চর্ষাপদের কোন কবি নিজেকে বাঙালী বলে পরিচয় দিয়েছেন?
A
লুই পা
B
কুকুরী
C
কাহ্ন পা
D
ভুসুকুপা
উত্তরের বিবরণ
উক্ত পঙ্ক্তি— “আজি ভুসুকু বঙ্গালী ভইলী, নিঅ ঘরিণী চণ্ডালে লেলী” — চর্যাপদ থেকে গৃহীত, যা ভুসুকু পাদ নামক সিদ্ধাচার্য রচিত। এই পঙ্ক্তির ভিত্তিতে গবেষকেরা মনে করেন, ভুসুকু ছিলেন একজন বাঙালি কবি, কারণ তিনি নিজেই এখানে “বঙ্গালী ভইলী” বলে উল্লেখ করেছেন।
-
পঙ্ক্তিটির অর্থ হলো— “আজ ভুসুকু বাঙালি হয়ে গেল; চণ্ডাল ঘরিণীকে (স্ত্রীকে) গ্রহণ করল।”
-
এখানে কবি আত্ম-উপলব্ধি ও সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীকী প্রকাশ ঘটিয়েছেন।
-
“বাঙালি ভইলী” কথাটি তাঁর নিজস্ব জাতিগত বা আঞ্চলিক পরিচয়ের ইঙ্গিত দেয়, যা তাঁকে বাংলার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে।
-
চর্যাগানের প্রেক্ষাপটে এই পঙ্ক্তি ধর্মীয় সাধনার গূঢ়তত্ত্বও প্রকাশ করে— এখানে চণ্ডাল ঘরিণী বৌদ্ধ তন্ত্রে অশুদ্ধ বা নিষিদ্ধের মধ্য দিয়ে মুক্তির সন্ধান বোঝায়।
-
ফলে এই উক্তি সাহিত্যিক, ঐতিহাসিক এবং তাত্ত্বিক— তিন দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি চর্যাগানের অন্যতম প্রাচীন বাঙালি কবি পরিচয়ের প্রমাণ হিসেবে বিবেচিত।

0
Updated: 15 hours ago
চর্যাপদের টীকাকার কে?
Created: 2 months ago
A
কীর্তিচন্দ্র
B
মুনিদত্ত
C
প্রবোধচন্দ্র বাগচী
D
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী
চর্যাপদ
-
সংজ্ঞা: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীনযুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন, যাকে চর্যাচর্যবিনিশ্চয়, চর্যাগীতিকোষ, চর্যাগীতি বা চর্যাপদ বলা হয়।
-
ধরন: গানের সংকলন
-
বিষয়বস্তু: বৌদ্ধ ধর্ম অনুযায়ী সাধনভজন ও ধর্মীয় তত্ত্ব প্রকাশ।
-
রচয়িতা: চর্যাগুলো রচনা করেছেন বৌদ্ধ সহজিয়াগণ।
-
আবিষ্কার: মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক নেপালের রয়েল লাইব্রেরি থেকে ১৯০৭ সালে আবিষ্কৃত।
-
টীকাকার: মুনিদত্ত
-
অনুবাদ: তিব্বতি ভাষায় অনুবাদ করেন কীর্তিচন্দ্র।
- ১৯৩৮ সালে প্রবোধচন্দ্র বাগচী চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস

0
Updated: 2 months ago
সহজযান প্রসঙ্গে চর্যাপদের অন্তর্নিহিত তত্ত্বের ব্যাখ্যা করেন কে?
Created: 3 weeks ago
A
প্রবোধচন্দ্র বাগচী
B
ড. বিজয়চন্দ্র মজুমদার
C
রাহুল সাংকৃত্যায়ন
D
ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত
চর্যাপদ ও গবেষণা
-
চর্যাপদ: বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন নিদর্শন, যা বৈষ্ণব-বৌদ্ধ ধারার সঙ্গীতমালা।
-
ভাষা: চর্যাপদের ভাষাকে বলা হয় ‘সন্ধ্যা’ বা ‘সান্ধ্য ভাষা’। কখনো স্পষ্ট, কখনো অস্পষ্ট। এজন্য একে ‘আলো-আঁধারি’ ভাষা বলা হয়।
-
ছন্দ: চর্যাপদের পদগুলি প্রাচীন ছন্দে রচিত, যা আধুনিক ছন্দের বিচারে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অধীনে বিবেচিত।
চর্যাপদ বিষয়ক গবেষণা:
-
ড. বিজয়চন্দ্র মজুমদার (১৯২০): চর্যাপদের ভাষা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা।
-
ড. সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় (১৯২৬): তার গ্রন্থ ‘দি অরিজিন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অব দি বেঙ্গলি ল্যাংগুয়েজ’-এ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চর্যাপদের ভাষার ধ্বনিতত্ত্ব, ব্যাকরণ ও ছন্দ বিশ্লেষণ করে প্রমাণ করেন যে, চর্যাপদ বাংলা ভাষায় রচিত।
-
অন্যান্য ভাষাবিজ্ঞানীরা সমর্থন করেছেন, যেমন: ড. প্রবোধচন্দ্র বাগচী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, ড. সুকুমার সেন, ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত, যারা চর্যাপদের ভাষা, বিষয়বস্তু এবং গুরুত্ব নিয়ে বিশদ গবেষণা করেছেন।
-
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ (১৯২৭): চর্যাপদের ধর্মতত্ত্ব বিশ্লেষণ।
-
ড. শশিভূষণ দাশগুপ্ত (১৯৪৬): সহজযান প্রসঙ্গে চর্যাপদের অন্তর্নিহিত তত্ত্ব ব্যাখ্যা।
-
রাহুল সাংকৃত্যায়ন (বিহার): বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্য, সহজযান ও চর্যাগীতিকা নিয়ে ইংরেজি ও হিন্দিতে বিস্তৃত গবেষণা।

0
Updated: 3 weeks ago
১৮) আধুনিক ছন্দের বিচারে চর্যাপদ কোন ছন্দে রচিত?
Created: 1 month ago
A
অক্ষরবৃত্ত ছন্দ
B
স্বরবৃত্ত ছন্দ
C
পদ্যছন্দ
D
মাত্রাবৃত্ত ছন্দ
চর্যাপদের ছন্দ
মূল বৈশিষ্ট্য:
-
চর্যাপদ মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত।
-
তবে প্রাচীন কোন ছন্দে রচিত তা নিয়ে বিভিন্ন মতভেদ রয়েছে।
ছন্দের প্রভাব ও মিল:
-
সংস্কৃত পজঝটিকা ছন্দের প্রভাব:
-
প্রতিটি চরণ ষোল মাত্রার
-
চরণে চার পর্ব, প্রতিটি পর্বে চার মাত্রা
-
-
শৌরসেনী প্রাকৃত প্রভাবিত পাদাকুলক ছন্দের সঙ্গেও মিল
-
পাদাকুলক ছন্দের চরণও ষোল মাত্রার, প্রতিটি চরণে চার পর্ব, প্রতি পর্বে চার মাত্রা
-
মন্তব্য:
-
চর্যাপদ মাত্রাবৃত্ত রীতিতে গঠিত হলেও বর্তমান সুনির্দিষ্ট মাত্রাবৃত্ত গণনা পদ্ধতি এতে মানা হয়নি।
-
আধুনিক ছন্দের বিচারে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের অধীনে বিবেচিত।

0
Updated: 1 month ago