বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা হিসাবে স্বীকৃতি না পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানতম প্রতিবন্ধকতা কী?
A
দক্ষ সমাজকর্মীর অভাব
B
পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা
C
সরকারের স্বীকৃতির অভাব
D
সাধারন মানুষ চায়না
উত্তরের বিবরণ
বাংলাদেশে সমাজকর্ম এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি, যার পেছনে একাধিক কাঠামোগত ও নীতিগত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সমাজকর্ম দেশের সামাজিক উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এটি এখনো পেশাগত মর্যাদা অর্জন করতে পারেনি।
প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো হলো—
১) অপূর্ণাঙ্গ ও অসংগঠিত পেশাগত কাঠামো: সমাজকর্মের জন্য কোনো নির্দিষ্ট পেশাগত মান, দক্ষতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা বা সুসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো নেই। ফলে সমাজকর্মীরা তাদের কাজের পরিধি অনুযায়ী স্বীকৃতি পান না।
২) পেশাগত মূল্যবোধ ও নৈতিক মানদণ্ডের অভাব: সমাজকর্মে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নৈতিক মানদণ্ড থাকলেও দেশে তা পর্যাপ্তভাবে প্রয়োগ বা সংরক্ষণ করা হয় না।
৩) পেশাগত সংগঠনের অভাব: সমাজকর্মীদের জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর পেশাগত সংগঠন গঠিত না হওয়ায় তাদের অধিকার, স্বার্থ ও পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ দেখা যায় না।
৪) কর্মসংস্থানের সীমাবদ্ধতা: সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে সমাজকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পদ ও সুযোগের অভাব রয়েছে, ফলে দক্ষ পেশাজীবীরা অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হন।
তবে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো সরকারের স্বীকৃতির অভাব। কারণ, যদি সরকার সমাজকর্মকে একটি আনুষ্ঠানিক পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিত, তবে উপরের সব সমস্যার সমাধান সহজ হতো। সরকারি স্বীকৃতি সমাজকর্মীদের জন্য পেশাগত কাঠামো, সংগঠন, মানদণ্ড এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা রাখত।

0
Updated: 17 hours ago
বাংলাদেশের কোন কর্মসূচীর মাধ্যমে সমাজকর্ম শিক্ষার যাত্রা শুরু হয়?
Created: 17 hours ago
A
শহর সমষ্টীর উন্নয়ন
B
চিকিৎসা সমাজকর্ম
C
গ্রামীন সমাজসেবা
D
অপরাধ সংশোধন
বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষার সূচনা ঘটে শহর সমষ্টির উন্নয়ন কর্মসূচি (Urban Community Development Programme)-এর মাধ্যমে, যা দেশের সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত। এ কর্মসূচি ছিল বাংলাদেশের সমাজকর্ম চর্চা ও শিক্ষার ভিত্তি স্থাপনের অন্যতম প্রথম উদ্যোগ।
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগের পর এদেশে বিপুল সংখ্যক মোহাজের (অভিবাসী) আগমনের ফলে তৎকালীন প্রাদেশিক রাজধানী ঢাকায় বস্তি সমস্যা, বেকারত্ব, দারিদ্র্য, অপরাধপ্রবণতা ও সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এই ক্রমবর্ধমান নগর সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসংঘের সামাজিক উন্নয়ন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে সরকার ১৯৫৫ সালে Dhaka Urban Community Development Board গঠন করে।
এরপর বোর্ডের কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসেবে একই বছর ঢাকার কায়েতটুলিতে পরীক্ষামূলকভাবে শহর সমাজ উন্নয়ন প্রকল্প (Urban Community Development Project – UCDP) চালু করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে শহরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, সচেতনতা সৃষ্টি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার প্রসার এবং সামাজিক সংগঠন গঠনের প্রচেষ্টা নেওয়া হয়।
এই উদ্যোগের ফলেই বাংলাদেশে সমাজকর্ম শিক্ষা ও কার্যক্রমের ভিত্তি তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে সমাজকল্যাণ বিভাগ ও সমাজকর্ম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠার পথ সুগম করে।

