সমাজকর্মে গ্রহণনীতিতে কে কাকে গ্রহণ করবে?
A
ব্যক্তি সমাজকর্মীকে
B
সমাজকর্মী ব্যক্তিকে
C
প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিকে
D
প্রতিষ্ঠান সমাজকর্মী ও ব্যক্তিকে
উত্তরের বিবরণ
সমাজকর্মের গ্রহণ নীতি (Principle of Acceptance) হলো এমন একটি মৌলিক নৈতিক নীতি, যার মাধ্যমে সমাজকর্মী প্রত্যেক সাহায্যার্থীকে আন্তরিকতা, সহানুভূতি ও শ্রদ্ধার সাথে গ্রহণ করেন। এই নীতির মূল উদ্দেশ্য হলো সাহায্যপ্রার্থীর প্রতি এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা, যেখানে তিনি নিজেকে মূল্যবান, মর্যাদাসম্পন্ন এবং বোঝাপড়ার যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে অনুভব করেন।
গ্রহণ নীতির মূল ভিত্তি হলো—জাতি, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ বা সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে প্রতিটি ব্যক্তিকে সম্মানের সাথে গ্রহণ করা। সমাজকর্মী কখনো সাহায্যার্থীর ভুল, দুর্বলতা বা অতীত আচরণের জন্য তাকে অবজ্ঞা করেন না; বরং সহমর্মিতার সঙ্গে তার পাশে দাঁড়ান।
গ্রহণ নীতির মূল দিকগুলো হলো:
১) অবিচারহীন দৃষ্টিভঙ্গি: সমাজকর্মী সাহায্যার্থীর প্রতি কোনো পূর্বধারণা বা পক্ষপাতিত্ব পোষণ করবেন না।
২) সম্মান ও মর্যাদার স্বীকৃতি: সাহায্যার্থীকে তার নিজস্ব ব্যক্তিত্ব, অভিজ্ঞতা ও মর্যাদা অনুযায়ী মূল্যায়ন করা।
৩) সহানুভূতিশীল মনোভাব: ক্লায়েন্টের আবেগ, কষ্ট ও অনুভূতিকে বোঝা এবং তা শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করা।
৪) বিশ্বাসভিত্তিক সম্পর্ক গঠন: আন্তরিক গ্রহণের মাধ্যমে সমাজকর্মী ও সাহায্যার্থীর মধ্যে আস্থা ও সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করা।
সমাজকর্মে গ্রহণ নীতি এমন একটি মানবিক ভিত্তি, যা সাহায্যার্থীর আত্মবিশ্বাস ও নিরাপত্তাবোধ জাগিয়ে তোলে এবং সমস্যা সমাধানের প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করে তোলে।

0
Updated: 11 hours ago
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইনে অক্ষম দরিদ্রের জন্য কী ধরনের ব্যবস্থার সুপারিশ করা হয়েছিল?
Created: 11 hours ago
A
আংশিক সাহায্য ব্যবস্থা চালু করা
B
শ্রমাগারে পাঠানো
C
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা
D
বহিঃসাহায্যের ব্যবস্থা করা (Outdoor relief)
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইন (Poor Law Amendment Act of 1834) ইংল্যান্ডে প্রণীত একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক আইন, যা পূর্ববর্তী ১৬০১ সালের এলিজাবেথীয় দরিদ্র আইনের সংস্কার হিসেবে কার্যকর হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র সহায়তা ব্যবস্থাকে আরও কার্যকর ও সীমিত করা এবং কাজ করতে সক্ষম দরিদ্রদের মধ্যে কর্মস্পৃহা জাগিয়ে তোলা।
এই আইনে বিশেষভাবে অক্ষম দরিদ্রদের জন্য বহিঃসাহায্য (Outdoor Relief) প্রদানের ব্যবস্থা সুপারিশ করা হয়। বহিঃসাহায্য বলতে বোঝায়—যেসব দরিদ্র ব্যক্তি শারীরিকভাবে কাজ করতে অক্ষম, যেমন বৃদ্ধ, অসুস্থ, শিশু এবং বিধবা, তাদেরকে কর্মশালায় না পাঠিয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে থেকে আর্থিক বা খাদ্য সহায়তা প্রদান করা।
অন্যদিকে, যারা কর্মক্ষম দরিদ্র, তাদের জন্য কর্মশালাভিত্তিক সহায়তা বা Indoor Relief নীতি প্রয়োগ করা হয়েছিল, যাতে তারা কাজের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে অভ্যস্ত হয়।
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইনের প্রধান বৈশিষ্ট্যসমূহ:
১) কাজ করতে সক্ষম দরিদ্রদের জন্য কর্মশালার ব্যবস্থা।
২) অক্ষম দরিদ্রদের জন্য বহিঃসাহায্য প্রদান।
৩) দরিদ্র তহবিল ব্যবস্থাপনায় কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ জোরদার করা।
৪) দরিদ্রতা নিরসনের পরিবর্তে কর্মসংস্থানের ওপর জোর দেওয়া।
১৮৩৪ সালের দারিদ্র্য আইনে বহিঃসাহায্য ব্যবস্থা শুধু অক্ষম, বৃদ্ধ, অসুস্থ, শিশু ও বিধবাদের জন্য প্রযোজ্য ছিল, যা তৎকালীন সমাজে মানবিক সহায়তা ব্যবস্থার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হয়।

