লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কী?
A
প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা
B
প্রশাসনিক দুর্নীতি
C
প্রশাসনিক স্থবিরতা
D
কর্মকর্তাদের অদক্ষতা
উত্তরের বিবরণ
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য (Red Tapism) হলো প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি নেতিবাচক দিক, যেখানে কোনো কাজ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা, জটিল নিয়মকানুন ও অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব দেখা যায়। এটি মূলত সেই পরিস্থিতিকে বোঝায়, যখন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মীরা নিয়ম ও প্রক্রিয়ার প্রতি এতটাই অন্ধভাবে অনুগত থাকে যে, কাজের গতি বাধাগ্রস্ত হয় এবং দক্ষতা নষ্ট হয়।
এই প্রক্রিয়ায় নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ্য করা যায়—
১) অতিরিক্ত কাগজপত্র ও আনুষ্ঠানিকতা: প্রতিটি সিদ্ধান্ত বা অনুমোদনের জন্য অগণিত নথিপত্র ও সই-সাক্ষরের প্রয়োজন হয়।
২) অহেতুক বিলম্ব: সহজ কাজও বিভিন্ন ধাপে অনুমোদনের কারণে অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘ সময় নেয়।
৩) প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা: সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ও দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
৪) আমলাতান্ত্রিক জটিলতা: কর্মকর্তারা নিয়মের ব্যাখ্যায় অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে বাস্তব কাজের পরিবর্তে প্রক্রিয়াকেই প্রাধান্য দেন।
৫) অর্থনৈতিক ও সময়গত ক্ষতি: এই অকার্যকর পদ্ধতির ফলে সম্পদ, সময় ও জনআস্থার অপচয় ঘটে।
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য শব্দটি এসেছে সেই সময় থেকে, যখন সরকারি দপ্তরে নথিপত্র লাল ফিতা দিয়ে বাঁধা থাকত। সময়ের সঙ্গে এই প্রতীকটি প্রশাসনিক জটিলতা ও দেরির প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

0
Updated: 18 hours ago
Rapport' শব্দটি সমাজকর্মে ব্যবহৃত হয় কী বোঝাতে-
Created: 17 hours ago
A
ব্যক্তিগত মর্যাদা
B
প্রাতিষ্ঠানিক দায়িত্ব
C
অর্থগত সম্পর্ক
D
পেশাগত সম্পর্ক
সমাজকর্মে ‘Rapport’ বলতে বোঝানো হয় সমাজকর্মী এবং সাহায্যপ্রার্থীর (ক্লায়েন্ট) মধ্যে গড়ে ওঠা বিশ্বাস, শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে গঠিত ঘনিষ্ঠ কিন্তু পেশাগত সম্পর্ক। এটি সমাজকর্ম প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ, কারণ কার্যকর সহায়তা প্রদান এবং সমস্যা সমাধানের ভিত্তি এই সম্পর্কের উপর নির্ভর করে।
এই সম্পর্কের মাধ্যমে ক্লায়েন্ট নিজের সমস্যা, অনুভূতি ও উদ্বেগ সম্পর্কে খোলামেলা ও নিরাপদভাবে কথা বলতে পারেন। অন্যদিকে, সমাজকর্মী ক্লায়েন্টের পরিস্থিতি গভীরভাবে বোঝার সুযোগ পান এবং তার প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত সহায়তা পরিকল্পনা করতে পারেন।
‘Rapport’-এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো হলো:
১) পারস্পরিক বিশ্বাস (Mutual Trust): ক্লায়েন্ট সমাজকর্মীর প্রতি আস্থা রাখেন যে তিনি তার সমস্যা গোপন রাখবেন ও সদর্থকভাবে সাহায্য করবেন।
২) শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি (Respect and Empathy): সমাজকর্মী ক্লায়েন্টের অনুভূতি, মতামত ও অভিজ্ঞতার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
৩) বোঝাপড়া ও গ্রহণযোগ্যতা (Understanding and Acceptance): সমাজকর্মী ক্লায়েন্টকে বিচার না করে তার দৃষ্টিভঙ্গি ও অবস্থানকে বুঝতে চেষ্টা করেন।
৪) খোলামেলা যোগাযোগ (Open Communication): ক্লায়েন্ট ও সমাজকর্মীর মধ্যে আন্তরিক ও অবাধ সংলাপ স্থাপিত হয়।
৫) সহযোগিতার মনোভাব (Cooperation): উভয়েই সমস্যার সমাধানে একসাথে কাজ করেন, যা পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে ফলপ্রসূ হয়।

