মানব উন্নয়ন সূচক কোন্ তিনটি বিষয়কে নির্দেশ করে?
A
শিক্ষা, আয় ও জীবন প্রত্যাশা
B
স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও শিক্ষা
C
শিক্ষা, আয় ও প্রযুক্তি
D
স্বাস্থ্য, পরিবেশ, ও আয়
উত্তরের বিবরণ
মানব উন্নয়ন সূচক (HDI) হলো একটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড, যার মাধ্যমে একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। এটি কেবল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ওপর নির্ভর করে না, বরং মানুষের জীবনমান, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ মানবকল্যাণের বাস্তব চিত্র তুলে ধরে। এই সূচকটি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (UNDP) প্রণয়ন করে।
HDI মূলত তিনটি মৌলিক উপাদানের ওপর ভিত্তি করে গঠিত—
১) দীর্ঘ ও স্বাস্থ্যকর জীবন: এটি পরিমাপ করা হয় জন্মের সময় প্রত্যাশিত গড় আয়ু (Life Expectancy at Birth) দ্বারা।
২) জ্ঞান বা শিক্ষা স্তর: এটি নির্ধারণ করা হয় গড় শিক্ষাবর্ষ (Mean Years of Schooling) এবং প্রত্যাশিত শিক্ষাবর্ষ (Expected Years of Schooling) — এই দুই সূচকের সমন্বয়ে।
৩) শালীন জীবনযাত্রার মান: এটি নির্ণয় করা হয় প্রতি ব্যক্তির মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় (GNI per capita) দিয়ে, যা ক্রয়ক্ষমতা সমতা (PPP) অনুযায়ী গণনা করা হয়।
এই তিনটি সূচকের গড় নির্ণয় করে একটি দেশের মানব উন্নয়ন সূচক (HDI) নির্ধারণ করা হয়। সূচকটি ০ থেকে ১-এর মধ্যে মান পায়— যেখানে ১-এর কাছাকাছি মান নির্দেশ করে উচ্চ মানব উন্নয়ন এবং ০-এর কাছাকাছি মান নির্দেশ করে নিম্ন মানব উন্নয়ন।
অতএব, মানব উন্নয়নের প্রকৃত লক্ষ্য হলো মানুষের সক্ষমতা, সুযোগ ও জীবনমান বৃদ্ধি করা, শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নয়।

0
Updated: 18 hours ago
সমস্যাগ্রস্থ ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শক্তি বলতে বুঝানো হয়-
Created: 18 hours ago
A
ব্যক্তির মূল্যবোধের বিকাশ
B
ব্যক্তির সততার বিকাশ
C
ব্যক্তির পারিপার্শ্বিক বিকাশ
D
ব্যক্তির সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ
সমাজকর্মে সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শক্তি বলতে বোঝানো হয় সেই সকল নিজস্ব ক্ষমতা, দক্ষতা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও মানসিক দৃঢ়তা, যা একজন ব্যক্তি নিজের সমস্যা মোকাবিলায় ব্যবহার করতে পারে। সমাজকর্মের অন্যতম মূল ধারণা হলো—প্রত্যেক মানুষের ভেতরেই কিছু না কিছু সুপ্ত সামর্থ্য ও ইতিবাচক শক্তি থাকে, যা সঠিক দিকনির্দেশনা ও সহযোগিতার মাধ্যমে বিকশিত করা সম্ভব।
এই অন্তর্নিহিত শক্তি ব্যক্তি সমাজকর্মের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত, কারণ সমাজকর্মের লক্ষ্য কেবল সাহায্য প্রদান নয়, বরং ব্যক্তিকে নিজের সমস্যার সমাধানে সক্ষম করে তোলা।
ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শক্তির মূল দিকগুলো হলো—
১) ব্যক্তিগত দক্ষতা ও সামর্থ্য: যেমন আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এবং সমস্যা সমাধানের দক্ষতা।
২) মানসিক ও আবেগিক দৃঢ়তা: চাপ, দুঃখ বা ব্যর্থতা মোকাবিলার মানসিক প্রস্তুতি ও ইতিবাচক মনোভাব।
৩) সামাজিক ও পারিবারিক সমর্থন: পরিবার, বন্ধু, সমাজ বা প্রতিষ্ঠানের সহায়তা, যা ব্যক্তির পুনর্গঠনে সাহায্য করে।
৪) অভ্যন্তরীণ প্রেরণা ও লক্ষ্য সচেতনতা: নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার ইচ্ছাশক্তি ও লক্ষ্যের প্রতি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা।
৫) সম্পদ ব্যবহারের দক্ষতা: নিজের চারপাশের সহায়ক উপকরণ ও সুযোগগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর কার্যকর ব্যবহার।
সমাজকর্মী এই অন্তর্নিহিত শক্তিগুলো শনাক্ত করে ব্যক্তিকে নিজের সামর্থ্য কাজে লাগাতে উদ্বুদ্ধ করেন, যাতে সে আত্মনির্ভর ও সমাজে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।

