প্রাচীনকালে কোন দেশে সিভিল সার্ভিসের ধারণা প্রথম উদ্ভূত হয়?
A
মিশর
B
গ্রীস
C
চীন
D
রোম
উত্তরের বিবরণ
প্রাচীন যুগে সিভিল সার্ভিসের ধারণা প্রথম বিকশিত হয় চীনে, যদিও এর প্রাথমিক রূপ দেখা যায় আরও আগে বিভিন্ন সভ্যতায়। সিভিল সার্ভিস মূলত একটি রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক কাঠামো,
যার মাধ্যমে সরকার দক্ষ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রশাসন পরিচালনা করে এবং নাগরিকদের সেবা প্রদান করে।
সিভিল সার্ভিস হলো একটি পেশাদার, অরাজনৈতিক ও দক্ষ কর্মকর্তা-কর্মচারী বাহিনী, যারা সংবিধান ও সরকারের নীতিমালার আলোকে কাজ করে।
-
এ ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার তার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে ও জনগণের কাছে নীতিমালা বাস্তবায়ন করে।
-
এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনুসারে, প্রাচীন মিশর ও গ্রীক সভ্যতায় এই ধারণার সূচনা দেখা যায়।
-
পরবর্তীতে রোমান সাম্রাজ্য প্রশাসনিক দপ্তর গঠন করে একটি সংগঠিত নেটওয়ার্ক তৈরি করে, যা পরে রোমান ক্যাথলিক চার্চও অনুসরণ করে।
চীনের অবদান:
-
খ্রিষ্টপূর্ব ২ অব্দে চীনে সিভিল সার্ভিসের আনুষ্ঠানিক সূচনা ঘটে, যা দুই হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে তাদের প্রশাসনিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।
-
মেধাভিত্তিক নিয়োগের প্রাচীনতম উদাহরণ হলো চীনের ইম্পেরিয়াল আমলাতন্ত্র, যেখানে পরীক্ষার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা নিয়োগ করা হতো।
-
চীনে সিভিল সার্ভিসের চাকরিকে বলা হয় “Iron Rice Bowl”, যার মাধ্যমে চাকরির স্থায়িত্ব ও উচ্চ বেতন বোঝানো হয়।
-
সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার স্থানীয় নাম ছিল “Guako” (পরবর্তীতে “Keju” নামে পরিচিত)।
-
খ্রিষ্টপূর্ব ২০৬ অব্দে হান রাজবংশের সম্রাট গাওজু (Gaozu) পরীক্ষার মাধ্যমে রাজকর্মচারী নিয়োগের ব্যবস্থা চালু করেন।
-
পরবর্তী সুই (৫৮১–৬১৮) ও তাং (৬১৮–৯০৭) রাজবংশে এই পদ্ধতি আরও উন্নত হয়।
-
সং রাজবংশ (৯৬০–১২৭৯) প্রথমবারের মতো “jinshi degree” নামক যোগ্যতা ও পরীক্ষা পদ্ধতির প্রচলন করে।
-
মিং (১৩৬৮–১৬৪৪) ও কিং (১৬৪৪–১৯১১) রাজবংশে সিস্টেমটি পূর্ণাঙ্গ রূপ নেয়।
-
কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম ছিল—নিজ এলাকায় পোস্টিং না পাওয়া, তিন বছরের বেশি এক জায়গায় না থাকা, শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য শাস্তির বিধান ইত্যাদি।
-
১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠার পর বর্তমান রাষ্ট্রীয় সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে ওঠে, যেখানে সাধারণত কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরাই নিয়োগ পান।
অতএব, বিশ্বে সিভিল সার্ভিসের উদ্ভব চীনেই হয়েছে বলে ঐতিহাসিকভাবে স্বীকৃত।
উল্লেখযোগ্যভাবে, ১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর এই কাঠামো ভারত ও পাকিস্তানে বিভক্ত হয়। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে এই কাঠামো পুনর্গঠিত হয়ে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (BCS) নামে আত্মপ্রকাশ করে।

0
Updated: 16 hours ago
নিম্নের কোন মতবাদে 'রাষ্ট্রের বিভিন্ন দায়িত্ব, জাতীয় স্বার্থ এবং বিশ্ব রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তারের কথা বলা হয়েছে?
