আমলাতন্ত্রকে দুষ্টচক্র বলেছেন কে?
A
ম্যাক্সওয়েবার
B
মাইকেল ক্রোজিয়ার
C
ফাইনার
D
ফিফনার
উত্তরের বিবরণ
ম্যাক্স ওয়েবার (Max Weber) আমলাতন্ত্রকে একটি সংগঠিত, নিয়ম-নির্ভর ও যৌক্তিক প্রশাসনিক কাঠামো হিসেবে বিশ্লেষণ করেছিলেন। তাঁর মতে, আমলাতন্ত্র আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য অপরিহার্য কারণ এটি দক্ষতা, পূর্বানুমানযোগ্যতা ও দায়িত্ববোধ নিশ্চিত করে। তবে ওয়েবার আমলাতন্ত্রকে দুষ্টচক্র (vicious circle) হিসেবে দেখেননি।
মাইকেল ক্রোজিয়ার (Michel Crozier)-ই প্রথম আমলাতন্ত্রকে দুষ্টচক্র (Vicious Circle) হিসেবে বিশ্লেষণ করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন যে, আমলাতান্ত্রিক কাঠামোর অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রণ, নিয়ম-নির্ভরতা ও কর্তৃত্ববাদী মানসিকতা প্রশাসনের মধ্যে স্থিতাবস্থার (status quo) সংস্কৃতি সৃষ্টি করে। ফলে পরিবর্তনের পথ বন্ধ হয়ে যায় এবং একটি দুষ্টচক্র গড়ে ওঠে, যা প্রশাসন ও নাগরিকদের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি করে।
-
আমলাতান্ত্রিক দুষ্টচক্রে কর্মকর্তারা তথ্য সীমিত রাখেন যাতে তাঁদের ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অক্ষুণ্ণ থাকে।
-
পরিবর্তন বা সংস্কারের চেষ্টা করলে অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ তৈরি হয়, ফলে প্রশাসন স্থবির হয়ে পড়ে।
-
নাগরিকরা অসন্তুষ্ট ও হতাশ হয়ে প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারায়।
-
এই অবিশ্বাস ও অদক্ষতার পরিবেশেই vicious circle বা দুষ্টচক্র গড়ে ওঠে— যেখানে প্রশাসন নিজের দুর্বলতার কারণে সমস্যার সমাধান করতে পারে না এবং জনগণও প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে পরিবর্তনের সক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখে না।
ফাইনার (Finer) ও ফিফনার (Pfiffner) প্রশাসন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওপর গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন, কিন্তু তাঁরা দুষ্টচক্র বিশ্লেষণের মূল তত্ত্ববিদ নন।
-
উদাহরণস্বরূপ, সরকারি কর্মকর্তারা তাঁদের ক্ষমতা রক্ষার জন্য তথ্য গোপন বা সীমিত করে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিলম্বিত করেন।
-
জনগণ ধীরে ধীরে এই প্রক্রিয়ায় আস্থা হারায় এবং প্রশাসনের পরিবর্তনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়।
-
ফলে প্রশাসন অচল ও অকার্যকর ব্যবস্থায় পরিণত হয়, যা ক্রমাগত একটি দুষ্টচক্রে (vicious circle) ঘুরপাক খায়।
এই বিশ্লেষণ দেখায় যে মাইকেল ক্রোজিয়ারের মতে, আমলাতন্ত্র কেবল একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা নয়— এটি এমন এক মানসিক ও কাঠামোগত ফাঁদ, যা ক্ষমতা, তথ্য ও পরিবর্তনের অভাবের কারণে নিজেই নিজের সীমাবদ্ধতায় আটকে পড়ে।

0
Updated: 23 hours ago
'The Republic of Plato is a dramatized philosophy of life'
Created: 23 hours ago
A
নেটেলশীপ
B
মেবাইন
C
ম্যাকপারসন
D
রুশো
সি. বি. ম্যাকফারসন (C.B. Macpherson) তাঁর “The Political Thought” গ্রন্থে প্লেটোর বিখ্যাত রচনা “The Republic” সম্পর্কে বলেন যে এটি একটি নাটকীয় মানব দর্শন (Dramatized Philosophy of Life)। তাঁর মতে, প্লেটো এখানে কেবল একটি দার্শনিক আলোচনা করেননি, বরং মানুষের চরিত্র, ন্যায়বিচার ও সমাজের আদর্শ কাঠামোকে একটি নাটকের রূপে উপস্থাপন করেছেন, যেখানে চিন্তা, সংলাপ ও কাহিনির সমন্বয়ে দর্শনের বাস্তব প্রতিফলন ঘটেছে।
