চর্যাপদের বর্ণনা অনুযায়ী ডোম্বীদের পেশা কি ছিল?
A
মদ চোয়ানো
B
তাঁত বোনা
C
চাঙারি তৈরি
D
উপরের তিনটি
উত্তরের বিবরণ
ডোম্বী সম্প্রদায় মধ্যযুগীয় সমাজে নিম্নবর্ণভুক্ত একটি জনগোষ্ঠী, যাদের প্রধান জীবিকা ছিল তাঁত বোনা ও চাঙ্গারি তৈরি করা। এই বৃত্তির উল্লেখ চর্যাপদের বিভিন্ন গানে পাওয়া যায়, যা প্রাচীন বাংলার সমাজ-জীবনের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে।
-
চর্যাপদে বলা হয়েছে — “অন্তি বিকণঅ ডোম্বী অবর না চাঙ্গেড়া।” — অর্থাৎ, ডোম্বীরা তাঁত বুনত এবং বাঁশজাত বস্তু বা চাঙ্গারি প্রস্তুত করত।
-
এদের মধ্যে কারও মদ চোয়ানো বা বারুণী তৈরির কাজও অন্যতম পেশা ছিল।
-
যেমন, ৩ নং চর্যায় উল্লেখ আছে —
“এক সে শুণ্ডিনী ঘরে সান্ধই। চীঅণ বাকলত বারুণী বান্ধই।”
অর্থাৎ, “এক শুঁড়িনী (ডোম্বী নারী) ঘরে প্রবেশ করে; চিকন বাকল বা গাছের ছাল দিয়ে বারুণী (মদ) প্রস্তুত করে।” -
এই বর্ণনাগুলো থেকে বোঝা যায়, চর্যাগানের কবিরা সাধারণ মানুষের পেশা, জীবনযাপন ও সামাজিক অবস্থানকে বাস্তবভাবে চিত্রিত করেছেন।
-
ডোম্বীদের জীবনযাত্রা ও পেশা চর্যাপদে শুধু সামাজিক বাস্তবতা নয়, বরং তৎকালীন সমাজের বর্ণভিত্তিক পেশাগত কাঠামোর প্রতিফলন হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ।

0
Updated: 15 hours ago
‘শূন্যপুরাণ’ কাব্যগ্রন্থটি কীসের নিদর্শন?
Created: 1 month ago
A
গদ্য কাব্য
B
মহাকাব্য
C
চম্পুকাব্য
D
নাট্যকাব্য
'শূন্যপুরাণ':
- রামাই পণ্ডিত রচিত বৌদ্ধ ধর্মের তত্ত্বীয় গ্রন্থের নাম ‘শূন্যপুরাণ’।
- মূল গ্রন্থে ধর্মপূজার যে বিবরণ আছে তাতে বৌদ্ধধর্মের শূন্যবাদ ও হিন্দু লোকধর্মের মিশ্রণ ঘটেছে।
- শূন্যপুরাণ বিশেষভাবে ধর্মপূজা পদ্ধতি।
- কাব্যগ্রন্থটি ৫১ টি অধ্যায়ে বিভক্ত।
- শূন্যপুরাণ চম্পুকাব্যের নিদর্শন।
- গদ্য ও পদ্য মিশ্রিত কাব্যকে চম্পুকাব্য বলে।
- বিশ্বকোষ প্রণেতা নগেন্দ্রনাথ বসু তিনটি পুথির পাঠ সংগ্রহ করে ১৩১৪ বঙ্গাব্দে ‘বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ’ থেকে শূন্যপুরাণ নামকরণ করে প্রকাশ করে।

