”নাই বা পেলাম কন্ঠে আমার তোমার কণ্ঠহার/তোমায় আমি করবো সৃজন এ মোর অহংকার”- কবি নজরুলের এ অপ্রাপ্তিপনিত বেদনা কাকে ঘিরে?
A
নার্গিস
B
প্রমীলা
C
ফজিলাতুন্নেসা
D
রানু সোম
উত্তরের বিবরণ
কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনে ফজিলাতুন্নেসা নামের এক মেধাবী ও সৌন্দর্যপূর্ণ নারীর প্রতি গভীর প্রেমের কাহিনি তাঁর জীবনের এক আবেগময় অধ্যায়। নজরুল তাঁর প্রতি অনুরক্ত হলেও এই ভালোবাসা পূর্ণতা পায়নি।
-
ফজিলাতুন্নেসা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী এবং গণিত বিভাগে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থানাধিকারী।
-
তিনি পড়াশোনা করেন ইডেন কলেজ ও পরবর্তীতে কলকাতার বেথুন কলেজে।
-
নজরুলের ভালোবাসার প্রস্তাব তিনি বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন, যা কবিকে গভীরভাবে আঘাত করেছিল।
-
এই প্রত্যাখ্যানের বেদনা নজরুলের চিঠি, কবিতা ও গানে স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর বন্ধু কাজী মোতাহার হোসেনকে লেখা চিঠিগুলোতে সেই মর্মবেদনার সুর স্পষ্ট।
-
এই মানসিক আঘাত থেকেই নজরুল লিখেছিলেন—
“নাইবা পেলাম আমার গলায় তোমার গলার হার,
তোমায় আমি করব সৃজন, এ মোর অহংকার।”
যা তাঁর প্রেম ও আত্মমর্যাদার এক অনন্য ঘোষণা। -
ফজিলাতুন্নেসার প্রতি এই অপ্রাপ্ত প্রেমই নজরুলের অনেক প্রেমমূলক ও বেদনামিশ্রিত কবিতা ও গানের প্রেরণাসূত্র হয়ে ওঠে।
অতএব, সঠিক উত্তর: গ) ফজিলাতুন্নেসা।

0
Updated: 15 hours ago
'অগ্নিবীণা' কাব্যগ্রন্থের সংকলিত কবিতা নয় কোনটি?
Created: 1 month ago
A
প্রলয়োল্লাস
B
ধূমকেতু
C
বিদ্রোহী
D
অগ্রপথিক
বাখ্যা:
-
‘অগ্নিবীণা’ হলো কাজী নজরুল ইসলামের প্রথম প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ।
-
এই কাব্যের জনপ্রিয় কবিতা হলো ‘বিদ্রোহী’, যার জন্য তিনি ‘বিদ্রোহী কবি’ হিসেবে খ্যাত হন।
-
কাব্যগ্রন্থটির প্রথম কবিতা: প্রলয়োল্লাস।
-
অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গ করা হয়েছে বিপ্লবী বারীন্দ্রকুমার ঘোষ-কে।
কাব্যের কবিতাসমূহ (মোট ১২টি):
১. প্রলয়োল্লাস
২. বিদ্রোহী
৩. রক্তাম্বর-ধারিণী মা
৪. আগমণী
৫. ধূমকেতু
৬. কামাল পাশা
৭. আনোয়ার
৮. রণভেরী
৯. শাত-ইল-আরব
১০. খেয়াপারের তরণী
১১. কোরবানী
১২. মহররম
-
অন্যদিকে, ‘অগ্রপথিক’ কবিতা কাজী নজরুল ইসলামের ‘জিঞ্জির’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।
কাজী নজরুল ইসলাম:
-
বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতির অন্যতম প্রধান ব্যক্তিত্ব।
-
জন্ম: ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯), চুরুলিয়া, বর্ধমান।
-
ডাক নাম: ‘দুখু মিয়া’।
-
বাংলা সাহিত্যে খ্যাত: ‘বিদ্রোহী কবি’।
-
আধুনিক বাংলা গানের জগতে পরিচিত: ‘বুলবুল’।
সুতরাং, অগ্নিবীণা কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী ও বিপ্লবী সাহিত্যিক প্রতিভা প্রকাশ পায়।

