'বিসর্জন' নাটোকের জয়সিংহের' সংস্কারাচ্ছন্ন মনের মুক্তি ঘটে কার আহ্বানে?
A
রাজা গোবিন্দ মাণিক্য
B
ব্রাক্ষ্মণ রঘুপতি
C
রাণী গুনবতি
D
বালিকা অপর্ণা
উত্তরের বিবরণ
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বিসর্জন’ নাটকে ধর্মীয় কুসংস্কার ও গোঁড়ামির বিরুদ্ধে মানবপ্রেম এবং উদারতার জয়গান গাওয়া হয়েছে। নাটকের অন্যতম চরিত্র জয়সিংহ, যিনি প্রথমে ধর্মীয় বিশ্বাস ও কুসংস্কারের অন্ধ অনুসারী ছিলেন, শেষে অপর্ণার ভালোবাসা ও মানবিক আহ্বানে নিজের ভেতরের অন্ধকার থেকে মুক্তি লাভ করেন। অপর্ণার প্রভাবেই তার হৃদয়ে মানবতার আলো জ্বলে ওঠে এবং ধর্মীয় গোঁড়ামির শৃঙ্খল ভেঙে তিনি আলোর পথে এগিয়ে যান।
বিসর্জন নাটক সম্পর্কিত তথ্য:
-
নাটকটি ১৮৯০ সালে প্রকাশিত হয়।
-
এটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সবচেয়ে মঞ্চসফল ও জনপ্রিয় নাটকগুলির মধ্যে একটি।
-
নাটকের দুটি সময়ে রবীন্দ্রনাথ নিজেই অভিনয় করেন— ১৮৯০ সালে রঘুপতির ভূমিকায় এবং ১৯২৩ সালে জয়সিংহের ভূমিকায়।
-
নাটকটি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত।
-
এর মূল ভাবনা হলো: ধর্মীয় কুসংস্কার ও গোঁড়ামির বিপরীতে মানবপ্রেমই মুক্তি ও শান্তির পথ।
-
নাটকের বিষয়বস্তুতে দেখা যায়, উদার ধর্মবোধ ও সংকীর্ণ বিশ্বাসের মধ্যে দ্বন্দ্ব, যা মানবিক মূল্যবোধ ও সম্পর্কের গভীরতার সঙ্গে যুক্ত।
-
নাটকের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এক আধ্যাত্মিক সংঘাত— যেখানে বিশ্বাসের উগ্রতা একদিকে ধ্বংস ডেকে আনে, আর মানবপ্রেম ও সহমর্মিতা অন্যদিকে জীবনের মুক্তির পথ দেখায়।
উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ:
-
রঘুপতি
-
গোবিন্দমাণিক্য
-
গুণবতী
-
অপর্ণা
-
জয়সিংহ

