মৌর্য (Maurya) আমলে বাংলার প্রশাসনিক কেন্দ্র-
A
পুন্ড্রবর্ধনপুর
B
তাম্রলিপ্ত
C
সোনারগাঁ
D
কর্ণসুবর্ণ
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশের প্রাচীন ইতিহাসে পুন্ড্রনগর একটি গুরুত্বপূর্ণ নগরকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এর প্রাচীনত্ব খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকের বলে ধারণা করা হয়, যা প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণ ও ঐতিহাসিক উল্লেখ দ্বারা সমর্থিত। নিচে এর মূল তথ্যগুলো উল্লেখ করা হলো—
-
পুন্ড্রনগর বাংলাদেশের প্রাচীনতম নগরকেন্দ্র, যার প্রাচীনত্ব খ্রিস্টপূর্ব চার শতকের।
-
এ নগরের প্রাচীনতম উল্লেখ মহাস্থান ব্রাহ্মী লিপিতে ‘পুদ্নগল’ নামে পাওয়া যায়, যা প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননের মাধ্যমে এর প্রাচীনতার নিশ্চিত প্রমাণ দেয়।
-
গুপ্ত ও গুপ্ত-পরবর্তী যুগে এ নগরকে ‘পুন্ড্রবর্ধনপুর’ নামে উল্লেখ করা হয়েছে, যার ধ্বংসাবশেষ বগুড়া জেলার মহাস্থান অঞ্চলে শনাক্ত করা হয়েছে।
-
এই শনাক্তকরণের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে ব্রাহ্মী লিপি, চৈনিক তীর্থযাত্রী হিউয়েন সাং-এর সপ্তম শতকের বিবরণ, এবং করতোয়া-মাহাত্ম্য নামে আদি মধ্যযুগের সাহিত্য।
-
মৌর্য যুগ থেকে পাল যুগের শেষ পর্যন্ত পুন্ড্রবর্ধন ছিল প্রশাসনিক সদর দফতর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র; যদিও সেন আমলে এর প্রভাব কিছুটা কমে যায়।
-
গুপ্তযুগে এটি ছিল বাংলার শাসনকেন্দ্র ও পুন্ড্রবর্ধন ভুক্তির রাজধানী।
-
করতোয়া নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই নগর জল ও স্থলপথে বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল, ফলে এটি প্রাচীন ব্যবসা-বাণিজ্যের সমৃদ্ধ কেন্দ্র হিসেবে বিকশিত হয়।
-
মুসলিম যুগের প্রারম্ভেও এ নগর ছিল প্রভাবশালী; এখানে বিখ্যাত দরবেশ শাহ সুলতান বলখী মাহীসওয়ার বসবাস করতেন।
-
তিনি নগরের দক্ষিণ-পূর্বাংশে তাঁর খানকাহ নির্মাণ করেছিলেন।
-
ঐ সময়ে নগরটি সম্ভবত আংশিকভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত অবস্থায় ছিল।

0
Updated: 17 hours ago