"শূণ্যপুরান' কোন ধরনের রচনা?
A
চম্পুকাব্য
B
বিরহ সংগীত
C
রাগ-তাল বিষয়ক শাস্ত্রীয় গ্রন্থ
D
গীতি সংকলন
উত্তরের বিবরণ
‘শূন্যপুরাণ’ বাংলা সাহিত্যের প্রাচীন ধর্মতাত্ত্বিক ও দার্শনিক গ্রন্থগুলোর মধ্যে অন্যতম, যা অন্ধকার যুগের সাহিত্য নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত। এটি রামাই পণ্ডিত রচিত একটি ধর্মীয় তত্ত্বগ্রন্থ, যেখানে মূলত বৌদ্ধ ধর্মের দর্শন ও শূন্যবাদ তত্ত্ব বিশদভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
-
গ্রন্থটি ধর্মপূজা পদ্ধতি নির্ভর, যেখানে শূন্যতত্ত্ব তথা অদ্বৈত ও অনিত্য দর্শনকে ধর্মীয় আচারব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়েছে।
-
এটি গদ্য ও পদ্য মিশ্রিত রচনা, অর্থাৎ এক ধরনের চম্পুকাব্য, যা বাংলা ভাষার প্রারম্ভিক সাহিত্যরীতির এক অনন্য নিদর্শন।
-
‘শূন্যপুরাণ’ গ্রন্থটি মোট ৫১টি অধ্যায়ে বিভক্ত, যার প্রথম পাঁচটি অধ্যায়ে সৃষ্টিতত্ত্ব আলোচিত হয়েছে।
-
ভাষা ও বিষয়বস্তুর বিশ্লেষণ থেকে ধারণা করা হয়, গ্রন্থটি ত্রয়োদশ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে রচিত।
-
এটি প্রথমে নামহীন পুথি আকারে পাওয়া গিয়েছিল। পরবর্তীতে বিশ্বকোষ প্রণেতা নাগেন্দ্রনাথ বসু তিনটি পুথির পাঠ সংগ্রহ করে ১৩১৪ বঙ্গাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে ‘শূন্যপুরাণ’ নামে প্রকাশ করেন।
-
গ্রন্থে বৌদ্ধ ধর্মের তত্ত্বকথা ও আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে, যা বাংলা ধর্মীয় সাহিত্যের প্রাচীন ধারা ও দর্শনচেতনার সাক্ষ্য বহন করে।

