জনমত বলতে বোঝায়-
A
জনগনের মত
B
চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মত
C
জনগনের কল্যাণকামী মত
D
সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের মত
উত্তরের বিবরণ
জনমত হলো এমন এক সামাজিক ও রাজনৈতিক ধারণা, যা মানুষের সম্মিলিত চিন্তা, অনুভূতি ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটায়। এটি কোনো একটি জাতীয়, সামাজিক বা রাজনৈতিক প্রশ্নে সাধারণ মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠ বা প্রভাবশালী মতামতকে বোঝায়, যা সমাজ ও রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: জনমত একটি প্রাচীন ধারণা; গ্রিক ও রোমান যুগের আইন ব্যবস্থায় এবং মধ্যযুগেও জনমতের প্রভাব বিদ্যমান ছিল।
-
আক্ষরিক অর্থ: জনগণের কল্যাণ সাধনের উদ্দেশ্যে প্রকাশিত জনগণের মতামতই জনমত হিসেবে বিবেচিত হয়।
-
সাধারণ অর্থ: এটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের অভিমত বা মতপ্রকাশ, যা সমাজে একটি নির্দিষ্ট দিক নির্দেশ করে।
-
রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ: পৌরনীতি বা রাজনৈতিক চিন্তায় শুধু সেই মতামতকেই জনমত বলা হয়, যা প্রভাবশালী, যুক্তিসঙ্গত, সুস্পষ্ট এবং সমাজকল্যাণমূলক।
-
গঠনের প্রক্রিয়া: যখন কোনো জাতীয় ইস্যুতে বিভিন্ন শ্রেণি ও স্বার্থগোষ্ঠী ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করে, তখন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কোনো একটি মত অন্যগুলোর তুলনায় অধিক প্রভাবশালী হয়ে ওঠে, সেটিই জনমত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
প্রধান বৈশিষ্ট্য: জনমত যুক্তিনির্ভর, স্পষ্ট, কল্যাণধর্মী ও বলিষ্ঠ; এটি সাধারণত সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত থাকে।

0
Updated: 1 day ago
আমলাতন্ত্রকে দুষ্টচক্র বলেছেন কে?
Created: 1 day ago
A
ম্যাক্সওয়েবার
B
মাইকেল ক্রোজিয়ার
C
ফাইনার
D
ফিফনার
ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) আমলাতন্ত্রকে একটি সংগঠিত, নিয়ম-নির্ভর ও যৌক্তিক প্রশাসনিক কাঠামো হিসেবে বিশ্লেষণ করেছিলেন। তাঁর মতে, আমলাতন্ত্র আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য অপরিহার্য কারণ এটি দক্ষতা, পূর্বানুমানযোগ্যতা ও দায়িত্ববোধ নিশ্চিত করে। তবে ওয়েবার আমলাতন্ত্রকে দুষ্টচক্র (vicious circle) হিসেবে দেখেননি।
মাইকেল ক্রোজিয়ার (Michel Crozier)-ই প্রথম আমলাতন্ত্রকে দুষ্টচক্র (Vicious Circle) হিসেবে বিশ্লেষণ করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ, নিয়ম-নির্ভরতা ও কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা প্রশাসনের মধ্যে স্থিতাবস্থার (status quo) সংস্কৃতি সৃষ্টি করে। ফলে পরিবর্তনের পথ বন্ধ হয়ে যায় এবং একটি দুষ্টচক্র গড়ে ওঠে, যা প্রশাসন ও নাগরিকদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে।
-
আমলাতান্ত্রিক দুষ্টচক্রে কর্মকর্তারা তথ্য সীমিত রাখেন যাতে তাঁদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে।
-
পরিবর্তন বা সংস্কারের চেষ্টা করলে অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ তৈরি হয়, ফলে প্রশাসন স্থবির হয়ে পড়ে।
-
নাগরিকরা অসন্তুষ্ট ও হতাশ হয়ে প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারায়।
-
এই অবিশ্বাস ও অদক্ষতার পরিবেশেই vicious circle বা দুষ্টচক্র গড়ে ওঠে— যেখানে প্রশাসন নিজের দুর্বলতার কারণে সমস্যার সমাধান করতে পারে না এবং জনগণও প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে পরিবর্তনের সক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখে না।
ফাইনার (Finer) ও ফিফনার (Pfiffner) প্রশাসন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন, কিন্তু তাঁরা দুষ্টচক্র বিশ্লেষণের মূল তত্ত্ববিদ নন।
-
উদাহরণস্বরূপ, সরকারি কর্মকর্তারা তাঁদের ক্ষমতা রক্ষার জন্য তথ্য গোপন বা সীমিত করে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিলম্বিত করেন।
-
জনগণ ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়ায় আস্থা হারায় এবং প্রশাসনের পরিবর্তনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।
-
ফলে প্রশাসন অচল ও অকার্যকর ব্যবস্থায় পরিণত হয়, যা ক্রমাগত একটি দুষ্টচক্রে (vicious circle) ঘুরপাক খায়।
এই বিশ্লেষণ দেখায় যে মাইকেল ক্রোজিয়ারের মতে, আমলাতন্ত্র কেবল একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নয়— এটি এমন এক মানসিক ও কাঠামোগত ফাঁদ, যা ক্ষমতা, তথ্য ও পরিবর্তনের অভাবের কারণে নিজেই নিজের সীমাবদ্ধতায় আটকে পড়ে।

