প্রবেশন হলো-
A
অপরাধীকে পুনরায় সাজা দেওয়া
B
নির্দিষ্ট শর্তে জেলে রাখা
C
অর্থনৈতিক মুক্তি দেওয়া
D
নির্দিষ্ট শর্তে শাস্তি স্থগিত রেখে অপরাধীকে সমাজে পুনর্বাসনের সুযোগ দেওয়া
উত্তরের বিবরণ
প্রবেশন হলো একটি বিচারিক ও সমাজসেবামূলক পুনর্বাসন প্রক্রিয়া, যেখানে আদালত অপরাধীকে কারাদণ্ড প্রদান না করে, তাকে নির্দিষ্ট শর্ত ও তত্ত্বাবধানের অধীনে সমাজে স্বাভাবিকভাবে বসবাসের সুযোগ দেয়। এর মাধ্যমে অপরাধীকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন না করে, বরং তার আচরণ সংশোধনের সুযোগ প্রদান করা হয়, যাতে সে আইনসম্মত ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে পুনরায় সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
এই প্রক্রিয়ায় অপরাধীকে একজন প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। অফিসার তার আচরণ পর্যবেক্ষণ করেন, পরামর্শ দেন এবং তাকে পুনর্বাসনের পথে পরিচালিত করেন। অপরাধীকে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়—যেমন অপরাধমূলক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকা, নিয়মিত রিপোর্ট প্রদান করা এবং সমাজকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করা।
প্রবেশনের প্রধান উদ্দেশ্যগুলো হলো:
১) অপরাধীর মানসিক ও সামাজিক পুনর্গঠন করা।
২) সমাজে পুনঃএকীভূত করার মাধ্যমে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস করা।
৩) কারাগারের ভিড় ও রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমানো।
৪) অপরাধীর আত্মসম্মান রক্ষা করে তাকে ইতিবাচক জীবনযাপনে উৎসাহিত করা।
প্রবেশন মূলত প্রযোজ্য হয়:
-
লঘু অপরাধী, যারা গুরুতর অপরাধে জড়িত নয়।
-
প্রথম অপরাধী, যাদের পুনরায় অপরাধে লিপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
-
অল্পবয়সী অপরাধী, যাদের মানসিক বিকাশ ও সমাজে পুনর্বাসনের সম্ভাবনা বেশি।

0
Updated: 17 hours ago
বিভারিজ রিপোর্ট অনুসারে পঞ্চদৈত্যগুলো হলো-
Created: 18 hours ago
A
অজ্ঞতা, অদক্ষতা, অসচেতনতা, অবহেলা, অসমতা
B
রোগ, দুর্ভিক্ষ, অভাব, প্রতিযোগিতা, অলসতা
C
অভাব, রোগ, অদক্ষতা,নিরুৎসাহ, অলসতা
D
অভাব, রোগ, অজ্ঞতা, মলিনতা, অলসতা
অভাবযুক্ত ইংল্যান্ডের সমাজজীবনকে অর্থনীতিবিদ উইলিয়াম বিভারিজ ‘পঞ্চদৈত্য (Five Giants)’ নামে পরিচিত পাঁচটি ভয়াবহ সামাজিক সমস্যার সঙ্গে তুলনা করেছিলেন, যা অক্টোপাসের মতো সমাজকে জড়িয়ে রেখেছিল। তিনি মনে করতেন, এই পাঁচটি দৈত্যই মানবসমাজের অগ্রগতির প্রধান অন্তরায় এবং সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করছে।
বিভারিজ রিপোর্ট, যা ১৯৪২ সালে প্রকাশিত একটি ব্রিটিশ সরকারি প্রতিবেদন, যুক্তরাজ্যে আধুনিক কল্যাণ রাষ্ট্র (Welfare State) প্রতিষ্ঠার ভিত্তি স্থাপন করে। এই প্রতিবেদনে সমাজকল্যাণ, অর্থনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য একটি বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়।
বিভারিজের নির্ধারিত “পঞ্চদৈত্য” ছিল—
১) অভাব (Want): দারিদ্র্য ও আর্থিক অনটন দূরীকরণের আহ্বান।
২) রোগ (Disease): সবার জন্য কার্যকর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার প্রস্তাব।
৩) অজ্ঞতা (Ignorance): শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করে জনগণকে জ্ঞানসমৃদ্ধ করা।
৪) মলিনতা (Squalor): বসবাসযোগ্য পরিবেশ ও উন্নত আবাসনের ব্যবস্থা করা।
৫) অলসতা (Idleness): কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্ব হ্রাস করা।
বিভারিজ এই প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে প্রস্তাব দেন একটি “দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত” (From Cradle to Grave) একীভূত সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা (Social Security System) প্রতিষ্ঠার, যাতে প্রত্যেক নাগরিক জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পেতে পারে।
এই রিপোর্ট পরবর্তীতে ব্রিটিশ সমাজে কল্যাণ রাষ্ট্র গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে এবং সমাজকর্ম ও সামাজিক নীতিনির্ধারণে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে।

