কোনটি পেশার বৈশিষ্ঠ্য-
A
আয়ের জন্য যে কোন কাজ করা
B
সমাজ গঠনে কাজ করা
C
সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থাকা
D
ব্যাপক আয়ের সুযোগ থাকা
উত্তরের বিবরণ
পেশার বৈশিষ্ট্য বলতে এমন কিছু মৌলিক উপাদানকে বোঝায়, যা কোনো কাজকে সাধারণ পেশা থেকে পৃথক করে একটি সুনির্দিষ্ট, প্রশিক্ষণনির্ভর ও নৈতিক মানসম্পন্ন পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে। পেশা কেবল আয়ের মাধ্যম নয়, বরং এটি সমাজে দায়িত্ব, কর্তব্য ও সেবার মানদণ্ডে পরিচালিত একটি সংগঠিত পদ্ধতি।
পেশার প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
১) সুশৃঙ্খল তত্ত্ব (Systematic Theory): প্রতিটি পেশার জন্য নির্দিষ্ট তত্ত্ব, জ্ঞানভিত্তি ও নীতিমালা থাকে, যা প্রশিক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে অর্জিত হয়।
২) পেশাগত কর্তৃত্ব (Professional Authority): পেশাজীবীরা তাদের বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতার কারণে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের সিদ্ধান্ত গ্রহণে কর্তৃত্ব রাখেন।
৩) সমাজ বা রাষ্ট্রের স্বীকৃতি (Social or Legal Recognition): একটি পেশাকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে রাষ্ট্র বা সমাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি প্রয়োজন।
৪) পেশাগত নৈতিক মানদণ্ড (Professional Ethics): পেশাজীবীদের আচরণ ও দায়িত্ব পরিচালনার জন্য কিছু নৈতিক নীতি থাকে, যা পেশার মর্যাদা ও বিশ্বাসযোগ্যতা বজায় রাখে।
৫) পেশাগত সংস্কৃতি বা সংগঠন (Professional Organization): প্রতিটি পেশার নিজস্ব সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান থাকে, যা সদস্যদের ঐক্য, পেশাগত উন্নয়ন এবং মান নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।
অতএব, পেশা হলো এমন একটি সংগঠিত ও নৈতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত কর্মক্ষেত্র, যেখানে প্রশিক্ষণ, জ্ঞান ও দক্ষতার মাধ্যমে ব্যক্তি সমাজে অবদান রাখে এবং অর্থনৈতিকভাবে জীবনধারণ করে।

0
Updated: 21 hours ago
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইনে অক্ষম দরিদ্রের জন্য কী ধরনের ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছিল?
Created: 1 day ago
A
আংশিক সাহায্য ব্যবস্থা চালু করা
B
শ্রমাগারে পাঠানো
C
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা
D
বহিঃসাহায্যের ব্যবস্থা করা (Outdoor relief)
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইন (Poor Law Amendment Act of 1834) ইংল্যান্ডে প্রণীত একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক আইন, যা পূর্ববর্তী ১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের সংস্কার হিসেবে কার্যকর হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র সহায়তা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও সীমিত করা এবং কাজ করতে সক্ষম দরিদ্রদের মধ্যে কর্মস্পৃহা জাগিয়ে তোলা।
এই আইনে বিশেষভাবে অক্ষম দরিদ্রদের জন্য বহিঃসাহায্য (Outdoor Relief) প্রদানের ব্যবস্থা সুপারিশ করা হয়। বহিঃসাহায্য বলতে বোঝায়—যেসব দরিদ্র ব্যক্তি শারীরিকভাবে কাজ করতে অক্ষম, যেমন বৃদ্ধ, অসুস্থ, শিশু এবং বিধবা, তাদেরকে কর্মশালায় না পাঠিয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে থেকে আর্থিক বা খাদ্য সহায়তা প্রদান করা।
অন্যদিকে, যারা কর্মক্ষম দরিদ্র, তাদের জন্য কর্মশালাভিত্তিক সহায়তা বা Indoor Relief নীতি প্রয়োগ করা হয়েছিল, যাতে তারা কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে অভ্যস্ত হয়।
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
১) কাজ করতে সক্ষম দরিদ্রদের জন্য কর্মশালার ব্যবস্থা।
২) অক্ষম দরিদ্রদের জন্য বহিঃসাহায্য প্রদান।
৩) দরিদ্র তহবিল ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা।
৪) দরিদ্রতা নিরসনের পরিবর্তে কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়া।
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইনে বহিঃসাহায্য ব্যবস্থা শুধু অক্ষম, বৃদ্ধ, অসুস্থ, শিশু ও বিধবাদের জন্য প্রযোজ্য ছিল, যা তৎকালীন সমাজে মানবিক সহায়তা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়।