0
Updated: 1 month ago
'আমার পথ' প্রবন্ধটি কাজী নজরুল ইসলামের কোন গ্রন্থ থেকে সংকলিত হয়েছে?
Created: 1 week ago
A
যুগ-বাণী
B
রুদ্র-মঙ্গল
C
দুর্দিনের যাত্রী
D
রাজবন্দির জবানবন্দি
কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কবি এবং অবিভক্ত বাংলার সাহিত্য, সমাজ ও সংস্কৃতি ক্ষেত্রে একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি কেবল কবি নয়, প্রবন্ধকার ও সমাজচিন্তক হিসেবেও খ্যাত। তাঁর জীবন ও সাহিত্যকর্মের বিভিন্ন দিক নিম্নরূপ:
-
কাজী নজরুল ইসলাম ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (২৪ মে ১৮৯৯) পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তাঁর পিতা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন মসজিদের ইমাম ও মাযারের খাদেম।
-
নজরুলের ডাক নাম ছিল ‘দুখু মিয়া’।
কাজী নজরুল ইসলামের প্রবন্ধগ্রন্থ ও সাহিত্য:
-
তাঁর প্রথম প্রবন্ধগ্রন্থ ছিল ‘যুগবাণী’।
-
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে:
-
রাজবন্দীর জবানবন্দি
-
দুর্দিনের যাত্রী
-
রুদ্র মঙ্গল
-
মন্দির ও মসজিদ
-
আমি সৈনিক
-
‘আমার পথ’ প্রবন্ধটি কাজী নজরুল ইসলামের ‘রুদ্র-মঙ্গল’ গ্রন্থের দ্বিতীয় প্রবন্ধ।
-
‘রুদ্র-মঙ্গল’ গ্রন্থটি প্রথম প্রকাশিত হয় ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে।
-
গ্রন্থটিতে মোট ৮টি প্রবন্ধ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
‘আমার পথ’ প্রবন্ধের কিছু অংশ:
-
প্রবন্ধে নজরুল তাঁর যাত্রার স্বাধীনতা, সাহস ও সত্যনিষ্ঠার প্রতি সংকল্প প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন,
‘আমার এই যাত্রা হল শুরু ওগো কর্ণধার, তোমারে করি নমস্কার। মাভৈঃ বাণীর ভরসা নিয়ে ‘জয় প্রলয়ঙ্কর’ বলে ‘ধূমকেতু’কে রথ করে আমার আজ নতুন পথে যাত্রা শুরু হল। আমার কর্ণধার আমি। আমায় পথ দেখাবে আমার সত্য। আমার যাত্রা শুরুর আগে আমি সালাম জানাচ্ছি—নমস্কার করছি আমার সত্যকে।
যে পথ আমার সত্যের বিরোধী, সে পথ ছাড়া আর কোনো পথই আমার বিপথ নয়! রাজভয়—লোকভয় কোনো ভয়ই আমায় বিপথে নিয়ে যাবে না। আমি যদি সত্যি করে আমার সত্যকে চিনে থাকি, আমার অন্তরে মিথ্যার ভয় না থাকে, তা হলে বাইরের কোন ভয়ই আমার কিছু করতে পারবে না। যার ভিতরে ভয়, সে-ই বাইরে ভয় পায়।’
-
এখানে নজরুলের ব্যক্তিগত আত্মবিশ্বাস, নৈতিক সাহস এবং সত্যের প্রতি অটল বিশ্বাস ফুটে উঠেছে।
-
প্রবন্ধটি ব্যক্তিগত মুক্তি ও সামাজিক সচেতনতার সঙ্গে মিলিত হয়েছে, যা তাঁর লেখনীকে এক বিশেষ প্রভাবশালী অবস্থানে রাখে।

0
Updated: 1 week ago
"তবুও থামে না যৌবন বেগ জীবনের উল্লাসে
চলেছে চন্দ্র মঙ্গল গ্রহে স্বর্গে অসীমাকাশে।" - কে লিখেছেন?
Created: 1 week ago
A
সুকান্ত ভট্টাচার্য
B
হেলাল হাফিজ
C
কাজী নজরুল ইসলাম
D
ফররুখ আহমদ
কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা ‘জীবন-বন্দনা’-এর এই অংশে কবি জীবনের অদম্য গতি ও যৌবনের অনিঃশেষ উদ্দীপনাকে তুলে ধরেছেন। মানুষের অগ্রযাত্রা যে কখনো থামে না, বরং সে চন্দ্র, মঙ্গল, গ্রহ ও স্বর্গ পর্যন্ত ছুটে চলে—এই ভাবকেই কবি চিত্রিত করেছেন তাঁর কবিতার পংক্তিতে।
‘জীবন-বন্দনা’ কবিতা সম্পর্কিত তথ্য:
-
‘জীবন-বন্দনা’ কবিতাটি কাজী নজরুল ইসলামের ‘সন্ধ্যা’ কাব্যগ্রন্থ থেকে সংকলিত।
-
কবিতাটি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত।
-
‘সন্ধ্যা’ কাব্যগ্রন্থটি ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
-
বাংলাদেশের রণসংগীত “চল চল চল, উর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল” এই কাব্যগ্রন্থ থেকেই নেওয়া হয়েছে।
‘জীবন-বন্দনা’ কবিতার ভাব:
-
কবি এখানে মানুষের শ্রম, সাহস ও সৃষ্টিশীল শক্তির বন্দনা করেছেন।
-
তিনি সেই সব মানুষকে স্মরণ করেছেন, যারা কঠিন পরিশ্রমে পৃথিবীকে ফলবান করেছে।
-
মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তি ও অগ্রযাত্রাই ধরণিকে করেছে “কুসুমিতা মনোহরা”।
-
কবির ভাষায়, এই জীবনের চলা যেন উল্কার মতো—অবিরাম, অপ্রতিরোধ্য।
-
শেষে তিনি ঘোষণা করেছেন যে, যৌবনের বেগ থামে না—মানবজীবনের উল্লাস অনন্ত, যা চন্দ্র, মঙ্গল ও স্বর্গ পর্যন্ত ছুটে চলে।
কাজী নজরুল ইসলামের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থসমূহ:
-
অগ্নিবীণা
-
বিষের বাঁশি
-
ভাঙার গান
-
সাম্যবাদী
-
সর্বহারা
-
সন্ধ্যা
-
ঝিঙেফুল
-
ফণি-মনসা
-
জিঞ্জিরা
-
প্রলয়শিখা ইত্যাদি

0
Updated: 1 week ago