Created: 6 days ago
A
মার্ক্সবাদ
B
নব্য-উদারতাবাদ
C
বাস্তববাদ
D
গঠনবাদ
বাস্তববাদ (Realism) হলো আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তত্ত্ব যা রাষ্ট্র, জাতীয় স্বার্থ এবং ক্ষমতার ভূমিকা উপর জোর দেয়। এটি বোঝায় যে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাষ্ট্রগুলো প্রধান খেলোয়াড় এবং তাদের লক্ষ্য হলো নিজেদের নিরাপত্তা ও প্রভাব বিস্তার।
-
এই তত্ত্ব অনুযায়ী রাষ্ট্রসমূহ তাদের শক্তি ও স্বার্থ অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেয়।
-
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ধারা হলো ক্ষমতা ভারসাম্য (balance of power) এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
মার্ক্সবাদ (Marxism) হলো একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন যা কার্ল মার্কস এবং ফ্রিডরিখ এঙ্গেলসের মধ্য-19শ শতাব্দীর কাজের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
-
এটি তিনটি মূল ধারণার সমষ্টি: দর্শনীয় মানবতত্ত্ব (philosophical anthropology), ইতিহাসের তত্ত্ব (theory of history), এবং অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি (economic and political program)।
-
মার্ক্সবাদ মূলত ঐতিহাসিক বস্তুবাদ, দ্বান্দ্বিক বস্তুবাদ, উদ্বৃত্ত মূল্যতত্ত্ব ও শ্রেণিসংগ্রামকে কেন্দ্র করে বিকশিত হয়েছে।
-
সমাজ ও রাজনীতিকে বোঝার জন্য এটি শ্রেণি সংঘাতকে কেন্দ্রীয় বিষয় হিসেবে দেখায়।
নব্য-উদারতাবাদ (Neoliberalism) হলো এমন একটি নীতি ও ভাবধারা যা মুক্ত বাজার প্রতিযোগিতা (free market competition) এর মূল্যকে গুরুত্ব দেয়।
-
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে রবার্ট কোহেন এই তত্ত্বের পরিচয় দেন।
-
নব্য উদারতাবাদ মনে করে যে রাষ্ট্রসমূহের জাতীয় স্বার্থ অর্জনের জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থা (international organizations) অপরিহার্য।
-
এটি বিশ্বাস করে যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও নিয়মের মাধ্যমে রাষ্ট্রগুলো পারস্পরিক সুবিধা পেতে পারে।
গঠনবাদ (Constructivism) অনুসারে মানুষের আচরণ নির্ধারিত হয় তাদের পরিচয় (identity) দ্বারা, যা সমাজের মূল্যবোধ, ইতিহাস, প্রথা এবং প্রতিষ্ঠান দ্বারা গঠিত।
-
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন আদর্শ ও সামাজিক কাঠামো।
-
মানুষের আচরণ পারিপার্শ্বিক উপাদান যেমন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত হয়।
-
সরাসরি বলা না হলেও এই তত্ত্ব শক্তিশালী আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতিকে সামগ্রিক কল্যাণকর মনে করে।
এছাড়াও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অন্যান্য তত্ত্বের মধ্যে Regime Theory, Functionalism উল্লেখযোগ্য।

0
Updated: 6 days ago
'অ্যাডামস পিক' কোন দেশে অবস্থিত?
