কল্যাণ রাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো-i) ব্যক্তি স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; ii) অর্থনৈতিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা; iii) সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; উপরের কোনটি সঠিক?
A
i
B
i ও ii
C
ii ও iii
D
i, ii ও iii
উত্তরের বিবরণ
কল্যাণ রাষ্ট্র (Welfare State) এমন একটি রাষ্ট্রব্যবস্থা যেখানে সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো নাগরিকদের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিক কল্যাণ নিশ্চিত করা। এই ধারণা অনুযায়ী রাষ্ট্র শুধু শাসন বা প্রশাসন পরিচালনাই করে না, বরং জনগণের জীবনমান উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও সুযোগের সমতা প্রতিষ্ঠার জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
-
কল্যাণ রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হলো ব্যক্তির স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক সুযোগ ও সমতা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
-
নাগরিকদের ব্যক্তিগত অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষা করা এর অন্যতম ভিত্তি।
-
রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো সকল নাগরিকের জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও পেনশন সুবিধা নিশ্চিত করা।
-
সমাজের দুর্বল ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী যেন পিছিয়ে না থাকে, সে জন্য রাষ্ট্র দারিদ্র্য বিমোচন ও পুনর্বণ্টনমূলক নীতি গ্রহণ করে।
-
কল্যাণ রাষ্ট্রে করব্যবস্থা এমনভাবে গঠন করা হয় যাতে ধনী শ্রেণি বেশি কর প্রদান করে এবং সেই রাজস্ব ব্যবহার করা হয় জনকল্যাণমূলক খাতে।
-
এই ব্যবস্থায় রাষ্ট্রের লক্ষ্য শুধুমাত্র অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নয়, বরং সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা।
-
কল্যাণ রাষ্ট্রের আদর্শ উদাহরণ পাওয়া যায় যেমন সুইডেন, নরওয়ে, ডেনমার্ক, যুক্তরাজ্য প্রভৃতি দেশে, যেখানে সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ও সামাজিক নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
-
সমাজবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে, কল্যাণ রাষ্ট্র এমন এক ব্যবস্থা যা রাষ্ট্র ও নাগরিকের পারস্পরিক দায়িত্ব ও সহমর্মিতার ভারসাম্য রক্ষা করে, ফলে একটি স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও মানবিক সমাজ গড়ে ওঠে।

0
Updated: 23 hours ago
ইমাম গাযযালীর রাষ্ট্রদর্শনের মূল ভিত্তি কী?
Created: 1 day ago
A
সামরিক শক্তি
B
ধর্ম ও নৈতিকতা
C
অর্থনৈতিক শক্তি
D
সামাজিক ঐক্য
ইমাম গাযযালী (Al-Ghazali, 1058–1111) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ইসলামি দার্শনিক, তাত্ত্বিক ও সুফি চিন্তাবিদ, যিনি ধর্ম, নৈতিকতা ও রাজনীতিকে এক অবিচ্ছেদ্য কাঠামোর মধ্যে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁর রাষ্ট্রদর্শনের মূল ভিত্তি ছিল ইসলামি নীতি, ন্যায়বিচার এবং নৈতিক শৃঙ্খলা। গাযযালীর মতে, রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য শুধুমাত্র ক্ষমতা বা শাসন নয়; বরং এমন একটি সমাজ গঠন করা, যেখানে ধর্মীয় মূল্যবোধ, ন্যায়পরায়ণতা ও নৈতিকতা প্রতিফলিত হয়। শাসক ও নাগরিক—উভয়কেই ধর্ম ও নৈতিকতার প্রতি অনুগত হতে হবে এবং রাষ্ট্রের প্রতিটি নীতি ইসলামের আদর্শ অনুযায়ী পরিচালিত হওয়া উচিত।
• ধর্ম ও নৈতিকতার ভূমিকা: গাযযালী বিশ্বাস করতেন যে, ধর্মই রাষ্ট্রের আত্মা এবং নৈতিকতা তার দিকনির্দেশনা। রাষ্ট্র যদি ধর্ম থেকে বিচ্যুত হয়, তবে তার স্থায়িত্ব নষ্ট হয়।
• শাসকের দায়িত্ব: শাসককে ন্যায়পরায়ণ, ধার্মিক ও জনগণের কল্যাণে নিবেদিত হতে হবে। তাঁর শাসনব্যবস্থা আল্লাহর নির্দেশ ও শরিয়াহর নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
• সামরিক শক্তি: গাযযালী সামরিক শক্তিকে রাষ্ট্রের প্রধান ভিত্তি হিসেবে দেখেননি। তাঁর মতে, এটি রাষ্ট্র রক্ষার একটি উপকরণ মাত্র, মূল শক্তি নয়।
• অর্থনৈতিক শক্তি: তিনি অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে রাষ্ট্র পরিচালনার প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে স্বীকার করেছেন, তবে এটিকে রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেননি।
• সামাজিক ঐক্য: সমাজে ঐক্য ও স্থিতিশীলতা গাযযালীর মতে ধর্ম ও নৈতিকতার ফলাফল। যখন মানুষ ন্যায় ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসী হয়, তখনই প্রকৃত সামাজিক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হয়।
• রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য: রাষ্ট্রের মূল লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর বিধান বাস্তবায়নের মাধ্যমে ন্যায়, শান্তি ও কল্যাণভিত্তিক সমাজ গঠন করা, যেখানে নৈতিকতা রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে।

0
Updated: 1 day ago