0
Updated: 17 hours ago
টি এইচ মার্শালের (T.H.Marshall) মতে কোনটি সামাজিক নীতির উদ্দেশ্য নয়?
Created: 17 hours ago
A
দারিদ্র্য দূরীকরণ
B
সর্বাধিক কল্যাণ
C
সমতা নিশ্চিতকরণ
D
সম্পদের বন্টন
টি. এইচ. মার্শালের মতে, সামাজিক নীতির মূল লক্ষ্য কেবল সম্পদের বণ্টন নয়, বরং সমাজে দারিদ্র্য দূরীকরণ, সর্বাধিক কল্যাণ নিশ্চিতকরণ এবং সমতা প্রতিষ্ঠা করা। তিনি সামাজিক নীতিকে এমন এক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখেছেন, যা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার পাশাপাশি সমাজে ন্যায়ভিত্তিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে।
মার্শাল তাঁর নাগরিকত্ব তত্ত্বে (Theory of Citizenship) সামাজিক নীতির উদ্দেশ্যকে তিনটি স্তরে ব্যাখ্যা করেছেন—
১) নাগরিক অধিকার (Civil Rights): ব্যক্তি স্বাধীনতা, মত প্রকাশ, আইনগত সুরক্ষা এবং ন্যায়বিচারের অধিকার।
২) রাজনৈতিক অধিকার (Political Rights): রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের অধিকার, যেমন ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ।
৩) সামাজিক অধিকার (Social Rights): শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং ন্যূনতম জীবনমান নিশ্চিত করার অধিকার।
মার্শালের মতে, প্রকৃত নাগরিকত্ব তখনই প্রতিষ্ঠিত হয় যখন এই তিনটি অধিকার সমানভাবে সুরক্ষিত হয়। তিনি বিশ্বাস করতেন যে রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো কেবল নাগরিকদের আইনি সুরক্ষা দেওয়া নয়, বরং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।

0
Updated: 17 hours ago
বিভারিজ রিপোর্ট অনুসারে পঞ্চদৈত্যগুলো হলো-
Created: 18 hours ago
A
অজ্ঞতা, অদক্ষতা, অসচেতনতা, অবহেলা, অসমতা
B
রোগ, দুর্ভিক্ষ, অভাব, প্রতিযোগিতা, অলসতা
C
অভাব, রোগ, অদক্ষতা,নিরুৎসাহ, অলসতা
D
অভাব, রোগ, অজ্ঞতা, মলিনতা, অলসতা
অভাবযুক্ত ইংল্যান্ডের সমাজজীবনকে অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম বিভারিজ ‘পঞ্চদৈত্য (Five Giants)’ নামে পরিচিত পাঁচটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, যা অক্টোপাসের মতো সমাজকে জড়িয়ে রেখেছিল। তিনি মনে করতেন, এই পাঁচটি দৈত্যই মানবসমাজের অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় এবং সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
বিভারিজ রিপোর্ট, যা ১৯৪২ সালে প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ সরকারি প্রতিবেদন, যুক্তরাজ্যে আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র (Welfare State) প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে। এই প্রতিবেদনে সমাজকল্যাণ, অর্থনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
বিভারিজের নির্ধারিত “পঞ্চদৈত্য” ছিল—
১) অভাব (Want): দারিদ্র্য ও আর্থিক অনটন দূরীকরণের আহ্বান।
২) রোগ (Disease): সবার জন্য কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার প্রস্তাব।
৩) অজ্ঞতা (Ignorance): শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করে জনগণকে জ্ঞানসমৃদ্ধ করা।
৪) মলিনতা (Squalor): বসবাসযোগ্য পরিবেশ ও উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করা।
৫) অলসতা (Idleness): কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব হ্রাস করা।
বিভারিজ এই প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে প্রস্তাব দেন একটি “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত” (From Cradle to Grave) একীভূত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা (Social Security System) প্রতিষ্ঠার, যাতে প্রত্যেক নাগরিক জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পেতে পারে।
এই রিপোর্ট পরবর্তীতে ব্রিটিশ সমাজে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে এবং সমাজকর্ম ও সামাজিক নীতিনির্ধারণে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে।

0
Updated: 18 hours ago