0
Updated: 18 hours ago
বৈষ্ণব পদাবলির আদি নিদর্শন 'গীতগোবিন্দম্' কাব্যটি কার রচনা?
Created: 1 month ago
A
জয়দেব
B
বিদ্যাপতি
C
চণ্ডীদাস
D
মুকুন্দরাম চক্রবর্তী
‘গীতগোবিন্দম্’ কাব্য
-
রচয়িতা: জয়দেব
-
ধরণ: সংস্কৃত গীতিকাব্য, আদি বৈষ্ণব পদাবলির নিদর্শন
-
মূল বিষয়: রাধা–কৃষ্ণের প্রেমলীলা, যা জীবাত্মা–পরমাত্মার সম্পর্ক এবং নর–নারীর চিরন্তন প্রেমের প্রতীক হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে।
-
গঠন: ২৮৬টি শ্লোক এবং ২৪টি গীতের সমন্বয়ে ১২ সর্গে রচিত।
-
সর্গের নামকরণ: বর্ণিত বিষয় অনুযায়ী ১২টি ভিন্ন নাম দেওয়া হয়েছে।
-
সাহিত্যিক বৈশিষ্ট্য:
-
রাগমূলক গীতসমূহ কাব্যের শ্রেষ্ঠ সম্পদ।
-
চরণশেষে অন্তমিল ব্যবহার করা হয়েছে, যা সংস্কৃত সাহিত্যে বিরল।
-
-
প্রভাব: পরবর্তীকালের বাংলা পদাবলি সাহিত্যে এর গভীর প্রভাব রয়েছে।
-
গুরুত্ব: বৈষ্ণব সম্প্রদায় ও সাহিত্য-রসিকদের কাছে গীতগোবিন্দম্ এক সময় পরম শ্রদ্ধার বিষয় ছিল।
উৎস: বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 1 month ago
কোনটি কাব্যগ্রন্থ?
Created: 3 months ago
A
কবিতা
B
কাব্য পরিক্রমা
C
কয়েকটি কবিতা
D
বাঙলার কাব্য
সমর সেন ও 'কয়েকটি কবিতা': আধুনিক বাংলা কাব্যের এক উজ্জ্বল নাম
বাংলা আধুনিক কবিতার জগতে এক অনন্য নাম সমর সেন। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯১৬ সালের ১০ অক্টোবর, কলকাতার বাগবাজারে। সাহিত্যিক পরিবারে জন্ম নেওয়া সমর সেনের রক্তে ছিল সাহিত্য-ভাবনার ধারা; তাঁর পিতামহ ছিলেন প্রখ্যাত গবেষক দীনেশচন্দ্র সেন।
কবিতায় তাঁর আত্মপ্রকাশ ঘটে এক নতুন ধারা নিয়ে, যেখানে নাগরিক জীবনের বাস্তবতা ও সমাজমনস্ক ভাবনার ছাপ স্পষ্ট। এ কারণে তাঁকে "আধুনিক নাগরিক কবি" হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সমর সেন কখনোই রোমান্টিকতার মোহে আবদ্ধ ছিলেন না; তিনি নিজেই বলেছিলেন—
"আমি রোমান্টিক কবি নই, আমি মার্ক্সিস্ট"। এই উক্তি থেকেই বোঝা যায়, সমাজ ও রাজনীতির প্রতি তাঁর গভীর দৃষ্টিভঙ্গি এবং মার্কসবাদের প্রতি তাঁর শ্রদ্ধা।
তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘কয়েকটি কবিতা’ প্রকাশিত হয় ১৯৩৭ সালে। এটি বাংলা কবিতার ভুবনে এক নতুন পথচলার সূচনা করে। এই কাব্যগ্রন্থ ছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য কবিতার বইগুলো হলো:
-
গ্রহণ ও অন্যান্য কবিতা
-
নানাকথা
-
খোলাচিঠি
-
তিন পুরুষ
-
সমর সেনের কবিতা
গদ্য সাহিত্যে তাঁর অবদানও কম নয়। তাঁর রচিত ‘বাবু বৃত্তান্ত’ গদ্যগ্রন্থটি বিশেষভাবে স্মরণযোগ্য।
সম্পাদনা জীবনেও সমর সেন রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তিনি ছিলেন ‘ফ্রন্টিয়ার’ (Frontier) ও ‘নাও’ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। এই পত্রিকাগুলোর মাধ্যমে তিনি সাহিত্য ও সমাজ ভাবনার একটি নতুন দিক উন্মোচন করেন।
অন্যদিকে বাংলা কাব্যচর্চার প্রসঙ্গ এলে স্মরণে আসে আরও কিছু বিশিষ্ট গ্রন্থ ও পত্রিকার নাম:
-
হুমায়ুন কবির রচিত কাব্য সমালোচনামূলক গ্রন্থ: ‘বাঙলার কাব্য’
-
অজিতকুমার চক্রবর্তী রচিত গ্রন্থ: ‘কাব্য পরিক্রমা’
-
এবং বাংলা সাহিত্যের আলোচিত একটি পত্রিকা ‘কবিতা’, যা ছিল একটি ত্রৈমাসিক কবিতাবিষয়ক পত্রিকা। এর প্রথম প্রকাশ হয় ১ অক্টোবর ১৯৩৫ (আশ্বিন ১৩৪২), যার সম্পাদনায় ছিলেন বুদ্ধদেব বসু ও প্রেমেন্দ্র মিত্র।
তথ্যসূত্র:
-
বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর
-
বাংলাপিডিয়া

0
Updated: 3 months ago
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচয়িতা কে?
Created: 1 month ago
A
কবীন্দ্র পরমেশ্বর
B
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন
C
কাশীরাম দাস
D
বড়ু চণ্ডীদাস
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন
-
মধ্যযুগে রচিত বাংলা ভাষার প্রথম কাব্য হিসেবে শ্রীকৃষ্ণকীর্তন স্বীকৃত।
-
১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে বসন্তরঞ্জন রায় বিদ্বদ্বল্লভ পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলার কাকিল্যা গ্রামের শ্ৰী দেবেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে শ্রীকৃষ্ণকীর্তনের পুথি আবিষ্কার করেন।
-
১৯১৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ থেকে বসন্তরঞ্জন রায়ের সম্পাদনায় পুঁথিটি শ্রীকৃষ্ণকীর্তন নামে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
-
পুঁথির প্রথম দুটি ও শেষ পৃষ্ঠা অনুপস্থিত থাকায় এর নাম ও কবির নাম স্পষ্টভাবে জানা যায়নি।
-
আবিষ্কারক ও সম্পাদক বসন্তরঞ্জন রায় প্রাচীন বৈষ্ণব লেখকদের ইঙ্গিত অনুসারে গ্রন্থটির নামকরণ করেন শ্রীকৃষ্ণকীর্তন।
-
এই কাব্যকে শ্রীকৃষ্ণসন্দর্ভ নামেও অভিহিত করা হয়।
-
শ্রীকৃষ্ণকীর্তন কাব্যের রচয়িতা বড়ু চণ্ডীদাস।
-
কাব্যের প্রধান তিনটি চরিত্র হলো কৃষ্ণ, রাধা ও বড়াই।
-
এতে মোট ১৩টি খণ্ড রয়েছে।
অন্য তথ্য
-
কবীন্দ্র পরমেশ্বর → মহাভারতের প্রথম বাংলা অনুবাদক।
-
কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন → মহাভারতের রচয়িতা।
-
কাশীরাম দাস → মহাভারতের শ্রেষ্ঠ অনুবাদক।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা

0
Updated: 1 month ago