0
Updated: 1 day ago
'সার্বভৌমত্ব অবিভাজ্য' কার মতবাদ?
Created: 1 day ago
A
বোদ্যা
B
হবস
C
মার্কস
D
অস্টিন
জঁ বোদ্যা ছিলেন ১৬ শতকের একজন প্রখ্যাত ফরাসি রাজনৈতিক চিন্তাবিদ, যিনি সার্বভৌমত্বের তত্ত্ব বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তিনি বলেন, সার্বভৌমত্ব হলো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতা, যা সম্পূর্ণ, অবিভাজ্য এবং চিরস্থায়ী। কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো ক্ষমতার দ্বারা এটি বিভক্ত করা যায় না। তাঁর মতে, রাষ্ট্রের ঐক্য ও কর্তৃত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে সার্বভৌমত্ব একক ও অখণ্ড থাকতে হবে।
• থমাস হবস সার্বভৌমত্বকে মূলত শক্তি বা ক্ষমতার ধারণা হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থ “লেভিয়াথান”-এ তিনি বলেছেন যে রাষ্ট্রের ক্ষমতা একক কর্তৃপক্ষের হাতে কেন্দ্রীভূত হওয়া উচিত। তবে তিনি বোদ্যার মতো স্পষ্টভাবে “অবিভাজ্য” শব্দটি ব্যবহার করেননি।
• কার্ল মার্কস রাষ্ট্রকে শ্রেণীসংগ্রামের একটি মাধ্যম হিসেবে দেখেছেন। তাঁর দৃষ্টিতে রাষ্ট্র হলো শাসক শ্রেণির হাতিয়ার, তাই সার্বভৌমত্বের অবিভাজ্যতার ধারণা তাঁর চিন্তায় প্রযোজ্য নয়।
• জন অস্টিন সার্বভৌমত্বকে আইনের দর্শনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি আইন প্রণেতার কর্তৃত্ব ও আদেশের বাধ্যতামূলক ক্ষমতা-র উপর জোর দিয়েছেন।
• বোদ্যা সার্বভৌমত্বকে শুধু রাজনৈতিক নয়, বরং রাষ্ট্রীয় স্থিতিশীলতা ও আইনি শৃঙ্খলার মূলভিত্তি হিসেবে দেখেছিলেন, যা পরবর্তী অনেক রাজনৈতিক চিন্তাবিদের উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।

0
Updated: 1 day ago
আমলাতন্ত্রের প্রধান কাজ কোনটি?
Created: 1 day ago
A
বিধি প্রণয়ন করা
B
রেগুলেশন প্রণয়ন করা
C
প্রবিধান প্রণয়ন করা
D
সরকার কর্তৃক প্রণীত আইন বাস্তবায়ন করা।
আমলাতন্ত্র রাষ্ট্রের প্রশাসনিক কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার মূল দায়িত্ব হলো সরকারের গৃহীত নীতি ও আইনসমূহ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা। এটি মূলত একটি সংগঠিত ও নিয়মতান্ত্রিক ব্যবস্থা, যেখানে কর্মকর্তারা নির্দিষ্ট নিয়ম, বিধি ও প্রক্রিয়া অনুসরণ করে প্রশাসনিক কাজ সম্পাদন করেন।
• আমলাতন্ত্রের মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারের নীতি বাস্তবায়ন, প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা এবং নাগরিকদের সেবা নিশ্চিত করা।
• আইন প্রণয়নের দায়িত্ব সংসদ বা আইন প্রণেতাদের—আমলাতন্ত্রের নয়।
• আমলাতন্ত্র প্রবিধান বা প্রশাসনিক নির্দেশনা প্রণয়ন করতে পারে, কিন্তু তা তাদের প্রধান দায়িত্ব নয়; এটি কেবল প্রশাসনিক কাজকে সহজ করার সহায়ক প্রক্রিয়া।
• নীতি নির্ধারণ ও আইন প্রণয়ন মূলত রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাজ; আমলাতন্ত্র কেবল সেই নীতি বাস্তবায়নের উপায় নির্ধারণ করে।
• আমলাতন্ত্রের প্রধান দায়িত্ব হলো সরকারের তৈরি আইন ও নীতিকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও নিয়মিতভাবে বাস্তবায়ন করা।
• কার্যকর আমলাতন্ত্রের মাধ্যমে রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বজায় থাকে এবং সরকারের কার্যক্রম জনগণের কাছে পৌঁছায়।
• এটি প্রশাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এবং রাজনৈতিক পরিবর্তন হলেও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা বজায় রাখে।

0
Updated: 1 day ago