বিভারিজ রিপোর্ট প্রণয়নকারীর পুরো নাম হলো?
A
উইলিয়াম বিভারিজ
B
স্যার উইলিয়াম হ্যানরি বিভারিজ
C
স্যার বিভারিজ
D
স্যার উইলিয়াম বিভারিজ
উত্তরের বিবরণ
বিভারিজ রিপোর্ট (Beveridge Report) হলো ইংল্যান্ডের সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল, যা ১৯৪২ সালে স্যার উইলিয়াম হেনরি বিভারিজ (Sir William Henry Beveridge) কর্তৃক প্রণীত হয়। এই রিপোর্টে তিনি যুক্তরাজ্যে একটি সর্বজনীন কল্যাণ রাষ্ট্র (Welfare State) গঠনের জন্য দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
বিভারিজ রিপোর্টে সমাজের অগ্রগতির পথে পাঁচটি প্রধান অন্তরায়কে চিহ্নিত করা হয়, যেগুলোকে তিনি “Five Giants” নামে উল্লেখ করেন। এগুলো হলো:
১) অভাব (Want) – দারিদ্র্য ও মৌলিক চাহিদা পূরণের ঘাটতি।
২) রোগ (Disease) – পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবার অভাব।
৩) অজ্ঞতা (Ignorance) – শিক্ষার সুযোগের ঘাটতি।
৪) মলিনতা (Squalor) – অনিরাপদ ও অস্বাস্থ্যকর বাসস্থানের সমস্যা।
৫) অলসতা (Idleness) – বেকারত্ব ও কর্মসংস্থানের অভাব।
বিভারিজের মতে, এই পাঁচটি অন্তরায় দূরীকরণের মাধ্যমে সমাজে সামাজিক ন্যায়বিচার, কল্যাণ ও সমৃদ্ধি প্রতিষ্ঠা সম্ভব। তাঁর এই প্রস্তাবনা পরবর্তীকালে যুক্তরাজ্যের কল্যাণ রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি গঠন করে এবং আধুনিক সামাজিক নিরাপত্তা নীতির মূল অনুপ্রেরণা হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিভারিজ রিপোর্ট (১৯৪২) মানবকল্যাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার একটি ঐতিহাসিক নথি, যার প্রণয়নকারী ছিলেন স্যার উইলিয়াম হেনরি বিভারিজ।

0
Updated: 21 hours ago
শিল্প বিপ্লবের ফলে যে ধরনের পরিবার ব্যবস্থা গড়ে উঠে-একক পরিবার
Created: 1 day ago
A
একক পরিবার
B
বর্ধিত পরিবার
C
যৌথ পরিবার
D
শহরে পরিবার
শিল্প বিপ্লবের ফলে সমাজে ব্যাপক সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটে, যার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ছিল একক পরিবার (Single-Parent Family) বা ছোট পরিবার ব্যবস্থার বিকাশ। পূর্বে প্রচলিত যৌথ পরিবার ব্যবস্থা (Joint Family System) ধীরে ধীরে ভেঙে যায় এবং এর পরিবর্তে একক বা নিউক্লিয়ার পরিবার (Nuclear Family) গঠিত হয়।
শিল্প বিপ্লবের সময় মানুষ কাজের সন্ধানে গ্রাম থেকে শহরে অভিবাসন শুরু করে। এই পরিবর্তনের ফলে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে এবং পারিবারিক ঐক্য শিথিল হয়। শহুরে জীবনে কর্মসংস্থানের চাহিদা, বাসস্থানের সীমাবদ্ধতা ও ব্যক্তিকেন্দ্রিক জীবনধারা পরিবারকে ছোট আকারে সীমিত করে দেয়।
এই প্রেক্ষাপটে সমাজে দুটি প্রধান পরিবর্তন দেখা যায়—
১) কর্মজীবন ও গৃহজীবনের বিভাজন: পুরুষরা কর্মস্থলে গিয়ে আয় উপার্জন করতেন, আর নারীরা গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত থাকতেন। এতে পরিবারে ভূমিকার স্পষ্ট বিভাজন সৃষ্টি হয়।
২) পারিবারিক সম্পর্কের পরিবর্তন: পারিবারিক বন্ধন আগের তুলনায় দুর্বল হয় এবং ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের প্রবণতা বাড়ে।
শিল্প বিপ্লব শুধু অর্থনৈতিক পরিবর্তনই আনেনি, বরং তা পারিবারিক কাঠামো, সামাজিক মূল্যবোধ ও মানবসম্পর্কের ওপরও গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এর ফলেই আধুনিক সমাজে একক পরিবার ব্যবস্থা ধীরে ধীরে স্থায়ী রূপ পায়।

