রাষ্ট্র হলো রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত একটি জাতি-উক্তিটি করেছেন-
A
গেটেল
B
গার্নার
C
রুশো
D
জন লক
উত্তরের বিবরণ
গার্নার (J.W. Garner) রাষ্ট্রকে সংজ্ঞায়িত করেছেন এইভাবে—
“A politically organized nation or people within a definite territory with an established government.”
অর্থাৎ, “একটি নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী, যারা একটি সংগঠিত সরকার ব্যবস্থার অধীনে রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ থাকে।”
এই সংজ্ঞা অনুযায়ী রাষ্ট্র কেবল জনগণ বা ভূখণ্ডের সমষ্টি নয়, বরং একটি রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত ও শৃঙ্খলাপূর্ণ জাতি। গার্নারের মতে, রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নির্ভর করে এমন একটি কাঠামোর উপর, যেখানে জনগণ, ভূখণ্ড, সরকার ও সার্বভৌমত্ব পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত থেকে একটি একক রাজনৈতিক সত্তা গঠন করে।
• জনসংখ্যা বা জনগণ (Nation or People): রাষ্ট্রের ভিত্তি হলো জনগণ। জনগণ ছাড়া রাষ্ট্রের অস্তিত্ব অসম্ভব, কারণ রাষ্ট্র জনগণের দ্বারা গঠিত ও পরিচালিত।
• নির্দিষ্ট ভূখণ্ড (Definite Territory): রাষ্ট্রের একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক এলাকা থাকতে হবে, যেখানে জনগণ বসবাস করে এবং সরকার তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে।
• সরকার (Government): রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সংগঠিত সরকার প্রয়োজন, যা আইন প্রণয়ন, বিচার ও প্রশাসন পরিচালনা করে। সরকার রাষ্ট্রের নীতি বাস্তবায়নের কেন্দ্রীয় শক্তি।
• সার্বভৌমত্ব (Sovereignty): রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ও স্বাধীন ক্ষমতা হলো সার্বভৌমত্ব। এটি অভ্যন্তরীণভাবে সর্বশেষ কর্তৃত্ব এবং বহির্বিশ্বে স্বাধীনতা নিশ্চিত করে।
• রাজনৈতিক সংগঠন: গার্নার জোর দিয়েছেন যে রাষ্ট্র কোনো প্রাকৃতিক বা সামাজিক গোষ্ঠী নয়; এটি একটি রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত জাতি, যেখানে জনগণ ও সরকার একত্রে কাজ করে একটি সুশৃঙ্খল শাসনব্যবস্থা গড়ে তোলে।
• অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় নয়: গার্নারের মতে, রাষ্ট্রের সংজ্ঞা কেবল অর্থনৈতিক বা ধর্মীয় পরিচয়ে সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি রাজনৈতিক একক, যার লক্ষ্য হলো জনগণের সামগ্রিক কল্যাণ ও শৃঙ্খলা রক্ষা করা।

0
Updated: 23 hours ago
কোনটি আমলাতন্ত্রের বৈশিষ্ট্য নয়?
