প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র শুরু হয় কোথায়?
A
রোম
B
এথেন্স
C
লন্ডন
D
প্যারিস
উত্তরের বিবরণ
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রের সূচনা হয়েছিল প্রাচীন এথেন্সে, যেখানে নাগরিকরা নিজেরাই আইন প্রণয়ন ও রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে সরাসরি অংশগ্রহণ করত। এই পদ্ধতিতে কোনো প্রতিনিধি ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল না; জনগণ সরাসরি রাষ্ট্রের শাসন ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকত। এটি ছিল নাগরিক অংশগ্রহণের একটি বাস্তব রূপ, যা আজকের প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
-
এথেন্সে নাগরিকরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর এক্লেসিয়া (Ecclecsia) নামে পরিচিত সভায় মিলিত হয়ে আইন প্রণয়ন, কর্মকর্তা নিয়োগ, রাজস্ব নির্ধারণ ও রাষ্ট্রীয় নীতিনির্ধারণে অংশ নিত।
-
রোমে অনুরূপ সভাকে বলা হতো “মিলিশিয়া” (Militia), যেখানে নাগরিকদের সরাসরি উপস্থিতি ও সিদ্ধান্তই ছিল শাসনের ভিত্তি।
-
এই ব্যবস্থায় প্রতিটি নাগরিক রাষ্ট্রের কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণের অধিকার ভোগ করত, ফলে এটি ছিল জনগণের প্রত্যক্ষ শাসনব্যবস্থা।
-
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্রে জনগণই ছিল সর্বোচ্চ ক্ষমতার উৎস, এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের মতামতই ছিল চূড়ান্ত।
-
এ কারণে এই ব্যবস্থাকে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র (Participatory Democracy) বলেও পরিচিত, কারণ এতে নাগরিকদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত হয়।
-
আধুনিক যুগেও এর কিছু নিদর্শন দেখা যায়, যেমন সুইজারল্যান্ডের ছোট ছোট ক্যান্টনে (Canton) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু স্থানীয় প্রশাসনিক ব্যবস্থায়, যেখানে গণভোট ও জনপরামর্শের মাধ্যমে নাগরিকেরা সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশ নেন।
-
প্রত্যক্ষ গণতন্ত্র ইতিহাসে এমন এক শাসনব্যবস্থা, যা দেখিয়েছে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণই গণতন্ত্রের প্রকৃত ভিত্তি।

0
Updated: 1 day ago
'The Republic of Plato is a dramatized philosophy of life'
Created: 1 day ago
A
নেটেলশীপ
B
মেবাইন
C
ম্যাকপারসন
D
রুশো
সি. বি. ম্যাকফারসন (C.B. Macpherson) তাঁর “The Political Thought” গ্রন্থে প্লেটোর বিখ্যাত রচনা “The Republic” সম্পর্কে বলেন যে এটি একটি নাটকীয় মানব দর্শন (Dramatized Philosophy of Life)। তাঁর মতে, প্লেটো এখানে কেবল একটি দার্শনিক আলোচনা করেননি, বরং মানুষের চরিত্র, ন্যায়বিচার ও সমাজের আদর্শ কাঠামোকে একটি নাটকের রূপে উপস্থাপন করেছেন, যেখানে চিন্তা, সংলাপ ও কাহিনির সমন্বয়ে দর্শনের বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে।
-
“The Republic of Plato is a dramatized philosophy of life” —এই উক্তির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, প্লেটো তাঁর রিপাবলিক গ্রন্থটিকে শুধুমাত্র তত্ত্বভিত্তিক আলোচনা হিসেবে না লিখে, নাটকীয় আঙ্গিকে গল্প ও সংলাপের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন।
-
তিনি বিভিন্ন চরিত্র—বিশেষ করে সক্রেটিস ও অন্যান্য আলোচক চরিত্রের সংলাপের মাধ্যমে ন্যায়বিচার, নৈতিকতা, শিক্ষা, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মানবিক গুণাবলির বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।
-
এখানে প্লেটো মানবজীবনের নৈতিক ও দার্শনিক দিককে জীবন্ত করে তুলেছেন, যাতে পাঠক শুধু যুক্তি নয়, অনুভূতির মাধ্যমেও তার দর্শন অনুধাবন করতে পারে।
-
“নাটকীয়” শব্দটি দিয়ে বোঝানো হয়েছে—
-
গ্রন্থে চরিত্র, সংলাপ ও ঘটনাক্রম রয়েছে, যা এটিকে গল্পনির্ভর করে তুলেছে।
-
আলোচনার ভেতরে বিরোধ, যুক্তি-প্রতিযুক্তি ও মানসিক সংঘাত উপস্থাপন করা হয়েছে, যা নাটকের উপাদান বহন করে।
-
এর মাধ্যমে প্লেটো মানব চরিত্রের বিবর্তন, নৈতিক বিকাশ ও আদর্শ রাষ্ট্রের ধারণা একই সঙ্গে বিশ্লেষণ করেছেন।
-
-
ম্যাকফারসনের মতে, প্লেটোর রিপাবলিক এমন এক দর্শন যেখানে মানুষ, সমাজ ও ন্যায়বিচারের সম্পর্ককে নাটকীয়ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ফলে এটি কেবল দার্শনিক রচনা নয়, বরং মানবজীবনের একটি শিল্পিত ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিচ্ছবি।
-
এই কারণেই রিপাবলিক গ্রন্থটি প্রাচীন দর্শনের একটি জীবন্ত ও সাহিত্যিক উপস্থাপনা, যা তত্ত্ব, দর্শন ও মানবজীবনের বাস্তবতাকে এক সূত্রে গেঁথে দিয়েছে।