0
Updated: 1 day ago
বাংলাদেশে দল সমাজকর্ম প্রয়োগের উত্তম ক্ষেত্র কোনটি?
Created: 1 day ago
A
হাসপাতাল
B
মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র
C
ভবঘুরে কেন্দ্র
D
বিদ্যালয় ও সংশোধনাগার
দল সমাজকর্ম (Social Group Work) হলো সমাজকর্মের এমন একটি মৌলিক পদ্ধতি, যেখানে একটি দলকে সমস্যা সমাধান ও ব্যক্তিগত উন্নয়নের একক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সদস্যদের সামাজিক অভিযোজন, আত্মোন্নয়ন ও দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করা হয়।
এই পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো দলীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সদস্যদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বগুণ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করা, যাতে তারা ব্যক্তিগত ও সামাজিক সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে এবং সমাজে দক্ষ ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশে দল সমাজকর্ম প্রয়োগের উত্তম ক্ষেত্রগুলো হলো:
১) সম্প্রদায়গত সংঘর্ষের সমাধান
২) সমবায় মালিকানার যথাযথ ব্যবহার
৩) জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা
৪) অপরাধী পুনর্বাসন কেন্দ্র
৫) বৃদ্ধদের সেবাকেন্দ্র
৬) প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন কেন্দ্র
৭) কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র
৮) শিল্প প্রতিষ্ঠানে মালিক-শ্রমিক সমস্যার সমাধান
৯) অটিস্টিক শিশু সেবা কেন্দ্র
এই ক্ষেত্রগুলোতে দল সমাজকর্ম প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা, পুনর্বাসন, দক্ষতা বিকাশ ও সামাজিক সংহতি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।

0
Updated: 1 day ago
বিভারিজ রিপোর্ট অনুসারে পঞ্চদৈত্যগুলো হলো-
Created: 2 days ago
A
অজ্ঞতা, অদক্ষতা, অসচেতনতা, অবহেলা, অসমতা
B
রোগ, দুর্ভিক্ষ, অভাব, প্রতিযোগিতা, অলসতা
C
অভাব, রোগ, অদক্ষতা,নিরুৎসাহ, অলসতা
D
অভাব, রোগ, অজ্ঞতা, মলিনতা, অলসতা
অভাবযুক্ত ইংল্যান্ডের সমাজজীবনকে অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম বিভারিজ ‘পঞ্চদৈত্য (Five Giants)’ নামে পরিচিত পাঁচটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, যা অক্টোপাসের মতো সমাজকে জড়িয়ে রেখেছিল। তিনি মনে করতেন, এই পাঁচটি দৈত্যই মানবসমাজের অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় এবং সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
বিভারিজ রিপোর্ট, যা ১৯৪২ সালে প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ সরকারি প্রতিবেদন, যুক্তরাজ্যে আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র (Welfare State) প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে। এই প্রতিবেদনে সমাজকল্যাণ, অর্থনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
বিভারিজের নির্ধারিত “পঞ্চদৈত্য” ছিল—
১) অভাব (Want): দারিদ্র্য ও আর্থিক অনটন দূরীকরণের আহ্বান।
২) রোগ (Disease): সবার জন্য কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার প্রস্তাব।
৩) অজ্ঞতা (Ignorance): শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করে জনগণকে জ্ঞানসমৃদ্ধ করা।
৪) মলিনতা (Squalor): বসবাসযোগ্য পরিবেশ ও উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করা।
৫) অলসতা (Idleness): কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব হ্রাস করা।
বিভারিজ এই প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে প্রস্তাব দেন একটি “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত” (From Cradle to Grave) একীভূত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা (Social Security System) প্রতিষ্ঠার, যাতে প্রত্যেক নাগরিক জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পেতে পারে।
এই রিপোর্ট পরবর্তীতে ব্রিটিশ সমাজে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে এবং সমাজকর্ম ও সামাজিক নীতিনির্ধারণে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে।

0
Updated: 2 days ago