অ্যালমন্ডের মতে ইনপুট এবং আউটপুটের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের উপায় কী?
A
বৈধ দৈহিক বল প্রয়োগ ও আদেশ প্রদান
B
বৈধ বিধি প্রনয়ন ও বল প্রয়োগের হুমকী
C
বৈধ দৈহিক বল প্রয়োগ ও বল প্রয়োগের হুমকী
D
বৈধ নির্দেশ প্রদান ও বল প্রয়োগের হুমকী
উত্তরের বিবরণ
অ্যালমন্ডের মতে, রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া যেখানে সমাজের জনগণ তাদের বিভিন্ন দাবি, প্রত্যাশা ও সমর্থনকে রাষ্ট্রের কাছে প্রেরণ করে, আর রাষ্ট্র সেই তথ্যের ভিত্তিতে নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে সমাজে বাস্তবায়ন করে। এই প্রক্রিয়াটি দুইটি প্রধান অংশে বিভক্ত—ইনপুট (Input) ও আউটপুট (Output)—যাদের পারস্পরিক সম্পর্ক রাষ্ট্রের কার্যকারিতা নির্ধারণ করে।
-
ইনপুট (Input): জনগণের দাবি, সমর্থন, জনমত, চাপ সৃষ্টির কার্যক্রম এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রত্যাশা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। এগুলিই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার মূল উপাদান।
-
আউটপুট (Output): রাষ্ট্র জনগণের ইনপুট অনুযায়ী নীতি, আইন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে এবং তা সমাজে কার্যকর করে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্র জনগণের চাহিদার প্রতিক্রিয়া প্রদান করে।
-
ইনপুট ও আউটপুটের সম্পর্ক: অ্যালমন্ড বলেন, রাষ্ট্রের উচিত এই দুইয়ের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক রক্ষা করা। এজন্য রাষ্ট্রের থাকতে হবে—
-
বৈধ কর্তৃত্ব যা জনগণের স্বীকৃত ও ন্যায্য।
-
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা যাতে নীতিমালা কার্যকর হয়।
-
বৈধ বল প্রয়োগের সামর্থ্য, প্রয়োজনে শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োগ করা যায়।
-
আদেশ প্রদানের সক্ষমতা, যা প্রশাসনিক কাঠামোকে কার্যকর রাখে।
-
-
বাস্তব প্রয়োগ: আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়; রাষ্ট্রকে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ন্যায় ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হয়। প্রয়োজনে বৈধ বল প্রয়োগ করে আইন কার্যকর রাখতে হয়।
-
উদাহরণ: যদি জনগণ নিরাপত্তা চায় (Input), রাষ্ট্র তখন আইন প্রণয়ন করে ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে (Output)। যখন এই আইন বাস্তবায়িত হয় এবং জনগণ তার ফল ভোগ করে, তখন ইনপুট ও আউটপুটের মধ্যে কার্যকর যোগসূত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে।

0
Updated: 1 day ago
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র শুরু হয় কোথায়?
Created: 1 day ago
A
রোম
B
এথেন্স
C
লন্ডন
D
প্যারিস
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল প্রাচীন এথেন্সে, যেখানে নাগরিকরা নিজেরাই আইন প্রণয়ন ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরাসরি অংশগ্রহণ করত। এই পদ্ধতিতে কোনো প্রতিনিধি ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল না; জনগণ সরাসরি রাষ্ট্রের শাসন ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকত। এটি ছিল নাগরিক অংশগ্রহণের একটি বাস্তব রূপ, যা আজকের প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
-
এথেন্সে নাগরিকরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর এক্লেসিয়া (Ecclecsia) নামে পরিচিত সভায় মিলিত হয়ে আইন প্রণয়ন, কর্মকর্তা নিয়োগ, রাজস্ব নির্ধারণ ও রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশ নিত।
-
রোমে অনুরূপ সভাকে বলা হতো “মিলিশিয়া” (Militia), যেখানে নাগরিকদের সরাসরি উপস্থিতি ও সিদ্ধান্তই ছিল শাসনের ভিত্তি।
-
এই ব্যবস্থায় প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণের অধিকার ভোগ করত, ফলে এটি ছিল জনগণের প্রত্যক্ষ শাসনব্যবস্থা।
-
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে জনগণই ছিল সর্বোচ্চ ক্ষমতার উৎস, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের মতামতই ছিল চূড়ান্ত।
-
এ কারণে এই ব্যবস্থাকে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র (Participatory Democracy) বলেও পরিচিত, কারণ এতে নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত হয়।
-
আধুনিক যুগেও এর কিছু নিদর্শন দেখা যায়, যেমন সুইজারল্যান্ডের ছোট ছোট ক্যান্টনে (Canton) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থায়, যেখানে গণভোট ও জনপরামর্শের মাধ্যমে নাগরিকেরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নেন।
-
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র ইতিহাসে এমন এক শাসনব্যবস্থা, যা দেখিয়েছে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণই গণতন্ত্রের প্রকৃত ভিত্তি।

