আশিস নন্দী, শশী থারুর প্রমুখ লেখকের মতে দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রথম প্রবক্তা কোন সংঘটনটি?
A
মুসলিম লীগ
B
সর্ব ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস
C
আর.এস.এস.
D
জমিয়তে-ই-হিন্দ
উত্তরের বিবরণ
দ্বি-জাতি তত্ত্ব একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক ধারণা, যার মূল বক্তব্য হলো হিন্দু ও মুসলমান একই জাতি নয়; তাদের ধর্ম, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও জীবনাচারে পার্থক্য থাকায় তারা দুটি স্বতন্ত্র জাতি এবং তাদের জন্য পৃথক রাষ্ট্র থাকা প্রয়োজন।
দ্বি-জাতি তত্ত্ব ও আশিস নন্দী, শশী থারুর প্রমুখের দৃষ্টিভঙ্গি:
-
আশিস নন্দী ও শশী থারুর মতে, দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রথম প্রবক্তা ছিল মুসলিম লীগ।
-
তাদের মতে, পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দাবি মুসলিম লীগের ছিল, কংগ্রেসের নয়।
-
বিনায়ক দামোদর সাভারকর জিন্নাহর অনেক আগে, প্রায় ১৬ বছর পূর্বে, দ্বি-জাতি তত্ত্ব উপস্থাপন করেন।
-
সাভারকর তখন হিন্দু মহাসভার সভাপতি ছিলেন।
-
ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সংসদে দাবি করেন যে, কংগ্রেসই ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় ভিত্তিতে ভারতকে ভাগ করেছিল, যার জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (CAB) প্রয়োজন হয়েছিল।
-
উত্তরে শশী থারুর প্রশ্ন করেন, “অমিত শাহ কি জানেন না যে দ্বি-জাতি তত্ত্ব ও পাকিস্তান রেজোলিউশন ছিল মুসলিম লীগের দাবি, কংগ্রেসের নয়?”
দ্বি-জাতি তত্ত্ব ও সৈয়দ আহমদ খানের ভূমিকা:
-
১৮৮৮ সালের ১৬ মার্চ মীরাটে সৈয়দ আহমদ খান বক্তৃতায় প্রথম ‘two nations’ ধারণাটি উপস্থাপন করেন।
-
তিনি বলেন, হিন্দু ও মুসলমান ধর্ম, ঐতিহ্য ও জীবনধারায় ভিন্ন, তাই তাদের একসঙ্গে শাসন করা কঠিন।
-
তিনি পৃথক রাষ্ট্রের দাবি করেননি, তবে সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্যের উপর জোর দেন।
-
তাঁর মতে, দুই সম্প্রদায়ের রাজনৈতিক স্বার্থ ভিন্ন হওয়ায় মুসলমানদের জন্য আলাদা রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন।
-
তাঁর এই বক্তব্য পরবর্তীকালে দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
জিন্নাহর দ্বি-জাতি তত্ত্ব:
-
একটি জাতি তখনই গঠিত হয়, যখন ভাষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ধর্ম, অর্থনীতি ও জীবনাচার একত্রে একটি সত্তা তৈরি করে।
-
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ হিন্দু ও মুসলমানকে দুটি পৃথক জাতি হিসেবে ঘোষণা করেন।
-
১৯৩৯ সালে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বি-জাতি তত্ত্ব প্রকাশ করেন।
-
১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে মুসলিম লীগের অধিবেশনে এর প্রতিধ্বনি শোনা যায়।
-
ওই অধিবেশনে এ.কে. ফজলুল হক লাহোর প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, যেখানে বলা হয় যে, কোনো শাসনব্যবস্থা তখনই কার্যকর হবে যখন তা মুসলমানদের স্বার্থরক্ষার নীতির উপর ভিত্তি করবে।
দ্বি-জাতি তত্ত্ব ও আল্লামা ইকবালের ভূমিকা:
-
১৯৩০ সালে এলাহাবাদে মুসলিম লীগের বার্ষিক অধিবেশনে আল্লামা ইকবাল সভাপতির ভাষণে দ্বি-জাতি তত্ত্বের সমর্থন দেন।
-
তিনি উত্তর-পশ্চিম ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলগুলোকে একত্র করে স্বশাসিত মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দেন।
-
তাঁর কবিতা ও রচনা মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক চেতনা জাগ্রত করে।
-
ইতিহাসবিদদের মতে, স্যার সাইয়্যদের বপন করা বীজকে ইকবাল দার্শনিক ও রাজনৈতিক রূপ দেন, যা পরে জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তান আন্দোলনে পরিণত হয়।

0
Updated: 18 hours ago
কোন মুসলিম চিন্তাবিদ প্রথম 'দ্বি-জাতি তত্ত্ব' সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেন?
