'অনিয়ন্ত্রিত আমলাতন্ত্র গণতন্ত্রের জন্য হুমকীস্বরূপ' - উক্তিটি কার?
A
এল ডি হোয়াইট
B
লুথার গুলিক
C
রিচার্ড ক্রশম্যান
D
উড্রো উইলসন
উত্তরের বিবরণ
রিচার্ড ক্রসম্যানের মতে, নিয়ন্ত্রণহীন ও স্বেচ্ছাচারী আমলাতন্ত্র গণতন্ত্রের জন্য একটি গুরুতর হুমকি। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় প্রশাসনকে জনগণের প্রতিনিধি এবং আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত থাকতে হয়; অন্যথায় প্রশাসনিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে জনগণের অংশগ্রহণ ও স্বায়ত্তশাসন ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
-
ক্রসম্যানের দৃষ্টিতে, আমলাতন্ত্রের কাজ হলো সরকারের নীতি বাস্তবায়ন করা, কিন্তু যখন প্রশাসনিক কর্মকর্তারা নিজেদের ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত নেন, তখন তা জনগণের প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থার পরিপন্থী হয়ে ওঠে।
-
এ ধরনের অনিয়ন্ত্রিত প্রশাসন সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে বিশ্বাসের সেতুবন্ধন ভেঙে দেয়, যার ফলে জনগণের অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে পড়ে।
-
ক্ষমতার অতিরিক্ত কেন্দ্রীভূততা তৈরি হলে জনগণের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ হয় এবং নীতি নির্ধারণে নাগরিক প্রভাব দুর্বল হয়ে যায়।
-
কার্যকর গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে প্রশাসনের ওপর জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠা অপরিহার্য।
-
সংবিধান ও আইনের মাধ্যমে আমলাতন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে জনগণের প্রতিনিধি ও সংসদের তদারকি নিশ্চিত করা উচিত।
-
জনসাধারণের প্রতিনিধিরা যদি প্রশাসনের ওপর নজরদারি রাখেন, তবে নীতিমালা বাস্তবায়নে ভারসাম্য বজায় থাকে এবং ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করা যায়।
-
ক্রসম্যানের মতে, গণতন্ত্রের প্রকৃত শক্তি জনগণের নিয়ন্ত্রণ ও নৈতিক শাসনে নিহিত, আর নিয়ন্ত্রণহীন আমলাতন্ত্র সেই ভিত্তিকেই দুর্বল করে তোলে।

0
Updated: 1 day ago
"The ruler's relationship to his people is much like that of a father to his son" - এটি কার মতামত?
Created: 1 day ago
A
কৌটিল্য
B
ম্যাকিয়াভেলি
C
কনফুসিয়াস
D
ইবনে রুশদ
“শাসকের সঙ্গে তার প্রজাদের সম্পর্ক পিতার সঙ্গে পুত্রের সম্পর্কের মতো”—এই চিন্তাটি প্রাচীন চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াসের রাজনৈতিক ও নৈতিক দর্শনের মূল ভিত্তি। তাঁর মতে রাষ্ট্র হলো এক বৃহৎ পরিবার, যেখানে শাসক হলেন সেই পরিবারের পিতা এবং প্রজারা তাঁর সন্তানস্বরূপ। যেমন পিতা সন্তানের কল্যাণে সচেষ্ট থাকে, তেমনি শাসকের দায়িত্ব জনগণের কল্যাণ ও নৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
-
কনফুসিয়াস (৫৫১–৪৭৯ খ্রিস্টপূর্ব) প্রাচীন চীনের অন্যতম মহান নীতিবিদ, দার্শনিক ও শিক্ষক ছিলেন।
-
তাঁর রাজনৈতিক চিন্তার মূলকথা ছিল—নৈতিকতা (Ren) ও মানবিকতা দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা, ভয় বা বলপ্রয়োগ দ্বারা নয়।
-
তিনি বিশ্বাস করতেন, শাসক যদি নৈতিক আদর্শে স্থিত থাকেন, তবে জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে শ্রদ্ধা ও আনুগত্য প্রদর্শন করবে।
-
সমাজে শৃঙ্খলা ও স্থিতি বজায় থাকে যখন প্রত্যেকে নিজের ভূমিকা সঠিকভাবে পালন করে—যেমন পিতা-পুত্র, রাজা-প্রজা, স্বামী-স্ত্রী, বড়-ছোট ইত্যাদি সম্পর্কে।
-
কনফুসিয়াসের এই দর্শনের লক্ষ্য ছিল নৈতিক শাসনব্যবস্থা (Moral Governance) প্রতিষ্ঠা, যেখানে শাসকের কর্তৃত্ব ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধের সঙ্গে যুক্ত।
-
তাঁর মতে, জনগণকে সুশাসিত রাখতে হলে আইন নয়, নৈতিক উদাহরণই সবচেয়ে কার্যকর উপায়।
-
কৌটিল্যের ‘অর্থশাস্ত্রে’ শাসককে কঠোর, বাস্তববাদী ও কৌশলনিপুণ হতে বলা হয়েছে, তবে এখানে “পিতা-পুত্র সম্পর্ক”-এর মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুপস্থিত।
-
ম্যাকিয়াভেলি ছিলেন সম্পূর্ণ ক্ষমতাকেন্দ্রিক বাস্তববাদী চিন্তাবিদ, যিনি বলেছিলেন—রাজাকে প্রয়োজনে প্রতারণা বা বলপ্রয়োগ করতে হতে পারে; তাঁর বিখ্যাত উক্তি—“It is better to be feared than loved.”
-
ইবনে রুশদ ছিলেন একজন ইসলামী দার্শনিক ও ব্যাখ্যাকার; তবে তাঁর রাজনৈতিক চিন্তায় পিতৃসুলভ শাসক-প্রজা সম্পর্কের এই মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি পাওয়া যায় না।
-
কনফুসিয়াসের ভাবধারা পরবর্তী সময়ে চীনা সমাজে প্রশাসন, নীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার মূল নৈতিক ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।