0
Updated: 1 month ago
ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী কর্তৃক চর্যাপদ আবিষ্কৃত হয় কত সালে?
Created: 3 weeks ago
A
১৯১৬ সালে
B
১৯০৭ সালে
C
১৯০৯ সালে
D
১৯০১ সালে
সঠিক উত্তর হলো খ) ১৯০৭ সালে। চর্যাপদকে বাংলা ভাষার আদি নিদর্শন হিসেবে গণ্য করা হয়। এর আবিষ্কার ও পরিচয় সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিচে দেওয়া হলো।
-
আবিষ্কার:
• ড. হরপ্রসাদ শাস্ত্রী ১৯০৭ সালে নেপালের রাজ দরবার গ্রন্থাগার থেকে চর্যাপদ আবিষ্কার করেন।
• ১৯৩৮ সালে প্রবোধচন্দ্র বাগ্চী চর্যাপদের তিব্বতি অনুবাদ আবিষ্কার করেন। -
চর্যাপদের পরিচয়:
• চর্যাপদ হলো বাংলা ভাষার প্রথম কাব্যগ্রন্থ বা কবিতা/গানের সংকলন।
• এটি বাংলা সাহিত্যের আদি যুগের একমাত্র লিখিত নিদর্শন।
• চর্যাগুলো রচনা করেছিলেন বৌদ্ধ সহজিয়াগণ।
• চর্যাপদে বৌদ্ধ ধর্মের শিক্ষা ও দার্শনিক চিন্তাধারা প্রকাশ পেয়েছে।
• চর্যাপদের ভাষায় বাংলা, অর্ধমাগধী, প্রাকৃত, সংস্কৃত ও দেশজ শব্দের সংমিশ্রণ রয়েছে। -
অনুবাদ:
• চর্যাপদ তিব্বতি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন কীর্তিচন্দ্র।
• এই অনুবাদের মাধ্যমে চর্যাপদ সম্পর্কে অতিরিক্ত তথ্য জানা সম্ভব হয়।

0
Updated: 3 weeks ago
৮) হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর মতে চর্যাপদের ভাষা কেমন?
Created: 2 months ago
A
সরল ও বোধগম্য
B
পূর্ণরূপে অন্ধকার
C
আলো আঁধারি ভাষা
D
সর্বজনবোধ্য ভাষা
চর্যাপদের ভাষা — সন্ধ্যাভাষা
সন্ধ্যাভাষা কী
-
চর্যাপদের ভাষাকে কেউ কেউ সন্ধ্যাভাষা বা সন্ধাভাষা বলেছেন।
-
হরপ্রসাদ শাস্ত্রী চর্যার ভাষা সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন—
“আলো আঁধারি ভাষা, কতক আলো, কতক অন্ধকার, খানিক বুঝা যায়, খানিক বুঝা যায় না। যাঁহারা সাধন-ভজন করেন, তাঁহারাই সে কথা বুঝিবেন, আমাদের বুঝিয়া কাজ নাই।”
এই কারণেই তিনি একে সন্ধ্যাভাষা বলেছেন। -
তবে তত্ত্বজ্ঞানীদের কাছে চর্যার ভাষা অবোধ্য নয়, তাই এই ব্যাখ্যা সর্বজনীনভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।
অন্য মতামত ও ব্যবহার
-
মুনিদত্ত তাঁর টীকায় সন্ধাভাষ, সন্ধাভাষা, সন্ধ্যাবচন, সন্ধ্যাসংকেত, সন্ধ্যা, ও ব্যাজ—এই শব্দগুলো চর্যার রূপকাশ্রিত দুর্বোধ্য অংশ বা প্রতীকী ভাষার ব্যাখ্যায় বারবার ব্যবহার করেছেন।
-
কারও মতে, ‘সন্ধ্যাদেশ’ নামে পরিচিত বিশেষ অঞ্চলের ভাষার সঙ্গে চর্যাপদের ভাষার মিল থাকায় এই নাম হয়েছে।
-
তিব্বতি ভাষায় সন্ধ্যাভাষা বলতে বোঝায়—প্রহেলিকাচ্ছলে প্রকাশিত দুরূহ তত্ত্বের ব্যাখ্যা।
উৎস: বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস, মাহবুবুল আলম

0
Updated: 2 months ago