0
Updated: 11 hours ago
বিভারিজ রিপোর্ট অনুসারে পঞ্চদৈত্যগুলো হলো-
Created: 1 day ago
A
অজ্ঞতা, অদক্ষতা, অসচেতনতা, অবহেলা, অসমতা
B
রোগ, দুর্ভিক্ষ, অভাব, প্রতিযোগিতা, অলসতা
C
অভাব, রোগ, অদক্ষতা,নিরুৎসাহ, অলসতা
D
অভাব, রোগ, অজ্ঞতা, মলিনতা, অলসতা
অভাবযুক্ত ইংল্যান্ডের সমাজজীবনকে অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম বিভারিজ ‘পঞ্চদৈত্য (Five Giants)’ নামে পরিচিত পাঁচটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, যা অক্টোপাসের মতো সমাজকে জড়িয়ে রেখেছিল। তিনি মনে করতেন, এই পাঁচটি দৈত্যই মানবসমাজের অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় এবং সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
বিভারিজ রিপোর্ট, যা ১৯৪২ সালে প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ সরকারি প্রতিবেদন, যুক্তরাজ্যে আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র (Welfare State) প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে। এই প্রতিবেদনে সমাজকল্যাণ, অর্থনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
বিভারিজের নির্ধারিত “পঞ্চদৈত্য” ছিল—
১) অভাব (Want): দারিদ্র্য ও আর্থিক অনটন দূরীকরণের আহ্বান।
২) রোগ (Disease): সবার জন্য কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার প্রস্তাব।
৩) অজ্ঞতা (Ignorance): শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করে জনগণকে জ্ঞানসমৃদ্ধ করা।
৪) মলিনতা (Squalor): বসবাসযোগ্য পরিবেশ ও উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করা।
৫) অলসতা (Idleness): কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব হ্রাস করা।
বিভারিজ এই প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে প্রস্তাব দেন একটি “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত” (From Cradle to Grave) একীভূত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা (Social Security System) প্রতিষ্ঠার, যাতে প্রত্যেক নাগরিক জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পেতে পারে।
এই রিপোর্ট পরবর্তীতে ব্রিটিশ সমাজে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে এবং সমাজকর্ম ও সামাজিক নীতিনির্ধারণে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে।

0
Updated: 1 day ago
"A person with a problem comes to a place where a professional representative helps him by a given process"-
ব্যক্তি সমাজকর্মের উপাদান সম্পর্কে এই উক্তিটি কার?
Created: 1 day ago
A
H.H Perlmen
B
Mary Richmond
C
Jane Adams
D
Laura Reynolds
সমাজকর্মী এইচ. এইচ. পার্লম্যান (H. H. Perlman) প্রদত্ত উক্তি— “A person with a problem comes to a place where a professional representative helps him by a given process” — ব্যক্তি সমাজকর্মের মৌলিক কাঠামো ও কার্যপ্রণালীকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে। পার্লম্যান এই উক্তির মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন, একজন ব্যক্তি যখন কোনো সামাজিক বা ব্যক্তিগত সমস্যার মুখোমুখি হন, তখন তিনি এমন একটি প্রতিষ্ঠানে আসেন যেখানে একজন প্রশিক্ষিত সমাজকর্মী পেশাগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাকে সমস্যার সমাধানের পথে পরিচালিত করেন। এই ধারণাটি ব্যক্তি সমাজকর্মের কেন্দ্রীয় ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত।
উক্তিটির ব্যাখ্যা অনুযায়ী, সমাজকর্ম প্রক্রিয়াটি কেবল সাহায্য নয়, বরং ব্যক্তিকে সক্ষম করে তোলা, যাতে তিনি নিজের সমস্যা বোঝতে পারেন এবং সমাধানে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারেন। সমাজকর্মী এখানে নির্দেশক, সহায়ক ও সমর্থনদাতা হিসেবে কাজ করেন।
এই উক্তিটি ব্যক্তি সমাজকর্মের পাঁচটি অপরিহার্য উপাদান স্পষ্টভাবে তুলে ধরে—
১) সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি (The Person): যিনি কোনো ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক বা মানসিক সমস্যায় জর্জরিত।
২) সমস্যা (The Problem): যে কারণ বা পরিস্থিতি ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ও মানসিক স্থিতি ব্যাহত করে।
৩) স্থান (The Place): সেই প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা যেখানে সমাজকর্মের পেশাগত সেবা প্রদান করা হয়, যেমন হাসপাতাল, স্কুল বা সমাজসেবা কেন্দ্র।
৪) পেশাদার সমাজকর্মী (The Professional Representative): প্রশিক্ষিত ও দক্ষ সমাজকর্মী, যিনি পেশাগত জ্ঞান, দক্ষতা ও নীতির আলোকে ক্লায়েন্টকে সহায়তা করেন।
৫) একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া (The Process): সমাজকর্মের ধাপে ধাপে পরিচালিত কার্যক্রম— যেমন সম্পর্ক স্থাপন, সমস্যা নির্ণয়, পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন— যার মাধ্যমে সেবাদান সম্পন্ন হয়।
অতএব, পার্লম্যানের এই উক্তি ব্যক্তি সমাজকর্মের কাঠামো, লক্ষ্য ও প্রক্রিয়াকে সংক্ষেপে উপস্থাপন করে, যা সমাজকর্ম পেশার ভিত্তিমূল ধারণা হিসেবে সর্বাধিক স্বীকৃত।

0
Updated: 1 day ago