0
Updated: 1 day ago
জনমত বলতে বোঝায়-
Created: 1 day ago
A
জনগনের মত
B
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মত
C
জনগনের কল্যাণকামী মত
D
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মত
জনমত হলো এমন এক সামাজিক ও রাজনৈতিক ধারণা, যা মানুষের সম্মিলিত চিন্তা, অনুভূতি ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটায়। এটি কোনো একটি জাতীয়, সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রশ্নে সাধারণ মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠ বা প্রভাবশালী মতামতকে বোঝায়, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: জনমত একটি প্রাচীন ধারণা; গ্রিক ও রোমান যুগের আইন ব্যবস্থায় এবং মধ্যযুগেও জনমতের প্রভাব বিদ্যমান ছিল।
-
আক্ষরিক অর্থ: জনগণের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত জনগণের মতামতই জনমত হিসেবে বিবেচিত হয়।
-
সাধারণ অর্থ: এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অভিমত বা মতপ্রকাশ, যা সমাজে একটি নির্দিষ্ট দিক নির্দেশ করে।
-
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ: পৌরনীতি বা রাজনৈতিক চিন্তায় শুধু সেই মতামতকেই জনমত বলা হয়, যা প্রভাবশালী, যুক্তিসঙ্গত, সুস্পষ্ট এবং সমাজকল্যাণমূলক।
-
গঠনের প্রক্রিয়া: যখন কোনো জাতীয় ইস্যুতে বিভিন্ন শ্রেণি ও স্বার্থগোষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করে, তখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনো একটি মত অন্যগুলোর তুলনায় অধিক প্রভাবশালী হয়ে ওঠে, সেটিই জনমত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
প্রধান বৈশিষ্ট্য: জনমত যুক্তিনির্ভর, স্পষ্ট, কল্যাণধর্মী ও বলিষ্ঠ; এটি সাধারণত সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে।

0
Updated: 1 day ago
আমলাতন্ত্রের প্রধান কাজ কোনটি?
Created: 1 day ago
A
বিধি প্রণয়ন করা
B
রেগুলেশন প্রণয়ন করা
C
প্রবিধান প্রণয়ন করা
D
সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন বাস্তবায়ন করা।
আমলাতন্ত্র রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার মূল দায়িত্ব হলো সরকারের গৃহীত নীতি ও আইনসমূহ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা। এটি মূলত একটি সংগঠিত ও নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা, যেখানে কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট নিয়ম, বিধি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রশাসনিক কাজ সম্পাদন করেন।
• আমলাতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারের নীতি বাস্তবায়ন, প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করা।
• আইন প্রণয়নের দায়িত্ব সংসদ বা আইন প্রণেতাদের—আমলাতন্ত্রের নয়।
• আমলাতন্ত্র প্রবিধান বা প্রশাসনিক নির্দেশনা প্রণয়ন করতে পারে, কিন্তু তা তাদের প্রধান দায়িত্ব নয়; এটি কেবল প্রশাসনিক কাজকে সহজ করার সহায়ক প্রক্রিয়া।
• নীতি নির্ধারণ ও আইন প্রণয়ন মূলত রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাজ; আমলাতন্ত্র কেবল সেই নীতি বাস্তবায়নের উপায় নির্ধারণ করে।
• আমলাতন্ত্রের প্রধান দায়িত্ব হলো সরকারের তৈরি আইন ও নীতিকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও নিয়মিতভাবে বাস্তবায়ন করা।
• কার্যকর আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বজায় থাকে এবং সরকারের কার্যক্রম জনগণের কাছে পৌঁছায়।
• এটি প্রশাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।

0
Updated: 1 day ago