'সধবার একাদশী' নাটকে কাদের নৌতিক অধঃপতনের চিত্রফুটে উঠেছে?
A
উচ্চবিত্ত বিবাহিত নারীদের
B
জমিদারদের
C
কলকাতার বাবুদের
D
বারবণিতাদের
উত্তরের বিবরণ
‘সধবার একাদশী’ (১৮৬৬) একটি প্রহসনধর্মী নাটক, যেখানে তৎকালীন ইয়ংবেঙ্গল দলের উচ্ছৃঙ্খলতা, অনাচার ও নৈতিক অবক্ষয়কে তীক্ষ্ণ ব্যঙ্গের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে। এই নাটকে উনবিংশ শতাব্দীর শহুরে যুব সমাজের একাংশের সুরাসক্তি, বিলাসিতা ও অসংযমী জীবনযাত্রার ফলে সমাজে যে বিপর্যয় নেমে এসেছিল, তারই বাস্তব প্রতিফলন দেখা যায়।
নায়ক নিমচাঁদ একজন প্রতিভাবান যুবক, কিন্তু সুরাপান ও বেশ্যাসক্তির কারণে তার জীবনে ব্যর্থতা, অধঃপতন ও আত্মগ্লানির ছায়া নেমে আসে। এই চরিত্রের মাধ্যমে নাট্যকার একদিকে যুব সমাজের অন্তর্দ্বন্দ্ব তুলে ধরেছেন, অন্যদিকে তৎকালীন সামাজিক মূল্যবোধের ভাঙনকেও প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে, কেনারাম চরিত্রটি তৎকালীন শিক্ষিত সমাজের ভণ্ডামি ও নৈতিক দুর্বলতার প্রতীক। তার মাধ্যমে সেই সময়কার বিচারব্যবস্থা ও সামাজিক নৈতিকতার হাস্যকর চিত্র স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। ফলে নাটকটি শুধু সামাজিক ব্যঙ্গ নয়, বরং এক গভীর নৈতিক ও মনস্তাত্ত্বিক তাৎপর্যপূর্ণ রচনা হিসেবেও বিবেচিত হয়।

0
Updated: 21 hours ago
'নীল দর্পণ' নাটক কত সালে প্রকাশিত হয়?
Created: 4 months ago
A
১৮৬০ সালে
B
১৮৬৩ সালে
C
১৮৬৪ সালে
D
১৮৬৬ সালে
‘নীল-দর্পণ’ (১৮৬০) দীনবন্ধু মিত্রের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নাটক ও রচনা। এটি ১৮৬০ সালে প্রকাশ পায়। নাটকের মূল বিষয় ছিল তৎকালীন নীলচাষি কৃষক ও নীলকর শাসকদের অবিচার এবং শাসক শ্রেণীর পক্ষপাতমূলক আচরণ।
এই নাটক তৎকালীন সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল এবং কৃষকদের নীল বিদ্রোহে প্রেরণা যুগিয়েছিল।
মাইকেল মধুসূদন দত্ত ‘A Native’ ছদ্মনামে এর ইংরেজি অনুবাদ করেন, যার শিরোনাম ছিল ‘Nil Darpan or The Indigo Planting Mirror’ (১৮৬১)। এই অনুবাদ প্রকাশের কারণে পাদ্রি জেমস লং আদালত থেকে অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হন। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ‘নীল-দর্পণ’কে মার্কিন ‘Uncle Tom’s Cabin’ নাটকের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন।
১৮৬০ সালে ‘কস্যচিৎ পথিকস্য’ ছদ্মনামে নাটকটি প্রথম ঢাকা থেকে প্রকাশিত হয় এবং ১৮৭২ সালের ৭ ডিসেম্বর ‘নীল-দর্পণ’ দিয়েই শুরু হয় সাধারণ রঙ্গালয়ের অভিনয়।
দীনবন্ধু মিত্রের অন্যান্য নাটকগুলো হলো:
-
নবীন তপস্বিনী,
-
লীলাবতী,
-
কমলে কামিনী।
উৎস: বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর ও বাংলাপিডিয়া।