Created: 5 days ago
A
ইসরায়েল
B
জর্ডান
C
শ্রীলঙ্কা
D
নেপাল
অ্যাডামস পিক শ্রীলঙ্কার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় ও প্রাকৃতিক স্থান, যা দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত এবং বহু ধর্মাবলম্বীর কাছে পবিত্র হিসেবে বিবেচিত। এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ঐতিহাসিক ও ধর্মীয় গুরুত্বের কারণে পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের আকর্ষণ করে।
-
অবস্থান: অ্যাডামস পিক শ্রীলঙ্কার দক্ষিণ-পশ্চিমে, রত্নাপুরা শহর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত।
-
উচ্চতা: এর উচ্চতা ৭,৫৫৯ ফুট (২,৩০৪ মিটার)।
-
পদচিহ্ন (Sri Pada): শীর্ষে অবস্থিত শ্রী পাদা পদচিহ্ন, যা বিভিন্ন ধর্মে ভিন্নভাবে পবিত্র মনে করা হয়। বৌদ্ধরা এটিকে বুদ্ধের, হিন্দুরা শিবের, মুসলমানরা আদমের, এবং খ্রিস্টানরা সেন্ট থমাসের পদচিহ্ন মনে করে।
-
তীর্থযাত্রা: প্রতি বছর হাজারো তীর্থযাত্রী এই শিখরে আরোহণ করে, যা ধর্মীয় এবং আত্মিক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
-
প্রাকৃতিক পরিবেশ: এর চারপাশে ঘন বৃষ্টি অরণ্য রয়েছে, যা ১৯৪০ সালে পিক উইল্ডারনেস স্যাংচুয়ারি হিসেবে সংরক্ষিত হয়।
-
নদী উৎস: এই পর্বত থেকে কেলানি, কালু এবং ওয়ালাভে, শ্রীলঙ্কার তিনটি প্রধান নদী উৎপন্ন হয়।
-
ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য: পর্বতটি মূলত গ্নেইস পাথর দ্বারা গঠিত এবং এতে মূল্যবান রত্ন যেমন রুবি ও স্যাফায়ার পাওয়া যায়।
-
ঐতিহাসিক নির্মাণ: প্রাচীন রাজারা তীর্থযাত্রীদের সুবিধার্থে রাস্তা, বিশ্রামাগার এবং লোহার শিকল নির্মাণ করেছিলেন।
-
ভ্রমণকারীর উল্লেখ: অ্যাডামস পিকের উল্লেখ আছে মার্কো পোলো, ইবনে বতুতা, মা হুয়ানসহ বহু ভ্রমণকারীর ভ্রমণবৃত্তান্তে।

0
Updated: 5 days ago
নিম্নোক্ত কোন দেশটি 'Five Eyes' ভুক্ত নয়?
Created: 17 hours ago
A
অস্ট্রেলিয়া
B
ফ্রান্স
C
নিউজিল্যান্ড
D
কানাডা
‘Five Eyes’ হলো একটি আন্তর্জাতিক গোয়েন্দা জোট, যার সদস্য নয় ফ্রান্স। তবে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও কানাডা এই জোটের অন্তর্ভুক্ত।
Five Eyes
-
এটি একটি ইন্টেলিজেন্স অ্যালায়েন্স, সংক্ষেপে FVEY নামে পরিচিত।
-
সদস্য দেশগুলো হলো যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ড।
-
এর ভিত্তি UKUSA চুক্তির উপর প্রতিষ্ঠিত।
-
সদস্যরা গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় ও সমন্বিত নিরাপত্তা কার্যক্রমে অংশ নেয়।
-
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে তারা পারস্পরিক নিরাপত্তা ও তথ্য সহযোগিতায় যুক্ত রয়েছে।
-
তারা সন্ত্রাসবাদ, সাইবার হুমকি এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা ইস্যুতে যৌথভাবে তথ্য শেয়ার করে।
UKUSA চুক্তি
-
১৯৪৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য মিলে প্রথমে BRUSA চুক্তি গঠন করে।
-
পরবর্তীতে এটি UKUSA চুক্তি নামে আনুষ্ঠানিক রূপ পায়।
-
এই চুক্তি থেকেই Five Eyes দেশের মধ্যে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের কাঠামো তৈরি হয়।

0
Updated: 17 hours ago