-
“The Republic of Plato is a dramatized philosophy of life” —এই উক্তির মাধ্যমে বোঝানো হয়েছে যে, প্লেটো তাঁর রিপাবলিক গ্রন্থটিকে শুধুমাত্র তত্ত্বভিত্তিক আলোচনা হিসেবে না লিখে, নাটকীয় আঙ্গিকে গল্প ও সংলাপের মাধ্যমে উপস্থাপন করেছেন।
-
তিনি বিভিন্ন চরিত্র—বিশেষ করে সক্রেটিস ও অন্যান্য আলোচক চরিত্রের সংলাপের মাধ্যমে ন্যায়বিচার, নৈতিকতা, শিক্ষা, রাষ্ট্রব্যবস্থা ও মানবিক গুণাবলির বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।
-
এখানে প্লেটো মানবজীবনের নৈতিক ও দার্শনিক দিককে জীবন্ত করে তুলেছেন, যাতে পাঠক শুধু যুক্তি নয়, অনুভূতির মাধ্যমেও তার দর্শন অনুধাবন করতে পারে।
-
“নাটকীয়” শব্দটি দিয়ে বোঝানো হয়েছে—
-
গ্রন্থে চরিত্র, সংলাপ ও ঘটনাক্রম রয়েছে, যা এটিকে গল্পনির্ভর করে তুলেছে।
-
আলোচনার ভেতরে বিরোধ, যুক্তি-প্রতিযুক্তি ও মানসিক সংঘাত উপস্থাপন করা হয়েছে, যা নাটকের উপাদান বহন করে।
-
এর মাধ্যমে প্লেটো মানব চরিত্রের বিবর্তন, নৈতিক বিকাশ ও আদর্শ রাষ্ট্রের ধারণা একই সঙ্গে বিশ্লেষণ করেছেন।
-
-
ম্যাকফারসনের মতে, প্লেটোর রিপাবলিক এমন এক দর্শন যেখানে মানুষ, সমাজ ও ন্যায়বিচারের সম্পর্ককে নাটকীয়ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, ফলে এটি কেবল দার্শনিক রচনা নয়, বরং মানবজীবনের একটি শিল্পিত ও বুদ্ধিবৃত্তিক প্রতিচ্ছবি।
-
এই কারণেই রিপাবলিক গ্রন্থটি প্রাচীন দর্শনের একটি জীবন্ত ও সাহিত্যিক উপস্থাপনা, যা তত্ত্ব, দর্শন ও মানবজীবনের বাস্তবতাকে এক সূত্রে গেঁথে দিয়েছে।

0
Updated: 23 hours ago
অ্যালমন্ডের মতে ইনপুট এবং আউটপুটের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপনের উপায় কী?
Created: 7 hours ago
A
বৈধ দৈহিক বল প্রয়োগ ও আদেশ প্রদান
B
বৈধ বিধি প্রনয়ন ও বল প্রয়োগের হুমকী
C
বৈধ দৈহিক বল প্রয়োগ ও বল প্রয়োগের হুমকী
D
বৈধ নির্দেশ প্রদান ও বল প্রয়োগের হুমকী
অ্যালমন্ডের মতে, রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া যেখানে সমাজের জনগণ তাদের বিভিন্ন দাবি, প্রত্যাশা ও সমর্থনকে রাষ্ট্রের কাছে প্রেরণ করে, আর রাষ্ট্র সেই তথ্যের ভিত্তিতে নীতি ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে সমাজে বাস্তবায়ন করে। এই প্রক্রিয়াটি দুইটি প্রধান অংশে বিভক্ত—ইনপুট (Input) ও আউটপুট (Output)—যাদের পারস্পরিক সম্পর্ক রাষ্ট্রের কার্যকারিতা নির্ধারণ করে।
-
ইনপুট (Input): জনগণের দাবি, সমর্থন, জনমত, চাপ সৃষ্টির কার্যক্রম এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রত্যাশা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলে। এগুলিই রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ার মূল উপাদান।
-
আউটপুট (Output): রাষ্ট্র জনগণের ইনপুট অনুযায়ী নীতি, আইন, প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও কর্মসূচি প্রণয়ন করে এবং তা সমাজে কার্যকর করে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্র জনগণের চাহিদার প্রতিক্রিয়া প্রদান করে।
-
ইনপুট ও আউটপুটের সম্পর্ক: অ্যালমন্ড বলেন, রাষ্ট্রের উচিত এই দুইয়ের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক রক্ষা করা। এজন্য রাষ্ট্রের থাকতে হবে—
-