0
Updated: 18 hours ago
বাংলাদেশে সমাজকর্ম পেশা হিসাবে স্বীকৃতি না পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানতম প্রতিবন্ধকতা কী?
Created: 17 hours ago
A
দক্ষ সমাজকর্মীর অভাব
B
পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকা
C
সরকারের স্বীকৃতির অভাব
D
সাধারন মানুষ চায়না
বাংলাদেশে সমাজকর্ম এখনো একটি পূর্ণাঙ্গ পেশা হিসেবে স্বীকৃতি পায়নি, যার পেছনে একাধিক কাঠামোগত ও নীতিগত প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সমাজকর্ম দেশের সামাজিক উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও এটি এখনো পেশাগত মর্যাদা অর্জন করতে পারেনি।
প্রধান প্রতিবন্ধকতাগুলো হলো—
১) অপূর্ণাঙ্গ ও অসংগঠিত পেশাগত কাঠামো: সমাজকর্মের জন্য কোনো নির্দিষ্ট পেশাগত মান, দক্ষতা মূল্যায়ন ব্যবস্থা বা সুসংগঠিত প্রশাসনিক কাঠামো নেই। ফলে সমাজকর্মীরা তাদের কাজের পরিধি অনুযায়ী স্বীকৃতি পান না।
২) পেশাগত মূল্যবোধ ও নৈতিক মানদণ্ডের অভাব: সমাজকর্মে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নৈতিক মানদণ্ড থাকলেও দেশে তা পর্যাপ্তভাবে প্রয়োগ বা সংরক্ষণ করা হয় না।
৩) পেশাগত সংগঠনের অভাব: সমাজকর্মীদের জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর পেশাগত সংগঠন গঠিত না হওয়ায় তাদের অধিকার, স্বার্থ ও পেশাগত মর্যাদা রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ দেখা যায় না।
৪) কর্মসংস্থানের সীমাবদ্ধতা: সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে সমাজকর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত পদ ও সুযোগের অভাব রয়েছে, ফলে দক্ষ পেশাজীবীরা অন্য পেশায় চলে যেতে বাধ্য হন।
তবে, এর মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা হলো সরকারের স্বীকৃতির অভাব। কারণ, যদি সরকার সমাজকর্মকে একটি আনুষ্ঠানিক পেশা হিসেবে স্বীকৃতি দিত, তবে উপরের সব সমস্যার সমাধান সহজ হতো। সরকারি স্বীকৃতি সমাজকর্মীদের জন্য পেশাগত কাঠামো, সংগঠন, মানদণ্ড এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা রাখত।

0
Updated: 17 hours ago
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য কী?
Created: 18 hours ago
A
প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা
B
প্রশাসনিক দুর্নীতি
C
প্রশাসনিক স্থবিরতা
D
কর্মকর্তাদের অদক্ষতা
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য (Red Tapism) হলো প্রশাসনিক ও আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটি নেতিবাচক দিক, যেখানে কোনো কাজ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আনুষ্ঠানিকতা, জটিল নিয়মকানুন ও অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব দেখা যায়। এটি মূলত সেই পরিস্থিতিকে বোঝায়, যখন সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মীরা নিয়ম ও প্রক্রিয়ার প্রতি এতটাই অন্ধভাবে অনুগত থাকে যে, কাজের গতি বাধাগ্রস্ত হয় এবং দক্ষতা নষ্ট হয়।
এই প্রক্রিয়ায় নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলো লক্ষ্য করা যায়—
১) অতিরিক্ত কাগজপত্র ও আনুষ্ঠানিকতা: প্রতিটি সিদ্ধান্ত বা অনুমোদনের জন্য অগণিত নথিপত্র ও সই-সাক্ষরের প্রয়োজন হয়।
২) অহেতুক বিলম্ব: সহজ কাজও বিভিন্ন ধাপে অনুমোদনের কারণে অপ্রয়োজনীয়ভাবে দীর্ঘ সময় নেয়।
৩) প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রিতা: সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব ও দায়িত্ব এড়ানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।
৪) আমলাতান্ত্রিক জটিলতা: কর্মকর্তারা নিয়মের ব্যাখ্যায় অতিরিক্ত গুরুত্ব দিয়ে বাস্তব কাজের পরিবর্তে প্রক্রিয়াকেই প্রাধান্য দেন।
৫) অর্থনৈতিক ও সময়গত ক্ষতি: এই অকার্যকর পদ্ধতির ফলে সম্পদ, সময় ও জনআস্থার অপচয় ঘটে।
লাল ফিতার দৌরাত্ম্য শব্দটি এসেছে সেই সময় থেকে, যখন সরকারি দপ্তরে নথিপত্র লাল ফিতা দিয়ে বাঁধা থাকত। সময়ের সঙ্গে এই প্রতীকটি প্রশাসনিক জটিলতা ও দেরির প্রতীক হয়ে দাঁড়ায়।

0
Updated: 18 hours ago