশীলভাবে কাজ করে এবং সম্মিলিতভাবে সমাজের স্থিতি বজায় রাখে।
-
তিনি বিশ্বাস করতেন, সমাজও জীবের মতো জন্ম, বিকাশ ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়।
-
স্পেন্সার সমাজ বিশ্লেষণে জৈব উপমা (Organic Analogy) ব্যবহার করে দেখিয়েছিলেন যে, যেমন জীবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ একে অপরের ওপর নির্ভরশীল, তেমনি সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান—যেমন পরিবার, অর্থনীতি, রাজনীতি ও ধর্ম—পারস্পরিক সম্পর্কের মাধ্যমে সমাজকে টিকিয়ে রাখে।
-
তিনি অভিজ্ঞতাভিত্তিক তথ্য (empirical data) থেকে সমাজের বিকাশ ও গঠন বোঝার চেষ্টা করেন, অর্থাৎ তত্ত্বের পরিবর্তে পর্যবেক্ষণ ও বাস্তব তথ্যকে গুরুত্ব দেন।
-
তার গবেষণায় তিনি আরোহ পদ্ধতি (Inductive Method) ব্যবহার করেছেন, যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সামাজিক ঘটনাগুলো বিশ্লেষণ করে সমাজের সাধারণ নিয়ম ও নীতিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছেন।
-
স্পেন্সারের সমাজদৃষ্টিতে উন্নয়ন বা বিবর্তন (Evolution) ছিল একটি কেন্দ্রীয় ধারণা—তিনি বিশ্বাস করতেন যে সমাজ সরল অবস্থা থেকে জটিলতার দিকে বিকশিত হয়, ঠিক জীবের বিবর্তনের মতো।
এইভাবে হার্বার্ট স্পেন্সার সমাজকে একটি জৈবিক ও ক্রমবিকাশমান ব্যবস্থা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন এবং সমাজবিজ্ঞানে বিবর্তনবাদী ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তি স্থাপন করেন।

0
Updated: 9 hours ago
জমির পরিমান ও মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামো কয় ধরনের?
Created: 9 hours ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
৬
গ্রামীণ সমাজে ক্ষমতা ও সামাজিক অবস্থান সাধারণত ভূমির মালিকানার পরিমাণ ও নিয়ন্ত্রণক্ষমতার ওপর নির্ভরশীল। এই ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতার কাঠামোকে চারটি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে, যা সমাজে অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবের পার্থক্য নির্দেশ করে।
-
ধনী কৃষক: এরা গ্রামের সবচেয়ে প্রভাবশালী শ্রেণি। তাদের প্রচুর জমি, কৃষি উপকরণ ও আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। গ্রামীণ সিদ্ধান্ত ও নেতৃত্বে তাদের ভূমিকা মুখ্য।
-
প্রান্তিক কৃষক: এদের জমির পরিমাণ সীমিত এবং জীবিকা টিকিয়ে রাখতে তারা অনেক সময় অন্যের জমিতেও কাজ করে। তাদের সামাজিক প্রভাব সীমিত হলেও গ্রামীণ অর্থনীতিতে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
-
বর্গাচাষী: এরা অন্যের জমি চাষ করে এবং উৎপন্ন ফসলের একটি অংশ জমির মালিককে প্রদান করে। তাদের জমির মালিকানা না থাকলেও শ্রম ও উৎপাদনে তারা অপরিহার্য।
-
ভূমিহীন কৃষক বা কৃষিশ্রমিক: এরা জমির মালিক নয়, অন্যের জমিতে শ্রম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। গ্রামীণ সমাজে এ শ্রেণি সবচেয়ে নিম্ন অর্থনৈতিক অবস্থানে থাকে এবং তাদের সামাজিক প্রভাবও সীমিত।
একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির সমাজবিজ্ঞান বই (অক্ষরপত্র প্রকাশনা, পৃষ্ঠা ১৭৮) অনুযায়ী, ভূমির মালিকানার ভিত্তিতে গ্রামের ক্ষমতা কাঠামোকে এই চার শ্রেণিতে বিভক্ত করা হয়েছে।

0
Updated: 9 hours ago
মানব সামজে কয় ধরনের জাতি সম্পর্ক আছে?
Created: 9 hours ago
A
৫
B
৪
C
৩
D
২
মানব সমাজে জ্ঞাতি বা জাতি সম্পর্ক (Kinship) হলো পারিবারিক ও আত্মীয়তার সূত্রে গঠিত সামাজিক সম্পর্কের একটি মৌলিক কাঠামো। এটি সমাজে পারিবারিক গঠন, উত্তরাধিকার, সামাজিক অবস্থান এবং আচরণগত নিয়ম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সমাজবিজ্ঞানে এই সম্পর্কের ধরন নির্ধারণে কিছু মতভেদ থাকলেও মূলত এটি রক্ত, বিবাহ এবং সামাজিক প্রতীকী বন্ধনের ওপর ভিত্তি করে গঠিত।
-
লুইস হেনরি মর্গান (Lewis Henry Morgan) জ্ঞাতি সম্পর্ককে দুই প্রকারে ভাগ করেছেন:
-
রক্তসম্পর্কীয় (Consanguineous kinship) — যেমন বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-নাতি ইত্যাদি, যা জৈবিক রক্তের সম্পর্কের মাধ্যমে গঠিত।
-
বৈবাহিক সূত্রে (Affinal kinship) — যেমন স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি ইত্যাদি, যা বিবাহের মাধ্যমে সৃষ্টি হয়।
-
-
অপরদিকে, বাংলা সমাজবিজ্ঞানের অনেক গবেষক যেমন শওকত আলী, নূরুল ইসলাম প্রমুখ, জ্ঞাতি সম্পর্ককে তিন প্রকারে ভাগ করেছেন:
-
রক্তসম্পর্কীয় (Consanguineous)
-
বৈবাহিক সূত্রে (Affinal)
-
কাল্পনিক বা প্রতীকী জ্ঞাতিসম্পর্ক (Fictive kinship) — যেমন বন্ধুকে ভাই বলা বা শিক্ষকের স্ত্রীকে মা বলা, যা সামাজিক প্রতীক বা সংস্কৃতিগত প্রথার মাধ্যমে গঠিত।
-
সুতরাং, বিভিন্ন সমাজবিজ্ঞানীর ব্যাখ্যা অনুযায়ী জ্ঞাতি সম্পর্কের শ্রেণিবিন্যাসে পার্থক্য রয়েছে। সেই কারণে প্রশ্নে প্রদত্ত নির্দিষ্ট কোনো উত্তরে পৌঁছানো যায় না; তাই প্রশ্নটির উত্তর বাতিলযোগ্য বলে গণ্য করা হয়।

0
Updated: 9 hours ago