বাংলাদেশে কখন প্রথম প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার গঠিত হয়?
A
১৯৭১
B
১৯৭২
C
১৯৭৫
D
১৯৮০
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার
বাংলাদেশে প্রথম প্রেসিডেন্ট শাসিত সরকার গঠিত হয় ১৯৭১ সালে, মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে।
-
১০ এপ্রিল ১৯৭১ সালে প্রথম সরকার গঠিত হয়, যেটি মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত।
-
শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এই সরকারের রাষ্ট্রপতি, কিন্তু তিনি তখন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকায় তাঁর অনুপস্থিতিতে সৈয়দ নজরুল ইসলাম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।
-
তাজউদ্দীন আহমদ ছিলেন সরকারের প্রধানমন্ত্রী।
-
এই সরকারের মন্ত্রিসভায় মোট ৮ জন সদস্য ছিলেন।
-
তাঁরা ১৭ এপ্রিল শপথ গ্রহণ করেন এবং মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্ব নেন।
-
এই সরকার যুদ্ধকালীন সময় দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দেয় এবং শেষ পর্যন্ত স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
১৯৭২ সালে সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন
-
১১ জানুয়ারি ১৯৭২ সালে শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্রপতি শাসন ব্যবস্থা বাতিল করে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু করেন।
-
এরপর এপ্রিল ১৯৭২ সালে একটি নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়, যারা ১৬ মার্চ ১৯৭৩ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে।
-
এই সময়কালে একটি সংবিধান প্রণয়ন করা হয়, যা ছিল বাঙালিদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে করা একটি ঐতিহাসিক কাজ।
রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকারের বৈশিষ্ট্য
-
এই শাসন ব্যবস্থায় রাষ্ট্রপতি একই সঙ্গে রাষ্ট্রপ্রধান এবং সরকারপ্রধান হন।
-
রাষ্ট্রপতি-ই সবচেয়ে বড় ক্ষমতাবান ব্যক্তি এবং তিনি আইনসভার সদস্য নন।
-
তিনি আইনসভায় গৃহীত বিল বাতিল (ভেটো) করতে পারেন।
-
সাধারণত জনগণ সরাসরি ভোট দিয়ে রাষ্ট্রপতিকে নির্বাচন করে।
-
রাষ্ট্রপতি কেবল সংবিধান লঙ্ঘন বা গুরুতর অপরাধ করলে তাকে অপসারণ (অভিশংসন) করা যায়।
-
এই সরকার ব্যবস্থায় আইন বিভাগ ও শাসন বিভাগ আলাদা থাকে।
-
সংবিধান সাধারণত লিখিত এবং পরিবর্তন কঠিন হয়।
-
মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির অধীনে কাজ করেন এবং তাঁরা সংসদের কাছে দায়ী নন, বরং রাষ্ট্রপতির কাছে দায়বদ্ধ থাকেন।
উৎস: এসএসসি প্রোগ্রাম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় – পৌরনীতি ও নাগরিকতা
0
Updated: 3 months ago
বাংলাদেশের সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় নিয়মতান্ত্রিক প্রধান কে?
Created: 3 months ago
A
প্রধানমন্ত্রী
B
রাষ্ট্রপতি
C
স্পিকার
D
সংসদ সচিব
বাংলাদেশ একটি সংসদীয় শাসনব্যবস্থার দেশ, যেখানে নিয়মতান্ত্রিক প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতির পদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন মোঃ সাহাবুদ্দিন।
রাষ্ট্রপতির ভূমিকা
-
রাষ্ট্রপতি দেশের সর্বোচ্চ মর্যাদাপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
-
তিনি সংবিধান ও আইনের অধীনে নির্ধারিত ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালন করেন।
-
সংবিধানের চতুর্থ ভাগে (অনুচ্ছেদ ৪৮ থেকে ৫৪ পর্যন্ত) রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব, ক্ষমতা ও নিয়মাবলি উল্লেখ করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির কার্যক্রম ও ক্ষমতা
-
বাংলাদেশের সরকার ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে একটি প্রজাতন্ত্র, যার ফলে রাষ্ট্রপতি হচ্ছেন দেশের নির্বাহী প্রধান। তবে বাস্তবে তিনি অলঙ্কারিক প্রধান, অর্থাৎ তাঁর কার্যক্রম প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হয়।
-
রাষ্ট্রপতি ৫ বছরের জন্য জাতীয় সংসদের সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন।
-
প্রয়োজনে সংসদ রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে অভিশংসন এনে তাঁকে অপসারণ করতে পারে।
রাষ্ট্রপতি হওয়ার যোগ্যতা
-
রাষ্ট্রপতি হতে হলে বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে এবং বয়স কমপক্ষে ৩৫ বছর হতে হবে।
-
সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্যতা থাকতে হবে।
-
তিনি যদি আগে কখনো রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অপসারিত না হয়ে থাকেন, তাহলে এই পদে নির্বাচন করতে পারবেন।
-
রাষ্ট্রপতির মেয়াদ চলাকালীন তিনি সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন না।
রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব
-
সরকার পরিচালনার সব কার্যক্রম রাষ্ট্রপতির নামে সম্পন্ন হয়।
-
তিনি প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীদের নিয়োগ দেন।
-
প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক, নির্বাচন কমিশনার, মহাহিসাব নিরীক্ষক, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্যসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ দিয়ে থাকেন।
-
বিদেশি রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনারদের পরিচয়পত্র গ্রহণ করেন।
-
তিনি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক।
আইন ও সংসদ সংক্রান্ত দায়িত্ব
-
জাতীয় সংসদের অধিবেশন ডাকেন।
-
সংসদে কোনো বিল পাস হলে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য তা তাঁর কাছে পাঠানো হয়।
-
প্রয়োজনে, বিশেষ করে সংসদ না থাকলে, রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে আইন করতে পারেন।
অন্যান্য দায়িত্ব ও সম্মানসূচক কাজ
-
রাষ্ট্রপতি দেশের সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক।
-
তিনি জাতির বিভিন্ন অবদানের জন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পদক ও খেতাব দিয়ে সম্মানিত করেন।
-
রাষ্ট্রপতির অনুমতি ছাড়া কেউ বিদেশি খেতাব গ্রহণ করতে পারে না।
-
রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করা এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শপথ বাক্য পাঠ করানোও তাঁর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে।
উৎস: বাংলাদেশের সংবিধান
0
Updated: 3 months ago
বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতির নাম কী?