0
Updated: 18 hours ago
বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা হিসাবে স্বীকৃতি না পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানতম প্রতিবন্ধকতা কী?
Created: 17 hours ago
A
দক্ষ সমাজকর্মীর অভাব
B
পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা
C
সরকারের স্বীকৃতির অভাব
D
সাধারন মানুষ চায়না
বাংলাদেশে সমাজকর্ম এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি, যার পেছনে একাধিক কাঠামোগত ও নীতিগত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সমাজকর্ম দেশের সামাজিক উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এটি এখনো পেশাগত মর্যাদা অর্জন করতে পারেনি।
প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো হলো—
১) অপূর্ণাঙ্গ ও অসংগঠিত পেশাগত কাঠামো: সমাজকর্মের জন্য কোনো নির্দিষ্ট পেশাগত মান, দক্ষতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা বা সুসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো নেই। ফলে সমাজকর্মীরা তাদের কাজের পরিধি অনুযায়ী স্বীকৃতি পান না।
২) পেশাগত মূল্যবোধ ও নৈতিক মানদণ্ডের অভাব: সমাজকর্মে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নৈতিক মানদণ্ড থাকলেও দেশে তা পর্যাপ্তভাবে প্রয়োগ বা সংরক্ষণ করা হয় না।
৩) পেশাগত সংগঠনের অভাব: সমাজকর্মীদের জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর পেশাগত সংগঠন গঠিত না হওয়ায় তাদের অধিকার, স্বার্থ ও পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ দেখা যায় না।
৪) কর্মসংস্থানের সীমাবদ্ধতা: সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে সমাজকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পদ ও সুযোগের অভাব রয়েছে, ফলে দক্ষ পেশাজীবীরা অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হন।
তবে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো সরকারের স্বীকৃতির অভাব। কারণ, যদি সরকার সমাজকর্মকে একটি আনুষ্ঠানিক পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিত, তবে উপরের সব সমস্যার সমাধান সহজ হতো। সরকারি স্বীকৃতি সমাজকর্মীদের জন্য পেশাগত কাঠামো, সংগঠন, মানদণ্ড এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা রাখত।

0
Updated: 17 hours ago
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কী?
Created: 18 hours ago
A
প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা
B
প্রশাসনিক দুর্নীতি
C
প্রশাসনিক স্থবিরতা
D
কর্মকর্তাদের অদক্ষতা
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য (Red Tapism) হলো প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি নেতিবাচক দিক, যেখানে কোনো কাজ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা, জটিল নিয়মকানুন ও অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব দেখা যায়। এটি মূলত সেই পরিস্থিতিকে বোঝায়, যখন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মীরা নিয়ম ও প্রক্রিয়ার প্রতি এতটাই অন্ধভাবে অনুগত থাকে যে, কাজের গতি বাধাগ্রস্ত হয় এবং দক্ষতা নষ্ট হয়।
এই প্রক্রিয়ায় নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ্য করা যায়—
১) অতিরিক্ত কাগজপত্র ও আনুষ্ঠানিকতা: প্রতিটি সিদ্ধান্ত বা অনুমোদনের জন্য অগণিত নথিপত্র ও সই-সাক্ষরের প্রয়োজন হয়।
২) অহেতুক বিলম্ব: সহজ কাজও বিভিন্ন ধাপে অনুমোদনের কারণে অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘ সময় নেয়।
৩) প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা: সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ও দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
৪) আমলাতান্ত্রিক জটিলতা: কর্মকর্তারা নিয়মের ব্যাখ্যায় অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে বাস্তব কাজের পরিবর্তে প্রক্রিয়াকেই প্রাধান্য দেন।
৫) অর্থনৈতিক ও সময়গত ক্ষতি: এই অকার্যকর পদ্ধতির ফলে সম্পদ, সময় ও জনআস্থার অপচয় ঘটে।
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য শব্দটি এসেছে সেই সময় থেকে, যখন সরকারি দপ্তরে নথিপত্র লাল ফিতা দিয়ে বাঁধা থাকত। সময়ের সঙ্গে এই প্রতীকটি প্রশাসনিক জটিলতা ও দেরির প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

0
Updated: 18 hours ago