দারিদ্রের দুষ্টচক্র হলো-
A
কম উৎপাদন, কম আয়, কম সঞ্চয়, এবং কম বিনিয়োগ
B
কম সঞ্চয়, কম ভোগ, কম উৎপাদন এবং কম আয়
C
কম ব্যয়, বেশী সঞ্চয়, বেশী বিনিয়োগ এবং বেশী উৎপাদন
D
কম উৎপাদন, কম ভোগ, কম বিনিয়োগ এবং কম সঞ্চয়
উত্তরের বিবরণ
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র (Vicious Circle of Poverty) বলতে বোঝায় এমন একটি চক্রাকার অর্থনৈতিক অবস্থা, যেখানে দারিদ্র্য নিজেই তার কারণগুলোকেই আরও শক্তিশালী করে তোলে এবং এর ফলে দারিদ্র্য প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে স্থায়ী হয়ে যায়। এটি এক ধরনের উন্নয়ন ফাঁদ (Development Trap), যা থেকে মুক্তি পেতে বাহ্যিক সহায়তা বা কার্যকর নীতি প্রয়োগ প্রয়োজন।
এই তত্ত্ব অনুযায়ী, দারিদ্র্যের মূল উপাদানগুলো—কম আয়, কম সঞ্চয়, কম বিনিয়োগ এবং কম উৎপাদনশীলতা—পরস্পরের সঙ্গে এমনভাবে সম্পর্কিত যে একটির অভাব অন্যটিকে আরও তীব্র করে তোলে। ফলে সমাজ বা দেশ একটি চক্রে আবদ্ধ হয়ে পড়ে।
দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রের ধাপগুলো:
১) কম আয়: মানুষের আয় কম হওয়ায় তারা মৌলিক চাহিদা পূরণে ব্যস্ত থাকে।
২) কম সঞ্চয়: আয় কম হওয়ায় সঞ্চয়ের সুযোগ থাকে না।
৩) কম বিনিয়োগ: সঞ্চয় না থাকলে উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগ করা যায় না।
৪) কম উৎপাদনশীলতা: বিনিয়োগের অভাবে উৎপাদন ও আয় বৃদ্ধি পায় না, ফলে দারিদ্র্য বজায় থাকে।
ফলাফল: এই চক্রটি নিজেকে পুনরায় সৃষ্টি করতে থাকে, যার ফলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও উন্নয়নশীল দেশগুলো দারিদ্র্য থেকে মুক্তি পেতে পারে না।
অতএব, দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র এমন এক স্বয়ংসম্পূর্ণ অর্থনৈতিক ফাঁদ, যা ভাঙার জন্য প্রয়োজন বিনিয়োগ বৃদ্ধি, শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন, এবং ন্যায্য অর্থনৈতিক সুযোগের প্রসার।
সে অনুযায়ী, অপশন “A” উত্তর হিসেবে বেশি উপযুক্ত।

0
Updated: 21 hours ago
বাংলাদেশে দল সমাজকর্ম প্রয়োগের উত্তম ক্ষেত্র কোনটি?
Created: 1 day ago
A
হাসপাতাল
B
মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্র
C
ভবঘুরে কেন্দ্র
D
বিদ্যালয় ও সংশোধনাগার
দল সমাজকর্ম (Social Group Work) হলো সমাজকর্মের এমন একটি মৌলিক পদ্ধতি, যেখানে একটি দলকে সমস্যা সমাধান ও ব্যক্তিগত উন্নয়নের একক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এর মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে সদস্যদের সামাজিক অভিযোজন, আত্মোন্নয়ন ও দক্ষতা বিকাশে সহায়তা করা হয়।
এই পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো দলীয় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সদস্যদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, নেতৃত্বগুণ, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করা, যাতে তারা ব্যক্তিগত ও সামাজিক সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে মোকাবিলা করতে পারে এবং সমাজে দক্ষ ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশে দল সমাজকর্ম প্রয়োগের উত্তম ক্ষেত্রগুলো হলো:
১) সম্প্রদায়গত সংঘর্ষের সমাধান
২) সমবায় মালিকানার যথাযথ ব্যবহার
৩) জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা
৪) অপরাধী পুনর্বাসন কেন্দ্র
৫) বৃদ্ধদের সেবাকেন্দ্র
৬) প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসন কেন্দ্র
৭) কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র
৮) শিল্প প্রতিষ্ঠানে মালিক-শ্রমিক সমস্যার সমাধান
৯) অটিস্টিক শিশু সেবা কেন্দ্র
এই ক্ষেত্রগুলোতে দল সমাজকর্ম প্রয়োগের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে সমঝোতা, পুনর্বাসন, দক্ষতা বিকাশ ও সামাজিক সংহতি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।