Created: 3 weeks ago
A
আল্লামা ইকবাল
B
সৈয়দ আহমদ খান
C
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ
D
মওলানা আকরম খাঁ
মুসলিম চিন্তাবিদদের মধ্যে সৈয়দ আহমদ খান প্রথম দ্বি-জাতি তত্ত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা প্রদান করেন।
-
দ্বি-জাতি তত্ত্ব একটি রাজনৈতিক ও সামাজিক দর্শন। এর মূল বক্তব্য হলো হিন্দু ও মুসলমানরা ভিন্ন ধর্ম, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন জীবনাচার ও ভিন্ন ঐতিহ্যের কারণে একই জাতি নয়; তারা দুটি স্বতন্ত্র জাতি। তাই তাদের নিজস্ব রাষ্ট্র থাকা প্রয়োজন।
-
সৈয়দ আহমদ খান ও দ্বি-জাতি তত্ত্ব
-
১৬ মার্চ ১৮৮৮ সালে মীরাটে প্রদত্ত এক বক্তৃতায় তিনি প্রথম হিন্দু ও মুসলমানকে আলাদা করে “two nations” বলে উল্লেখ করেন। এটি আধুনিক দ্বি-জাতি ধারণার প্রাথমিক ও স্পষ্ট রূপগুলোর একটি।
-
তাঁর বক্তৃতায় তিনি বলেন যে হিন্দু ও মুসলমান দুটি পৃথক সম্প্রদায়, যাদের ধর্ম, ঐতিহ্য ও জীবনধারা ভিন্ন। ফলে যৌথ রাষ্ট্রে তাদের একসঙ্গে শাসন করা কঠিন হবে।
-
তিনি সরাসরি আলাদা রাষ্ট্র দাবি করেননি; বরং ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্যের কারণে সম্ভাব্য ক্ষমতা-অসাম্যের কথা বলেন।
-
তাঁর মতে, হিন্দু ও মুসলমানদের রাজনৈতিক স্বার্থ আলাদা এবং মুসলমানদের জন্য পৃথক প্রতিনিধিত্ব প্রয়োজন।
-
এই ধারণাই পরবর্তীতে দ্বি-জাতি তত্ত্বের প্রাথমিক ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।
-
-
আল্লামা ইকবাল ও দ্বি-জাতি তত্ত্ব
-
১৯৩০ সালে এলাহাবাদে মুসলিম লীগের বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতির ভাষণে তিনি দ্বি-জাতি তত্ত্ব সমর্থন করেন।
-
তিনি উত্তর-পশ্চিম ভারতের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশগুলো একত্র করে স্বশাসিত মুসলিম রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব দেন।
-
তাঁর কবিতা ও রচনা মুসলমানদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আত্মপরিচয় জাগ্রত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ইতিহাসবিদদের মতে, সৈয়দ আহমদের বপন করা বীজকে ইকবাল দার্শনিক ভিত্তি ও রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দেন, যা পরে জিন্নাহর নেতৃত্বে পাকিস্তান আন্দোলনের রূপ নেয়।
-
-
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও দ্বি-জাতি তত্ত্ব
-
তিনি দ্বি-জাতি তত্ত্বকে রাজনৈতিক বাস্তবতায় রূপ দেন।
-
মুসলিম লীগের নেতৃত্বে মুসলিমদের জন্য স্বশাসিত রাষ্ট্র দাবি উত্থাপন করেন।
-
১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেন।
-
তাঁর রাজনৈতিক নেতৃত্বই দ্বি-জাতি তত্ত্বকে কার্যকর বাস্তবতায় রূপান্তরিত করে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় চূড়ান্ত ভূমিকা রাখে।
-
-
মাওলানা আকরম খাঁ ও দ্বি-জাতি তত্ত্ব
-
তিনি ১৯৩৬ সালে মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে যোগ দেন।
-
পাকিস্তান আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ১৯৪০ সালের লাহোর প্রস্তাবে পাকিস্তান গঠনের দাবিকে সমর্থন জানান।
-
মুসলিম লীগের অবস্থানকে দৃঢ় করতে তাঁর অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
-

0
Updated: 3 weeks ago