Created: 1 week ago
A
সৈয়দ নজরুল ইসলাম
B
তাজউদ্দিন আহমেদ
C
শেখ মুজিবুর রহমান
D
ক্যাপটেন মনসুর আলী
বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার নামে অস্থায়ী প্রবাসী সরকার গঠিত হয়। এটি ছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার।
এই সরকারের প্রধানদের নামগুলো হলো:
-
রাষ্ট্রপতি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
-
উপরাষ্ট্রপতি ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি: সৈয়দ নজরুল ইসলাম
-
প্রধানমন্ত্রী: তাজউদ্দিন আহমেদ
-
স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী: এ এইচ এম কামরুজ্জামান
-
অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রী: এম মনসুর আলী
-
পররাষ্ট্র ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী: খন্দকার মুশতাক আহমেদ
(সূত্র: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, নবম-দশম শ্রেণী)
0
Updated: 1 week ago
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রবাসী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী সচিবালয় (সদর দপ্তর) কোথায় ছিল?
Created: 3 months ago
A
মুজিবনগর
B
থিয়েটার রোড, কলকাতা
C
কমিরগঞ্জ
D
বেনাপোল
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রবাসী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী সচিবালয় (সদর দপ্তর) ছিল থিয়েটার রোড, কলকাতায়।
বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার
- মুজিবনগর সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে এক উজ্জ্বল অধ্যায়।
- মুক্তিযুদ্ধকালীন গঠিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত।
- মুক্তিযুদ্ধ শুরুর এক মাসের মধ্যেই ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠন করা হয় বাংলাদেশের প্রথম সরকার।
- মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণ করেছিল ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল বর্তমান মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা গ্রামে।
- বাংলার শোষিত, নিপীড়িত ও নির্যাতিত জনতার মুক্তির বাসনাকে সঠিক খাতে প্রবাহিত করে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক সমর্থনের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করা ছিল মুজিবনগর সরকারের স্মরণীয় সাফল্য ও কৃতিত্ব।
- স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে মুজিবনগর ছিলো স্বাধীন দেশের অস্থায়ী রাজধানী এবং সচিবালয়/সদরদপ্তর ছিলো কলকাতার ৮ নং থিয়েটার রোড।
⇒ মুজিবনগর সরকারের সদর দপ্তর প্রথম স্থাপিত হয় মুজিবনগরে (মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথতলা)। পরবর্তীকালে স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে প্রধানত নিরাপত্তা এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানের সুবিধার্থে এ সরকারের প্রধান কার্যালয় কলকাতায় স্থানান্তর হয়। কারণ মুজিবনগর সরকার শপথ গ্রহণের মাত্র ২ ঘন্টা পর পাকিস্তানি বাহিনীর বিমান মুজিবনগরে বোমা বর্ষণ করে এবং মেহেরপুর দখল করে নেয়।
মুজিবনগর সরকারের মন্ত্রীসভা:
- রাষ্ট্রপতি: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান,
- উপ-রাষ্ট্রপতি: সৈয়দ নজরুল ইসলাম,
- প্রধানমন্ত্রী: তাজউদ্দিন আহমদ,
- পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়: খন্দকার মোশতাক আহমেদ,
- অর্থ ও বাণিজ্যমন্ত্রী: ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী,
- স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়: এ এইচ এম কামরুজ্জামান,
- প্রধান সেনাপতি: কর্নেল (অব.) এম. এ. জি. ওসমানী,
- চিফ অব স্টাফ: লে. কর্নেল (অব.) আবদুর রব,
- ডেপুটি চিফ অব স্টাফ: গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকার।
⇒ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের গুরুত্ব:
- মুজিবনগর সরকার শাসনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয় গঠন করে।
- মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য বাংলাদেশকে ১১টি প্রশাসনিক অঞ্চলে বিভক্ত করে।
- মুজিবনগর সরকার মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য মুক্তিবাহিনী গঠন করে।
- এই সরকার গঠনের পর থেকে অগণিত মানুষ দেশকে মুক্ত করার জন্য সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
- মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা এবং দেশে ও বিদেশে এই যুদ্ধের জনমত গড়ে তোলা ও সমর্থন আদায় করার ক্ষেত্রে এই সরকার বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
উৎস: বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা, নবম-দশম শ্রেণি।
0
Updated: 3 months ago