0
Updated: 1 day ago
"A person with a problem comes to a place where a professional representative helps him by a given process"-
ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদান সম্পর্কে এই উক্তিটি কার?
Created: 2 days ago
A
H.H Perlmen
B
Mary Richmond
C
Jane Adams
D
Laura Reynolds
সমাজকর্মী এইচ. এইচ. পার্লম্যান (H. H. Perlman) প্রদত্ত উক্তি— “A person with a problem comes to a place where a professional representative helps him by a given process” — ব্যক্তি সমাজকর্মের মৌলিক কাঠামো ও কার্যপ্রণালীকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে। পার্লম্যান এই উক্তির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন, একজন ব্যক্তি যখন কোনো সামাজিক বা ব্যক্তিগত সমস্যার মুখোমুখি হন, তখন তিনি এমন একটি প্রতিষ্ঠানে আসেন যেখানে একজন প্রশিক্ষিত সমাজকর্মী পেশাগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে সমস্যার সমাধানের পথে পরিচালিত করেন। এই ধারণাটি ব্যক্তি সমাজকর্মের কেন্দ্রীয় ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
উক্তিটির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সমাজকর্ম প্রক্রিয়াটি কেবল সাহায্য নয়, বরং ব্যক্তিকে সক্ষম করে তোলা, যাতে তিনি নিজের সমস্যা বোঝতে পারেন এবং সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারেন। সমাজকর্মী এখানে নির্দেশক, সহায়ক ও সমর্থনদাতা হিসেবে কাজ করেন।
এই উক্তিটি ব্যক্তি সমাজকর্মের পাঁচটি অপরিহার্য উপাদান স্পষ্টভাবে তুলে ধরে—
১) সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি (The Person): যিনি কোনো ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক বা মানসিক সমস্যায় জর্জরিত।
২) সমস্যা (The Problem): যে কারণ বা পরিস্থিতি ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও মানসিক স্থিতি ব্যাহত করে।
৩) স্থান (The Place): সেই প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যেখানে সমাজকর্মের পেশাগত সেবা প্রদান করা হয়, যেমন হাসপাতাল, স্কুল বা সমাজসেবা কেন্দ্র।
৪) পেশাদার সমাজকর্মী (The Professional Representative): প্রশিক্ষিত ও দক্ষ সমাজকর্মী, যিনি পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা ও নীতির আলোকে ক্লায়েন্টকে সহায়তা করেন।
৫) একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া (The Process): সমাজকর্মের ধাপে ধাপে পরিচালিত কার্যক্রম— যেমন সম্পর্ক স্থাপন, সমস্যা নির্ণয়, পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন— যার মাধ্যমে সেবাদান সম্পন্ন হয়।
অতএব, পার্লম্যানের এই উক্তি ব্যক্তি সমাজকর্মের কাঠামো, লক্ষ্য ও প্রক্রিয়াকে সংক্ষেপে উপস্থাপন করে, যা সমাজকর্ম পেশার ভিত্তিমূল ধারণা হিসেবে সর্বাধিক স্বীকৃত।

0
Updated: 2 days ago
মানব উন্নয়ন সূচক কোন্ তিনটি বিষয়কে নির্দেশ করে?
Created: 2 days ago
A
শিক্ষা, আয় ও জীবন প্রত্যাশা
B
স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও শিক্ষা
C
শিক্ষা, আয় ও প্রযুক্তি
D
স্বাস্থ্য, পরিবেশ, ও আয়
মানব উন্নয়ন সূচক (HDI) হলো একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড, যার মাধ্যমে একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এটি কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে না, বরং মানুষের জীবনমান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ মানবকল্যাণের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। এই সূচকটি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP) প্রণয়ন করে।
HDI মূলত তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর ভিত্তি করে গঠিত—
১) দীর্ঘ ও স্বাস্থ্যকর জীবন: এটি পরিমাপ করা হয় জন্মের সময় প্রত্যাশিত গড় আয়ু (Life Expectancy at Birth) দ্বারা।
২) জ্ঞান বা শিক্ষা স্তর: এটি নির্ধারণ করা হয় গড় শিক্ষাবর্ষ (Mean Years of Schooling) এবং প্রত্যাশিত শিক্ষাবর্ষ (Expected Years of Schooling) — এই দুই সূচকের সমন্বয়ে।
৩) শালীন জীবনযাত্রার মান: এটি নির্ণয় করা হয় প্রতি ব্যক্তির মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (GNI per capita) দিয়ে, যা ক্রয়ক্ষমতা সমতা (PPP) অনুযায়ী গণনা করা হয়।
এই তিনটি সূচকের গড় নির্ণয় করে একটি দেশের মানব উন্নয়ন সূচক (HDI) নির্ধারণ করা হয়। সূচকটি ০ থেকে ১-এর মধ্যে মান পায়— যেখানে ১-এর কাছাকাছি মান নির্দেশ করে উচ্চ মানব উন্নয়ন এবং ০-এর কাছাকাছি মান নির্দেশ করে নিম্ন মানব উন্নয়ন।
অতএব, মানব উন্নয়নের প্রকৃত লক্ষ্য হলো মানুষের সক্ষমতা, সুযোগ ও জীবনমান বৃদ্ধি করা, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নয়।

0
Updated: 2 days ago