Created: 7 hours ago
A
সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব
B
কর্তৃত্বের বণ্টন
C
সুনির্দিষ্ট বিধি নিয়মের প্রবর্তন
D
অফিস সময়ের পর কাজ না করা।
আমলাতন্ত্র (Bureaucracy) হলো একটি প্রশাসনিক কাঠামো, যেখানে সরকারি কার্যক্রমকে নির্দিষ্ট নিয়ম, দায়িত্ব ও কর্তৃত্বের ভিত্তিতে সংগঠিতভাবে পরিচালনা করা হয়। এটি আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য অংশ, যার উদ্দেশ্য হলো দক্ষতা, শৃঙ্খলা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখা।
-
সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব: প্রত্যেক কর্মকর্তা নির্দিষ্ট দায়িত্ব ও কর্তব্য অনুযায়ী কাজ করে। এতে প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্পষ্টতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হয়।
-
কর্তৃত্বের বণ্টন: প্রশাসনের ক্ষমতা ও দায়িত্ব পদসোপানভিত্তিকভাবে বণ্টিত থাকে, অর্থাৎ উর্ধ্বতন কর্মকর্তা নীতিনির্ধারণ করেন এবং নিম্নপদস্থ কর্মকর্তারা তা বাস্তবায়ন করেন।
-
সুনির্দিষ্ট বিধি ও নিয়মের প্রবর্তন: সমস্ত প্রশাসনিক কাজ নির্ধারিত আইন, বিধি ও প্রক্রিয়া অনুসারে পরিচালিত হয়, যাতে সিদ্ধান্তে ব্যক্তিগত প্রভাব বা পক্ষপাতিত্বের সুযোগ না থাকে।
-
পেশাদারিত্ব ও দক্ষতা: আমলাতন্ত্রে কর্মকর্তাদের যোগ্যতা, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়, যা প্রশাসনের মান উন্নত করে।
-
নৈর্ব্যক্তিকতা (Impersonality): সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা আবেগের পরিবর্তে নিরপেক্ষতা ও নিয়মনিষ্ঠা বজায় রাখা হয়।
-
লিখিত নথিপত্রের ব্যবহার: প্রতিটি প্রশাসনিক কার্যক্রম লিখিত আকারে সংরক্ষণ করা হয়, যাতে প্রশাসনিক ধারাবাহিকতা ও জবাবদিহিতা বজায় থাকে।
-
অফিস সময়ের পর কাজ না করা: এটি আমলাতন্ত্রের কোনো মূল বৈশিষ্ট্য নয়। বরং এটি কর্মসংস্কৃতি বা শ্রমনীতির অংশ, যা কাজের সময়সীমা ও শৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পর্কিত, প্রশাসনিক কাঠামোর সঙ্গে নয়।

0
Updated: 7 hours ago
কোন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী রাজনৈতিক দলকে 'জয়েন্ট স্টক' কোম্পানীর সাথে তুলনা করেছেন?
Created: 23 hours ago
A
গেটল
B
ল্যাসওয়েল
C
ম্যাকাইভার
D
লি কক (Leo Cock)
রাজনৈতিক দলকে “Joint-Stock Company”–এর সঙ্গে তুলনা করেছেন স্টিফেন লিকক (Stephen Leacock), হারল্ড ল্যাসওয়েল (Harold Lasswell) নন। লিকক তার বিখ্যাত গ্রন্থ Elements of Political Science-এ এই তুলনাটি ব্যবহার করেন, যেখানে তিনি রাজনৈতিক দলকে একধরনের সম্মিলিত বিনিয়োগমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন, যেখানে প্রত্যেক সদস্য নিজ নিজ রাজনৈতিক শক্তি ও অবদান যোগ করেন।
-
লিককের ভাষায়,
“They constitute something like a joint-stock company to which each member contributes his share of political power.”