0
Updated: 1 day ago
'সিদ্ধান্ত গ্রহণই Heart of the Administration' এই উক্তিটি কার?
Created: 1 day ago
A
হার্বার্ট সাইমন
B
হিকস ও গুলেট
C
ল্যাসওয়েল
D
সি. আই, বার্নার্ড
প্রশাসনের মূল কার্যক্রম হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। আধুনিক প্রশাসন তত্ত্বে প্রশাসনকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে তুলনা করা হয়। হার্বার্ট সাইমন আধুনিক প্রশাসন ও সিদ্ধান্ত তত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর মতে, “Decision-making is the heart of administration”, অর্থাৎ প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণ। প্রশাসনের প্রতিটি কার্যক্রমই সঠিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে, কারণ সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করে প্রশাসনিক কাজের দিকনির্দেশনা ও ফলাফল।
• প্রশাসনের দক্ষতা নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুণগত মানের ওপর।
• প্রশাসনের তিনটি ধাপ—পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়ন—সবগুলোই সিদ্ধান্তের ফল।
• হার্বার্ট সাইমন প্রশাসনিক আচরণ (Administrative Behavior) গ্রন্থে সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রশাসনিক বিজ্ঞানের মূল কেন্দ্র হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।
• হিকস ও গুলেট শ্রম ও ব্যবস্থাপনা অর্থনীতি নিয়ে কাজ করেছেন, তবে প্রশাসনের মূল ভাবনা তাদের কেন্দ্রে নয়।
• ল্যাসওয়েল রাজনৈতিক আচরণ ও ক্ষমতার বিশ্লেষণ নিয়ে কাজ করেছেন, কিন্তু প্রশাসনের কেন্দ্র হিসেবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ধারণা তাঁর নয়।
• সি. আই. বার্নার্ড সংগঠন ও নেতৃত্বের তত্ত্বে অবদান রেখেছেন, তবে “Decision-making is the heart of administration” উক্তিটি তাঁর নয়।

0
Updated: 1 day ago
'সংগঠিত রাষ্ট্রের প্রেক্ষিতে মানজীবনের আলোচনাই হচ্ছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান' উক্তিটি কে করেছেন?
Created: 1 day ago
A
গেটেল
B
সিলি
C
লাস্কি
D
গার্নার
অধ্যাপক লাস্কির মতে, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এমন এক শাস্ত্র যা সংগঠিত রাষ্ট্রের প্রেক্ষিতে মানবজীবন, সমাজ ও রাজনৈতিক কার্যকলাপ নিয়ে আলোচনা করে। তাঁর সংজ্ঞা অনুযায়ী রাষ্ট্রবিজ্ঞান কেবল রাষ্ট্রের গঠন বা নীতির সীমায় আবদ্ধ নয়, বরং রাষ্ট্র কীভাবে মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করে এবং মানবজীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে ওঠে, সেই বিষয়গুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করে।
-
রাষ্ট্রবিজ্ঞান একটি বিজ্ঞানভিত্তিক শাস্ত্র, যা রাষ্ট্র ও মানবজীবনের সম্পর্ক নিয়ে বিশ্লেষণ করে।
-
সংগঠিত রাষ্ট্র বলতে বোঝায় এমন এক রাষ্ট্র যেখানে সুনির্দিষ্ট প্রশাসনিক কাঠামো, শাসনব্যবস্থা ও কর্তৃত্বের স্বীকৃত রূপ বিদ্যমান।
-
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হয় নাগরিকদের অধিকার, কর্তব্য, স্বাধীনতা ও সামাজিক সম্পর্কের বিশ্লেষণ।
-
এটি বোঝায় যে রাষ্ট্র কেবল শাসনের কাঠামো নয়, বরং মানুষের জীবনযাত্রা ও সমাজব্যবস্থার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত।
-
লাস্কি রাষ্ট্রবিজ্ঞানকে এমন একটি ক্ষেত্র হিসেবে উপস্থাপন করেছেন যেখানে রাষ্ট্র ও মানুষ পরস্পরনির্ভরশীল এবং উভয়ের বিকাশ একে অপরের ওপর নির্ভর করে।
-
এই দৃষ্টিভঙ্গি রাষ্ট্রবিজ্ঞানের মানবিক দিককে স্পষ্ট করে, যেখানে রাষ্ট্র কেবল ক্ষমতার প্রতীক নয়, বরং মানবকল্যাণ ও সামাজিক ভারসাম্যের মাধ্যম।

0
Updated: 1 day ago