0
Updated: 21 hours ago
নিচের কোন চরিত্র দুটি রবীন্দ্রনাথের 'ঘরে বাইরে' উপন্যাসের?
Created: 1 month ago
A
বিহারী-বিনোদিনী
B
নিখিলেস-বিমলা
C
মধুসূদন-কুমুদিনী
D
অমিত-লাবণ্য
‘ঘরে-বাইরে’ উপন্যাস
-
রচনাবর্ষ ও প্রকাশনা: ‘ঘরে-বাইরে’ (১৯১৬) রবীন্দ্রনাথের প্রথম চলিত ভাষার উপন্যাস। এটি ১৯১৫ সালে সবুজপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল।
-
প্রেক্ষাপট: ব্রিটিশ ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি এই উপন্যাসের মূল প্রেক্ষাপট।
-
প্রভাব ও মিল: পাশ্চাত্য ঔপন্যাসিক স্টিভেনসনের প্রিন্স অট উপন্যাসের ভাব ও ধারার সঙ্গে এর কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
-
প্রধান চরিত্র: নিখিলেশ, বিমলা ও সন্দীপ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
-
সাধারণ পরিচয়: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, সঙ্গীতজ্ঞ, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, চিত্রশিল্পী, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সমাজসংস্কারক।
-
নোবেল পুরস্কার: ১৯১৩ সালে তিনি সাহিত্য ক্ষেত্রে নোবেল পুরস্কার পান; এশিয়ার প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এই গৌরব অর্জন করেন।
-
জন্ম ও পরিবার: ১৮৬১ সালের ৭ মে (১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ) কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা: দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিতামহ: প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর।
-
পটভূমি ও প্রভাব: পরিবারের পূর্বপুরুষরা পূর্ববঙ্গ থেকে কলকাতায় ব্যবসায়িক কারণে এসেছিলেন। জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার বাঙালির নবজাগরণ, ধর্ম ও সমাজ সংস্কারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিল। রামমোহন রায়ের আদর্শ দেবেন্দ্রনাথ ও রবীন্দ্রনাথের ওপর গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
-
প্রধান স্থল: তিনি বাংলাদেশের শাহজাদপুর, পতিসর, কালিগ্রাম ও শিলাইদহে সময় কাটিয়েছেন।
-
মৃত্যু: ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট (২২ শ্রাবণ ১৩৪৮) জোড়াসাঁকোর বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন।
কিছু বিখ্যাত উপন্যাস
-
ঘরে-বাইরে, চোখের বালি, শেষের কবিতা, যোগাযোগ, নৌকাডুবি, দুই বোন, মালঞ্চ, গোরা, রাজর্ষি, চার অধ্যায় ইত্যাদি।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর; বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 1 month ago
নিচের কোনটি রবীন্দ্রনাথের নগরাশ্রয়ী সামাজিক নাটক?
Created: 2 days ago
A
ডাকঘর
B
চিত্রাঙ্গদা
C
রাজা
D
বাঁশরী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাট্যজগতে নানা ধরণের নাটকের সমাবেশ দেখা যায়—সামাজিক, সাংকেতিক ও কাব্যনাট্য—যেগুলোর মাধ্যমে তিনি সমাজ, মানবমন, জীবনদর্শন ও আত্মবোধের নানা দিক তুলে ধরেছেন। তাঁর সামাজিক নাটক এ তিনি সমাজের বাস্তব সমস্যাগুলোকে উপস্থাপন করেছেন, যেখানে ব্যক্তি ও সমাজের দ্বন্দ্ব, নৈতিক অবক্ষয়, আত্মসমালোচনা ও মানবিক বোধের বিষয়টি প্রধান হয়ে ওঠে।
রবীন্দ্রনাথের সামাজিক নাটক হিসেবে উল্লেখযোগ্য হলো ‘শোধবোধ’ ও ‘বাঁশরী’।
রবীন্দ্রনাথের সাংকেতিক নাটকে তিনি বাস্তব ঘটনার আড়ালে প্রতীক ও রূপকের মাধ্যমে গভীর দার্শনিক অর্থ প্রকাশ করেছেন। এই ধারার উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হলো—
-
শারদোৎসব
-
ডাকঘর
-
রাজা
রবীন্দ্রনাথের কাব্যনাট্য মূলত কবিত্ব, সংগীত ও নাট্যকল্পের সংমিশ্রণ, যেখানে কাব্যের সৌন্দর্য ও নাট্যরস মিলেমিশে এক গভীর নান্দনিক অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে। এই ধারার উল্লেখযোগ্য কাব্যনাট্যগুলো হলো—
-
রাজা ও রানি
-
বিসর্জন
-
চিত্রাঙ্গদা

0
Updated: 2 days ago
রবীন্দ্রনাথের কোন গ্রন্থটি নাটক?
Created: 2 months ago
A
চোখের বালি
B
বলাকা
C
ঘরে-বাইরে
D
রক্তকরবী
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘রক্তকরবী’ একটি দার্শনিক ও সাংকেতিক নাটক, যা বাংলা ১৩৩০ সনে শিলং-এর শৈলবাসে রচিত হয়েছিল। প্রাথমিক পর্যায়ে নাটকটির নাম ছিল ‘যক্ষপুরী’।
পরবর্তীতে ১৩৩০ সালের আশ্বিন মাসে এটি যখন ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়, তখন এর নতুন নামকরণ হয় ‘রক্তকরবী’।
নাটকটিতে সমাজব্যবস্থায় মানুষের সীমাহীন লোভ কীভাবে জীবন থেকে স্বাভাবিক সৌন্দর্য ও মানবিক আবেগকে ছেঁটে ফেলে, এবং মানুষকে কেবলমাত্র উৎপাদনের এক যন্ত্রে পরিণত করে—
তার এক গভীর রূপক উপস্থাপিত হয়েছে। সেই যান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে মানুষের প্রাণশক্তি ও মানবিক প্রতিবাদের যে জাগরণ, তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে এই নাটকে।
‘রক্তকরবী’-তে ধনবাদী শক্তির বিরুদ্ধে প্রেম, মানবতা ও জীবনের জয়গান গাওয়া হয়েছে। এখানে ‘নন্দিনী’ চরিত্রটি দেখা দেয় নিপীড়িত মানুষের মাঝে এক আনন্দদায়িনী দূতের মতো, আর ‘রঞ্জন’ চরিত্রটি হয়ে ওঠে বিপ্লবের কণ্ঠস্বর। শেষপর্যন্ত জয়ী হয় মানুষের জীবনমুখী শক্তি ও সাহসী আত্মপ্রতিবাদ।
প্রধান চরিত্র:
-
নন্দিনী – আশার প্রতীক, যিনি ভালোবাসা ও জীবনের বার্তা নিয়ে আসেন।
-
রঞ্জন – যিনি প্রতিবাদ ও বিদ্রোহের প্রতীক।
অন্যদিকে:
-
‘চোখের বালি’ এবং ‘ঘরে-বাইরে’ হল রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ উপন্যাসসমূহের মধ্যে অন্যতম।
-
‘বলাকা’ একটি প্রভাবশালী কাব্যগ্রন্থ, যেখানে কবির কাব্যিক উচ্চারণের প্রকাশ ঘটেছে।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা – ড. সৌমিত্র শেখর

0
Updated: 2 months ago