অর্থাৎ, রাজনৈতিক দল একটি যৌথ মূলধনী প্রতিষ্ঠানের মতো, যেখানে সদস্যরা তাদের রাজনৈতিক শক্তি, প্রভাব ও শ্রম বিনিয়োগ করে সম্মিলিতভাবে একটি লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করে। -
এই তুলনা দ্বারা লিকক বোঝাতে চেয়েছিলেন যে একটি রাজনৈতিক দল যেমন ব্যবসায়িক কোম্পানির অংশীদারদের সম্মিলিত মূলধনে পরিচালিত হয়, তেমনি দলও সদস্যদের সম্মিলিত রাজনৈতিক ইচ্ছা, মতামত ও কর্মের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
-
রাজনৈতিক দলের প্রতিটি সদস্য দলীয় লক্ষ্য অর্জনে নিজস্ব স্বার্থকে দলীয় স্বার্থের সঙ্গে সমন্বিত করে, যেমন একটি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার নিজের লাভের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যে আগ্রহী থাকে।
-
লিককের এই বিশ্লেষণ রাজনৈতিক দলের গঠনমূলক ও কার্যকরী চরিত্রকে অর্থনৈতিক সংগঠনের কাঠামোর সঙ্গে মিলিয়ে ব্যাখ্যা করে, যা রাজনৈতিক বিজ্ঞান ও সংগঠন তত্ত্বে একটি দৃষ্টান্তমূলক ধারণা হিসেবে বিবেচিত।
-
এই ধারণা থেকে বোঝা যায়, দলীয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ কেবল আদর্শগত নয়, বরং তা একধরনের পারস্পরিক বিনিময় ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ওপরও প্রতিষ্ঠিত।

0
Updated: 23 hours ago
নাগরিক চেতনা লাভের ফলে মানুষ - i) সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠে; i) নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অধিকার আদায়ে সচেষ্ট হয়; iii) প্রতিক্রিয়াশীল চক্র চিহ্নিত করতে পারে;- উপরের কোনটি সঠিক?
Created: 1 day ago
A
i)
B
i ও ii
C
ii ও iii
D
i, ii, ও iii
নাগরিক চেতনা (Civic Consciousness / Civic Awareness) হলো এমন এক মানসিক ও নৈতিক বোধ, যার মাধ্যমে একজন ব্যক্তি তার সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার ও দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে। এটি শুধু নিজের অধিকারের দাবি নয়, বরং সমাজ, রাষ্ট্র ও অন্য নাগরিকের প্রতি দায়িত্ববোধেরও প্রতিফলন। নাগরিক চেতনা বৃদ্ধি পেলে মানুষ সচেতন, দায়িত্বশীল ও সুনাগরিক হিসেবে সমাজে ভূমিকা রাখতে পারে।
-
নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে অধিকার আদায়: নাগরিক চেতনা মানুষকে শেখায় যে আইন, সংবিধান ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া মেনে নিজের অধিকার আদায় করতে হবে। যেমন— ভোটাধিকার প্রয়োগ, সরকারের কাছে বৈধ দাবি উপস্থাপন, বা শান্তিপূর্ণ নাগরিক আন্দোলন করা। এটি সমাজে শৃঙ্খলাবদ্ধ ও অহিংস প্রতিরোধের সংস্কৃতি গড়ে তোলে।
-
প্রতিক্রিয়াশীল চক্র চিহ্নিত করার সক্ষমতা: সচেতন নাগরিক সমাজের দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার, বৈষম্য ও রাজনৈতিক প্রভাবের উৎস ও প্রভাব শনাক্ত করতে পারে। এই বিশ্লেষণ ক্ষমতা নাগরিককে সমস্যার মূল চক্র চিহ্নিত করে গঠনমূলক সমাধানের পথ নির্দেশে সক্ষম করে তোলে।
-
সুনাগরিক হিসেবে বিকাশ: নাগরিক চেতনার ফলেই ব্যক্তি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ এবং সমবায়ী মনোভাবসম্পন্ন হয়ে ওঠে। এটি ব্যক্তিগত অধিকার ও সামাজিক দায়িত্বের মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করে এবং সমাজে ন্যায়, শান্তি ও সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি করে।
-
নাগরিক চেতনা বিকাশ পেলে সমাজে নৈতিকতা, মানবাধিকার রক্ষা ও গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের মান বৃদ্ধি পায়।
-
এটি নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে অংশগ্রহণে উৎসাহিত করে, ফলে সরকার ও জনগণের মধ্যে পারস্পরিক জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠিত হয়।
-
নাগরিক চেতনার মাধ্যমে একটি সমাজ দায়িত্বশীল নাগরিক সমাজে পরিণত হয়, যা রাষ্ট্রের উন্নয়ন, স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ টিকিয়ে রাখার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

0
Updated: 1 day ago