0
Updated: 4 months ago
‘জোহরা’ মুনীর চৌধুরী রচিত কোন নাটকের চরিত্র?
Created: 2 days ago
A
দণ্ডকারণ্য
B
চিঠি
C
রক্তাক্ত প্রান্তর
D
কবর
বাংলা নাট্যসাহিত্যে মুনীর চৌধুরী ছিলেন এক বিশিষ্ট নাট্যকার, যিনি বাস্তবতা, ইতিহাস ও মানবচেতনার সমন্বয়ে নাট্যরচনা করেছেন। তাঁর প্রথম পূর্ণাঙ্গ নাটক ‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ ইতিহাসনির্ভর হলেও এতে মানবজীবনের পরিবর্তন ও সংগ্রামের গভীর দার্শনিক তাৎপর্য ফুটে উঠেছে।
মূল তথ্যসমূহ:
-
‘রক্তাক্ত প্রান্তর’ মুনীর চৌধুরী রচিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ মৌলিক নাটক।
-
নাটকটি রচিত হয়েছে মহাকবি কায়কোবাদের ‘মহাশ্মশান’ গ্রন্থের কাহিনির অবলম্বনে।
-
এটি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধের (১৭৬১) ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত তিন অঙ্ক বিশিষ্ট নাটক।
-
যদিও এতে ঐতিহাসিক পটভূমি ব্যবহৃত হয়েছে, এটি ঐতিহাসিক নাটক নয়, বরং ইতিহাস-আশ্রিত নাটক।
-
নাটকের জনপ্রিয় সংলাপ—“মানুষ মরে গেলে পচে যায়, বেঁচে থাকলে বদলায়।”
উক্তিটি নাটকের চরিত্র নবাব সুজাউদ্দৌলা-র মুখে বলা হয়েছে। -
নাটকের উল্লেখযোগ্য চরিত্রসমূহ: ইব্রাহিম কার্দি, জোহরা, হিরণবালা প্রমুখ।
মুনীর চৌধুরী সম্পর্কে তথ্য:
-
মুনীর চৌধুরী ছিলেন একজন শিক্ষাবিদ, নাট্যকার, সাহিত্য সমালোচক ও বাগ্মী।
-
তিনি ১৯২৫ সালের ২৭ নভেম্বর মানিকগঞ্জ শহরে জন্মগ্রহণ করেন।
-
তিনি শিক্ষা ও পেশাগত জীবনে বামপন্থী রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
মুনীর চৌধুরীর অন্যান্য মৌলিক নাটক:
-
রক্তাক্ত প্রান্তর
-
চিঠি
-
কবর
-
দণ্ডকারণ্য

0
Updated: 2 days ago
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক কোনটি?
Created: 1 month ago
A
ছেঁড়াতার
B
চাকা
C
বাকী ইতিহাস
D
কী চাহ হে শঙ্খচিল
‘কি চাহ শঙ্খচিল’ নাটক
-
‘কি চাহ শঙ্খচিল’ মমতাজ উদ্দীন আহমদ রচিত একটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। এ নাটকে মূলত বীরাঙ্গনার করুণ কাহিনি ফুটে উঠেছে।
-
১৯৮৩-৮৪ সালে প্রকাশিত এই নাটকে লেখক প্রেম, স্বাধীনতা আর প্রতিবাদের এক ভিন্নরকম চিত্র এঁকেছেন।
-
নাটকে শঙ্খচিল হয়ে উঠেছে একাত্তরের অশুভ শক্তির প্রতীক, যেন শকুনের মতো ভয়ংকর উপস্থিতি।
-
প্রধান চরিত্র রৌশনারা হানাদারদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার আগেই সন্তানসম্ভবা হয়। অথচ তার স্বামী বীরাঙ্গনা স্ত্রীর নাম ব্যবহার করে অর্থ-সুবিধা ভোগ করতে থাকে।
-
এই নাটক আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে স্বাধীনতা অর্জনের পথে কত ত্যাগ, বেদনা আর সংগ্রামের গল্প লুকিয়ে আছে।
মমতাজ উদ্দীন আহমদ
-
মমতাজ উদ্দীন আহমদ (১৯৩৫-২০১৯) বাংলা নাট্যসাহিত্যের এক বিশিষ্ট নাট্যকার।
-
তিনি জন্মগ্রহণ করেন পশ্চিমবঙ্গের মালদহে।
-
তাঁর লেখা বিখ্যাত নাটকের মধ্যে রয়েছে:
-
স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা
-
কি চাহ শঙ্খচিল
-
হৃদয়ঘটিত ব্যাপার স্যাপার
-
প্রেম
-
বিবাহ সুটকেস
-
রাজা অনুস্বারের পালা
-
সাত ঘাটের কানাকড়ি
-
রাক্ষুসী
-
এই সেই কণ্ঠস্বর
-
পুত্র আমার পুত্র
-
হাস্য লাস্য ভাষ্য
-
ভালোবাসার দশ নাটক ইত্যাদি।
-
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক
মমতাজ উদ্দীন আহমদের রচিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক কিছু গুরুত্বপূর্ণ নাটক হলো—
-
বর্ণচোর
-
বকুলপুরের স্বাধীনতা
-
কি চাহ শঙ্খচিল
-
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম
উৎস : বাংলা ভাষা ও সাহিত্য জিজ্ঞাসা, ড. সৌমিত্র শেখর, কি চাহ শঙ্খচিল, মমতাজ উদ্দীন আহমদ

0
Updated: 1 month ago