0
Updated: 1 day ago
'সার্বভৌমত্ব অবিভাজ্য' কার মতবাদ?
Created: 1 day ago
A
বোদ্যা
B
হবস
C
মার্কস
D
অস্টিন
জঁ বোদ্যা ছিলেন ১৬ শতকের একজন প্রখ্যাত ফরাসি রাজনৈতিক চিন্তাবিদ, যিনি সার্বভৌমত্বের তত্ত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন, সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা, যা সম্পূর্ণ, অবিভাজ্য এবং চিরস্থায়ী। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো ক্ষমতার দ্বারা এটি বিভক্ত করা যায় না। তাঁর মতে, রাষ্ট্রের ঐক্য ও কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সার্বভৌমত্ব একক ও অখণ্ড থাকতে হবে।
• থমাস হবস সার্বভৌমত্বকে মূলত শক্তি বা ক্ষমতার ধারণা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “লেভিয়াথান”-এ তিনি বলেছেন যে রাষ্ট্রের ক্ষমতা একক কর্তৃপক্ষের হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়া উচিত। তবে তিনি বোদ্যার মতো স্পষ্টভাবে “অবিভাজ্য” শব্দটি ব্যবহার করেননি।
• কার্ল মার্কস রাষ্ট্রকে শ্রেণীসংগ্রামের একটি মাধ্যম হিসেবে দেখেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে রাষ্ট্র হলো শাসক শ্রেণির হাতিয়ার, তাই সার্বভৌমত্বের অবিভাজ্যতার ধারণা তাঁর চিন্তায় প্রযোজ্য নয়।
• জন অস্টিন সার্বভৌমত্বকে আইনের দর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি আইন প্রণেতার কর্তৃত্ব ও আদেশের বাধ্যতামূলক ক্ষমতা-র উপর জোর দিয়েছেন।
• বোদ্যা সার্বভৌমত্বকে শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও আইনি শৃঙ্খলার মূলভিত্তি হিসেবে দেখেছিলেন, যা পরবর্তী অনেক রাজনৈতিক চিন্তাবিদের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।

0
Updated: 1 day ago
জনমত বলতে বোঝায়-
Created: 1 day ago
A
জনগনের মত
B
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মত
C
জনগনের কল্যাণকামী মত
D
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মত
জনমত হলো এমন এক সামাজিক ও রাজনৈতিক ধারণা, যা মানুষের সম্মিলিত চিন্তা, অনুভূতি ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটায়। এটি কোনো একটি জাতীয়, সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রশ্নে সাধারণ মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠ বা প্রভাবশালী মতামতকে বোঝায়, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: জনমত একটি প্রাচীন ধারণা; গ্রিক ও রোমান যুগের আইন ব্যবস্থায় এবং মধ্যযুগেও জনমতের প্রভাব বিদ্যমান ছিল।
-
আক্ষরিক অর্থ: জনগণের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত জনগণের মতামতই জনমত হিসেবে বিবেচিত হয়।
-
সাধারণ অর্থ: এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অভিমত বা মতপ্রকাশ, যা সমাজে একটি নির্দিষ্ট দিক নির্দেশ করে।
-
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ: পৌরনীতি বা রাজনৈতিক চিন্তায় শুধু সেই মতামতকেই জনমত বলা হয়, যা প্রভাবশালী, যুক্তিসঙ্গত, সুস্পষ্ট এবং সমাজকল্যাণমূলক।
-
গঠনের প্রক্রিয়া: যখন কোনো জাতীয় ইস্যুতে বিভিন্ন শ্রেণি ও স্বার্থগোষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করে, তখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনো একটি মত অন্যগুলোর তুলনায় অধিক প্রভাবশালী হয়ে ওঠে, সেটিই জনমত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
প্রধান বৈশিষ্ট্য: জনমত যুক্তিনির্ভর, স্পষ্ট, কল্যাণধর্মী ও বলিষ্ঠ; এটি সাধারণত সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে।

0
Updated: 1 day ago