0
Updated: 1 day ago
সমাজকর্ম পেশার ধর্ম হলো-
Created: 2 days ago
A
সক্ষমকারী ও সাহায্যকারী পেশা
B
দাতব্য পেশা
C
পরনির্ভরশীল পেশা
D
যৌগিক পেশা
সমাজকর্ম পেশার মূল ভিত্তি হলো মানবসেবা, যার মাধ্যমে ব্যক্তি, গোষ্ঠী এবং সম্প্রদায়ের সমস্যা সমাধানে সহায়তা করা হয়। এই পেশার উদ্দেশ্য কেবল সাহায্য প্রদান নয়, বরং মানুষকে নিজেদের সমস্যা মোকাবিলায় সক্ষম করে তোলা। সমাজকর্ম এমন একটি সক্ষমকারী ও সাহায্যকারী পেশা, যা মানবমর্যাদা, ন্যায়বিচার ও সমান সুযোগের নীতিতে বিশ্বাস করে।
সমাজকর্মের প্রধান লক্ষ্যগুলো হলো—
-
ব্যক্তিগত ও সামাজিক সমস্যার কার্যকর সমাধান নিশ্চিত করা।
-
দুর্বল, সুবিধাবঞ্চিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অধিকার ও সুযোগ সুরক্ষা করা।
-
ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে স্বনির্ভর করে তোলা এবং সামাজিক সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা।
-
সমাজে সামগ্রিক কল্যাণ, সামাজিক ন্যায়বিচার ও সমতা প্রতিষ্ঠা করা।
অতএব, সমাজকর্ম পেশা মানবকল্যাণমুখী এক সেবা কার্যক্রম, যার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন ও ন্যায়ভিত্তিক উন্নয়ন সাধিত হয়।

0
Updated: 2 days ago
Laura Jane Adams কী নামে Settlement House প্রতিষ্ঠা করেছিলেন?
Created: 1 day ago
A
Toynbee Hall
B
Hull House
C
Dallas House
D
City House
জেন অ্যাডামস (Jane Addams) ছিলেন একজন বিশিষ্ট সমাজকর্মী, সমাজসংস্কারক ও শান্তিকর্মী, যিনি সমাজকল্যাণমূলক কাজের ক্ষেত্রে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তিনি তার বন্ধু এলেন গেটস স্টার (Ellen Gates Starr)-এর সঙ্গে ১৮৮৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো শহরে ‘হাল-হাউস’ (Hull House) প্রতিষ্ঠা করেন। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম দিকের এবং সবচেয়ে প্রভাবশালী সেটেলমেন্ট হাউস (Settlement House) হিসেবে পরিচিত।
হাল-হাউস প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের দরিদ্র, শ্রমজীবী ও অভিবাসী জনগোষ্ঠীর শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সামাজিক উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টি করা। এখানে স্থানীয় জনগণকে শিল্প, সাহিত্য, স্বাস্থ্যসেবা, শিশু লালনপালন, ইংরেজি ভাষা শিক্ষা, সেলাই, রান্না, এবং নাগরিক সচেতনতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো।
হাল-হাউসের প্রধান লক্ষ্য ও গুরুত্ব ছিল:
১) দরিদ্র ও অভিবাসীদের উন্নয়ন: সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে স্বনির্ভর ও সচেতন করে তোলা।
২) শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার: প্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষা, সঙ্গীত, শিল্প ও সাহিত্যচর্চার সুযোগ সৃষ্টি করা।
৩) সামাজিক সংহতি বৃদ্ধি: ভিন্ন জাতি ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে বোঝাপড়া ও সহযোগিতা স্থাপন করা।
৪) নারী ও শিশু উন্নয়ন: নারীদের জন্য দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি ও শিশুদের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা।
অতএব, জেন অ্যাডামসের প্রতিষ্ঠিত ‘হাল-হাউস’ সমাজকর্ম ইতিহাসে এক মাইলফলক, যা আধুনিক সমাজসেবা আন্দোলনের ভিত্তি স্থাপন করে। তাঁর এই অবদানের জন্য তিনি ১৯৩১ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।

0
Updated: 1 day ago