বৈধ কর্তৃত্ব যা জনগণের স্বীকৃত ও ন্যায্য।
-
সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা যাতে নীতিমালা কার্যকর হয়।
-
বৈধ বল প্রয়োগের সামর্থ্য, প্রয়োজনে শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োগ করা যায়।
-
আদেশ প্রদানের সক্ষমতা, যা প্রশাসনিক কাঠামোকে কার্যকর রাখে।
-
-
বাস্তব প্রয়োগ: আইন প্রণয়নই যথেষ্ট নয়; রাষ্ট্রকে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ন্যায় ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে হয়। প্রয়োজনে বৈধ বল প্রয়োগ করে আইন কার্যকর রাখতে হয়।
-
উদাহরণ: যদি জনগণ নিরাপত্তা চায় (Input), রাষ্ট্র তখন আইন প্রণয়ন করে ও পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে (Output)। যখন এই আইন বাস্তবায়িত হয় এবং জনগণ তার ফল ভোগ করে, তখন ইনপুট ও আউটপুটের মধ্যে কার্যকর যোগসূত্র প্রতিষ্ঠিত হয়, যা রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নির্দেশ করে।

0
Updated: 7 hours ago
'Division of Work' মূলত কীসের সাথে সম্পর্কিত?
Created: 23 hours ago
A
বিশেষীকরণ
B
সমন্নয়
C
বিকেন্দ্রীকরণ
D
নেতৃত্ব
Division of Work বা শ্রম বিভাজন হলো কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের কাজকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে বিভিন্ন ব্যক্তি বা দলের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করা। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রতিটি কর্মী নির্দিষ্ট একটি কাজে মনোনিবেশ করতে পারে, যা কাজের গতি ও মান উন্নত করে। শ্রম বিভাজনের মূল উদ্দেশ্য হলো বিশেষীকরণের মাধ্যমে দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা, যাতে প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ কার্যকারিতা অর্জন করতে পারে।
• বিশেষীকরণ (Specialization): শ্রম বিভাজনের মাধ্যমে কর্মীরা নির্দিষ্ট ধরনের কাজ বারবার সম্পাদন করে সেই ক্ষেত্রে পারদর্শী হয়ে ওঠে। এর ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় ভুল কমে এবং গতি বৃদ্ধি পায়।
• দক্ষতা ও উৎপাদন বৃদ্ধি: একক কাজের উপর দীর্ঘমেয়াদি অভিজ্ঞতা কর্মীর কার্যক্ষমতা বাড়ায়, যা প্রতিষ্ঠানকে কম সময়ে বেশি ফলাফল অর্জনে সহায়তা করে।
• সমন্বয়ের ভূমিকা: শ্রম বিভাজনের ফলে কাজের অংশগুলো আলাদা হলেও, সেগুলোকে সঠিকভাবে সমন্বয় করা প্রয়োজন যাতে সব কার্যক্রম একটি সাধারণ লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগোয়। তবে সমন্বয় শ্রম বিভাজনের মূল উদ্দেশ্য নয়, বরং এর ফলাফল কার্যকর করতে একটি অপরিহার্য ধাপ।
• বিকেন্দ্রীকরণ: এটি মূলত ক্ষমতার বণ্টন-এর সাথে সম্পর্কিত, যেখানে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা হয়। কিন্তু এটি শ্রম বিভাজনের সরাসরি লক্ষ্য নয়।
• নেতৃত্ব: নেতৃত্ব ব্যবস্থাপনায় গুরুত্বপূর্ণ হলেও শ্রম বিভাজনের মূল উদ্দেশ্য নয়। শ্রম বিভাজনের লক্ষ্য হচ্ছে কাজকে এমনভাবে ভাগ করা যাতে প্রত্যেকে নিজের দায়িত্বে দক্ষ হয়ে সমষ্টিগত উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে।
• সার্বিক উদ্দেশ্য: শ্রম বিভাজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান একটি সুশৃঙ্খল ও কার্যকর কাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়, যেখানে দক্ষতা, উৎপাদন ও মান একইসাথে বৃদ্ধি পায়।

0
Updated: 23 hours ago