0
Updated: 17 hours ago
নির্ভরতার তত্ত্বে অনুমিত ধারনা কোনটি?
Created: 18 hours ago
A
উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো উন্নত রাষ্ট্রের উপর নিরভরশীল
B
রাষ্ট্রের উন্নয়ন আন্তর্জাতিক বাজার ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল
C
রাষ্ট্রের উন্নয়ন প্রতিবেশী রাষ্ট্রের নীতির উপর নির্ভরশীল
D
ব্যক্তি, সমাজ, ও রাষ্ট্র পরস্পর নির্ভরশীল
নির্ভরতা তত্ত্ব (Dependency Theory) হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ সমাজ-অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, যা অর্থনৈতিক অনুন্নয়নকে বোঝার একটি বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে বিবেচিত। এই তত্ত্বের মূল ধারণা হলো—বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো এমনভাবে গঠিত, যা উন্নত দেশগুলিকে লাভবান করে এবং অনুন্নত দেশগুলিকে নির্ভরশীল অবস্থায় আবদ্ধ রাখে।
এই তত্ত্বটি প্রথম প্রস্তাব করেন আর্জেন্টিনার অর্থনীতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক রাউল প্রেবিশ ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে। পরবর্তীতে ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে এই তত্ত্বটি লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা ও এশিয়ার অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে বিশেষ গুরুত্ব লাভ করে।
নির্ভরতা তত্ত্বের মূল ধারণাগুলো হলো:
১) বিশ্ব অর্থনীতিতে কেন্দ্র ও প্রান্তের বিভাজন: বিশ্ব অর্থনীতি দুটি ভাগে বিভক্ত — ধনী কেন্দ্র (Core) এবং দরিদ্র প্রান্ত (Periphery)। কেন্দ্রের দেশগুলো প্রযুক্তি, শিল্প এবং মূলধন নিয়ন্ত্রণ করে, আর প্রান্তের দেশগুলো কাঁচামাল ও সস্তা শ্রম সরবরাহ করে।
২) অসাম্য বিনিময়: অনুন্নত দেশগুলো বিশ্ববাজারে সস্তা কাঁচামাল ও শ্রম বিক্রি করে, কিন্তু উন্নত দেশগুলো সেই উপকরণ ব্যবহার করে উচ্চমূল্যের প্রস্তুত পণ্য তৈরি করে আবার অনুন্নত দেশগুলোকেই বিক্রি করে।
৩) অর্থনৈতিক শোষণ ও পুঁজি হ্রাস: এই প্রক্রিয়ায় অনুন্নত দেশগুলোর মূলধন ও উৎপাদনশীল ক্ষমতা ক্রমশ হ্রাস পায়, যা তাদের স্থায়ীভাবে নির্ভরশীল অবস্থায় রাখে।
৪) উন্নয়নের সীমাবদ্ধতা: নির্ভরতা তত্ত্ব অনুযায়ী, এই বৈশ্বিক কাঠামোর মধ্যে প্রকৃত উন্নয়ন প্রায় অসম্ভব, কারণ প্রান্তের দেশগুলো সবসময় কেন্দ্রের অর্থনৈতিক স্বার্থের অধীন থাকে।
বিভিন্ন তাত্ত্বিক দৃষ্টিভঙ্গি:
-
ফার্নান্দো হেনরিক কার্ডোসো (ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি, ১৯৯৫–২০০৩) যুক্তি দেন যে, নির্ভরতার মধ্যেও কিছু মাত্রার উন্নয়ন সম্ভব, যদি দেশগুলো নিজেদের অভ্যন্তরীণ নীতি ও শিল্প উন্নয়নে মনোযোগ দেয়।
-
অন্যদিকে, আন্দ্রে গুন্ডার ফ্রাঙ্ক, একজন জার্মান-আমেরিকান অর্থনৈতিক ইতিহাসবিদ, মত দেন যে এই নির্ভরতা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হলো অ-পুঁজিবাদী (সমাজতান্ত্রিক) অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা।
অতএব, নির্ভরতা তত্ত্ব বিশ্ব অর্থনীতির বৈষম্য ও অনুন্নয়নের কারণ ব্যাখ্যা করে দেখায় যে, বৈশ্বিক উন্নয়নের প্রক্রিয়া মূলত একপাক্ষিক, যেখানে উন্নত দেশগুলোর সমৃদ্ধি অনুন্নত দেশগুলোর ওপর নির্ভর করে।

0
Updated: 18 hours ago
ভারতবর্ষে সমাজকর্ম পাঠদানকারী প্রথম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-
Created: 18 hours ago
A
টাটা ইন্সটিটিউট
B
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
C
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
D
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়
ভারতবর্ষে সমাজকর্ম শিক্ষা প্রবর্তনের ক্ষেত্রে পথিকৃৎ প্রতিষ্ঠান হলো টাটা ইনস্টিটিউট অফ সোশ্যাল সায়েন্সেস (TISS)। এটি ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় স্যার দোরাবজি টাটা গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ সোশ্যাল ওয়ার্ক নামে, যা পরবর্তীতে বর্তমান নাম লাভ করে। প্রতিষ্ঠানটি সমাজকর্ম শিক্ষা ও গবেষণাকে পেশাগত কাঠামোয় রূপ দিয়ে ভারতসহ দক্ষিণ এশিয়ায় সমাজকর্মের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
এই প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ অবদান হলো—
১) এটি ছিল ভারতের প্রথম সমাজকর্ম পাঠদানকারী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখানে সমাজকর্মকে একটি স্বতন্ত্র পেশাগত শিক্ষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
২) প্রায় এক দশক ধরে এটি ভারতে সমাজকর্মে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদানকারী একমাত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত ছিল।
৩) সমাজকর্ম শিক্ষা, সমাজনীতি, সম্প্রদায় উন্নয়ন, শ্রমনীতি, নারী ও শিশু কল্যাণ, এবং সামাজিক গবেষণার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ প্রতিষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা ও গবেষণামূলক অবদান রাখে।
৪) পরবর্তীতে এটি আন্তর্জাতিক মানের সমাজকর্ম শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে পরিচিতি লাভ করে, যা ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও সমাজকর্ম শিক্ষার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।

0
Updated: 18 hours ago